চৌদ্দ বছরের মেয়েটি বসে আছে বড় জায়ের ঘরে। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। জা নিজেও ঘুমাতে চাইছে, কিন্তু মেয়েটির জন্যে পারছে না। মেয়েটির চোখে ভয়। অশ্রুর দাগ গাল থেকে এখনো মুছে যায়নি। গত একসপ্তাহের বিভৎস স্মৃতি দগদগে হয়ে আছে মেয়েটির গায়ে। বাহিরে পতিদেব দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, মেয়েটিকে নিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার জন্যে। মেয়েটি রাজি হচ্ছেনা। শেষমেশ জা বোঝাতে শুরু করলো…
__ এমন করোনা বোন। মেয়েদের জন্ম হয়েছে স্বামী কে খুশি রাখার জন্যে। আল্লাহ তায়ালা মেয়েদের বানিয়েছে স্বামী-সন্তান-সংসারের দেখাশোনা করতে। আমাদের উচিৎ স্বামীকে সর্বাবস্থায় আনন্দে রাখা। ঘরে যাও, প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও পরে ঠিক হয়ে যাবে।
__ কিন্ত উনি আমাকে খুব কস্ট দেয়। আমার অনেক ব্যাথা করে। আমাকে আমার মার কাছে নিয়ে যান। আমি এখানে আর থাকবো না।
মেয়েটির অনুরোধ রাখা হয়নি। ফিসফাস কথাবার্তা আর হাসাহাসি শেষে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় অন্ধকার নরকে। চিৎকার, কান্না, ধমক, হুমকির পর নিরবতা নেমে আসে। রাত হয়ে যায় আরও কালো…অন্ধকার।
__ ওতো তোমারই। বিয়ে করেছো যখন, তোমারই থাকবে। ওকে এতো কষ্ট দিওনা ভাই। বাচ্চা মেয়ে, আস্তে আস্তে সব বুঝবে।
__ বিয়ের পর মেয়েরা বাচ্চা থাকেনা। ভালো ভাবে না বুঝলে আমি বোঝানোর কায়দা জানি। ভাবি, আপনি ওকে আর আস্কারা দিবেন না প্লিজ।
অত:পর, মেয়েটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে তার মায়ের কাছে ফিরে এসেছিলো। গল্পটি এখানে থেমে গেলেই হয়ত ভালো হতো। কিন্তু নিয়তি খুব নিষ্ঠুর। দুই বছরের মাথায় মেয়েটি যখন সুস্থ হলো, তখন সে আসলেই অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছিলো। সে বুঝেছিলো,তার উপর যা চলছে ওটাকে ধর্ষণ বলে। আর এর থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই।
একযুগ পর_
__ তুমি জানো তোমার হাজব্যান্ড পরকিয়া করে?
খারাপ মেয়েদের কাছে যায়।
__ জানি।
__ জেনেও চুপ করে আছো! এটা ঠিক না। হাজব্যান্ড পরনারীতে আসক্ত হলে সব দোষ মেয়েদেরই থাকে। এর অর্থ হলো, ওয়াইফ হাজব্যান্ড কে চাহিদামত খুশি রাখতে পারছেনা।
__ স্বামী কে খুশি রাখা স্ত্রীর কর্তব্য। সে যদি পরনারীতে খুশি থাকে থাকুক। আমি তাকে অখুশি দেখতে চাইনা।
__ আজব! এমন স্ত্রীর কথা জন্মেও শুনিনি। তুমি এখনো পাগলই আছো!!
দেড়যুগ পর__
__ এখনো তোমাকে ঠিক করতে পারলাম না। কতকিছু করলাম,পরকিয়ার নাটক পর্যন্ত করলাম। তবুও তুমি ধরা দিলে না। তুমি চাইলে সব করতে পারি, শুধু অনুরোধ করছি আমাকে ভালোবাসো। নিজেকে সমর্পণ করো।
__ আগে নিজেকে বদলাও। স্ত্রী কে সম্পত্তি নয়, সম্পদ ভাবো। ভালোবাসা রেপ করে পাওয়া যায়না। শ্রদ্ধা-সম্মান-আদর দিয়ে পেতে হয়।
দুইযুগ পর __
__আপা আপনি এটা কি বলছেন? স্বামীর হাতে স্ত্রী রেপ হয় কিভাবে! ওটাতো স্বামীর হক।
__ স্ত্রীর হক কি?
__ কি যে বলেন আপা! আপনি কত শিক্ষিত। নামাজ-রোজা-কোরআন-হাদিস এগুলো আমাদের চেয়েও আপনি অনেক ভালো জানেন। তবুও বলি শোনেন, ফেরাঊন ছিলো পৃথিবীর সব চেয়ে খারাপ লোক। এই খারাপ লোকের অত্যাচারে কত কষ্টই না পেয়েছেন তার স্ত্রী। তবুও স্বামীকে ত্যাগ করেননি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে ভালোবেসেছেন। এই জন্যে আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেশত দিয়ে দিয়েছেন। আপনার স্বামীতো আর ফেরাঊনের মতো অত্যাচারী না। তিনি আপনাকে অনেক ভালোবাসেন, আমরা দেখি। আপনি হেটে গেলে আপনার স্বামী পারেনা ঐরাস্তায় ফুল বিছিয়ে দেন। আল্লাহ আল্লাহ করেন। আল্লাহ আপনার ত্যাগের বিনিময়ে অবশ্যই বেহেশত উপহার দিবেন।
এই রকম করে প্রকাশ্যে হাজারো কিশোরী-নারী বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হয়/হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পরপুরুষ দ্বারা ধর্ষণে আক্রান্ত হলে বিচার চাওয়া যায়,ক্ষেত্র বিশেষে পাওয়াও যায়। কিন্ত বিবাহ পরবর্তি নিজ স্বামী দ্বারা দৈহিক নির্যাতনের জন্যে বিচার চাওয়া/পাওয়া হয়না। পরিবার, সমাজ, ধর্ম তখন সেটা দেখতে থাকে। কেউ যদি রীতিগত ধারা অমান্য করতে চায়, কেউ যদি স্বেচ্ছামুক্তি পেতে চায় তাহলে প্রশ্ন আসে…
★ কেন? আপনি কি অন্য পুরুষে আসক্ত !?
মুখ খুলে প্রতিবাদ করা হয়না। সব নারীরা নারীবাদ বোঝেনা, মুক্তমনা হতে পারেনা। অভিশপ্ত জীবন বয়ে বেড়াতে হয়.. হয়তো এর বিনিময়ে পরকালে বেহেশত মিলবে..
৩২টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
নারীদের চাওয়া পাওয়া সব সময়ই উপেক্ষিত হয়।
লেখায় বিস্তারিত কমেন্ট নিয়ে আসছি,
সাবিনা ইয়াসমিন
আচ্ছা, আসুন।
সকাল স্বপ্ন
বাস্তবিক কথা বলতে এই সমাজ অনেক মানুষ ই
মেয়েদের ভোগ ও সন্তান জন্মের মেশিন মনে
করে থাকে,
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিয়ে মানে এটার বৈধতা
আমার এক বন্ধুকে এই বিষয় এ সচেতন করেছি।
তবে সবার বন্ধু সমাজ যদি বিষয় টা নিয়ে সচেতন হয় তবে অনেকের সচেতন তা আসবে।
লিখা – বাস্তবিক ও মৈালিক।
মাসুদ চয়ন
শিক্ষনীয় মৌলিক গল্প।আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমন সময়ে এসেও পুরোপুরি কুসংস্কার মুক্ত হতে পারেনি।এমন হাজার হাজার কম বয়সী মেয়েকে নির্গৃহিত করে রাখা হচ্ছে যুগে যুগে কালেকালে।এখন আধুনিক যুগ,মুক্তির জন্য উপযুক্ত সময়।অন্ধ বিবেকগুলো জাগ্রত হউক।
সাবিনা ইয়াসমিন
সময় পালটায়, পরিস্থিতি বদলায়, কিন্তু তারপরেও কিছু কিছু ক্ষেত্র থেকে মানুষ বের হয়ে আসতে পারে না। কারন সমাজ যারা তৈরি করে তাদের একটা বড় অংশ ধর্মের পাহারাদারীও করে। এসব শৃঙ্খল থেকে সবাই মুক্ত হতে পারেনা। হয়তো ধিরে ধিরে এসব শিথিল হয়ে আসবে, কিন্ত কবে, কখন হবে এখন বলা যাচ্ছে না।
অনেক ধন্যবাদ চয়ন, শুভ কামনা 🌹🌹
শিরিন হক
বিয়ের পর একটি মেয়ের হাতে তুলে দেয়া হয় মকসেদুল মোমিন। যাকিনা নারীর স্বামীর প্রতি বস্যতা স্বীকার করার মন্ত্র থাকে। যেখানে এক তরফা স্বামির প্রতি আনুগত্যের শিক্ষা।
সময় বদলেছে সেই ধারনা থেকে নারী এখন বাইরে বেরিয়ে এসেছে। ধর্মের সঠিক জ্ঞান, সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবারের সঠিক সিদ্ধান্ত, বাল্য বিবাহ রোধ অনেক কমে গেছে।
তবুও নিকৃষ্ট অমানুষিকতা মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি। শারিরিক এবং মানুষিক ভাবে আজো নারী প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত হয় প্রিয় মানুষের হাতে।
লেখাটা পরে খুব ভালো লাগলো তাই বড়ো মন্তব্য না করে পারলাম না। এমন ভাবে আরো লিখুন।
সাবিনা ইয়াসমিন
সুন্দর জীবন ব্যবস্থায় ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। অল্প বিদ্যা কতটা ভয়ংকর তা হাড়ে হাড়ে বোঝা যায় আমপারা খতম দেয়া পাতি-মাওলানাদের ফতোয়া দেখলে।
একটা মকসেদুল মোমিন যেকনো নারীকে নাস্তিক বানাতে সক্ষম। যদি নারীটি লাইন বাই লাইন বইটা বুঝে পড়ে।
সুন্দর আলোচনা মূলক মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ শিরিন। শুভ কামনা 🌹🌹
বন্যা লিপি
এমন বিষয় নিয়ে লিখেছো! মন্তব্য করার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। পরিবর্তিত সময় কি এসেছে আজো? প্রশ্ন আমার কখনো যাবেনা। বাল্যবিবাহ হয়তো কমে এসেছে আগের চেয়ে। কিন্তু এখনো অনেক ঘরে ঘরে এমন বৈবাহিক নিপিরন চলে চলছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থায় এ হেন অনাচার খুব কম বেশি এখনো বিদ্যমান। খুব উপযুক্ত লেখনি। তোমাকে অভিবাদন। ভালো থেকো ভালোবাসায় ❤❤
সাবিনা ইয়াসমিন
না, পরিবর্তিত সমাজ এখনো আসেনি। কবে আসবে তাও জানিনা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থায় এটিও যে এক ধরনের ধর্ষন তা অনেক পুরুষের চিন্তায় আসেনা। বিয়ে হয়ে গিয়েছে মানেই হচ্ছে স্ত্রীকে কিনে নিয়েছে জমি, ফ্লাট, গাড়ি, টিভির মত। কিনে নেয়া সম্পত্তির আবার নিজস্ব মতামত থাকে নাকি?
তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ বন্যা, শুভ কামনা 🌹🌹
প্রদীপ চক্রবর্তী
নিকৃষ্ট অমানবিক আচরণ দিনদিন বেড়েই চলছে।
কেউ নির্যাতন করছে শারীরিকভাবে কেউ করছে মানুষিকভাবে।
যতদিন যাচ্ছে নারীরা প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত হচ্ছে।
জাগো নারী
মুড়িয়ে দাও কালো হাত।
রুখে দাঁড়াও তাদের প্রতি যারা তোমাদের লাঞ্চিত করে।
.
সময়োপযোগী লেখনী দিদি।
অন্ধরূপিদের বিবেক জাগ্রত হোক।
সাবিনা ইয়াসমিন
কেবল নারীরা জাগলে হবে? এক্ষেত্রে পুরুষদের মনোভাবের পরিবর্তন করতে হবে প্রথমে। পারিবারিক ভাবে আলাপ আলোচনা, শিশুদের ছোট বেলা থেকেই এ বিষয়ে জানাতে হবে। তবেই না এধরনের নিপীড়ন বন্ধ হবে।
ধন্যবাদ প্রদীপ, শুভ কামনা 🌹🌹
ছাইরাছ হেলাল
এই তো কয়েকদিন আগে এক জন গ্র্যান্ড মুফতি ফতোয়া দিলেন (আমার ভুল না হলে)
মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স বলে কিছু নেই, সব বয়সেই হালাল।
‘স্ত্রী কে সম্পত্তি নয়, সম্পদ ভাবো’ ঠিক আছে, কিন্তু এই কুট্টি সম্পদ জাতির কী কাজে আসবে!!
আমি কিন্তু অগামগা মানুষ! কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগ!
সাবিনা ইয়াসমিন
আমাদের সোনেলার ফেইসবুক পেইজে এই পোস্টটি শেয়ার হয়েছে। সেখানে দুজন মন্তব্য করেছেন এর বিরুদ্ধে। একজন ( হজ্ব করেছেন সে পোষাক পরিহিত ), অন্য একজনের প্রফাইলে গিয়ে দেখি তিনি ইসলামী জোশে জোশাম্বিত হয়ে বন্ধুক নিয়ে প্রফাইল পিক দিয়েছেন। দুজনের মন্তব্য একই, বিয়ে হয়ে গেলে এসব হালাল ( বয়স যাই হোক না কেন/ স্বামীর হক আদায় করা ফরজ) , এটি ধর্ষন হয় কিভাবে?
কুট্টি সম্পদ জাতির কাজে না আসলেও স্বামীর ঠিকই কাজে আসে।
অগামগা শব্দটি কোন ডিকশনারিতে আছে!!
শামীম চৌধুরী
এ অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
সচেতনতা বৃদ্ধি না করা হলে এ অভিশাপ থেকে বাঙালী নারীরা মুক্তি পাবে না কখনোই।
ধন্যবাদ আপনাকে, শুভ কামনা 🌹🌹
শাহরিন
আমি মন খুলে লিখলে অনেক পুরুষের ভাল লাগবে না তাই অল্পতে লিখি,
পুরুষরা মেয়েদের পন্য মনে করে। যেমন তাদের কথা মত সব হলেই ঠিক আর না হলে বদ মেয়েছেলে। ছেলের মা গুলো যদি একটু ভালো শিক্ষা দেয় তাহলে এই জাতি রা শুধু পুরুষ মানুষ না হয়ে ভালো মানুষ হতে পারে।
অনেকেই বলবে বউয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কখনোই শারীরিক সম্পর্ক করি না কিন্তু আসলে তারা বউ এর ইচ্ছাটাই বোঝে না।
সাবিনা ইয়াসমিন
মন খুলে লিখলে ভালো না লাগারই কথা। শিক্ষাটি পারিবারিক ভাবেই দিতে হবে। প্রকৃত শিক্ষায় মানুষ শিক্ষিত হলে হয়ত এই সমস্যা থাকবেনা। কিন্তু তেমন শিক্ষা তো দেয়া হয়না আমাদের। মাদ্রাসা শিক্ষার কথা না হয় বাদই দিলাম। বউকে তারা সম্পত্তি ভাবে, সম্পত্তির আবার ইচ্ছে কি?
আপনার মন্তব্য আমাকে সাহস যোগায়। ধন্যবাদ আপনাকে, শুভ কামনা 🌹🌹
আরজু মুক্তা
এখন শুধু নারীদের না পুরুষদেরও মানসিকতা বদলাতে হবে।।।ছোটবেলা থেকে মেয়োদের যেমন তোতা ময়না করে শিক্ষা দেয়া দেয়,ওদেরও দিতে হবে।।নারীদের কীভাবে সম্মান করতে হয় তা শিখাতে হবে।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনার মন্তব্যের সাথে একমত আপু। নারীদের সন্মান করতে না পারলে জাতি অগ্রসর হতে পারবে না।
ধন্যবাদ আপনাকে, শুভ কামনা 🌹🌹
ইঞ্জা
এ বড়ই কঠিন বিষয়ে লিখলেন আপু, এমন এক বিষয় সোনেলার লেখার মান কয়েক গুণ বেড়ে গেছে, বাল্যবিবাহ এবিং এর কুফল, সাথে নারীর অধিকার নিয়ে এ সমাজ কিছু ভাবে কিনা আমার সন্দেহ আছে, এরপরেও আমাদের সবার একযোগে কাজ করা উচিত যেন মানুষ এর কুফল সম্পর্কে বুঝতে পারে।
ধন্যবাদ এবং স্যালুট আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনার কমেন্টই বলে দেয় নারীদের নিয়ে আপনার চিন্তাধারা ও সম্মানবোধ কতটা উন্নত। আমি অত্যন্ত আনন্দিত আপনাকে ভাইজান হিসেবে পেয়ে। অনেক ভালো থাকুন, দোয়া ও শুভ কামনা সব সময়। 🌹🌹
মনির হোসেন মমি
পরে একটু বিরোধী মন্তব্য নিয়ে আসছি।
সাবিনা ইয়াসমিন
মত/ দ্বিমতের জন্য সব সময় স্বাগতম মমি ভাই। আসুন, আপনার মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
রেহানা বীথি
চমৎকার পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। বেদনাদায়ক সত্যিটা হলো, অনেক উচ্চশিক্ষিত এবং স্বনির্ভর মহিলাও মুখ বুঁজে এ অত্যাচার সহ্য করে। কারণ, কেউ এর কোনো প্রতিবাদ করবে না, স্বামী স্ত্রীর একান্ত বিষয় যে এটা! কাকে বলবে সে? আমাদের প্রচলিত আইনেও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই।
সাবিনা ইয়াসমিন
এই একটি জায়গাতে নারীদের প্রায়শই নিরব ভূমিকায় দেখতে পাই। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, গৃহিণী-স্বনির্ভর, আস্তিক-নাস্তিক সব শ্রেনীর নারীরা এখানেই নিরব ,কারন স্বামী-স্ত্রীর একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যপার নিয়ে যে নারী মুখ খুলবেন তার ইহকাল পরকাল সব ধ্বংস হয়ে যাবে। সমাজ তাকে অসামাজিক সাব্যাস্ত করতে মূহুর্তকাল সময় পর্যন্ত নষ্ট করবেনা।
অনেক ধন্যবাদ আপু, শুভ কামনা ও ভালোবাসা নিরন্তর ❤❤
শবনম মোস্তারী
লেখাটা অনেক ভালো লাগলো আপু। আমাদের সমাজে অহরহ ঘটছে এ ঘটনা। লোকলজ্জার ভয়ে কারো কাছে বলতে পারেনা। আর এর ফলে বাড়তে থাকে বর্বরতা।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমাদের সমাজে নিপিড়নের চেয়ে লোকলজ্জার প্রভাব বেশি। যেকারনে বর্বরতা এখন চিরস্থায়ী অভিশাপে পরিণত হয়ে গেছে। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষায় প্রযুক্তিতে। কিন্তু নারীদের প্রতি পুরুষদের মনোভাব খুব বেশি এগিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। বেশিরভাগ পুরুষ এখনো মেনে নিতে পারছেনা যে, স্ত্রীও স্বামীর নিকট ধর্ষিতা হয়/ হচ্ছে !!
ব্যস্ততা কমে গেলে লেখা-লেখি শুরু করুন শবনম। শুভ কামনা 🌹🌹
সকাল স্বপ্ন
আমার দেখা মতে যাদের কাছের থেকে চিনি তাদের সবার ই দেখেছি বিয়ে মানে ওই একটা বিষয় জানে,
আমার এক বন্ধু বিয়ে করবে বলে মেয়ে দেখছে
তাকে আমি জিগাসা করেছিলাম বিয়ে করছিস কেন?
তার এক রকম উত্তর জীবন গুছানোর জন্য।
তাহলে একা নিজের দিক টা দেখিস না তার টাও দেখিস!
সুধু মনে রাখিস সব বিষয় যেন সহমত থাকে দুই জনের নয়ত সংসারী তো হতে পারবি কিন্তু সুখী ও ভাল জীবন সংগি হতে পারবি না।
—-
লিখার বিষয় টা শিক্ষণীয় ছিল
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনাকে ব্লগে দেখে খুশি হলাম। অনেকদিন পর ফিরলেন।
বন্ধুকে খুব সুন্দর পরামর্শ দিয়েছেন। পারস্পারিক সমঝোতা ছাড়া কখনোই সুখী সুন্দর জীবন কাটানো যায়না। খুব ভালো থাকুন। শুভ কামনা 🌹🌹
* নতুন লেখা দিন।
জিসান শা ইকরাম
এ যেন কোনো মেয়ে নয়, একটি প্রানীকে টেনে হিচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জবাই করার জন্য। প্রানী জানে সেটা, যেতে চাচ্ছেনা, ইচ্ছে করে কি কোনো প্রানী মৃত্যু চায়? প্রানীটিকে জবাই না করে একটি পা কেটে আবার বাড়িতে আনা হলো। পরদিন আবার তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জবাই করতে, কিন্তু সেদিনও তাকে জবাই না করে অন্য একটি পা কেটে আবার বাড়িতে, এভাবেই চলল। এটি একটি পিশাচ লোকের পৈশাচিকতা।
আপনার গল্পের শুরুর ঘটনাটি এমনই মনে হলো। মাত্র চৌদ্দ বছরের একটি কিশোরী, ধরেই নেয়া যায় এই বয়সে বিয়ে মানেই তার মতামত বিয়ের ক্ষেত্রে মূল্যহীন ছিল। সে বিয়ের কিছুই বুঝত না, অথচ সে একজনের স্ত্রী। তার সাথে যা করা হয়েছে তাতে তাকে বাজার থেকে কিনে আনা পশুকে জবাই দেয়ার সাথেই তুলনা করা যায়। তার নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছা এখানে মূল্যহীন। বরং চিৎকার, কান্নায় ঐ পিশাচ লোকটা পৈশাচিক আনন্দই পেয়েছে বলা যায়।
মায়ের বাড়ি চলে যাবার পরই এর যবনিকা হলেই ভাল হতো, কিন্তু হয়নি।
যে ভয়, ঘৃনার বীজ বপিত হয়েছিল চৌদ্দ বছর বয়সে তা তার মৃত্যু পর্যন্তই থাকবে মনে হয়।
এমন অবস্থায় স্ত্রীকে সব কিছু মেনে নিতে বলা হয়। বিভিন্ন কারনে মেনেও নেয়। একই ছাদের নীচে থাকে তারা, স্ত্রীকে সম্পত্তি ভেবে যুগের পর যুগ ভোগই করতে থাকে পাষন্ড স্বামী। পরিবার, সমাজ, ধর্ম কখনোই স্ত্রীর পাশে দাড়ায় না। স্ত্রী যে ধর্ষিতা হতে পারে স্বামী কর্তৃক তা কখনোই অধিকাংশ মানুষ ভাবেই না।
বেহেশতের ঠিকানা দেখিয়ে দেয়া হয় ভুক্তভোগী নারীকে,
গল্পে আপনি বিশাল সামাজিক সমস্যা নিয়ে এলেন, যা ভুক্তভোগী নারীগন কখনোই কাউকে বলেন না।
প্রিয় তালিকায় নিলাম,
শুভ কামনা।
হাফেজ আহমেদ রাশেদ
একটি শিক্ষনীয় গল্প হবার জন্য এর চেয়ে ভালো লেখার প্রয়োজন হয় না
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক ধন্যবাদ। অণুপ্রেরনায় খুশি হলাম। ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹