দেখেছি সেই ছোটবেলা থেকেই প্রতিবেশী চাচি প্রতিদিন মার খেতেন, আমাদের বাসায় এসে কাঁদতেন তবুও মানিয়ে নিয়ে ছিলেন সেই জীবন।
সদ্য বিবাহিত কিশোরীকে দেখেছি যৌতুকের শিকার হতে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবা বাড়ি চলে আসতে। সবার অনুরোধে সেও মানিয়ে নিয়েছিল শশুরবাড়ি।
মানিয়ে নেওয়ার জন্য আমার বান্ধবী কে দেখেছি মাতাল চরিত্রহীন স্বামীর সংসার করতে। বলেছিল দুটো বাচ্চা,ওদের জন্য বেঁচে আছি নইলে কবেই মরে যেতাম।
মানিয়ে নিয়েছিল সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মেধাবী আপুটা যার জীবনের লক্ষ্য ছিলো চাকরি করবে, পারেনি সে। মানিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে জিতবে বলে এখন সে সংসার সামলাতে ব্যাকুল।
যে মেয়েটা বাবার আদুরে কখনও কোনদিন কারো কথা শোনেনি, সেও মানিয়ে চলে।
যে মানিয়ে নিতে পারেনা আমাদের সমাজে সে পায় পাগলের উপাধি, বেপরোয়া, খারাপ মেয়ে মানুষের উপাধি।
মানিয়ে নিয়েছিল যারা তাদের কি কোনোদিন কেউ দিয়েছিল যোগ্য সম্মান? কিছু মানুষ দূর থেকে বলেছিল মেয়েটি কত কষ্ট সহ্য করে সংসার করছে। আত্মীয় স্বজন কে দেখ ভাল করতে দেখেছি আমার মা শাশুড়ি কে। কজন মনে করে তাদের, কজন খোঁজ নেয় আপনি কেমন আছেন?
কেউ হয়ত মানিয়ে নেবার কথা জানেই না, কে কিভাবে মানিয়ে নিয়েছে, নিচ্ছে। আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত আমি আপনি আপনারা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি সুখের আশায়।
মেয়েরা সব পারে। আমার মা, আমার শাশুড়ি, ভাবি, বোন প্রতিবেশী সবাই মানিয়ে নিয়েছিল। আজো সবাই মানিয়ে নিচ্ছে সব। একদিন হয়ত অনেকে মানিয়ে নিতে পারবেনা সেই সময় টা এই সমাজ কি মানিয়ে নিতে পারবে? সমাজের সেই মনের জোড় আছে তো??
২৯টি মন্তব্য
শাহরিন
মানিয়ে নেয় প্রথমে বাবা মায়ের মুখের দিকে চেয়ে তারপর সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। বাবা মায়েরা যদি মেয়ে সন্তানদের নিজেকে ভালোবাসা শেখায় আর পাশাপাশি যদি পকৃত ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ায় তবে মানিয়ে নেয়ার সংখ্যা একটু কমতে পারে। আমি লেখক নই তবুও মনে হচ্ছে ভালো একটি বিষয় লিখেছেন তবে লেখাটি আরেকটু বড় হলে ভাল হতো।
শিরিন হক
ধন্যবাদ। ভালোবাসা বাবা মায়েরা সবসময়ই সেখান আর পাশেও দাড়ান কিন্তু আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা,ধর্মীয় চিন্তাভাবনা, আর শিক্ষা সল্পতার কারনে মানিয়ে চলতে হয়।পাশে পুরুষদের অনেক সময় মানিয়ে নিতে হয়। পরবর্তী তে পুরুষদের মানিয়ে নেওয়ার কথা লিখবো।
শাহরিন
অনেক বাবা মা আছেন যারা নিজের সম্মানের দায়ভার সন্তানের মাথায় চাপিয়ে দেয় অথচ তারা জানেই না নিজের সম্মান নিজেকে ধরে রাখতে হয়। পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় থাকবো আপু।ধন্যবাদ।
শিরিন হক
আছেন তবে পাশ্চাত্যের দেশের মত নই বলেই আমাদের সংসার আজো টিকে আছে। সংসারের কতটা বাবা মা সচ্ছল। কতটা বাবা মা মেয়ের ভার নিতে পারে শেষ বয়সে। সব বাবা মা চায় মেয়ে সুখে থাক আর কতজনই বা বলে নিজের কস্টের কথা। তারা সব বিবেচনা করেই মানিয়ে নেয়।যারা পারে তাদের সংখ্যা খুব কম আপু।
ছাইরাছ হেলাল
বেশির ভাগ সময়ে অনিচ্ছায়-ই মানিয়ে নিতে হচ্ছে, সমাজ-পরিস্থিতির চাপে।
এই সমাজ ব্যবস্থাটি পুরোন, তাই এটি সহসা ভেঙ্গে কেউ বেড়িয়ে যাবে এমন নয়।
কেউ কেউ সাহসী হয়ে তা পেরেছে, সবাই তা না। অতএব ভোগান্তি চালু আছে/থাকবেও।
শিরিন হক
একদম।ধন্যবাদ মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আরজু মুক্তা
মেনে নিলেও ভোগান্তি,না নিলেও ভোগান্তি।।পুরুষতন্ত্র সমাজের দোষ!
শিরিন হক
শুভকামনা আপু।আপনি আমার প্রতিটি লেখা পড়েন মন্তব্য করেন কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি। ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
সব লিখার মধ্যে শিক্ষণীয় কিছু থাকে।।আমি ভালোটা নেয়ার চেষ্টা করি।
শুভকামনা
তৌহিদ
মানিয়ে নিতে নিতে একসময় সে নারীর সবটুকু স্বাধীনতা খর্ব হয়ে যায়। আমাদের পরিবার সমাজে এটা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। এই গন্ডি থেকে নারীদের বেড়িয়ে আসতে হবে।
শিরিন হক
কজন পারে বা পারবে?
ধন্যবাদ জবাব সুন্দর মন্তব্য আর লেখাটা পড়ার জন্য
তৌহিদ
শুভকামনা জানবেন আপু।
মাসুদ চয়ন
মেয়ারা তো শিল্পের দর্শন।তারা পারে,সবকিছু পারে।অন্ধকারে আলো আনতে পারে,অন্ধকারে ডুবিয়ে দিতেও পারে।নারী ছাড়া পৃথিবীকে সুন্দর মনে হয়না-মানুষের মনে প্রেম/আনন্দ/অনুরাগ/বেদনা/অনুশোচনা শিহরণ তোলেনা।
তুমিই মমতাময়ী জাগ্রতচিত্ত্ব,তুমিই ছলনাময়ী বিনাশী বিশেষজ্ঞ।
মাসুদ চয়ন
মেয়েরা
শিরিন হক
ধন্যবাদ মত প্রকাশের জন্য
রাফি আরাফাত
মানিয়ে নেওয়াটা আমি নেগেটিভলি নিচ্ছি না। কারন মানিয়ে নেওটাও এক প্রকার ক্ষমতা, যা আমাদের কাছ থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে
শুভ কামনা
শিরিন হক
মানিয়ে নিচ্ছে বলেই আমাদের সংসার টিকে আছে। তবে কিছু মানুষের মানিয়ে নেওয়ার গল্পটা ভিন্ন সেটা মেনে নেয়া যায় কি?
ধন্যবাদ আপনাকে
নিতাই বাবু
মায়ের জাতি নারী বলে কথা! আমার মেয়েও শত দুঃখকষ্ট মানিয়ে নিয়ে স্বামীর সংসার নিজের আঁচলে বেধে রেখেছে। আগে বছরে বারোমাসের মধ্যে ৯মাসই আমার এখানে থাকতে হতো। আজ প্রায় ৭বছর ধরে মেয়ে আমার কোমরে কাচা দিয়ে সংসার গোছানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
আপনার লেখা পড়ে আমার মেয়ের কথা মনে পড়ে গেল বিধায়, মন্তব্যের আমার মেয়ের জীবন নিয়ে কিছু জানালাম।
শিরিন হক
দাদা আপনার অনুভুতিকে নাড়া দিতে পেরেছে আমার লেখা ধন্য আমি। সংসারে আমরা সবাই মানিয়ে চলি। শুভকামনা রইলো
জিসান শা ইকরাম
সামাজিক দৃষ্টি ভংগিতে এই মানিয়ে নেয়ার পুরো দায় দেয়া হয়েছে নারীদের। যে যত বেশি মানিয়ে নিতে পারবে, সে তত ভালো নারী।
আমার মা মানিয়ে নিয়েছে, বোন মানিয়ে নিচ্ছে, আমার স্ত্রীও মানিয়ে নিচ্ছে।
নিষেধের বেড়াজালে আটকে রেখে বড় করি আমরা আমাদের মেয়েদের, একসময় বিয়ের আগেই মেয়েরা বুঝে যায় তাদের মানিয়ে নিতে হবে।
এই শৃং্খলের কারনেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠির কোনো ভুমিকা নেই আমাদের সমাজে।
এমন লেখা আরো লিখুন।
শিরিন হক
ধন্যবাদ জনাব। সত্যি আমরা পিছনে আছি মানিয়ে নেওয়ার শিকলে বন্দী হয়ে।
সাবিনা ইয়াসমিন
মানিয়ে নেয়া জীবন এক সময় সব কিছু মেনে নেয়া শিখে যায়। একদিন মেনে নেয়ার বিরুদ্ধেও মানুষ লড়াই করবে। সেদিন, সমাজ কি মেনে নিতে পারবে ? মনে হয় পারবে। কারন সময় বদলের সাথে সমাজেও বদল আসে।
ভালো লাগলো একান্ত অনুভুতি। আরও লিখুন, শুভ কামনা সব সময় 🌹🌹
শিরিন হক
পাশ্চাত্যের দেশের দিকে তাকিয়ে আমরা অহংকার করতে পারি আমরা আমাদে সংসার করতে পারি দেখো আমরা টিকে আছি।
হম একদিন বদল আসবে সমাজ ও মেনে নিবে তবে সংসারের বন্ধন বাঙালীর অহংকার। তারা মানিয়ে নিতে জানে আদিম কাল হতে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নারীর প্রতি অবিচার বদল হোক।
বন্যা লিপি
মেয়েরা সব পারে। এই একটা লাইনের পর আর কোনো প্রশ্ন বা উত্তরের অপেক্ষা বাকি থাকে? মেয়েরা সব পারে বলেই মানিয়ে নেয়ার মতো ভীষণ জগদ্দল পাথর সেঁটে দেয়া হয় পারিবারিক সামজিক প্রেক্ষাপটে। যে নারী মেনে /মানিয়ে নিতে চায়না বা মানিয়ে নেয়না, সে নারীর এ সমাজে কোনোই সন্মানীয় স্থান নেই, থাকেনা। যুগ যুগান্তর ধরে চলে আসছে এ রিতী। ওই যে লিখলে! মেয়েরা সব পারে! পারতেই হয় মেয়েদের, সে ছলে বলে কৌশলে যে করেই হোক।
শিরিন হক
ধন্যবাদ মিতা। তোমার প্রতি ভালোবাসা অবিরাম।
জবাব পরে দেবো
বন্যা লিপি
ডরাইছি কিন্তু মিতা 😑😑😑😑
শিরিন হক
মানিয়ে নিতে পারছে বলেই সুযোগ সন্ধানী পুরুষেরা আজো চাপিয়ে দিচ্ছে অনেক কিছু। ভালোবাসা বলো আর ত্যাগ বলো মেয়েরা সব পারে। যখন তার পেরে ওঠার কৌশল পালটে যাবে, যখন যে একাই বাঁচতে শিখবে প্রতিবাদ করে নিজের অধিকার টুকু ভোগ করতে করতে পারবে তখন প্রশ্ন তো আসবেই তখন মেনে নিতে পারবে?
মেয়েরা সব পারে মানিয়ে নিতে এবং মানাতে।
ভয়ের কিছু নেই মিতা সব পড়ার পর যখন তোমার কাছে এলাম মোবাইলে চার্জ শেষ উত্তর তাই দিতে পারিনি। খুব ভালো থেকো।
মোঃ মজিবর রহমান
বেশ কিছুদিন পরে আমার আত্বার ঘরে এলাম।
ভাগে হইতো মেয়েরাই বেশি মানিয়ে নেই কিন্তু ছেলেদের মাঝেও এর সংখ্যা আছে। বিশ্বাস না হলেও আছে। অনেক ছেলের সংস্যারের ইচ্ছা না থাকলেও করে সন্তান্দের মুখপানে চেয়ে আপু। বর্তমানে ছেলেরাও নির্যাতনের শিকার হয় তা নগণ্য।
ার পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষরা বেশি ক্ষমতা ভোগ করে। আবার এই ক্ষমতা অবৌধ্য ব্যাবহারু করে।
সবচেয়ে বড় কথা কি জানেন আপু আমরা কি চাই, কি করব, কি ভাল এটাও নিরধারন করতে পারিনা? এই সমস্যা খুব খারাপ। বড় আকার ধারন করএছে মনে আমার ।
লেখাটি মন ছুয়ে গেল।
মনির হোসেন মমি
মানিয়ে নেয়ার নামই জীবন।যে জীবনে মানিয়ে নেবার ক্ষমতা নেই সেই জীবন হয় পাগলের জীবন।তবে এ লেখায় যে প্রসঙ্গ এসেছে তাতে এ ভাবে মানিয়ে নিতে যদিও সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না তবুও মানিয়ে বা মেনে নিতে বাধ্য হন কারন এ সমাজ পুরুষশাসিত সমাজ।লেখাটা ভাল লাগল।