পেশাগত জীবনের প্রথম দিকে সারা সপ্তাহ কাজ করার পর
আবার শুক্রবারেও কোথাও বেড়াতে যাবার উপায় ছিল না ।
কারন, ঐদিন থাকতো পারিবারিক বন্ধুদের সাথে আড্ডার দিন।
যারা আমাদের খোঁজ খবর নেয়ার সাথে সাথে আড্ডা দিতে চাইতো
তাদের জন্যই ছুটির দিনটিতেও বাসায় থাকতাম।
ভালো মন্দ রান্না হতো, সবাই মিলে আড্ডা আর খাওয়া দাওয়া,
সব মিলিয়ে দিনটা একেবারে খারাপ যেত না ।
বাচ্চারাও দেখতাম বেশ আনন্দের সাথেই সময়টা কাটাতে পেরে
খুশি মনে হইচই করছে । বিকেল বেলায় কাছে ধারের কোন স্কুলের
মাঠে গিয়ে একটু খেলাধুলা করা ছিল ছুটির দিনের আলাদা আনন্দ।
আর
এখন আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা নতুন সংসার করছে
তারা প্রতি শুক্রবার বাচ্চাদের নিয়ে নগরের সব বড় বড় রেস্তোরাঁয়
খেতে চলে যায় । সারা সপ্তাহ কাজ কর্ম করার পর তাদের কাছে এই একটি দিন
একটু ঘুরে বেড়াবার ফুরসত মেলে – স্বাভাবিক ভাবেই বাচ্চাদের
নিয়ে হইচই করে কাটায়। বাচ্চারাও তাদের বাবা-মা দের ওই একটি দিন একটু
বেশিই আশা করে। তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই ।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের চাহিদা অধিক।
জীবনটা রোবটের মতো না হয়ে যায়, তাই যে যেমন পারছে
একটু রিলাক্স থাকার চেষ্টা করছে অথবা বলতে পারেন একটু আনন্দ ফুর্তি
করে ছুটির দিনটা কাটিয়ে দিচ্ছেন।
এখন আসল কথায় আসি।
আজ শুক্রবার ,দুপুরে বাসায় খেতে বসে ভাতের গামলার সাইজ দেখে আমি
রীতিমত আঁতকে উঠলাম । গামলা না বলে ওটাকে একটা মাঝারী সাইজের
তরকারীর বাটি বলাই শ্রেয় । আর টেবিলে মাত্র আমরা দুজন প্রানী,
আমি আর আমার গিন্নী।
ছেলে অফিস করছে বন্ধের দিনেও
মেয়ে স্কুল করছে বন্ধের দিনেও।
বাসায় কোন মেহমানও নেই !
তাই খাবার লোক মাত্র আমরা দুজন !
আহা !
একটা সময় ছিল
ছুটির দিন দুপুরে আমার বাসায় মেহমান সহ
প্রায় ২০/২৫ জন লোকের জন্য রান্না হতো ।
সে এক জমজমাট আসর।
সময় আর পরিস্থিতি মানুষের সংস্কৃতিও পাল্টে দেয়।
জীবনাচরণ পাল্টে দেয় একেবার অনিচ্ছাকৃতভাবে – অজান্তেই।
সবাই যেন কেমন হয়ে যাচ্ছি
বাস্তবতা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, কে জানে !
********************************************************
শহর খিলগাঁও
০৬/-৩/২০১৫ইং ।
১৬টি মন্তব্য
মেহেরী তাজ
‘সময় আর পরিস্থিতি মানুষের সংস্কৃতিও পাল্টে দেয়।
জীবনাচরণ পাল্টে দেয় একেবার অনিচ্ছাকৃতভাবে – অজান্তেই।’ একমত ভাইয়া।কিন্তু Fry ডে কেন?
কবীর হুমায়ুন
ছুটির দিনটা যখন শূন্য শূন্য লাগে, সেই দিন টি তো ফিস ফ্রাই’র মতোই মনে হয় , তাই না ?
জিসান শা ইকরাম
সময়ে কত কিছু পালটে যায়,
মানুষের আবেগ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে যায়।
সবার সাথে একসাথে ভালো থাকা মানুষগুলো একাকী থাকতে পারে না।
অনেক দিন পরে লিখলেন 🙂
শুভ কামনা।
কবীর হুমায়ুন
জি, আবার নিয়মিত হব।
জিসান শা ইকরাম
লেখাটা কবিতার মত কাঁটা কাঁটা কেন ?
কবীর হুমায়ুন
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না ।
প্যারা হয়তো কেটে গেছে ।
আমি অথবা অন্য কেউ
যাচ্ছে যেখানে যাবার সেখানেই। আমরা নিজেদের যেকোন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে ফেলি, মানুষ না আমরা??
কবীর হুমায়ুন
সেটাই তো আমার বক্তব্যের মুল সূর ।
ধন্যবাদ ।
রিমি রুম্মান
যায় দিনগুলো বরাবরই ভাল। আসে দিনগুলো কেমন যেন এলোমেলো ।
কবীর হুমায়ুন
ঠিক বলেছেন । পড়ার জন্য ধন্যবাদ
আবু জাকারিয়া
এমনই ঘটে। এটাই বাস্তবতা।
ছাইরাছ হেলাল
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না……………
কবীর হুমায়ুন
থাকে না তো ………!!
খেয়ালী মেয়ে
সময়ের ব্যবধানে কতো কিছুই যে হারিয়ে যেতে দেখলাম–আরো কতো কিছু যে হারিয়ে যাবে…. 🙁
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সবই কালের বিবর্তন। -{@
ব্লগার সজীব
ভালো লিখেছেন হুমায়ুন কবীর ভাই।