লেখাটি পড়েছি গতকাল। পড়ার পর থেকেই লেখাটি সোনেলায় শেয়ারের জন্য ব্যকুল হয়ে যাই। কিন্তু লেখকের অনুমতি ব্যতীত লেখাটি প্রকাশে আমার মন সায় দিচ্ছিল না। আর এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা প্রকাশে লেখকের অনুমতি অবশ্যই প্রয়োজন, সোনেলার নীতিমালায় বলা আছে ‘কপি পেস্ট নিষিদ্ধ।’ আজ সন্ধ্যায় লেখকের সাথে ফেইসবুকে আলাপ হয়েছে। উনি সানন্দে রাজী হয়েছেন সোনেলা ব্লগে এই লেখা প্রকাশে। ইসরাত জাহান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী।
ইসরাত জাহানের লেখাটি ফেইসবুকে দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করে দেখতে পারেন।
” [পোস্টে প্রাসঙ্গিক এবং অপ্রাসঙ্গিক মিলিয়ে বকবক একটু বেশিই করেছি, যাদের বড় পোস্ট পড়তে সমস্যা তারা এভোয়েড করুন]
কিছু ব্যাপারে একটু মুখ খুলবো আজ। ছবিতে যে বোরখাপরিহিতা মেয়েটিকে দেখছেন সে আর কেউ নয়, আমি নিজেই। আজ থেকে ৬ বছর আগে, চোখেমুখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা এসেছিলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আমি জগন্নাথে চান্স পাবার আগেও আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাতে চান্স পেয়েছিলাম। বাট জাহাঙ্গীরনগরে মেয়েদের চলাফেরা পোশাক আশাক দেখে ভড়কে গেছিলাম (যদিও এখন এসব আমার কাছে কিছুইনা, প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দের পোশাক পরার অধিকার আছে)।কিন্তু তখন অনুভূতি ছিলো এমন যে, আমি মফস্বলের বোরখা পরিহিত সাধারন মেয়ে মানুষ এই বিশ্ববিদ্যালয়টা আমার জন্য না।
এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়তে ভর্তি হবার পর যখন দেখি ক্লাসের ৮০% মেয়ে বোরখা পড়ে আসে তখন খুব ভালো লাগছিলো, কমফোর্ট ফিল হচ্ছিলো, মনে হচ্ছিলো আমার জন্য জগন্নাথই উপযুক্ত। এবং এখনো যখন এমন খবর শুনি যে জাহাঙ্গীরনগরে বোরখা পড়ার কারনে কিছু মেয়েরা টিচারদের কটুক্তি ও অপমানের শিকার হচ্ছে তখন খুব খারাপ লাগে। ধর্মীয় বিবেচনা বাদ দিলাম, সাধারনভাবে ভাবতে গেলেও যদি কোন মেয়ের জিন্স প্যান্ট শার্ট পড়ার স্বাধীনতা থাকে তবে বোরখা পড়াও তার নিজস্ব ইচ্ছা স্বাধীনতার ব্যাপার। এক্ষেত্রে বাধা দেয়া টিচারগুলো নিঃসন্দেহে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পারে নাই। মুক্তমনা হতে হলে নিরপেক্ষতা, উদারতার গুন আগে অর্জন করতে হয়। সব শ্রেনীর, সব ধর্মের, সব পোশাকের মানুষকেই যদি তুমি শ্রদ্ধা না করতে পারো তবে তুমি কিসের মুক্তমনা? তুমি তো মূলত মুক্তমনার ছদ্মবেশে বদ্মমনা৷ উদারতা ছাড়া উগ্র গন্ডিমার্কা মুক্তমনা আর ধর্ম নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা কুয়োর ব্যাঙ মার্কা ধার্মিক একই। এদের মধ্যে জাতগত পার্থক্য থাকলেও গুনগত কোন পার্থক্য নাই।
এবার গা ঘেষা প্রসঙ্গে আসি, জবিতে ভর্তি হবার পর নতুন নতুন ঢাকাতে এসেছি, রাস্তায় চলাচলে অনেক কিছুই ভয় ভয় লাগতো। রামপুরা বোনের বাসা ছিলো। প্রথম ৩ মাস বোনের বাসা থেকেই ক্লাস করেছি, নিয়মিত। বাসে করেই ভার্সিটি আসতে হতো। এরপর যখন ভার্সিটির দিকে শিফট করলাম তখনও প্রতি সপ্তাহে বাসে করে বোনের বাসায় যেতাম। যথারীতি বোরখা পড়েই বের হতাম। কোন কারনে বাসে কোন বিকৃতমনষ্ক পুরুষের সাথে বসতে হলে খুব অস্বস্তিতে পড়ে যেতাম। না পারতাম কিছু বলতে, না ছিলো প্রতিবাদ করার সাহস, লজ্জায় ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকতাম।
👎দেখা গেলো কোন এক বজ্জাতের সাথে বসতে হলো, যে কিনা নানা অযুহাতে নিজের হাত পা নাড়াচ্ছিলো, আমার গায়ে লাগানোর জন্য,
👎মহিলা সিটে বসলাম, তার সামনেই ইঞ্জিনে বসা বিকৃতমনা লোকটা নিচে দিয়ে পা দিয়ে আমার পা ঘেষতেছে
👎একদিন সাইডের সিটে বসেছিলাম, পাশেই দাড়ানো এক লোক তার পুরুষাঙ্গ দিয়ে আমার বাহুতে ঘষছিলো,
👎ভিড়ের মধ্যে বাসে দাড়িয়ে ছিলাম একদিন, এক লোক পাছায় হাত ঘষছিলো ইচ্ছে করে,
👎বাসের হাতল ধরে দাড়িয়ে ছিলাম, এক ছেলে বারবার ইচ্ছা করে হাতের উপর হাত রাখছিলো, অথচ হাত রাখার জায়গার অভাব তেমন ছিলনা বাসে,
👎একদিন সিটে বসে লক্ষ্য করলাম পেছন থেকে কেউ সিটের ফাক দিয়ে পিঠে হাত দিচ্ছে।
👎একদিন বাসে তাড়াহুড়া করে উঠার সময় খেয়াল করলাম পেছন থেকে কেউ বাজেভাবে হাত দিচ্ছে বারবার, ফিরে তাকিয়েও বুঝতে পারছিলাম না কে করছে এটা কারন ভিড় ছিলো, আর বাসে না উঠেও উপায় ছিলো না,
👎আরেকদিন বাস থেকে নামার সময় খেয়াল করলাম, এক দাড়িসমেত এবং টুপি পড়িহিত ভদ্রলোক বাসের সিড়িতে ইচ্ছাকরে আমার পেছনে তার হাটু দিয়ে অনেক জোড়ে গুতো দিয়েছিলো, এতটাই জোরে যে বাস থেকে ছিটকে পড়তে পড়তে কোন রকমে সোজা হতে পারছিলাম,
👎রাস্তা দিয়ে চলার সময় সেইম আরেক ভদ্রবেশি হুজুর কনুই দিয়ে আমার বক্ষে অনেক জোরে গুতো দিয়ে দ্রুত হেটে চলে গেছিলো, আমি অনেক ব্যাথা পাইছিলাম সেদিন।
ভাইরে বিশ্বাস কর বা না কর তাতে কিছু যায় আসে না, বাট এই ঘটনাগুলা আমার সাথেই ঘটছে, বোরখাপরিহিত অবস্থায়, তাও একবার না বহু বহুবার, যতবার বাইরে বের হয়েছি ততবারই কোন না কোন বিকৃতমনা তাদের বিকৃত স্পর্শে ক্ষতবিক্ষত করেছে আমার সরল মনটাকে। শুধু আমি মেয়ে বলে তা নয়, মায়ের মত বয়স্ক আন্টিদের সাথেও তারা সেইম কাজটাই করে কারন মাংসপিন্ড তো,, হিংস্র প্রানীর কাছে সব মাংসই মজা, হোক তা কাচা বা পরিনত।
দুধের শিশু ছাড়া সবাই জানে এবং খুব ভালোভাবেই কল্পনাও করতে পারে যে, বোরখার নিচেই নারীর একটি আকর্ষনীয় দেহ আছে, একজোড়া বক্ষ আছে, একটা মাংসল কোমর আছে, নিতম্ব আছে। আর যারা ওই মাংসল দেহটার বিকৃত লালসায় পড়ে আছে, তাদের সামনে কোন পোশাকই বাধা না, সাতটি বোরখা পড়ে গেলেও তারা কল্পনায় নারীর উলঙ্গ রুপ দেখতে পায় এবং সুযোগ পেলেই স্পর্শ করে। বরংচ আজব মনে হলেও সত্য যে, বোরখাওয়ালীদের আরো বেশি স্পর্শ করে কারন এই মেয়েরা স্বভাবতই একটু ভীতু, আর তাদের চক্ষুলজ্জাবোধটা অর্থাত প্রতিবাদ করলে লোকে কি বলবে এই বোধটা তাদের অনেক বেশি থাকে, তাই তারা কিছু না বলে চুপচাপ সহ্য করে যায়। বিকৃতমনষ্ক নুপুংশুকদের দ্বারা শিশুরা আজ এজন্যই বেশি ধ্বর্ষিত হয় কারন তারা দুর্বল, সরল, প্রতিবাদহীন, আর ওইসব বিকৃতরা এরকমই সুযোগ চায়।
আমি দেখেছি, বিকৃতমনারা বরং জিন্সপড়া মেয়েদের ভয় পায় বেশি। কারন, ওই মেয়েরা চক্ষুলজ্জার জাত মেরে দিয়ে বিকৃতমনাদের গেড়ে ফেলে দেয় জায়গাতেই।
আজ যে মেয়েগুলা “গা ঘেষবেন না” লিখে প্রতিবাদ করছে তাদের আমি ১০০% সাপোর্ট করি। সাপোর্ট করি এজন্যই যে তাদের চক্ষুলজ্জা বা লোকে কি বলবে এই টাইপের ভয় নেই বলেই এভাবে লিখে রাস্তায় প্রতিবাদে নামতে পারছে। আর এই মেয়েদের সাহসী প্রতিবাদের কারনে কেবল জিন্স পড়া মেয়েরাই নয়, বরং আপনার ঘরে থাকা বোরখাপরিহিত মা বোনরাও রাস্তায় সুরক্ষা পাবে। এরা হয়রানির শিকার হওয়া সব মেয়েদেরই নিরব কান্নার প্রতিচ্ছবি। উনাদেরকে পোশাক দিয়ে বিবেচনা না করে কি বুঝাতে চাইছে সেটা বুঝুন একবার। বিলিভ মি, বোরখাপড়া মেয়েরা ভিড়ের মধ্যে আর বাসে আরো বেশি হয়রানিরর শিকার হয়। কোনদিন আপনার ভদ্র শালীন গা ঢেকে মাথা নিচু করে চলা বোনটাকে অভয় দিয়ে কাছে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করে দেখবেন একদিন, সে কতদিন এরকম হয়রানির শিকার হয়েছে!! আপনি আজ শিক্ষিত ফেসবুক চালানেওয়ালা হয়েও এই মেয়েগুলার সমালোচনা করতে গিয়ে মনের অজান্তেই ওই বিকৃতমনাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন। আপনি কোন মেয়ের গায়ে হাত দেননা বলে কেউ যে দেয়না, আপনি বোরখা পড়া মেয়েদের সম্মান করেন বলে যে সবাই সম্মান করে, এই ধরনের একমুখী ভাবনা থেকে বের হয়ে আসুন। বিকৃতমনাদেরকে আপনার মা বোনদের গায়ে হাত দেবার সাহস আর যুগিয়েন না।
আমি নিজের ৬ বছরের বোরখাপরিহিত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে কথাগুলা বললাম৷ আমি গোটা ৩ বছর নিরব ছিলাম, ভয়ে লজ্জায় প্রতিবাদ করতে পারতাম না। এরপর নিজের আত্মসম্মানে যখন বারবার আঘাত পড়ছিলো তখনই নিজের অস্তিত্বের সম্মান রক্ষার তাগিদে প্রতিবাদগুলা ভেতর থেকে আপনাআপনিই প্রকাশিত হচ্ছিলো। প্রতিবাদ না করে আর কোন উপায় দেখছিলাম না। আর আজ যখন আমি ভিড়ের মধ্য দিয়ে রাস্তায় হেটে যাই তখন দুই হাত কোমরের মধ্যে রেখে আশেপাশের বিকৃতগুলাকে কনুই দিয়ে গুতা দিতে দিতে হেটে যাই বিদ্রোহী, ভয়ংকর নারীর রুপ নিয়ে। আমি নিজের মধ্যেই অনুভব করি ‘অবলা’ কথাটির মধ্যেই একটি না বলা ‘বল’ কথাটি লুকিয়ে আছে। এ অবলার বক্ষের দুগ্ধ পান করেই একদা কোন ধ্বর্ষক বল পেয়েছিলো। এ অবলার বল প্রত্যেক নারীর মধ্যেই লুকানো আছে, কিন্তু ভয়, দ্বিধা, সংকোচ সে বলটিকে দমিয়ে রাখে।
আমি স্রষ্টার সৃষ্টি। আমি মানুষ। আমি পৃথিবীতে নারীরুপী মানুষ। আমার দুইখানা বক্ষ আছে, একটি যৌনাঙ্গ আছে, এটা তো সবাই জানে। আপনার মায়ের আছে, বোনের আছে, প্রেমিকার আছে,
এটা কি আমাদের নারীদের দোষ? এটা কি লজ্জার? ঘৃনার? অসহাংত্বের প্রতীক?
বিধাতা আমাদের এ অঙ্গগুলো দিয়েছে পৃথিবীর প্রয়োজনে, আমরা বিধাতার কাছ থেকে পুরুষদের কাছে আকর্ষণীয় হবার জন্য অনুরোধ করে, ভিক্ষা করে এই অঙ্গগুলা আনি নি। আমরা বিধাতার পৃথিবী টিকিয়ে রাখতে এই মাতৃরুপে আবির্ভূত হয়েছি। মা হবার জন্য অঙ্গগুলা নিয়ে জন্মেচ্ছি, আমাদের সন্তানদের পরম আদরে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমরা এই অঙ্গগুলোর অধিকারী হয়েছি এবং এ পৃথিবীর অস্তিত্বকে যত্নে টিকিয়ে রাখার জন্য জন্মেছি। কখনো কি কোন মেয়ের বক্ষযূগলের দিকে তাকিয়ে একবার ভেবে দেখেছেন এরকম দুটি বক্ষই একসময় আপনার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিলো? আমরা তো মানুষ, আমাদের মা আছে, মায়ের ভালোবাসা আছে বলেই তো আমরা মানুষ। যেই মেয়েটিকে আজ মাগি বলে গালি দিচ্ছেন, সেই মেয়েটিই একদিন ‘গি’ ব্যাতিত ‘মা’ তে পরিনত হবে যার পায়ের নিচেই রচিত হবে সন্তানের বেহেশতখানা। ”
৩৫টি মন্তব্য
মাহমুদ আল মেহেদী
চমৎকার একটা লেখা শেয়ার করেছেন। লেখাটা আমিও পড়েছি ফেইস বুকে।
লীলাবতী
লেখাটি এত শক্তিশালী যে সোনেলায় শেয়ার না দিয়ে পারিনি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
লীলাবতী
আমার যে কোন ধরনের পোষ্টে এই প্রথম মন্তব্য আপনার। আমার স্মৃতিতে এটি সংরক্ষিত থাকবে ভাইয়া।
মাহমুদ আল মেহেদী
কৃতজ্ঞতা ঝৃণী করলো আমায়। ধন্যবাদ
মাহমুদ আল মেহেদী
ঋৃণী হবে দু:খিত ।
তৌহিদ
চমৎকার একটি লেখা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। পুরুষ হিসেবে আমি লজ্জিত হলাম।
লীলাবতী
আমরা যেন আমাদের মেয়েদের সন্মানের মধ্যে রাখি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
তৌহিদ
শুভেচ্ছা জানবেন আপু
প্রহেলিকা
উনার লেখাটির প্রতিটি শব্দেই উপলব্দি করা যায় কতটুকু ক্ষোভ থেকে তিনি লিখেছেন। উনি প্রকাশ করলেও এমনো হাজারও নারী রয়েছেন যারা ঠিক এভাবেই ক্ষোভটাকে পুষে যাচ্ছেন। হয়তো তারা ধরেই নিয়েছে এ সমাজ আর পাল্টাবে না। বোরখা বা টি-শার্ট যা’ই পরুক না কেন, পশুগুলো তাদের ঘৃণিত কাজ করেই যাবে। ধিক, ধিক!
অবলা শব্দের ভেতর আসলেই অলিখিত একটা বল রয়েছে। যথার্থই লিখেছেন।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
লীলাবতী
আমরা এসব অপমান লুকিয়ে ফেলি প্রহেলিকা। এসব প্রকাশ করতে হয়না বলে আমরা শিক্ষা পেয়েছি পরিবার, সমাজ হতে। প্রতিটি মেয়ে, নারী বিভিন্ন ভাবে হয়রানীর শিকার।
আপনাকেও ধন্যবাদ প্রহেলিকা।
তৌহিদ
পোষাক বিষয় নয়, সমস্যা হচ্ছে আমাদের মানসিকতায়। মেয়েদের প্রতিবাদী হতে হবে। আমাদের পরিবারের মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি নিজেই শঙ্কিত!
লীলাবতী
মেয়েদের প্রতিবাদী হতে শিক্ষা দেয়া হয় না, নিপীড়ন কারী পুরুষদের ধারনা যে তাদের কন্যা, বোন, স্ত্রী, মা এরা এসব নিপীড়নের শিকার হন না, তাই তারা এমন সাহসী হয়। কিন্তু তারা যদি তাদের কন্যা, বোন, স্ত্রী, মা দের কথা জানতো তাহলে এমন অসভ্যতামি করত না।
তৌহিদ
সুন্দর বললেন আপু, ধন্যবাদ।
নিতাই বাবু
ওইসব কূমনা মানুষগুলোর জন্য নিজের স্ত্রী, কন্যা সাথে নিয়ে রাস্তায় বের হতে খারাপ লাগে। সরাসরি কিছু বলাও যায় না। ওদেরকেই বলা হয় নরপশু!
লীলাবতী
ওরা আসলেই নরপশু দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
এমন কোনো মেয়ে নেই যারা কোনো বাজে স্পর্শ ছাড়া জীবন কাটিয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ঘরে কিংবা বাইরে কোথাও তাদের নিরাপত্তা নেই। বোরখা-হিজাব কিংবা জিন্স-শার্ট কোনো পোষাকেই নারীরা নিরাপদ ছিলোনা।
পুরো লেখাটা পড়ে এটুকু বুঝলাম লেখিকা কতোটা ক্ষোভ থেকে লিখেছেন। লীলাবতী আপু শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনি মানেই জোরদার পোস্ট। নিয়মিত হোন, এইটুকু চাওয়া।
লীলাবতী
‘ এমন কোনো মেয়ে নেই যারা কোনো বাজে স্পর্শ ছাড়া জীবন কাটিয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ঘরে কিংবা বাইরে কোথাও তাদের নিরাপত্তা নেই। বোরখা-হিজাব কিংবা জিন্স-শার্ট কোনো পোষাকেই নারীরা নিরাপদ ছিলোনা।’ আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত নীলাপু। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। অত্যন্ত খুশী হয়েছি আপনি নিয়মিত লিখছেন দেখে।
নিয়মিত হচ্ছি আপু। অনেক দিনের অনভ্যাসে কিছুটা জড়তা। কেটে যাবে সহসাই।
ছাইরাছ হেলাল
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
উনি বলেছেন, সবাই বলতে পারে না।
পাশবিকতার এই ব্যাধি সাড়া দেশময় ছড়িয়ে পড়েছে।
মুক্তি কোথায় জানি না।
লীলাবতী
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া। কবে মুক্তি পাবো আমরা জানিনা আসলেই।
মনির হোসেন মমি
লেখাটি নিউজ ২৪ এ প্রকাশিত হয়েছিল।সেখানে অসংখ্য মন্তব্য এসেছিল যেগুলো পড়লে বুঝা যায় এ সমাজ পুরুষ শাষিত সমাজ এখানে নারীদের কথা বলার কোন অধিকার নেই।লেখাটি এক কথায় অনন্য,নিজেকে পুরুষ হিসাবে ভাবিয়ে তুলে আসলেই আমরা কি পুরুষ নাকি হিংস্র জানোয়ার।
আমরা যদি উন্নত বিশ্বের দিকে তাকাই তবে কি দেখি,পুরুষ-নারী বলে কোন কথা নেই সবাই সমান।এর সব কিছুর মুলে উভয়ের মন মানষিকতার প্রভাব।
লীলাবতী
কিছু অমানুষ পশুর মত হামলে পড়ে এসব লেখায়। এরা সত্যি সত্যি জানোয়ার একেকটি। ধন্যবাদ মনির ভাই।
ইঞ্জা
আমি পুরুষ হিসাবে লজ্জিত, আমি মর্মাহত, আমি ব্যথিত, এই দেশের মানুষ কখন বন্ধ করবে নারীদের উপর নির্যাতন তা আমার জানা নেই, শুধু জানি এই দেশের মানুষ আজীবনের জংলি, এদের স্থান গহীন জঙ্গলেই হওয়া উচিত, জংলিরা যেমন মনুষ্য মাংসে অভ্যস্ত, তেমনি এই দেশের পুরুষরা নারী মাংসে লোভাতু, এদের কাছে শিশুও যেখানে রেহাই পাইনা, সেখানে কিভাবে এক সাধারণ নারী সুরক্ষিত না, এই দেশের আইন এমনই আবাল আইন, যাকে সহজেই বৃদ্ধ আঙ্গুল দেখিয়ে যাকে খুশি তাকেই ধর্ষণ, নির্যাতন করা যায়, ছিঃ ছিঃ ছিঃ থুউউ…
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন লেখা শেয়ার করার জন্য, সাথে লেখিকাকেও আমার স্যালুট।
লীলাবতী
আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত ভাইয়া। পরিবার, আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীদের এ বিষয়ে সচেতন করে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারি।
ইঞ্জা
জ্বি আপু, একদম ঠিক বলেছেন।
শুন্য শুন্যালয়
কী বলবো বুঝতে পারছিনা। পোষাক এর ধোঁয়া তুলে যারা নোংরামি ধামাচাপা দিতে চায়, এদের সাথে কথা বলতে আমার ঘৃণা করে, শুয়োপোকার মতো।
উনি যেভাবে প্রকাশ করেছে সেভাবে আমরা নিজেরাই কখনো ভাবিনি। সত্যিই তো তারা বেশি এক্সপোজড এসব ডেঞ্জারে।
লেখাটি অসম্ভব ভালো একটি লেখা, যা শেয়ার হবার যোগ্য। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে লীলাবতী।
নিয়মিত লিখুন নিজেও।
লীলাবতী
লেখাটি শক্তিশালী ছিল বলেই শেয়ার দিয়েছি। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। পোষাক কোন বিষয় না। তাহলে বোরকা বা হিজাব নেয়া নারীরা হিংশ্রতার শিকার হতেন না। বরং এরা প্রতিবাদ করেনা বলে এদেরকেই প্রধান টার্গেট করে নরপশুরা।
জিসান শা ইকরাম
এই শেয়ারটি গতরাতেই পড়েছি।
লেখক তার নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন কিভাবে একজন মেয়ে হেনস্তার শিকার হয়।
আমাদের দেশের সমাজ নারীদেরকে জন্তু ছাড়া আর কিছু ভাবে বলে মনে হয় না,
নারীদের উপর নিপীড়ন অত্যন্ত স্বাভাবিক বলেই মেনে নেয় প্রায় সবাই।
শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
লীলাবতী
আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত ভাইয়া। আমরা এসব নির্যাতনকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার জন্য পরিবার হতেই শিক্ষা পাই। ধন্যবাদ আপনাকেও।
সাবিনা ইয়াসমিন
পোশাক নিয়ে লেখা পড়ে– দেখে–বলে আমরা মেয়েরা ক্লান্ত হয়ে যাবো, কিন্তু পিচাশ গুলোর কিছুই আসবে যাবেনা। সত্যিকারের পুরুষগুলো লজ্জায়, অপমানে আরো গুটিয়ে যাবে, কেউ কেউ নিজ বিবেক বুদ্ধি দিয়ে প্রতিবাদ করবে আর ঐ নরকের কীট গুলো সেই পুরুষদের হিজড়া অপবাদ দিয়ে পাগলের মতো সাঁকো নাড়াবে। আসলে পোশাক নয় সময় এসেছে নারীদের নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াবার, তাহলে ছাগল গুলো চোখ বন্ধ করে দিতো। নিজের মা বোন কন্যাদের নগ্ন দেহে ঘুরতে দেখলে এগুলোর অন্য নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে হতো না।
লেখিকাকে ধন্যবাদ নিজের কথা / অনুভূতি দ্বিধাহীন ভাবে প্রকাশ করার জন্যে।
চমৎকার পোস্ট শেয়ার দেয়ার জন্যে আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই। ভালো থাকুন, ❤❤
লীলাবতী
এমন সুন্দর মন্তব্যের অনেক ধন্যবাদ আপু। আমরা নারীরা কিভাবে যে ঐ সমস্ত নরপশুর হাত হতে নিস্তার পাবো তাই জানিনা। এসব হতে আমরা কখনো মুক্তি পাবো বলে মনে হয়না।
আপনাকেও ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপু।
অপার্থিব
প্রত্যেকেরই নিজস্ব পোশাক পরার অধিকার রয়েছে, ঠিক কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে কয়টা মেয়ে নিজের আগ্রহে বোরখা পড়া শুরু করে ? অধিকাংশ মেয়েকেই পরিবার থেকে বোরখা পড়া চাপিয়ে দেওয়া হয়। মেয়েরা এমনিতেই ছেলেদের থেকে বেশি পোশাক পড়ে তার উপর বাড়তি বোরখা তাদের জন্য মোটেও আরামদায়ক হবার কথা নয়। কৈশোর থেকে বোরখা পরতে পরতে অনেক মেয়ের মাইন্ডসেট এমন ভাবে তৈরী হয় যে প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পরও অনেকে এটা ছাড়তে পারে না। মেয়েদের বোরখা পরার পিছনে দায়ী ধর্মের মোড়কে পুরুষতন্ত্র সৃষ্ট কিছু সামাজিক, রাজনৈতিক প্রপঞ্চ। এই প্রপঞ্চগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করাকে যদি কেউ কটুক্তি ভাবে তবে সেটা তার জ্ঞান স্বল্পতার সমস্যা। তবে অবশ্যই স্রেফ বোরখা পরার কারনে কাউকে হেয় করা চরম নিন্দনীয়। বাংলাদেশের মত দেশে যারা বোরখা পড়ে তাদের চেয়ে যারা বোরখা পড়ে না তারা অনেক বেশি কটুক্তির শিকার হয়।
লেখাটা আবেগপ্রবণ এবং অনেক জায়গায় দুর্বল। রাস্তা ঘাটে চলার পথে মেয়েদের সম্মান করতে হবে এটা বোঝানোর জন্য কথায় কথায় মা-বোনের উদাহরন দেওয়া আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়। প্রতিটা শিশু মায়ের স্তনপান করে বড় হলেও মেয়েদের স্তন এক ধরনের সেক্স অর্গানও বটে। কাজেই মায়ের উদাহরন দিয়ে পুরুষ জাতির স্তন আকর্ষণ কমানোর চেষ্টাকে হাস্যকর শোনায়, এটা অবাস্তবও বটে।
ঘরে মা-বোন, বাপ-ভাই থাকুক কিংবা না থাকুক প্রতিটা নারী একজন স্বাধীন সম্পূর্ণ মানুষ। প্রতিটা মানুষের নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ আছে। অনুমতি ছাড়া একজন পুরুষ একজন নারীকে স্পর্শ করতে পারে না, অন্য কিছু তো দুরের কথা। এই বোধটা সবার মধ্যে জাগ্রত করতে হবে। নারীকে নারীর চেয়ে একজন মানূষ বলে ভাবাটা শিখতে হবে।
সিমন দ্য বোভয়ার বলেছিলেন- কোন নারী সমাজে নারী হয়ে জন্মায় না, সমাজ তাকে নারী হিসেবে গড়ে তোলে।
সমাজ প্রবর্তিত এই নারীত্বের ধারনা থেকে নারী -পুরুষ উভয়েরই বের হয়ে আসাটা জরুরী।
লীলাবতী
এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
নীরা সাদীয়া
এই আপুটি যে কথাগুলো বলে গেলেন,তার সাথে শতভাগ সহমত। সত্যিই এই অঙ্গগুলো আমরা ভিক্ষে করে আনিনি। এগুলো আমাদের অসহায়ত্ব নয়।
আসলে প্রতিটি পরিবারে যদি পুরুষকে পুরুষ হবার আগে মানুষ হবার শিক্ষা দেয়া হতো,তাহলে এরকম হতো না। অসাধারন একটা লেখা শেয়ার করেছেন।
লীলাবতী
ধন্যবাদ নীরা সাদিয়া। আপনিও লিখুন এসব বিষয় নিয়ে।
রাফি আরাফাত
আকৃতি দেখে ভাবছিলাম এটা না পড়ে আরেকটা পড়ি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে না পড়লে সব বৃথা যাইতো।