“চুরি করা মহাপাপ”, শোনা কথা কিংবা বইয়ের কথার চাইতে হাতেকলমে শিক্ষা অতীব জরুরী। খুন করে আউলিয়া না হলেও কিছুটা পাপ না করে পূন্যের শিক্ষাটা খানিক অপূর্ণ থেকে যায়। পাপীর যুক্তির অভাব নেই 🙂
সব শিক্ষা পরিবার থেকেই শুরু হয়, মানে গিনিপিগ পরিবারের কেউ না কেউ, এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি প্র্যাক্টিকেল টেস্টের, যদিও বাবার পকেট থেকে ৫/১০ টাকা সরানো চুরি হতেই পারেনা, ওগুলো তো আমাদের জন্যেই।
যেটা আজও খচখচ করে সেটা একটা দোয়েল পাখি। কিছুতেই লোভ সামলাতে পারিনি। খুব পিচ্চি ছিলাম তবে অন্যায় ছিল সেটা বুঝতাম, হাতপা আর দুরুদুরু বুকে দোয়েল পাখিটা নিয়ে এসেছিলাম একটা বন্ধুর বাড়ি থেকে। পাখিটা যে কি মিস্টি করে শীষ দেয়, এরপর মুখের ভেতর পানি ভরে ফুঁ দিলে আরেক সুরে শীষ দেয়। হুম দেয়, কারণ চিনামাটির সেই দোয়েলটা এখনো আছে আমাদের বাড়িতে। মা ওটাকে ফিরিয়ে দিতে পারেনি, কারণ কোথা থেকে আমি এনেছি মনেই করতে পারিনি ( মনে মনেঃ এত কস্ট করে হাতপা কাঁপিয়ে চুরি করে এনেছি কি ফিরিয়ে দেবার জন্যে? )
না আর চুরি করিনি, তবে পরোপকারী ছিলাম খুব। পাশের বাসার আঙ্গুরের মা যখন বিড়ি কিনে এনে দিতে বললো আমি তো এক পায়ে খাঁড়া। আরেকজনকে সাথে নিয়ে বিড়ি কিনে এনে দিলাম তাকে। আঙ্গুরের মা পরে আমাকে জানালো বিড়ির প্যাকেট খোলা ছিল আর একটা বিড়ি অর্ধেক খাওয়া ছিল। আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম, আমিতো কিছু জানিনা!!! আমি যেমন জানিনা সিগারেট অর্ধেকটা কিভাবে পুড়লো, আঙ্গুরের মা ও তেমনি জানেনা বিড়ি আর দেয়াশলাই একসাথে কিনতে দিতে নাই :p
এরপর আমি বেজায় লক্ষী মেয়ে। ইন্টারে পড়ার সময় এক ঈদে তুপা আর আরেক বান্ধবী এসে বললো, সিগারেট খাইতে মন চায়। বললাম, এইটা কোন ব্যাপার? অপেক্ষা কর। ছোট মামার পকেট থেকে আস্তেসুস্থে দুইটা গোল্ডলিফ নিয়ে আসলাম, তবে এইটা চুরি ছিল না। দুই টাকার দুইটা নোট সিগারেটের মত রোল করে প্যাকেটে রেখে দিয়ে আসলাম। পরে মামা আমাকে জানালো জানিস কি হইছে, মেজদা’র মনে হয় সিগারেট শেষ হইয়া গেছে, আমার সিগারেটের প্যাকেটে টাকা রেখে সিগারেট নিয়ে গেছে। আমি যথা সম্ভব আশ্চর্য হবার ভাব করে বললাম, তাই!!!!!
বহুদিন পর চুরিবিদ্যা টা কাজে লাগাবার জন্য হাত কেমন করছে, তবে এখন তো বড় থুক্কু বুড়ি হইছি, এখন কি আর চুরি করলে চলে? এখন ডাকাতি করতে হবে। কিন্তু কিভাবে? চুরি যাওয়া সেদিন ফিরিয়ে আনতে কি কি ডাকাতি করা চাই এখন?
৪৯টি মন্তব্য
লীলাবতী
ওরে চোর রে,এ দেখি মহা চোর। তা মন চুরির ইতিহাস তো দিলেন না 😛 ঝাতি জানিতে চায় 🙂
আসতেছি আবার।
শুন্য শুন্যালয়
আমি মন টন চুরি করিনা, আপনার মতো এমন কোমর বাঁকা করে কলসি নিতে পারলে চেস্টা করতে পারতাম 🙂
স্বপ্ন
আপু আপনি বিড়ি খেয়েছেন? ইয়াক,চরম গন্ধ বিড়িতে। ভয়ানক রকম বুদ্ধি আপনার।মজা পেলাম খুব।
শুন্য শুন্যালয়
বিড়িতে চরম গন্ধ খেয়ে বুঝেছেন নাকি না খেয়ে? আর খেলে, চুরি করে নাকি চুরি না করে? আপনি কিন্তু আপনার মন্তব্যে চুরির গন্ধ পাচ্ছি।
খেয়ালী মেয়ে
পরে মামা আমাকে জানালো জানিস কি হইছে, মেজদা’র মনে হয় সিগারেট শেষ হইয়া গেছে, আমার সিগারেটের প্যাকেটে টাকা রেখে সিগারেট নিয়ে গেছে। আমি যথা সম্ভব আশ্চর্য হবার ভাব করে বললাম, তাই!!!!! (y)————দারুন বোকা বানাইছে মামাকে 🙂
আমিও বিড়ি খাইতে চাই 🙂
ডাকাতি করতে হলে ডাকাত হতে হবে…হয়ে যাও ডাকাত..তোমার জন্য শুভকামনা রইলো 🙂
শুন্য শুন্যালয়
ডাকাতির টিমে তোমাকে অলওয়েজ স্বাগতম।
ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর 🙂
খেয়ালী মেয়ে
🙂
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা,চুরি বিদ্যায় তো দেখি অত্যন্ত সফল ছিলেন
অত্যন্ত আকর্ষনীয় ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
আপনার এই সব কৃতিত্বের জন্য আপনার ক্রেষ্ট প্রদানের জন্য সোনেলা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
শুন্য শুন্যালয়
গুনীর কদর আপনিই শুধু করলেন। সোনেলায় তো কোন কর্তৃপক্ষই নাই, কারে অনুরোধ করতেছেন?
অরণ্য
চিনেমাটির দোয়েল, তার পানিসহ ও পানিছাড়া সুর, আমার কাছে তা থাকার ও পা থাকার অনুভূতি দুটোই মনে পড়ল।
আপনাকে শেয়ার করছি তিনটি গান, আপনার লেখার গন্ধে এদের মনে পড়ল। ভাল লিখেছেন।
১। নিজেকে ভালোবাস তুমি এবার – সোমলতা
https://www.youtube.com/watch?v=3BxOaDXF730
২। চোর – নচিকেতা
https://www.youtube.com/watch?v=XR6McjeYwcE
৩। অনির্বান – নচিকেতা
https://www.youtube.com/watch?v=CVpvaPJFgVE
শুন্য শুন্যালয়
হুম, ভালোলাগার অনুভূতিটা এখনো বর্তমান তাই না থাকলেও সমস্যা ছিলনা।
সুন্দর তিনিটি গানের জন্য তিনটি ধন্যবাদ।
নীলাঞ্জনা নীলা
এই সব সময়কে ফিরে পেতে শীর্ষ সন্ত্রাসী হতে হলেও আপত্তি নেই।শর্ত যদি থাকে ফুলন দেবী হবার,তাতেই পিছপা হবো না আমি।মজার ছলে কথাগুলো বললেও ঐ সময়কে মিস করি শুন্য।
শুন্য শুন্যালয়
খুব বেশি মিস করি আপু। যদি সব কিছু হবার বিনিময়েও সেই সময়টা ফিরে পাওয়া যেত!! ভালো থাকুন আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু কোথায় গেলেন? মিস করছি তো। তাড়াতাড়ি আসুন। 🙁
শুন্য শুন্যালয়
তাড়াতাড়ি করতে গিয়া তরকারী পুড়ে গেলো, কিন্তু তুমি কোনে?
ইমন
হা হা হা 🙂
শুন্য শুন্যালয়
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ইমন ভাই।
অনিকেত নন্দিনী
আসলেই যদি চুরি করা যেতো! হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো ফিরিয়ে আনার জন্য কেবল চোর নয়, প্রয়োজনে দস্যুরানী হতেও আপত্তি নেই।
শুন্য শুন্যালয়
ঠিক তাই। কিন্তু……
শাহ আজিজ
🙂 🙂 মজা পাইলাম স্মৃতিময় চুরির কথা শুনে 🙂
শুন্য শুন্যালয়
ধন্যবাদ আজিজ ভাইয়া। সবারই এমন মজার কিছু স্মৃতি আছে।
স্বপ্ন
এমন দিন ফিরে পেতে ডাকাতিতে সমস্যা নেই আপু। করুন ডাকাতি 🙂
শুন্য শুন্যালয়
একা একা কি ডাকাতি করা যায়? জয়েন করুন আমার সাথে।
কৃন্তনিকা
‘চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ে ধরা’ শুন্যালয় আপু দেখছি প্রবাদটির প্রকৃষ্ট উদাহরণ :p :p :p
স্মৃতিচারণ খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। নির্মল আনন্দ পেলাম 🙂
শুন্য শুন্যালয়
পাকা চোর বলা যায় আমাকে তাহলে, কি বলেন? 🙂
স্মৃতিচারণ আনন্দের হয় ফিরে পাওয়া যাবেনা বলেই হয়তো।
কৃন্তনিকা
মনচুরির কোন গল্প থাকলে পাকাচোর বলতে পারতাম। আছে কি??? ;? ;? ;?
শুন্য শুন্যালয়
কাচা চোরই সই। মন চুরির মত ভয়াবহ কাজে সাহস হয়নি। আমি সদাসত্য কথা বলি 😀
আশা জাগানিয়া
বর্ণ্যাঢ্য এক অপেশাদার চোরের কাহিনী পড়লাম।বিড়ি,সিগারেট,দোয়েল পাখি।প্রতিটি চুরিই বেশ কালারফুল। ডাকাতি করে যদি ঐ সব দিন ফিরিয়ে আনা যেত!
শুন্য শুন্যালয়
আশা জাগানিয়ার মন্তব্যে আশা ভরসা পেলাম। সেইসব দিন আর কি ফিরে আসবে? আসবেনা। তবু সুগন্ধ হয়তো চাইলে একটু খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পোস্টে প্রথমবারের মত পেয়ে।
সীমান্ত উন্মাদ
হা হা বিড়ি খাওয়া ভালো, তারউপর চুরি করে খাওয়ারতো মজাই আলাদা।
তুমি দেখি মহা চোর
ভালো থেকো বন্ধু রাত ভোর।
শুভকামনা নিরন্তর।
শুন্য শুন্যালয়
চুরি করে সবকিছু খাওয়ারই মজা আসলে। তবে এই মজা চাইনা আর, অনেক পেয়েছি।
তুমিও ভালো থেকো। শুভকামনা।
ব্লগার সজীব
আপনি তো ভয়ানক রকমের মেধা সম্পন্ন চোর।আপু দোয়েল পাখিটা কোন বাসা থেকে এনেছিলেন তা আপনি ভুলে গেলেন কিভাবে?ওটা তো আমার ভাইয়ার,পাখিটা দিয়ে দিন এবার 🙂
সিগারেটের প্যাকেটে টাকা রোল করে রাখার আইডিয়াটা পছন্দ হয়েছে। ডাকাতির কাহিনী নেই?তা জানতে চাই আপু।
শুন্য শুন্যালয়
কোন বাড়ি থেকে চুরি করেছিলাম তা ভুলে না গেলে ওটা আবার ফেরত যেত মালিকের কাছে। আমিতো মেধাসম্পন্ন চোর, কিন্তু আপনিতো দেখছি চোরের উপর বাটপারি করছেন। তার ভাইয়ের পাখি, ইশ। ওটা আমারই থাকবে। ছবি দেখাবো একদিন পাখিটার।
আইডিয়া অনেক আছে আমার কাছে, লাগলে ফি দিয়ে নিতে পারেন। ডাকাতি করার ইচ্ছে জোরদার হচ্ছে। প্লান করছি, এখন শুধুই বাস্তবায়নের অপেক্ষায়……
ছাইরাছ হেলাল
ডাকাতির কাজটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ তাই চুরি চালু রাখাই উত্তম।
শুন্য শুন্যালয়
চুরি তে ঝুঁকি নেই বলছেন? পরামর্শদাতাদের পেছনের গলি দিয়ে পালানোর ইতিহাস আছে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
চুরি বিদ্যাতো শিখলাম এবার শিখবো ডাকাতি কবে শিখবো আপু।
শুন্য শুন্যালয়
কোচিং এর ব্যবস্থা করতে হবে দেখছি 🙂
মেহেরী তাজ
হাহাহাহাহা……
আপু ছোট বেলায় অনেক কিছু চুরি করে ধরা না খেলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে মনে হয় এই বিদ্যাই পারদর্শিকতা কমে যায়।
যেমন আমি ছোট বেলায় প্লাস, টেস্টার, মার্তুল চুরি করে ধরা খাইনি। আম জামের কথা না হয় বাদই দিলাম। সেই আমি কিনা গতবছর পেয়ার চুরি করতে গিয়ে গর্ধভের মত ধরা পরে বোকা সেজে গিলাম।
শুন্য শুন্যালয়
আম, জাম, পেয়ারা চুরি করে খাওয়ার অনেক মজা। এখনো সেই বিদ্যা চালু রেখেছ তুমি? হা হা হা। কথা মনে হয় সত্যি, বড় হলে এই পারদর্শিতা কমে যায়। যদিও আমি সেই যে কবে চুরি করেছি মনেই নাই। গাছে কিভাবে উঠতে হয়, তাও তো ভুলে গেছি। এলে মনে করিয়ে দিও, তখন একসাথে মিশনে যাওয়া যাবে। 🙂
মেহেরী তাজ
আপু আপনি আসছেন কবে??? আপনার সাথে আমার অনেক গুলো কাজ একসাথে করা বাঁকি রয়ে গেছে।
শুন্য শুন্যালয়
কবে যে যাব রে আপু জানিনা 🙁 তবে যখনই যাই তোমার সাথে দেখা হবেই হবে। কাজগুলোও করে ফেলা যাবে, পেয়ারা চুরি, ভ্রমন, আড্ডা কতো কাজ আমাদের!!!
অলিভার
হুম এখন ডাকাতি করতে হবে। তবে সময় বদলেছে। এখন হাত সাফাই কিংবা ডাকাতি যেটাই বলেন করতে হবে আধুনিকতার সাথে। পুরানো টেকনিকে এইসব করতে গেলে কি আর সম্মান থাকে? তাই বলি কি নিজের ক্রেডিট কার্ড নিজেই মেশিনে দিয়ে তারপর কিছু চুরি করে নিন, ডাকাতি করে নিন নিজেকে। তারপর সেটা আবার অচেনায় বিলিয়ে কিনে নিন কিছু আত্মতৃপ্তি। ব্যাপারটা নেহায়েত মন্দ হবে বলে মনে হয় না।
উপস্থাপনা একটা ব্যাপার। দৈনন্দিন ঘটনাও যে এইভাবে উপস্থাপন করা যায় তা আপনাদের দেখে শিখছি।
শুভ কামনা জানবেন 🙂
শুন্য শুন্যালয়
মন্দ হবার প্রশ্নই নেই অলিভার। এই আত্মতৃপ্তি অন্য স্বাদের, অন্য আনন্দের। যে বিলিয়ে দিয়েছে, সে জানে।
ছোট বেলার দুস্টুমিও মিস করি। শুভকামনা আপনার জন্যেও।
সোনিয়া হক
আপু মজা পেলাম খুব।ঐ বয়সেই এত বুদ্ধি ছিল আপনার?এখন তো বুদ্ধির মহাসাগর হয়েছেন।তা ভাইয়ার সিগারেটের প্যাকেটে সিগারেট কি থাকে বর্তমানে :p
ফিরে যেতে চাই সেই সব হারানো দিনে।
শুন্য শুন্যালয়
বুদ্ধির মহাসাগর না আপু, শুকিয়ে চর হয়ে গেছে। 🙁
ভাইয়া সিগারেট খায়না। খেলেও অই পঁচা জিনিস খেতাম না আর। এই বিশ্রি জিনিসটায় কি মজা পায় লোকে কে জানে। যারা খায় তাদের মাইর দিতে মন চায়।
সেই সব হারানো দিনে কিন্তু আমরা ফিরে ফিরে যাচ্ছি 🙂
জুলিয়াস সিজার
আপনার অসাধারণ পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষা করছি। :=
শুন্য শুন্যালয়
এইগুলা ছাইপাশ লেখা। 🙂
তানজির খান
হাহাহাহা চরম মজা পেলাম এটা পড়ে। খুব ভাল লাগলো।
শুন্য শুন্যালয়
পুরনো লেখা পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
ছোটবেলার দিনগুলো আসলেই মজার ছিল ।