আমাদের বরিশালের অদূরে চরমোনাই নামক একটা গ্রাম আছে। গ্রামটি মোটামুটি রকম বিখ্যাত। কারন চরমোনাইর পীর সাহেব।পীর সাহেবের বিশাল আস্তানায় সুরম্য অট্রালিকা আর বিত্ত বৈভবের ছড়াছড়ি। এখানে কয়েক হাজার গরীব এতিম ছাত্র পড়াশোনা করে। কি যে পড়াশোনা করে তা আমি বলতে পারবানা। কারন সারা বছর এই ছা্ত্র্ররা হুজুরের রাজনৈতেক আর অর্থনৈতিক কাজেই ব্যস্ত থাকে। হুজুরের সমস্ত মিছিল,মিটিং এ সব ছা্ত্র্রদের থাকা বাধ্যতামূলক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুজুরের জন্য চাঁদা তোলা ও ছা্ত্র্ররা করে। বছরে দুইবার চরমোনাইর পীর সাহেবের ওরস মাহফিল হয়। এই মাহফিলে কয়েক লক্ষ মানুষ হয়। এত বিপুল মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বাথরুমের ব্যাবস্থা নয়া থকায় এরা মাঠে,ঘাটে,বাস্তায়,উঠোন সবখানে মল ত্যাগ করে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃস্টি করে। এই মাহফিল সমাজের কি কল্যাণ করে তা আমার জানা না থাকলেও আমদের কৃষি জমি যে উর্বর হচ্ছে তা আমি নিশ্চিত। হুজুরের রাজনৈতেক দলের কর্মকাণ্ড খুবই ব্যাপক। যে কোন লোকাল ও আন্তজার্তিক ইস্যুতে হুজুর রাজপথে নেমে আসেন। ডেনমার্কে্র কোন এক ম্যাগাজিনে মহানবীকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্বক কার্টুন ছাপা হয়েছে ব্যাস হুজুর রাজপথে নেমে গেলেন। মহানবীর সন্মান রক্ষার জন্য সাধারন মানুষের গাড়ী, দোকানপাট ভেঙ্গে ফেললেন।এই রকম সব ইস্যুতেই হুজুর তার হাজার হাজার কর্মী নিয়ে ঝাপিয়ে পরেন। সাধারন মানুষ হুজুরের লোকবল দেখে অবাক হয়ে যায়।এত মানুষ তো আওমীলীগ,বিএনপির জনসভায় হয়না। বলা বাহুল্য এই সব কর্মী মাদ্রাসার গরিব,এতিম ছাত্ররা। হুজুর নির্বাচনে তার নিজের আসনে এক হাজার ভোট ও পায়না।
সম্প্রতি একটা জানাজা নামাজ কে নিয়ে দেশে বিদেশে প্রচুর কথা হছে। জানাজা নামাজটি ছিল সাজাপ্রাপ্ত একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার প্রধান গো আযমের। তার সেই অনুসারিরা জানাজার ছবি দিয়ে ফেসবুক,টুইটার সব ভরে ফেলেছেন। তাদের দাবি বাংলাদেশের ইতিহাসে কারো জানাজার এত মানুষ হয় নাই। গো আযম মৃত্যুর আগে যেমন অনেক রের্কড গড়েছিলেন তেমনি মৃত্যুর্ পরেও রের্কড গড়ে গেলেন। আমি গো আযমের জানাজায় আরো বেশি মানুষের আশা করেছিলাম। জামায়েত ইসলামের সব কর্মী আসা উচিত ছিল তাদের গুরুর বিদায়ে। সারা বংলাদেশে কোমল মতি শিশু,যুবকদের মগজ ধোলাই করে তারা এত কর্মী বানালো আর গুরুর জানাজায় শুধু এই কয়জন। গো আযমের অনুসারিদের দাবি তাদের গুরু ভাল মানুষ ছিল তাই তার জানাজায় এত মানুষ হয়েছে। কি অদ্ভুত অবাস্তব যুক্তি। যে দলটি একক ভাবে নির্বাচন করে দুইটার বেশী আসন পায় না তাদের নাকি মানুষ ভালবাসে। একজন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার কাছে,একজন ধর্ষিতা বীরঞনার কাছে,একজন ছেলেহারা শহীদ জননীর কাছে জিঞেস কর তোদের গুরু কেমন মানুষ ছিল। একজন বিবেকবান মানুষ যার হৃদয়ে বাংলাদেশ কথাটি লেখা আছে সে তোদের গুরুর জানাজায় যায় নাই,যেতে পারেনা।
১৬টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
মিটিং মিছিল জনসভায় লোক সমাগম দিয়ে কিছুই প্রমাণ করা যায় না, যায়নি ও।
বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুতো পেটা করার সময় (৮১ তে) লোক সমাগম ও একদম কম ছিল না।
নাঈমা নাসরিন নিপু
আপনার এই মন্তব্যে সুপার লাইক
মেহেরী তাজ
এই সব পীর নির্বাচনে দাড়ালে এরা নির্বাচিত হননা। এরা দেশের কোন উপকারে আসেনা।যারা মনে করে তাদের প্রিয় দেশ পাকিস্থান, তাঁরাই এই রাজাকার পিতার জানাজায় গিয়েছে।
নাঈমা নাসরিন নিপু
এরা হৃদয় দিয়ে এখনও বাংলাদেশ কে পূর্ব পাকিস্তান মনে করে। ধন্যবাদ আপনাকে
সঞ্জয় কুমার
সস্তার জনপ্রিয়তা বেশী । আর ছাগলের খোয়ারে একটা বাঘই ছাগলদের জন্য যথেষ্ট ।
নাঈমা নাসরিন নিপু
আপনার কথাটা একদম ঠিক।
মরুভূমির জলদস্যু
এইটা খাটি কথা বলছেন, আটরশিতে আমিও দেখেছি এই একই ব্যাপার।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
একজন বিবেকবান মানুষ যার হৃদয়ে বাংলাদেশ কথাটি লেখা আছে সে তোদের গুরুর জানাজায় যায় নাই,যেতে পারেনা।
এমন ভাবনার অভাব ব্রাস ফায়ার।
জিসান শা ইকরাম
একজন রাজাকার সে যত বড়ই হোক না কেন, তার পরিচয় একজন রাজাকার।
রাজাকার জগতের শ্রেষ্ট অভিশপ্ত পদবী
এরা কখনোই এই পদবী নামের সাথে যোগ করতে পারবেনা।
পক্ষান্তরে একজন মুক্তিযোদ্ধা যত গরীবই হোকনা কেনো সে একজন গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা
গর্ব করে বলতে পারবে আমি মুক্তিযোদ্ধা।
ভালো লিখেছেন আপনি।
নাঈমা নাসরিন নিপু
আমিও এক গরীব মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।কিন্তু আমি গর্বিত। ধন্যবাদ আপনাকে
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
পাকি প্রেমি রাই গোলামকে পছন্দ করে। যার হৃদয়ে এ দেশের গান, সে কোনোদিন গোলামকে পছন্দ করতে পারেনা।ঘৃনা এই গোলামের প্রতি।
শুন্য শুন্যালয়
এতো লোক তারা জমায়েত করতে পারছে, এটা ভাবলেও ঘৃনা বোধ করি। পুরো একটা জীবন কাটিয়ে গেলো আরাম আয়েশে এটা আমাদের লজ্জা। তবু কোটি মানুষের অভিশাপ আর ঘৃনা ছিলো, থাকবেই আজীবন।
আপনি গুছিয়ে লেখেন সবসময়ই।
ব্লগার সজীব
আরশোলাও একটি পাখি, আর রাজাকাররাও একটি মানুষ। কাক মারা গেলে স্বজাতি কাকরাই মাতম করে শুধু, অন্য পাখি আসেনা। রাজাকার মারা গেলেও স্বাজাতিরা আসবে, এটিই স্বাভাবিক। ভালো লিখেছেন আপু।
মিথুন
তারা কখনো নির্বাচিত হয়নি, শেখার আছে এটুকুতেই।
মোঃ মজিবর রহমান
সুন্দর অভিব্যাক্তি।
নাঈমা নাসরিন নিপু
ধন্যবাদ আপনাকে