প্রিয়তমা,
প্রতিটা মানুষের জীবনে একটা লক্ষ্য থাকে … নির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য … কারো ডাক্তার, কারো ইঞ্জিনিয়ার, কারো ব্যবসায়ী কেউ বা বিজ্ঞানী … কিন্তু জানো আমার না এরকম কোন লক্ষ্যই ছিল না … মনে মনে ভাবতাম এমন একটা চাকরী করবো যেটায় খাটুনি কম … মোটামুটি বেতন … কোনরকমে যেন খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারি … !
কিন্তু জানো কি যেদিন থেকে তুমি আমার জীবনে এসেছো সেদিন থেকেই না আমার সব লক্ষ্য বদলে গেছে … ?
আমার এখন সব লক্ষ্য তোমাকে কেন্দ্র করে … !
যদি তুমি আমার পাশে থাকো তাহলে ………
তাহলে বোধহয় পৃথিবীর এমন কোন কাজ নেই যেটা আমি পারবো না … !
যদি তুমি আমার পাশে থাকো তাহলে ………
তাহলে বোধহয় পৃথিবীর অভিধান থেকে অসাধ্য শব্দটি হারিয়ে যেতে বাধ্য …!
জানো,
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
আমি শুয়ে আছি আর তুমি …
তুমি আমার মাথার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছ পরম মমতায় …
আমি ঘুমিয়ে যাবো … এমন ঘুম … যে ঘুম থেকে কোনদিন উঠতে ইচ্ছা করবে না …
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
প্রতি সকালে আমি ঘুমিয়ে থাকবো মড়ার মত আর তুমি …
তুমি আমার কানের পাশে মুখ রেখে বলবে, ” শুভ সকাল ! ”
তোমার ওই কোকিল সুরো কণ্ঠে আমার সব ঘুম দূর হয়ে যাবে …
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
কোন এক দুপুরে আমি অফিস থেকে হটাতই এসে হাজির হবো প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে আর তুমি …
তুমি পরম মমতায় আমাকে বেড়ে খাওয়াবে আর আমি অদ্ভুত এক তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে বলবো, ” চমৎকার রান্না! ” আর তুমি সলজ্জ হাসিতে দৌড়ে পালাবে।
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
প্রতি বিকালে চায়ের কাপ হাতে আমরা দুজন বারান্দাটায় দাঁড়িয়ে পড়ন্ত বিকেলের রূপসী পরিবেশটা উপভোগ করবো
তুমি গুনগুন করে গান গাইবে … আর আমি …
আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে যাবো …
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
প্রতি সন্ধ্যায় আমি আর তুমি কাড়াকাড়ি করবো টিভির রিমোট নিয়ে
আমার সাথে তুমি শক্তিতে পারবে না
এরপরে তুমি অভিমানী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে
আর আমি তোমার কাঙ্ক্ষিত চ্যানেলটাই এনে দেখতে থাকবো
তুমি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকবে আমার দিকে আর আমি …
আমি কেবল তোমাকে দেখবো … !
আমি প্রতিনয়ত স্বপ্ন দেখি,
প্রতি রাতে তুমি আমার পাশে শুয়ে থাকবে
আমি তোমার সাথে সারাদিনের গল্পগুলো বলবো …
মাথার উপর পাহাড় হয়ে থাকা সমস্যা গুলো বলবো
আর তুমি …
তুমি অসম্ভব বিচক্ষণতায় সেগুলোর সমাধান দিবে … !
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
তোমাকে হটাত একদিন একটা পায়েল এনে চমকে দিবো …
তুমি আনন্দিত হয়ে উঠবে কারণ পায়েল যে তোমার অনেক পছন্দের …
আমি নিজ হাতে তোমাকে সেটা পড়িয়ে দিবো … আর তুমি …
তুমি খিলখিল করে হাসবে … !
যে হাসির শব্দে আমার সারাজীবনের ক্লান্তিগুলো দৌড়ে চলে যাবে …
আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি,
এক ছুটির দিনে আমি আর তুমি বেড়িয়ে পরবো আমার বাইকটা নিয়ে
তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখবে আর তোমার লম্বা চুলগুলো উড়ে আমার মুখে এসে পড়বে
আমি একটু পর পর গতি বাড়াবো কেবল তোমার মিষ্টি বকা শোনার জন্য …!
তুমি জানো, তোমাকে যে আমার প্রতিদিন কত কথা বলার থাকে ?
অনুভূতির কথাগুলো লিখে রাখি কিন্তু তোমাকে আর পাঠানো হয় না
মনের কথাগুলো মনে মনে সাজিয়ে নেই কিন্তু তোমাকে আর বলা হয় না
সব কথা কেন যেন গলায় এসে আটকে যায় !
কি করবো বলো ?
আমি যে অনেক ভীতু … জানো আমি এখনো রাতে একলা ঘুমাতে পারি না …
কি হাসছো নাকি ?
হাসো হাসো … একটু হেসে নাও …
এতই ভীতু আমি যে কি বলবো !
কিন্তু তারপরেও আমি কেবল মাথার পাশে তোমার হাতটাই চাই …
অন্য কারো হাত নয় …
যদি সৃষ্টিকর্তা আমাকে ওই সুযোগ না দেয় তাহলে তার নামে শপথ করে বলছি …
” আমি অন্য কারো হাত সেখানে রাখতে দিবো না ”
আমি যে কেবল তোমাকেই ভালোবাসি …
হয়তো ভয় পাবো একা থাকতে
আম্মার অবস্থা খুব একটা ভালো না …
উনি চলে গেলে আমি একদম একা হয়ে যাবো !
কিন্তু তাও আমি তোমার জায়গা, তোমার স্থান অন্য কারো হতে দিতে পারি না …
কারণ আমি যে তোমাকে ভালোবাসি … অনেক বেশি ভালোবাসি … !
১৬টি মন্তব্য
কৃন্তনিকা
স্বপ্নগুলো ভীষণ সুন্দর…
প্রিয়তমা কি পাচ্ছে এই চিঠি?
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
নাহ … দেওয়ার সাহস নেই 🙁
ব্লগার সজীব
খুবই সুন্দর (y)
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
ধন্যবাদ 🙂
আবু জাকারিয়া
চিঠিটা পৌছাক আপনার প্রিয়তামার কাছে, এবং আপনার অনুভুতিগুলো বুঝতে পারুক, দোয়া রইল। সুন্দর চিঠি।
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
ধন্যবাদ … চিঠিটা স্রেফ মনের অপ্রকাশিত অনুভূতি থেকে লেখা … এতটা যে ভালো লেগে যাবে বুঝতেই পারিনি 😀
শুন্য শুন্যালয়
বেশ সুন্দর চিঠি। চিঠি দেয়ার সাহস না থাক, প্রিয়তমা কে সোনেলায় একটা একাউন্ট খুলতে বলুন। 🙂
এমন চিঠি না পড়তে পারলে সে দূর্ভাগা।
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য … প্রিয়তমার সাথে আমার যোগাযোগ হয় না 🙁
খেয়ালী মেয়ে
ভালো লিখেছেন–কমেন্টস পড়ে জানলাম আপনার সাহস কম, এটা ঠিক না–এই ক্ষেত্রে ছেলেদের সাহস থাকতে হয়, একটু বেশি করেই থাকতে হয়–সময় থাকতে মনের কথা মনের মানুষকে জানিয়ে দেন, পরে যাতে আফসোস করতে না হয় 🙂
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
চেষ্টা করবো উপযুক্ত সময়ে মনের কথা বলার 🙂
লীলাবতী
খুবই সুন্দর চিঠি।আরো লিখুন।
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
ধন্যবাদ … 🙂
শিশির কনা
এত সুন্দর চিঠি পেলে আপনার প্রিয়তমার জীবন আনন্দে পরিপুর্ন হয়ে যাবে।
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
তাই বুঝি ? 😀
মামুন
চমৎকার একটি চিঠি! প্রাপকের কাছে পৌঁছানো খুবই জরুরী।
ভালো লাগলো।
শুভেচ্ছা জানবেন।
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়
ধন্যবাদ … 🙂
চেষ্টা করবো প্রাপকের কাছে পৌঁছানোর
আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো -{@