(বহুদিন পর ব্লগে প্রবেশ করে দেখলাম ২ বছর পার করেছি সোনেলাতে। সময় বড় দ্রুতই চলে যাচ্ছে)
“পড়াশোনা করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে”। ছোটবেলা থেকে মুরুব্বীদের মুখে মুখে শুনে এসেছি এই কথা। কিন্তু এটা পরিষ্কার নয় যে পড়াশোনা শেষ করে তারপর নাকি তার আগেই গাড়ি ঘোড়ায় চড়তে পারবো! কিংবা কার গাড়িতে চড়বো? সে যাই হোক, আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু ভিন্ন।
২০১৫ সালটা বেশ অন্যরকম এক বছর ছিল আমার জন্য। অচেনাকে জানার, কঠিন সব সময়কে আরো কাছ থেকে দেখা, অনুভব করা, কিংবা সহজ কোন কাজকে কঠিন করে পাবা ইত্যাদি নানাবিধ কারণ।
সে যাই হোক, শেষ ভাল যার, সব ভাল তার। প্রায় ৩ বছর পর দেশে যাবার সুযোগ চলে এসেছিল। বলতে পারেন এই সময়ের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলাম। প্রবাসে যারা থাকেন বিশেষ করে কানাডা, আমেরিকা কিংবা অস্ট্রেলিয়া তারা দেশে আসার আগে টিকেট কাটেন কমপক্ষে ২ মাস বা তিন মাস আগে।নভেম্বর থেকে জানুয়ারি এই ৩ মাস টিকিটের মূল্য হয় আকাশচুম্বী। নিজের পছন্দমত ভাল তারিখ, কম দামে টিকেট পাওয়া যেন সোনার হরিণের মত কিছু একটা।
বছরের প্রায় শেষে এসে আমার সুযোগ হয়েছিল মাত্র ২ সপ্তাহের জন্য দেশে যাবার। ডিসেম্বর ১৫ তারিখ দেশে পৌছাবো আর ২৮ তারিখ ফিরতি ফ্লাইট ধরবো। আব্বা আর আম্মা আফসোস করছিলেন কেন আমি এত কম সময় নিয়ে আসছি! আর ১ টা সপ্তাহ বাড়াতে পারো কি না দেখো। কিন্তু চেষ্টা করেও ডেট বদল করতে পারি নি।
####যারা কানাডা বাংলাদেশ রুটে যাতায়াত করেন বা করবেন তাদেরকে জানিয়ে রাখা ভাল যে যদি পারেন তবে চায়নার ফ্লাইট নিবেন না খবরদার; বিশেষ করে চায়না ইস্টার্ণ। কেন বলছি এই কথা? এই নিয়ে বিস্তারিত পোস্ট পরে দিব আশা রাখছি।### :@
গত বছর পড়াশোনা শেষ করার পর থেকেই পাত্রী দেখা চলছিল। অবশ্য আম্মা একটু গড়মসি করছিলেন প্রথম প্রথম। আম্মার ভাষ্য মতে – “তুমি এখনো নিজের পায়ে দাঁড়াও নি, চাকরি শুরু কর, কিছু একটা কর। তারপর দেখা যাবে”।
আমি অবশ্য মুরুব্বীদের মুখের উপর কিছু বলতে হলে ৫ বার ভেবে নিয়ে তারপর বলি। আম্মাকে বেশ কনফিডেন্টলি বললাম, “ঠিক আছে আম্মা, তোমাদের আর বিয়ে দেয়ানোর দরকার নাই। যদি দিতে চাও তাহলে ১০ বছর পর দিয়ো। তখনো তোমরা একই কথাই বলবা। দরকার নাই বিয়া করার আমার”। :D) :p
এই কথা বলবার পর আম্মা সহ পরিবারের সবাই বেশ নড়েচড়ে বসলো। এরপর থেকেই শুধু হল পাত্রী দেখা অভিযান।
একের পর এক বায়োডাটা, ছবি দেখানো হচ্ছিল আমাকে। কিন্তু কেন জানি একটাও মন মত পছন্দ হচ্ছিল না। অবশেষে হারিকেন অভিযান, চিরুনী অভিযানের পর ৪ (!) জন পাত্রী ঠিক করা হয়েছিল। যদিও মন থেকে কাউকেই আমার তেমন তাদের পরিবারের সবাইকে বলা হয়েছিল পাত্র দেশে আসার পর আলাদা আলাদাভাবে পাত্রীদের সাথে দেখা করবে। যাকে পছন্দ হবে তার সাথেই ………… -{@ -{@
চলবে ……
২০টি মন্তব্য
অনিকেত নন্দিনী
একসাথেই চার চারজন! 😮
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
😀
পারভীন সুলতানা
কেন জানিনা, এই ভাবে পাত্রীদেখা কোনদিনই গ্রহণ করতে পারি না। কেন যেন মনে হয় পাত্রী কেন দেখা হবে ? পাত্রী কি গরু ? তাই যদি না হয় তাহলে পাত্র কেন দেখা হয় না? যদি এমন হত, ঐ চারজন পাত্রীকে আপনি সময় দেবেন তারা আপনাকে দেখবে , আপনার অনুভুতি তখন কেমন হত ? কেননা ঐ চারজনের একজনকে আপনার ভাল লাগলো অথচ সে আপনাকে নাকচ করে দিল ।আপনার মত শিক্ষিত একজন তরুন এখনো পাত্রী নিরবাচন করবেন গরু বাছাইয়ের মতন …………………না ভাই কেমন যেন ব্যাপারটা
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
আপা, আপনি যেভাবে ভাবছেন বিষয়টা আসলে সেরকম নয়। আমার আগামী পোস্টে বিস্তারিত থাকবে এই বিষয়ে।
ভাল থাকবেন
পারভীন সুলতানা
অপেক্ষায় থাকলাম।
অরুনি মায়া
নিজের পায়ে না দাড়িয়ে বিয়ে করাটা ভুল সিদ্ধান্ত 🙂
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
হা হা হা
আচ্ছা আসেন একটা হিসেব করি। ধরেন পাত্রের বয়স ৩০। বিয়ে করবে কিন্তু পাত্রী পাচ্ছে না। ছেলে সবে চাকরিতে ঢুকেছে। এ জন্যই হয়তো পাত্রীপক্ষ রাজি হচ্ছে না মাত্র চাকরিতে ঢোকা পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে। এখন পাত্র নিজের পায়ে দাড়ালো যখন তখন তার বয়স ৩৫+। এখন আবার শুরু হয়েছে আর এক প্রব্লেম। পাত্রের বয়স বেশি। পাত্রী রাজি না বয়স বেশি তাই।
সময় তো কারো জন্য বসে থাকে না। নানা রকম কথা শুনতে হয় ছেলেকে। বয়স বেশি হলেও প্রব্লেম আবার কম হলেও প্রব্লেম। কোন মেয়ে বসে থাকবে সেই বয়স বেশি পাত্রের জন্য?
অরুনি মায়া
সব ই বুঝলাম ভাই, কিন্তু ঐযে কথায় বলেনা টাকা না থাকলে ভালবাসা জানালা দিয়ে পালিয়ে যায় | বিবাহিত জীবন অত্যন্ত কঠিন | পায়ের তলার মাটি শক্ত না করে কারো দায়িত্ব নিলে শুধুই হয়রানি হতে হবে | 🙂
জিসান শা ইকরাম
চারটি বিয়ে করা যায় ইসলাম শরিয়ত মোতাবেক 🙂
হয়ে যাক এমনই ……
চায়না ইস্টার্ণ এর কি হলো আবার?
শুভ কামনা।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
ভাই, কি বলেন এইসব?
একজনকেই পাই না আবার ৪ জন! 🙁
জিসান শা ইকরাম
মজা করলাম 🙂
ভাল একজন জীবনসঙ্গী পাও তুমি এই দোয়া করি।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
😀
ধন্যবাদ
নীলাঞ্জনা নীলা
পাত্রী দেখা ব্যাপারটাকে আমি বড়ো বেশী অপছন্দ শুধু না, ঘেণ্ণাও করি। সরাসরি বলে ফেলি, যা কিছু পছন্দ কিংবা অপছন্দ।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
হ ম ম। বুঝতে পেরেছি। এরেঞ্জ মেরেজ করতে গেলে এই স্টেজ পার করতেই হবে। উপায় নাই।
অপার্থিব
আমাদের দেশে প্রচলিত পাত্রী দেখে বিয়ের ব্যাপারটা খুবই অপছন্দ করি। পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের পছন্দনীয় সঙ্গী খোজার জন্য বিভিন্ন জনপ্রিয় ডেটিং সাইট রয়েছে কিন্ত আমাদের দেশে যে পদ্ধতিতে পাত্রী বাছাই করা হয় তা নারীর জন্য চরম অবমাননাকর। এটা পুরুষের জন্যও লজ্জার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর সবচেয়ে বড় গুণ তার রুপ। পাত্রী পছন্দ করার ক্ষেত্রেও তাই অধিকাংশ সময় নারীর যোগ্যতার চেয়ে রুপই বেশি প্রাধান্য পায়।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
হা সেই। আপনার সাথে সহমত
নাসির সারওয়ার
কিছু টিপস – (অবশ্য “ব্লগার সজীব” একজন বিশেষজ্ঞ এই বিষয়ে এবং আমি আপনাকে তার নজরে নিয়ে আনার চেষ্টা করি। অনেক কিছু জানতে পারবেন)
ছলে বলে কন্যার মাথায় ঢালুন পানীয় -(সরবত খাবার সময়টা বেশ হবে)
১) চুল আসল না নকল জেনে যাবেন
২) তার চীৎকার করার সময় দাঁত গুনে ফেলতে পারবেন
৩) পানির উপড়ে হেটে যাওয়ার সময় পা বাঁকা কিনা তাও জেনে যাবেন
আরে ভাই সজীব – ওনার হেল্প লাগবেতো।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
হা হা হা
শুন্য শুন্যালয়
সবার মন্তব্যের উপর বেজ করে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের দেশে এরেঞ্জ মেরেজ সিস্টেম টা এখনো এভাবেই চলে আসছে। আমরা অপছন্দ করি, তবে যেকোন চল হুট করে পরিবর্তন হয়না, আস্তে আস্তে হয়, এটাও হবে। যেভাবে অনলাইন সাইটে সকল বায়োডাটা, পিকচার দিয়ে খোঁজা হয়, এরকম সিস্টেম চালু হবে নিশ্চয়ই একদিন। তার আগ পর্যন্ত মেয়েদের কে গরু ভাবা কিংবা এভাবে ভাবা ঠিক না। পাত্রির পরিবারের পক্ষ থেকেও কিন্তু এভাবেই পাত্র দেখা হয়, এবং রিজেক্টও হয়। সেটা আলোচনায় কম আসে। যাই হোক, আমরা লেখকের পরবর্তি মজার অপেক্ষায় আছি। দেখা যাক। শুভ বিবাহ।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
সহমত।
তবে প্রাচীণকাল থেকে চলে আসা কোন চল সহজে বদলে যায় না। সময় লাগে