প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমি কান পেতে কারো পায়ের শব্দ শোনার চেষ্টা করি। কেউ ওঠেনি দেখে আস্বস্ত হই। এটা আমার একার সময়, একা একা এইভাবে নিজেকে খুঁজে পাওয়াও সৌভাগ্যের। আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই আরো একটি দিনের জন্য। এখন কটা বাজে আমি জানি, ভোর ৪.৫৫। সময় দেখবার জন্য আমার আর আলো লাগেনা, ঘড়িও লাগেনা। প্রথম প্রথম লাগতো, অবাকও হতাম কেন ঠিক ৪.৫৫ তেই আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়! তখন থেকেই মনে হতে লাগলো আমার কিছু একটা করার আছে। বিছানা থেকে হাত বাড়ালেই জানালাটা খুলে দিতে পারি, কিন্তু আমি তা কখনোই করিনা। জানালার কোথাও একসময় একটা ছিদ্র ছিলো, আস্তে আস্তে ছিদ্রগুলো বেড়েছে, বেড়েই যাচ্ছে। জড় পদার্থের লড়াই, জীবেরা কখনোই দেখতে পায়না কেন, একটুক্ষণ ভাবি। এরপর সেই ছিদ্র বরাবর হাত মেলে ধরি, আগে একটি হাত তুলে দিতাম, এখন মোনাজাতের মতো করে দুহাত মেলে ধরি অন্ধকারে। ৫.১০ বেজে গেছে। আস্তে আস্তে অন্ধকার ছিঁড়ে ছিঁড়ে একটি, দুটি, তিনটি ভোরের রশ্মি আমার হাতের তালুতে এসে জমা হতে থাকে। আমি জমা করতে থাকি, করতেই থাকি। আমি জানি খানিক পরে তীব্র আলোতে ভরে যাবে ঘর, জেগে উঠবে পৃথিবী, জেগে উঠবে আমার শরীরের সব পোকামাকড়। তীব্র যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠতে উঠতে আমি দেখবো কি অসম্ভবের মতো শক্তিশালী আলোকে অন্ধকার গিলে খাচ্ছে। কেউ একজন এসে আমায় মরফিনের সূচ গেঁথে দেবে, একটি যন্ত্রণা দিয়ে আরেকটি যন্ত্রণা ভোলাবার কি নিষ্ঠুর প্রচেষ্টা! কী নির্মম, তিল তিল হত্যাকারী এরা। সবার অলোখে আমি আমার ব্যাথার গায়ে দুহাত চেপে ধরবো, যেখানে আমার ভোরের জমানো রশ্মি ছিলো। ভোরের সেই উপচানো রশ্মিতে থেমে যাবে মরফিন, পোকাদের চলন। আমি বিজিতের মতো প্রহসনের হাসি হাসবো, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোর রশ্মির কাছে হেরে যাওয়া দেখবো মরফিনের, পোকামাকড়ের আর তোমাদের। দুচোখে ঘুম নেমে আসতে আসতে আরেকবার ভাববো, কখন হবে ৪.৫৫!!
প্রতিদিন ৫.১০ এই ভোর হয়না। ঘড়ির নাম্বারিং করা কিভাবে চালু হয়েছে জানা নেই। আদোতে মস্তিস্কের ঘুম ভাঙ্গে অপেক্ষায়, কোন কিছুর জন্য প্রানপণ অপেক্ষায়। হয়তো কোনদিন আর ঘুম ভাঙ্গেই না।
এডভান্সড ক্যানসার আক্রান্ত পৃথিবীর সবাইকে উৎসর্গীকৃত—
৪৩টি মন্তব্য
গাজী বুরহান
অসহ্য রোগটি সব প্রিয়জনদের কিভাবে চুপসে দেয়। পৃথিবীর সবাই ভালো থাকুক, এই কামনা।
একটুক্ষন=একটুক্ষণ (হয়ত!)।
সব মিলিয়ে ভালো লিখেছেন। [গত দিন আমিও বসে বসে ভাবতেছি যে ইস! হুমায়ুন স্যার বেঁচে থাকলে আমরা আরো কিছু বই পেতাম। কি এক মরণ ব্যাধি এসে সব তছনছ করে দেয়।]
শুন্য শুন্যালয়
ন/ণ, র/ড়, ই/ঈ এগুলোতে আমার এখনো ভুল হয় প্রচুর, তবে আগের চাইতে কিছুটা কম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে দেখিয়ে দেবার জন্য, আপনারটাই ঠিক হবে।
হ্যাঁ, এ আমাদের জাতীর জন্যেই অপূরণীয় এক ক্ষতি, উনি ভালো থাকুক যেখানেই থাকুক। ধন্যবাদ গাজী ভাই।
অপার্থিব
ভাল লিখেছেন। কয়েক বছর আগে আমার সম বয়সী এক চাচাত ভাই এই রোগটাতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এই রোগীদের দুর্ভোগ কিছু স্বচক্ষে দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে। জীবনের পিছনে যেমন কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই তেমনি মৃত্যুর পিছনেও নেই । কাজেই মৃত্যু নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করারও কোন মানে নেই। প্রতিটা মুহূর্তকে উপভোগ করাটাই শ্রেয়।
শুন্য শুন্যালয়
জীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে উপভোগ করবার জন্যেই মৃত্যু নিয়ে কিছুটা ভাবা উচিৎ মনেহয়। এতো মৃত্যু নয়, মৃত্যুকে সামনে রেখে বেঁচে থাকার কথা বলা।
মেডিকেলে euthanasia অর্থাৎ mercy killing বলে একটা শব্দ আছে, যেটা আমার পড়ারই একটা টপিক্স। কাউকে মেডিসিন দিয়ে মেরে ফেলার চাইতে কিছুটা মিথ্যে স্বান্তনা দেয়ার মতো।
ধন্যবাদ অপার্থিব।
প্রহেলিকা
আমরা সকলে নিজেদের চোখ দিয়ে নিজেদের দেখি, দেখি অন্যদের; আশেপাশে বিচরণ করা সবকিছুকে। বিষয়টি তখনই অনন্যতায় রূপ নেয় যখন অন্যের চোখে অন্যের মতো করে নিজেকে ও চারপাশ দেখা যায়। খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখাটিকে। হাহাকার জাগানিয়া লেখাতো বটেই, কেবল হাহাকার নয় তীব্র হাহাকার।
আস্তে আস্তে অন্ধকার ছিঁড়ে ছিঁড়ে একটি, দুটি, তিনটি ভোরের রশ্মি আমার হাতের তালুতে এসে জমা হতে থাকে।
জানালার কোথাও একসময় একটা ছিদ্র ছিলো, আস্তে আস্তে ছিদ্রগুলো বেড়েছে, বেড়েই যাচ্ছে। জড় পদার্থের লড়াই, জীবেরা কখনোই দেখতে পায়না কেন,
ভাবছি ভাবনার অতলে কতটুকু অবগাহন করতে পারলে এমন লেখা যায়। সবটুকুই পেরেছেন তুলে ধরতে, পারেনও।
শুন্য শুন্যালয়
নিজের লেখা কেমন হয়েছে ঠিক বোঝা যায়না, তবে এতো চমৎকার কিছু মন্তব্য পেলে লেখার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় অনেকগুন। আপনি বরাবরই এমন উৎসাহ দিয়ে থাকেন, যে বদভ্যাস চাইলেও চেঞ্জ হবার না 🙂 ধন্যবাদ প্রহেলিকা।
ইঞ্জা
মন ছোঁয়া লিখাতে স্তব্ধতা যেন নেমে এলো হটাৎ করে।
শুন্য শুন্যালয়
অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাইয়া।
ইঞ্জা
আপনাকেই ধন্যবাদ আপু। 😀
মিষ্টি জিন
সিংগাপুরে থাকা কালীন খুব কাছ থেকে তিনজন ক্যানসারে আক্রান্ত রূগী দেখেছি আমি। এবং চিকিত্সার পর তিন জন ই পুরোপুরি সুস্হ হয়ে গেছেন।
ভোর হবে । হতেই হবে।ব্যাথা মুক্ত খুব সুন্দর আলোকউজ্জল একটা দিন অপেক্ষা করছে।
শুন্য শুন্যালয়
চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন অনেক উন্নত, ক্যানসার আর আগের মতো মরনব্যাধি নয়। সারভাইকেল, ব্রেস্ট, কোলন ক্যানসার এসবের স্ক্রিনিং সিস্টেম থাকাতে অনেক আর্লিতেই এখন ক্যানসার ধরা এবং তার চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। যেইভাবে বিভিন্ন ভাইরাস আসছে একটার পর একটা তাতে সেগুলোই এখন সবচেয়ে আতংকের। তবুও কিছু ভাগ্যাহতরা এডভান্সড এ চলে যাচ্ছে, সবাই তাদের আলোর দেখা পাক, শুভকামনা সবার জন্যে।
জিসান শা ইকরাম
তীব্র যন্ত্রনা, শারীরিক এবং মানসিক উভয়কেই যন্ত্রনার মাঝে প্রবেশ করে লেখায় তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
এভাবেই দিন রাত অতিক্রান্ত হয় পোকামাকরের স্তায়ী বসতি গড়া একজন মানুষের।
হাতে জমানো ভোরের রশ্মি দিয়ে যদি সব থামিয়ে দেয়া যেত,
শিরোনাম, ছবি, লেখার বিষয়বস্তু এবং ধরন অত্যন্ত উচ্চমানের হয়েছে।
শুন্য শুন্যালয়
কিছুটা চেষ্টা করেছি, তাদের যন্ত্রণা কতটা হলে তারা mercy killing চায় এটাই আমাকে ভাবিয়েছে।
হাতের জমানো রশ্মি দিয়ে যদি সত্যিই সব থামিয়ে দেয়া যেতো!!
ছবিটা আমার পছন্দের খুব। আপনার ভালো লাগলেই পোস্টের স্বার্থকতা।
লেখা কই আর? 2 to go.
জিসান শা ইকরাম
mercy killing সম্পর্কে তেমন ধারনা ছিলনা আমার,
আপনার লেখা পড়ে ক্যান্সার রোগীর শেষ দিকের যন্ত্রনার তীব্রতা সম্পর্কে ধারনা দিলেন আমার অতি প্রিয় একজন মানুষ।
অসহ্য যন্ত্রণা হতে মুক্তির জন্য ডাক্তারের কাছে কাকুতি মিনতি করেন একজন ক্যান্সার রোগী,… ভাবাই যায় না এমন অবস্থা।
আমি কি আপনাদের মত লেখক নাকি যে যখন তখন লিখে ফেলবো!
চেষ্টায় আছি…
শুন্য শুন্যালয়
এখন রেডিয়েশন, কেমোর কারনে কমপ্লিকেশন আগের চাইতে অনেক কমে এসেছে। এত তীব্র পেইন স্টেজে আগের চাইতে কম যায়। চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত। দরিদ্রদের কথা ভেবে খারাপ লাগে। এসব দেশে প্রচুর সাপোর্ট আছে, গভরমেন্ট বেনিফিট আছে, আমাদের দেশে সেরকম আছে কিনা জানিনা, জানলেও দরিদ্ররা সেই সুযোগ পায় কিনা জানিনা। সত্যিই টেরিবল এই যন্ত্রণা।
আপনি আমাদের মতো লেখক নন, আপনি আপনার মতো, এবং তা অনন্যতা এবং সংখ্যা দুইয়েই শীর্ষে।
ইলিয়াস মাসুদ
এতটুকু লেখা অথচ কেমন যেন মাতাল করা মন্ত্রের মত,আচ্ছা জীব থেকে আমি যখন জড় হয়ে যাবো তখন কি আমার কোনো অস্থি,মজ্জা হাজার বছর পরেও আলোর স্পর্শ পাবে?প্রতিদিন মনে হয় খুব ভোরে একবার করে আমিও জড় হয়ে যায় দেয়ালের কৃত্তিম ঘড়িটার মত ! তার পর ছুঁয়ে দেখি আমি আমাকেই …………
বেঁচে থাকার এই সময় টুকু-ই যত সব অহংকার,তার পর সব তেমনি…………
এত সুন্দর লেখা অনেক অনেক দিন পড়িনা…………
শুন্য শুন্যালয়
আপনি যা মন্তব্য করলেন ভাইয়া, তাতো এই লেখাকেই ছাড়িয়ে গেলো। কঠিন প্রশ্ন, পাবে কী সেই জড়রা আলোর স্পর্শ? বেঁচে থাকার এই সময়টুকুই সব অহংকার, ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, তবে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকতে হবে।
সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার মতো আনন্দের আর কিছু নেই, আর আমরা কত তুচ্ছ কারনে যন্ত্রণায় ভুগি।
আপনার সুন্দর মন্তব্য এই লেখার প্রাপ্তি। ভালো থাকবেন ভাইয়া।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আমি জানি খানিক পরে তীব্র আলোতে ভরে যাবে ঘর, জেগে উঠবে পৃথিবী, জেগে উঠবে আমার শরীরের সব পোকামাকড়।
সৃষ্টিকর্তাকে সব সময় বলি কাউকে যেন এভাবে মরতে না হয় এ এমন যন্ত্রনা যার ব্যাথা সেই বুঝে।আমরা আশা বাদি আপনার ভোর আসবেই। -{@
শুন্য শুন্যালয়
ব্যথা যন্ত্রণা নিয়ে মৃত্যু নাকি ভালো, ভাবি সৃষ্টিকর্তা কী তবে নিষ্ঠুর!! আমিও বলি, কাওকে যেন এভাবে মরতে হয়। ভোর হোক সবার।
অনিকেত নন্দিনী
পড়ে থমকে আছি। কী লিখবো খুঁজে পাচ্ছিনা। 🙁
শুন্য শুন্যালয়
কিছু না বলাই অনেক কিছু বলা আপু, যা আমি পড়তে পারছি। 🙂
অনিকেত নন্দিনী
সকালে ঘুম ভেঙেই গায়ের পোকা, মরফিন, এক ব্যথা দিয়ে আরেক ব্যথাকে চাপা দেয়ার চেষ্টা, দুহাতের আঁজলা ভরে আলো ধরা, সেই আলো ব্যথার জায়গায় চেপে ধরা – সব মিলিয়ে খুব বেশি মন কেমন করে উঠলো।
অনেকক্ষণ ভেবেও লেখার মতো কিছু খুঁজে পাইনি। 🙁
গতবছর মে মাসে পায়ের হাড় ফেটে গিয়েছিলো। পুরাই যেনো নরকযন্ত্রণা। ব্যথায় রাতভর ঘুমাতে পারিনি। যে আমি পারতপক্ষে ‘আহা’ ‘উঁহু’ করিনা – সে আমিই হুহু করে কেঁদেছি। দুইদিন মাটিতে পা ঠেকাতে পারিনি। হামাগুড়ি দিয়ে বাথরুমে গেছি। এরপর ক্র্যাচ জোগাড় করে ক্র্যাচে ভর করে হেঁটেছি।
এই লেখাটা পড়েই মনে হলো ওইটুকুন হাড়ফাটার ব্যথা যদি এমন হয় তো ক্যান্সারের যে ব্যথা মরফিন দিয়ে দমিয়ে রাখা হয় তা না জানি কতোটা দুর্বিষহ। 🙁
শুন্য শুন্যালয়
পা মচকানোর ব্যাথা আমিও পেয়েছিলাম দেশ ছাড়ার আগে, ভেবেছিলাম হয়তো হাড় ভেঙ্গেছে, আল্লাহ্র রহমতে ঠিক ছিলো। আমি আপনার যন্ত্রণা টের পেলাম নিজেকে দিয়েই। এরপর থেকে হাঁটাহাঁটি সাবধানে করবেন।
কএকদিন আগে ব্লগে কার লেখায় যেন পড়লাম মনে করতে পারছিনা, ক্যানসারের পেশেন্টরা সবাই বেশ হাসি-আনন্দে মেতে ছিলো, বোধহয় তারা মৃত্যুকে সহজ ভাবেই নিয়েছে। লাইনটা পড়ে ভেবেছি অনেক। অই জায়গাটায় দাঁড়াবার চেষ্টা করেছি, কূল করতে পারিনি। আমার কাজিনের হাড়ে টিবি হয়েছিল, কি কষ্টটাই না ও পেয়েছে, দেখেছি আমি। দুপা কেটে ফেলা হয়েছে, হাতেও কোন সেন্স নেই, জড় পদার্থের মতো বেঁচে আছে। তবে প্রায় ২৫ বছর পর যখন ঘরের বাইরে থেকে আমার কন্ঠ শুনে আমার নাম ধরে ডাকলো, আমি অবাক হয়ে গেছি। এও বেঁচে থাকা তাইনা আপু?
সবাই ভালো থাক। মৃত্যু আসবেই, তবু এত কষ্ট পেয়ে কেউ না চলে যাক।
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু এমন লিখলে মন্তব্য করা তো কঠিন হয়ে পড়বে। ছবিটার দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছিনা। আর একেকটি লাইন, উফ!
সব মিলিয়ে এক কথায় অসাধারণ -{@
শুন্য শুন্যালয়
কঠিন বলেতো কিছু নেই, সবই আপেক্ষিক কঠিন 🙂 ছবিটা ভাল্লেগেছে? আমারো ভালো লাগে।
হাসি-আনন্দে সবাইকে নিয়ে ভালো থেকো।
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু আজ দারুণ কেটেছে দিন। ফেসবুকে পরিচয় এক ছোট বোন এসেছিলো আমাদের বাসায়। 🙂
শুন্য শুন্যালয়
বাহ, তাহলে তো বেশ মজা করেছ। অপরিচিতর গন্ডি থেকে আপন হওয়া মানুষরা বেশি আপন হয়। ভালো থেকো এমনি করে।
মেহেরী তাজ
বুবু তুমি ঠিক জানো সময় টা ৪:৫৫??
তাইলে বুঝছি। তবে মন্তব্য কি করবো ঠিক বুঝতেছি না…..!
শুন্য শুন্যালয়
এতো কঠিন প্রশ্ন করিস ক্যান? 🙁
তুই বুঝতেছিস না, আমিও বুঝিনা এই পিচ্চি ভূতের মাথায় এতো জটিল কিছু আসে ক্যাম্নে? (3
মেহেরী তাজ
কেনো যেনো জটিল হয়ে গেলাম বুবু…..
তবে তাতে আমার আফসোস নাই! 😀 (3
শুন্য শুন্যালয়
জটিল হওয়াতো জটিল, আমারো আফসোস নাই বুবুর লাইগ্যা 😀
মেহেরী তাজ
এই না হলে বুবু…. \|/
মৌনতা রিতু
অনেক ব্যস্ততার কারনে এমন একটা লেখা পড়তে পারিনি।
ঢাকা থাকতে শাশুড়ি আম্মার পর পর দুইটা অপারেশনে সোহরাওয়র্দি হাসপাতালে থাকতে হয়েছে এক মাসের মতো। উনি ঘুমালে পাশেই বাচ্চাদের ক্যান্সারের ওয়ার্ডে চলে যেতাম। ভিতরে কখনো ঢুকতাম না। তখন আমি সদ্য সন্তান হারা এক মা আমি। আমার সব কিছু তছনছ ছিল। বাচ্চাগুলোকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হত, কোলে তুলে আদরে আদরে ভরে দিত ইচ্ছে করত, ওদের ব্যাথাগুলো নিজের শরীরে নিতে ইচ্ছে করে।
জান আমি জিনেতা চলে যাবার পরে এসব বাচ্চাদের এড়িয়ে যাই। জান আমি পালাতে চাই। এই পৃথিবীর সৃষ্টিকে তখন অসহ্য মনে হয়।
তোমার ঐ জানালা গলে আলো আসুক।
অনেক ভালোলাগা রইল পোষ্টে।
শুন্য শুন্যালয়
রিতু আপু, আমরাই পারি তাদের ব্যথা কিছুটা কমিয়ে দিতে। মৃত্যু একদিন আসবেই, হয়তো আমিও অই জায়গায় যাবো একদিন। একাকিত্ব শরীরের যন্ত্রণাকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুন। আলো আসুক, ছুয়ে দিক যন্ত্রণাকাতর মানুষগুলোকে।
দেরিতে পড়লেও তো আমরা আমরাই। আমার ভাবীজানের ব্যস্ততা কমে যাক, যাক, যাক।
ছাইরাছ হেলাল
স্বচক্ষে দেখার দেখা ও অনুভবের মত করে অনুভুতির উপস্থাপন সহসাই সহজ কাজ নয়,
অপার ও অসীম সম্ভবনা আলো নিভে যায় কড়াল অন্ধকারের সীমানায়। মরফিনও হোচট খাবে।
স্বেচ্ছামৃত্যু খুব করেই চাই। চাইবোও।
শুন্য শুন্যালয়
ঘুরেবেড়ালে মাথা ক্লিয়ার হয় জানতাম, এ দেখি উল্টা হইছে। কি লিখছেন, কিচ্ছু বুঝিনাই।
স্বেচ্ছামৃত্যু? সুখে থাকলে ভূতে কিলায় বুঝি?
ছাইরাছ হেলাল
আক্রান্তের যন্ত্রণায় আপনার মাথাও আউলাইয়া গেল নাকি?
হল্যান্ডে ইচ্ছেমৃত্যু চালু আছে।
খারাপ না কিন্তু।
শুন্য শুন্যালয়
তাতো বুঝলাম, কিন্তু চাইবেন কেন? এপাড়ের সোনাদ্বীপে কুলোচ্ছেনা যে, ওপাড়ে সাঁতরাতে চাচ্ছেন!!
স্বেচ্ছাজীবন বেছে নিয়ে, ছুটিপুরকে বিদায়। ইহাও খারাপ না, ট্রাই করে দেখতে পারেন।
আবু খায়ের আনিছ
কয়েকদিন ব্লগে আসা হয় না নানা ব্যস্ততায়। পরিক্ষার পড়া, রিসার্চ, এক্সিভিউশন ইত্যাদি ইত্যাদি নানাবিদ ঝামেলায় আছি। এরি মাঝে কেউ একজন ম্যাসেজ করে বলল, আনিছ ভাই শূণ্য আপুর লেখাটা পড়ে দেখেন, অনেক ভালো লিখেছেন।
আমি জানি আপু তুমি অনেক ভালো লিখো। আর অনেক ভালো ভালো লেখাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই লেখাটা। অসাধারণ লেখনি।আর সেই ভাই মিথ্যে বলেনি।
এমন রোগ যেন কারো না হয় এই কামনা করি।
শুন্য শুন্যালয়
আমি ভালো লেখাগুলো নিয়ে আলাপ করি মাঝেমাঝেই, উহু আসলে প্রায় দিনই। বলিও কাওকে এই লেখাটা যেন ভাল করে পড়ে। আজকে নিজের লেখায় এভাবে শুনে খুবই ভালো লাগলো। নানা ব্যস্ততার মধ্যেও সোনেলায় সময় দিচ্ছ, আসছো, এটা দেখেই আনন্দিত। সব কাজ ঠিকঠাক গুছিয়ে ওঠো, পরীক্ষা ভালো করে দাও। শুভকামনা ভাইয়া।
আবু খায়ের আনিছ
শুভ কামনা আপু। চেষ্টা করি সব সময় সোনেলা আর বই এর সাথে থাকতে, যত ব্যস্ততায় থাকুক না কেন।
নাসির সারওয়ার
বেশ শক্ত পোস্ট। কিচ্ছু বুঝিনাই। বুঝতে চাইওনা।
তবে ক্যানসার আমরা নির্মূল করে ফেলবো একদিন।
শুন্য শুন্যালয়
তারাও থেমে থাকবেনা, থেমেও নেই ভাইয়া। একটার পর একটা নিত্যনতুন ভাইরাস আসছে, আসতেই থাকবে।
বেশি না বোঝাই ভালো, আমিও কিছু বুঝিনা।