*অবশেষে ঃ
ভোর কি হলো? মানচিত্রের ইতিহাসে ভোর কি এলো?
দুঃস্বপ্নেরা ক্ষিদেয় ছটফট করে
নিরুদ্দেশ রাত্রির ঘরের শয্যায়।
থাকুক ওখানেই পড়ে;
আঘাতে জর্জরিত হলেও সমস্যা নেই।
ওরা সেই রাজাকার,
দেহের কোষে কোষে প্রলয় আসুক ভয়ঙ্কর মৃত্যুর
নিস্তেজ শরীরের স্থান,
এ মাটি তোদের জন্যে নয়।
*সূচনা-লগ্ন ঃ
মুক্তির ডাকে ছুটে যাবার তাড়ায়
পেছনে রেখে যাওয়া চিরস্থায়ী ক্ষত।
রক্তাক্ত জমিনের উপর আলপনা আঁকে,
এ আমার দেশ।
মিছিলের বুকে গুলি ছুঁড়ে কি প্রতিবাদ থামানো যায়?
এ বুকে সাহস আছে, মুখে শ্লোগান আছে
তোরা কারা? এখুনি এই দেশ ছাড়!
*চলমান ঃ
আচ্ছা ভোর কি হয়েছে?
আলোর আগুণকে ম্লান করে দিয়ে ফুঁটেছে কি কৃষ্ণচূড়া, শিমুল-পলাশ?
অন্ধ আমি ছুঁতে পারি কেবল।
ভোর কি হলো? এ উত্তর কে দেবে আমায়?
বায়ান্ন নাকি ষোলো?
তাইতো বলি,
হে অক্ষর আমি আজন্ম ঋণগ্রস্ত তোমার কাছে।
সহস্র ব্যবচ্ছেদের পরেও এখনও তুমি আট-ই ফাল্গুণ
তারপরেও হিসেবে মেলেনা।
তবুও আজও ভোর হয়,
ওই যে ভোর এলো।
হ্যামিল্টন, কানাডা
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ইং।
**আট-ই ফাল্গুণের সূচনালগ্ন থেকে বর্তমান—চেষ্টা করেছি লেখার। এটি লেখার আলাদা তিনটি ভাগ নয়। মহান একুশে অমর হোক।
৪০টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
ভোর হয় আপু, ভোর হয়। বায়ান্নর আর ষোল’র ভোরে কত্ত কত্ত তফাৎ দেখো। অবাক হয়ে যাই ভাবলে, কেমন ছিল তারা? কেমন ছিলো ছোট্ট একটা কিশোর? ভাষার জন্য কেমন ছটফট করতো তারা? অদ্ভূত।
হিসাব না মিললেও ভোর আসবেই, আট ই ফাল্গুনের ভোরে একদিন হলেও আবার মেলানোর চেষ্টা চলবে হিসাব গুলো।
অসম্ভব ভালা লাগা কবিতায়। কতদিইইইইইইন পর নীলাপুর লেখায় আমি প্রথমবার 🙂
শুভ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আপু। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
প্রথম হবার পুরষ্কার পাওনা রইলো। আপাতত -{@ (3
আপু গো আজকাল লিখতে পারিনা। কিন্তু মনটা না ধাক্কা দেয়, লিখতে বলে।
এই তো আর পারছিনা বসে থাকতে। পরে আবার আসবো আপু। আজ অনেক বসেছি।
শুন্য শুন্যালয়
আচ্ছা আপু, কষ্ট করোনা। রেস্ট নাও। লেখারও ক্ষুধা তৃষ্ণা আছে বুঝলে? আর তার খাবার হচ্ছে কাগজ। ক্ষুধায় ধাক্কা তো দেবেই। এসো আবার। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু ঠিক বলেছো। কতো সুন্দর করে বলো তুমি। মনটা ভরে যায়। -{@
ছাইরাছ হেলাল
এ শব্দঋণ আমাদের আজন্ম, শতশত বর্ষের।
স্মরণ এ দিনের, প্রত্যাশা প্রতিটি সকালের এ অমেঘ উচ্চারণের।
নীলাঞ্জনা নীলা
“এ শব্দঋণ আমাদের আজন্ম, শতশত বর্ষের।
স্মরণ এ দিনের, প্রত্যাশা প্রতিটি সকালের এ অমেঘ উচ্চারণের।”——-এমন মন্তব্যের জন্যে প্রতি-মন্তব্য এ দুটো লাইনই মানায়।
মৌনতা রিতু
ভোর তো হয়েছেই।
জাফর ইকবাল স্যারের ,”আমার বন্ধু রাশেদ সিনেমাটা দেখে,আমার ছটকু বলছে,দেখেছো আম্মু স্বাধীন না হলে আমাদের পড়তে হতো,”এক কুত্তা মাটিমে ল্যাটা হ্যে” কি অদ্ভুদ!
তাই তো এই উপলব্দি করি ভোর হয়েছে।আমি উপলব্দি করি ভোর হয়েছে,এখন কোনো রাজাকারের গাড়িতে সরকারি পতাকা নেই।আমরা বুক ফুলিয়ে বলতে পারি “তুই রাজাকার নিপাত যা”।
নীলাঞ্জনা নীলা
এটা ঠিক এখন আর কোনো রাজাকারের গাড়ীতে আমাদের পতাকা নেই।
কিন্তু ভোর হয়নি। এখনও অনেকেই জানেনা “একুশে ফেব্রুয়ারি” আসলে কি? কি হয়েছিলো এই দিনে?
জানিনা এই লিঙ্কটি কাজ করবে কিনা, তবু দিলাম।
https://www.facebook.com/Muktijuddhergolpo/videos/3344804417138/
জিসান শা ইকরাম
ভাষা দিবস এখন একদিনের একটি আনুষ্ঠানিকতায় পরিনত হয়েছে।
খুবই ভালো লিখেছো।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা কথাটি ঠিক। ভাষা দিবস এখন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
লেখাটা একধরণের বিষাদ নিয়ে লিখেছিলাম।
অনিকেত নন্দিনী
আজ বুক ভরে নিজেদের ভাষায় কথা বলতে পারি, অন্যের ভাষায় উপযুক্ত শব্দের সন্ধানে আঁকুপাঁকু হাতড়ে বেড়াইনা এইটাই তো অনেক বড় পাওয়া।
ভোরের আলো ফুটবেই। কোনো অপশক্তিই ভোর আসাকে ঠেকাতে পারেনা, ভোরের আলো আটকাতে পারেনা। যত দীর্ঘসময়ব্যাপী চন্দ্রগ্রহণই হোক না কেনো ভোরের সূর্যের আলো কি আটকে থাকে দিদি?
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভকামনা দিদি।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
একমত আপনার সাথে। ভোরের আলো ফুটবেই। কোনো অপশক্তিই ভোর আসাকে ঠেকাতে পারেনা।
আজ আমাদের ভাষাদিবস আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে, এইতো আমাদের সার্থকতা। সেই ‘৫২ এর পর থেকে এর গাম্ভীর্য ধুলিসাৎ করার জন্য যে চেষ্টা অব্যাহত ছিলো, তা কি গতি পেয়েছে নাকি বিশ্বব্যাপী এর আরও ব্যাপ্তি ঘটেছে?
একসময় একুশ ছিলো আমাদের শোক, এখন তা শোককে ছাপিয়ে অহঙ্কারে রুপ লাভ করেছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
একুশ আমাদের অহঙ্কার। ঠিক রুবা আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
দিদি সেই অপেক্ষাতেই তো আছি।
গানটি শুনুন দিদি কি যে গর্ব হয়।
https://www.youtube.com/watch?v=-MvrBDlSWG4&feature=share
অনিকেত নন্দিনী
চমৎকার!
বাংলার পাশাপাশি অন্য ভাষাতেও ২১ শে ফেব্রুয়ারির গান শুনে আসলেও অন্যরকম গর্ব লাগে। 🙂
২১ আমাদের অহংকারই তো!
নীলাঞ্জনা নীলা
দিদি ঠিক বলেছেন একুশ আমাদের অহঙ্কার।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
একজন মানুষের এত টেলেন্টেড হওয়ার কি দরকার!
মুগ্ধ হইলাম 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
বুঝলাম না। কার এতো প্রতিভা? ;?
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
কার আবার!!
নীলাপুর 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
অনেক বেশী বলে ফেললেন। ধন্যবাদ।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
অসাধারণ হয়েছে আপা।
-{@ -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
ইলিয়াস মাসুদ
খুওব সুন্দর,আপু
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ ইলিয়াস ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
ভোর ঠিকই হয়েছে কিন্তু চেনা জানা মানুষগুলো কেমন জানি পালটায়ে গ্যেছে।
ভাবনা চিন্তা কেন সব উলটে গেছে।
এক হুজুর/ পীর মনের খোপে বলে, ” কেউ আসেনা আমার সন্তান ইসলামি শিক্ষায় সুশিক্ষিত হোক, সবাই আসে কিভাবে লেখা পড়া করে গাড়ীবাড়ী করে বিদেশ বিভুইয়ে ঘুরবে এই তদবির নিয়ে।”
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই স্বশিক্ষিত মানুষের অভাব আমাদের দেশে। যেদিন সবাই সুশিক্ষার সনদের চেয়ে স্বশিক্ষার দিকে মনোযোগ দেবে,
সেদিন সত্যিকারের ভোর আসবেই।
মোঃ মজিবর রহমান
ঠিক বলেছেন কিন্তু এক্ষেত্রে বাবামাকে বেশি এগতে হবে যে।
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই সে তো অবশ্যই।
অরুনি মায়া
ভোর হয়েছে কিন্তু ভোরের আলো স্পর্শ করেনি |
যে প্রতিবাদে মৃত্যুর ভয় জাগেনা সেখানে বন্দুকের নল খেলনাসম | বাংলা আমার ভাষা | অমর হোক একুশে | শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি -{@ |
অনেক সুন্দর লিখেছ নীল আপু -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু আমাদের ভাষাটা অনেক কঠিন, কিন্তু খুবই কোমল। আমরাই এর প্রয়োগ করি বাজে ভাবে।
কতো শহীদের রক্তে পাওয়া এতো সুন্দর আর কোমল ভাষার আসন এখন নড়বড়ে হয়ে আছে।
অনেকেই জানেনা একুশে ফেব্রুয়ারি আসলে কি! আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্থান পেয়েও সেভাবে কোথায় পালিত হয়? এই যে প্রবাসে বাঙালীরাই করে, তাও পরের প্রজন্ম করবে কিনা জানিনা।
আপু আজকাল আর লিখতে পারি কই বলো! চেষ্টা করি লেখার। কিন্তু তোমরা সবাই ভালোবাসো বলে ভালো বলো। -{@
নাসির সারওয়ার
ভোর হয়। একুশ আসে একুশ যায়। অনেকের ঘুম হয়তো ভাঙ্গেনা।
সময় কি আমাদের একটু দূরে ঠেলে দিচ্ছে!!
অনেক ভালো লিখেছেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়ূ একদিন ঘুম ভাঙ্গবে ঠিকই, শুধু সেদিন দেরী না হয়ে যায়।
কিন্তু আশা নিয়ে আছি অবশ্যই আলো ছোঁবো আমরা সবাই।
ভালো আছেন তো ভাইয়ূ?
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অমর একুশ আমার অহংকার -{@সুন্দর হয়েছে কবিতাটি।
নীলাঞ্জনা নীলা
মনির ভাই একুশ আমার গর্ব। আমার অহঙ্কার আমি বাংলাভাষী।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ব্লগার সজীব
প্রকৃত ভোর আসলে হয়নি দিদি। বাংলাকে আমরা কতটুকু মর্যাদার আসনে বসিয়েছি তা দৈনন্দিন জীবনের কথা বার্তায় বোঝা যায়। ইংরেজী শব্দ ব্যতীত আমরা একদিনও কথা বলতে পারিনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাভু বাইয়া আমি কোনো ভাষাকেই অসম্মান করিনা। আর ইংরেজী ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবন চলবেও না।
কথা হচ্ছে নিজের মায়ের প্রতি যথার্থ সম্মান না রেখে, বন্ধুর মায়ের প্রতি সম্মান দেখানো…ব্যাপারটা কেমন ভেবে দেখুন!
এই তো আমি দেশের বাইরে, আমাকে বাঁচতে হলে ইংরেজীর আশ্রয় নিতেই হবে। কিন্তু আমাদের ঘরে আমরা বাংলাতেই কথা বলি।
কিন্তু দেশে দেখেছি ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে, আর ছেলে-মেয়েরা বাংলায় কথাই বলতে পারেনা। কষ্ট এটাই।
অপার্থিব
চমৎকার লিখেছেন। ভাষা কেন্দ্রীক আবেগের কারণে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ আসলে শুধু বাংলাদেশেই , পশ্চিম বঙ্গে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বাংলা শুধু ছিন্নমুলের ভাষা হিসেবে টিকে থাকবে। আসলে আমাদের এখানে ক্রম বর্ধমান কর্পোরেট সংস্কৃতি তার বিকাশের জন্য বাংলাকে হুমকি বলে মনে করে । এই কর্পোরেট সংস্কৃতির সংস্কৃতির দাপট উপেক্ষা করে বাংলাকে টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
নীলাঞ্জনা নীলা
বহু বছর আগে কলকাতার সানন্দা ম্যাগাজিনে পড়েছিলাম আমাদের দেশ বাংলা ভাষাকে যতোটা একান্ত করে নিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এমন অবস্থা নেই। আর এখন তো আরোও খারাপ হবার কথা। কিন্তু আমাদের দেশেই তো ভাষার জন্যে যুদ্ধ হয়েছিলো, পশ্চিমবঙ্গে নয়। আমরাই কি পেরেছি সেভাবে আমাদের এতো কোমল ভাষাকে সর্বস্তরে চালু রাখতে?
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্যে।
খসড়া
আটই ফালগুন, আকাশে আগুন, রাজপথে আগুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
হুম সেই আট-ই ফাল্গুণ, আকাশ এবং রাজপথ সর্বত্রই আগুণ।