মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে।তিনি কোন ধর্ম বিশ্বাস করতেন না।ধর্মে অবিশ্বাসী একজন মানুষকে নির্মম ভাবে খুন করতে হবে এমন বিধান কোন ধর্মে আছে বলে আমি বিশ্বাস করিনা। আমি এই জঘন্য হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই।
মানবতার মৃত্যুঃ
জিসান ভাইর ফেইসবুক পোষ্ট থেকেঃ
গতরাতে তিনি এই লেখাটি দিয়েছিলেন,তার লেখাটি সত্যি প্রমাণ করে আজ সকালে ফেইসবুকেই ফটো পাবার পরে ফটো যুক্ত করেছেন পোষ্টে। কি আছে ফটোতে?রক্ত মাখা অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী একা তোলার চেষ্টা করছেন স্বামীর রক্তাত্ত দেহ,ডাকছেন মানুষদের হাত উচু করে। কিছু মানুষ দেখছে এসব,কেউ এগিয়ে আসছে না।মানবতা আসলে কোথায়? বেঁচে আছে কি মানবতা?
”ব্লগার অভিজিৎ রায়কে যখন কোপানো হচ্ছিল, তার ফটো তুলেছেন তো আপনি? ফটো আপলোড দিবেননা? নাকি কোপানো দৃশ্য দেখে ফেইসবুকে এক আহবান দিয়েছেন- একজনকে কুপিয়ে মেরে ফেলছে সবাই প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন ‘। অথবা ‘ একজন মানুষ প্রতিরোধে এগিয়ে এলো না, অথচ কত শত চোখের সামনে ঘটলো ঘটনা ‘।
ফেইসবুকে হুমকি ধামকির কথাই লেখা যায়, বাস্তবে না।
মুক্ত চিন্তার লেখালেখি করে কি লাভ হয়েছে? টিএসসি মুক্ত চিন্তার কোন স্থান নয়, তাই প্রান চলে যায়।
# লেখায় ফটো দিলাম ২৭ ফেব্রুয়ারী সকাল ৯ টায়। অভিজিৎ এর স্ত্রী একা তুলছে অভিজিৎকে,ডাকছে মানুষকে। ফটো তোলা জরুরী ছিল,এমন ফটো তুলতে পারা ভাগ্যের বিষয়। ” — জিসান শা ইকরাম।
২৩টি মন্তব্য
শিশির কনা
হায়রে মানবতা।একজন নারী রক্তাত্ত অবস্থায় একজন মানুষকে একা টেনে তুলছেন,আর পাশে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে কিছু মানুষরূপী অমানুষ।মনে হচ্ছে যেন সিনেমার স্যুটিং চলছে,দর্শক দাঁড়িয়ে স্যুটিং দেখছে।
প্রজন্ম ৭১
মানবতার মৃত্যু হয়েছে।
ব্লগার সজীব
ফটো দেখে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের মুখে থুতু দিতে ইচ্ছে করছে।কতগুলো অমানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে।ব্লগার অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুর তীব্র নিন্দা করছি।
প্রজন্ম ৭১
এরা তামাশা দেখছে।
আজিজুল ইসলাম
দৃষ্টান্তমূলক কঠোর-কঠিন সাজা চাই এই জঘন্য হত্যাকান্ডের।
প্রজন্ম ৭১
মানুষ খুনের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক কঠোর-কঠিন সাজা চাই।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অদ্ভুত এক চেতনাহীন জাতিতে পরিনত হয়েছি আমরা। একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে হাটছি..বেশ খানিকটা সামনে এগিয়ে, হঠাতই পিছন থেকে ক্রেক করে শব্দ হওয়াতে ঘুরে দেখি মুহূর্তেই লোকের জটলা। বুঝতে পারছিলাম কি ঘটেছে, আবার এও বুঝতেছিলাম যে মানুষজন সার্কাস দেখছে! কি করবো? উল্টো হেটে অনেকটাই কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে কয়েকজনকে অনুরোধ করে যাচ্ছি দুর্ঘটনাকবলিত লোকটাকে সেভ করতে, সব্বাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। এদিকে রক্তে রাজপথ ভেসে যাচ্ছে। দৌড়ে আবার অফিসে ঢুকলাম, কলিগ দুজনকে পাওয়াতে তাঁরাই লোকটাকে হসপিটালাইজড করলো।
এ ঘটনার পর থেকে আজও আমি ব্যাগে জরুরী নম্বরসহ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখি, অন্তত দুর্ঘটনায় মারা গেলেও যাতে লাশটা জায়গামতো পৌছে।
প্রজন্ম ৭১
আমাদের সমাজ থেকে মানবতারই মৃত্যু হয়েছে আপু।আপনার মত দু একজন মানবতার বাতি কিছুটা জ্বালিয়ে রাখছেন।
সঞ্জয় কুমার
ধার্মিক হতে গিয়ে আমরা অমানুষ হচ্ছি না তো !!
ছবি গুলো যতবারই দেখছি ততবারই নিজের কাছে নিজেই ছোট হয়ে যাচ্ছি ।
কাল সারারাত ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি
প্রজন্ম ৭১
আমি আজ ভোর হতে স্বাভাবিক হতে পারছিনা।নিজকে বুঝাতে পারছিনা,অমানুষ গুলো কিভাবে দূরে দাঁড়িয়ে এই ঘটনা দেখছে !!
ফাতেমা জোহরা
আমি বাকরুদ্ধ, আমি নির্বিকার।
প্রজন্ম ৭১
আমিও আপু।
প্রহেলিকা
কিছুই বলার নেই, আজ যারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে তাদেরই কেউ একজন এভাবেই পরে থাকবে ফুটপাতে, সেই দিন আর বেশি দেরী নেই। মানবতা শব্দটা শুনলেই এখন ঘৃণা লাগে, কিসের আবার মানবতা!
শুন্য শুন্যালয়
ঘেন্নায় মুখ কুঁচকে যাচ্ছে। ছি: জানাচ্ছি এদের। শুধু ছবি কেন, খুনীদের পেছন পেছন দৌড়ে ভিডিও করবার দৃশ্যও দেখেছি আমরা আগে। কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। হত্যাকারিদের ফাঁসি চাই, আর এইসব নরপশুদের?
রিমি রুম্মান
কাকে বলবো আমি আমার ক্ষোভের কথা ?
কাকে জানাবো আমি আমার নালিশ ?
বৃষ্টিহত ফাহিম
“ফটো তোলা জরুরী ছিল,এমন ফটো তুলতে পারা ভাগ্যের বিষয়”
কিছুই বলার নাই
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কি বলব আমি বাকরুদ্ধ -{@
মোঃ মজিবর রহমান
একদল দাঁড়িয়ে দেখছে
আরেক দল ছবি তোলায় ব্যাস্ত।
হায়! মানুষ হায় মানবতা।
জিসান শা ইকরাম
আমরা যেন এমন দর্শক না হই
আমরা যেন আমাদের বিবেককে বন্ধী না করি
আমরা যেন মানবতাকে জাগিয়ে রাখি।
নতুবা–
একদিন এমনি করে আমাদের লাশ পরে থাকবে
লাশের মিছিলে শরীক হবো আমরা
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে দর্শকেরা………
লীলাবতী
এই খুন না হলে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবেনা মনে হয়।ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসীদের ধর্মে পরিনত করছে এই উগ্র মুসলিমরা।
ছাইরাছ হেলাল
হত্যাকারীর সন্ধান আমরা পাব কিনা যানি না।
হত্যা হত্যাই। বিচার চাই।
কৃন্তনিকা
ঘটনাটি জানার পর থেকে কেমন লাগছে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এরকম ঘটনা সামনে আরো কত ঘটবে সেটাই এখন ভাবার বিষয়। কোন কিছুতেই মন নিবিষ্ট করতে পারছি না। উনার স্ত্রীর ছবি ভাসছে চোখের সামনে। নিজের ভালবাসার মানুষকে খোয়ালেন এতজনের সামনে এবং এতোটা নির্মমভাবে… আমরা কেউই নিরাপদ নই… অনেক কিছু ঘুরছে মাথায়… মনে হচ্ছে আমরা জাতি হিসেবে একটা অনুভুতিশুন্য জাতিতে পরিণত হয়েছি। চোখের সামনে হবে, But we don’t care, আমার তো কিছু হয় নি, আমি তো বেচে গেছি, তাই না? কিন্তু যদি হয় সেদিনও কেউ এগিয়ে আসবো না।
আমাদের সব সূর্যসন্তানেরা ১৯৭১এই হারিয়ে গেছে। বেঁচে আছি আমরা কাপুরুষের মতো, তেলাপোকার মতো, বেঁচে থাকাটাই মুখ্য…
প্রজন্ম ৭১
আমি দুঃখিত যে পোষ্ট দেয়ার পরে যথেষ্ট সময় পাইনি বলে সবাইকে আলাদা আলাদা উত্তর দিতে পারিনি।পোষ্ট এর সমস্ত পাঠক এবং মন্তব্যকারীকে ধন্যবাদ।