আরজু মুক্তা আপুর সাথে চট্রগ্রাম ফয়েজ লেক ঘুরে দেখলাম।  সকল ব্লগারদের সাথে অনেক আনন্দ করে বাসায় ফিরলাম।গানটা যেন ভিশন ভাবে প্রিয় হয়ে গেল “আবার হবে যে দেখা? এ দেখাই শেষ দেখা নয় তো?”… সবাইকে মিস করি সব সময় তাই গানটা শুনি।সিডিতে গানটা বেজে চলছে কয়েকবাল, আমিও চোখ বন্ধ করে শুনতেছি।

সারাদিন গান শোনা আর মোবাইল টিপাটিপি করা ছাড়া তো আর কোন কাজ নেই বলেই আম্মু ধমক দিলেন।শোন আম্মু আমি ব্লগে উপন্যাস লেখালিখি করি, কথা শেষ করার আগেই আম্মু বললেন লেখালেখি করে কি লাভ, বিয়েটা করো আমরা শান্তিতে মরি।

আব্বু হেসে বললেন সেই ব্যবস্থা চলছে, শামীম আলী চৌধুরীকে চিন? হ্যাঁ কবি,সাহিত্যিক, ফটোগ্রাফার আমাদের একজন ব্লগার।আজ ভোরে হাঁটতে গিয়ে পার্কে তার সাথে দেখা, জিসান শা ইকরামকে চেনো? ওরে আল্লাহ্ সেও একজন সহিত্যিক ব্লগার দুজনেই আমাকে খুব স্নেহ করেন।আজ পার্কে হাঁটতে গিয়ে দেখা,শামীম চৌধুরী তো ডেকেই বললেন আপনি কি সুরাইয়া নার্গিস এর বাবা? আপনি একজন সৎ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছিলেন আলিফের লেখায় জানলাম।জিসান সাহেব বললেন আপনার মতো এমন সৎ মানুষ সংখ্যায় খুব কম পাওয়া যায়।জানো আলিফ এতদিন আমার পরিচয়ে তোমাদের মানুষ চিনত আর আজ আমার মেয়ের পরিচয়ে কেউ আমাকে চিনল।এটা যে কতটা খুশি আর গর্বের বিষয় সেটা তোমাদের ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না বলেই আব্বু হাসলেন।

আম্মু হেসে বললেন তাই নাকি তাহলে তো মেয়ের বই বের হলে তুমি লেখিকার বাবা হয়ে যাবে।আব্বু গর্বের সাথে বললেন হেসো না. আমার মেয়ের উপর সেই বিশ্বাস আছে একদিন সারা বাংলাদেশ আলিফকে এক নামে চিনবে।দোয়া করো আব্বু,আম্মু বলেই আমি ওঠে যাব,আব্বু বললেন শামীম চৌধুরী আলিফের বিয়ের ব্যাপারে একটা প্রস্তাব দিসে।আমি দাঁত কিটমিট করলাম ইসস আমি বিয়ে করবো না।তারপরও আমার বিয়ে।  হঠাৎ আব্বুর মোবাইলটা বেজে ওঠল,আম্মু রিসিভ করেই বললেন হ্যাঁ আমি আলিফের আম্মু। ও বিকালে আপনারা আসবেন বলেই আম্মু ফোনের লাইনটা কেটে দিল।আম্মু হেসে বললেন ছেলে পক্ষ বিকালে বাসায় আসবে কথাটা শেষ করার আগেই আমি রুম ত্যাগ করলাম।

দুপুরে খেয়ে একটু ভাত ঘুম দিলাম।  আব্বুর চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গল. আপনারা রওনা হয়েছেন, আচ্ছা বাসায় আসুন। আমি মনে মনে জিসান ভাইজানকে গালি দিলাম,  পৃথিবীতে এত মানুষ থাকতে আমার বিয়ে নিয়ে পড়ল কেন! এর মধ্যে কলিংবেল বেজে ওঠলে আব্বু দরজা খুলে সালাম দিলেন।  বুঝতে বাকি রইল না পাত্র পক্ষ আমাদের বাসায় হাজির।জিসান শা ইকরাম ভাইজান ভিতরে এসে আমাকে ডাকলেন ছোট আপু মেহমান আসছে সামনে চল , না হলে আমার মান সম্মান থাকবে না।শামীম চৌধুরী ভাইজান বললো বোন তোর ভাইদের সম্মান রাখ প্লীজ সামনে চল।

আচ্ছা যাব যেভাবে আছি এভাবেই সাজগুজ করবো না,আব্বু ইশারা করলেন জিসান ভাইজান বললেন ছোটপু সামনে চল।আমি রাগ মুখে সামনে গেলাম দেখি তৌহিদ ভাইজান মেহমানের সাথে আমি তো ভিষন খুশি সবাই পরিচিত হেসে মেহমানের সামনে বসলাম।ছেলে আমার পছন্দ হয়নি তাই একের পর এক ছেলেকে প্রশ্ন করলাম,ছেলের বাবা আমাকে প্রশ্ন করলো আপনি মেয়ের কি হওন।

আমি লজ্জায় চুপ করে রইলাম, তৌহিদ ভাইজান বললেন এযুগের মেয়ে তো আঙ্কেল তাই একটু বেশি স্মার্ট আমি হেসে মাথা নাড়লাম।ছেলের বাবা হেসে বললেন স্মার্ট মানে ওভার স্মার্ট ওনি যাকে প্রশ্ন করছেন তিনি এর আগেও ১বার পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে আসছেন।আমি চোখ বড় বড় করে শামীম ভাইজানের দিকে রাগে তাকালাম।বিড় বিড় করে বললাম অবশেষে বিবাহিত ছেলেকে আমার জন্য আনছেন ওই বুইড়ার লগে ফটো এ্যলবাম গিফ্ট করবেন বলে 😭। জিসান ভাইজান আড় চোখে তাকালেন শামীম ভাইজান আপনি আলিফের জন্য বুইড়া বেটা বিয়ার জন্য আনছেন।শামীম ভাইজার ফাঁসির আসামীর মতো চুপচাপ বসে আছেন,তৌহিদ ভাইজান বসে বসে সবার মুখ দেখছিলেন।আমার দিকে তাকাতেই আমি মুখে বেঞ্চি কাটলাম তৌহিদ ভাইজান অবশেষে আপনিও 😡? তৌহিদ ভাইজান বোকার মতো আমার মুখের দিকে চেয়ে জবাব দিলেন আলিফ আপু আমি আবার কি করলাম।

আমি কাঁদো কাঁদো মুখে বললাম বন্যা আপুর বুদ্ধিতে আপনার তোয়ালেতে কালি মাখিয়ে রাখছিলাম যাতে ভাবি ভয় পায়।আর আমার সারাজীবনের কালির লগে সংসার করার ব্যবস্থা করছেন বলেই কান্না শুরু😭। রুমেই সবাই সবার মুখ দেখছিলেন ব্যাপার কি,পাশ থেকে একজন সুদর্শন ছেলে হা হা হা করে হেসে দিল একদম চুপ বলেই আমি তাকে শান্ত করলাম।

আব্বু ছেলের বাবাকে বললেন ভাই সাহেব আমার মেয়ের বয়স কম,ছেলের বয়স তো অনেক বেশি।দেখতে কালো আলিফের কালো ছেলে পছন্দ না একথা শোনে ছেলের বাবা ওই বুড়ো পাত্র রুমের সবাই হা হা হা হা করে হাসি শুরু করে দিল।ছেলের বাবা বললেন আপনারা যাকে পাত্র ভাবছেন সে আমার বড় মেয়ের জামাতা ব্যাংকার।আমার মেয়ে স্কুলের শিক্ষিকা তাদের দুই ছেলে এক মেয়ে আমি লজ্জায় আর কিছু বলতে পারি নাই।তৌহিদ ভাইজান,শামীম ভাইজান,জিসান ভাইজান সহ রুমের সবাই হা হা হা করে হেসে দিল আমি লজ্জায় লাল,নীল,বেগুনী হয়ে যাচ্ছি।তৌহিদ ভাইজান আব্বুকে উদ্দেশ্য করে বললেন সকালে শামীম ভাইজান বললেন সুরাইয়া নার্গিস এর বিয়ের জন্য পাত্র দেখতে।আর সুরাইয়া নার্গিস এর পছন্দ আমরা জানি তাই দেখতে হ্যান্ডসাম,সুর্দশন, ফর্সা আমার বন্ধুর ছোট ভাইকে নিয়ে আসলাম।পাত্র দেখেই আব্বু বললেন আলহামদুলিল্লাহ্ আমি আর চোখ নিচে নামিয়ে রাখতে পারলাম না।কখন পাত্রের মুখ দেখবো 😲তৌহিদ ভাইজান বললেন আপু ছেলে দেখুন আপনার পছন্দ হয় কিনা!আমি তাড়াতাড়ি চোখ তুললাম ওরে বাবা বয়স একটু বেশি হলেও ছেলের গায়ের রং দুধে আলতা লম্বা,হ্যান্ডসাম, চোখ দুটো মায়াবী।শামীম ভাইজান কানে কানে বললো বুইড়া বেডা পছন্দ হইছে আমি জিসান ভাইজানের দিকে তাকিয়ে হাসলাম।তৌহিদ ভাইজান বললেন আরাফের মতো ছেলে সব মেয়েরী পছন্দ সবাই খুশি হলো।

ছেলের বাবা বললেন মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে, আব্বু হেসে বললেন আলিফের মত কি আমি হেসে বললাম তোমাদের পছন্দই আমার পছন্দ।ছেলের দুলাভাই বললেন আলহামদুলিল্লাহ্,ছেলের বাবা আমার হাতে একটা খাম দিয়ে বললেন ভিতরে যাও মা।বিয়ের তারিখ ঠিক হলো আব্বু ইচ্ছা আমার বিয়েটা গ্রামে হবে,গ্রামের মানুষ পেট ভরে একবেলা ভালো মন্দ খেতে পারবে।আমি রুমে এসেই লম্বা লিস্ট করলাম বিয়েতে কাদের দাওয়াত দিব,সন্ধ্যা থেকে রাত একে একে সকল ব্লগারসহ,পরিচিত সবাইকে কল করে দাওয়াত দিলাম।গায়ে হলুদের সকাল থেকেই আত্মীয়-স্বজন,পরিচিতরা আসতে শুরু করেছে।হঠাৎ হৈ চৈ শুরু হলো বাস এসেছে! গ্রামে বাস আসা মানে বিশাল কিছু।

আমি আব্বু দৌড়ে বাইরে আসলাম বাস থেকে পরিচিত মুখ নেমে আসছে ইঞ্জা ভাইজানকে দেখিয়ে বললাম আব্বু আমার প্রিয় একজন ভাইজান।জিসান শা ইকরাম,শামীম চৌধুরীকে আব্বু আগে থেকেই চিনেন।পিচনে ফর্সা,দুজন মহিলা বের হয়ে আসলো বন্যা বড় আপু,সাবিনা ইয়াসমিন মিষ্টি আপু আমি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।সুপর্ণা ফাল্গুনী দিদি,খাদিজাতুল কুবরা,রুরসানা খন্দকার রুকু ,সুরাইয়া পারভীন আপু আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে আদর করলেন।বিথী আপু বেগুনী শাড়ীতে ম্যাচিং পাঞ্জাবীতে দুলাভাই নতুন বর বধু লাগছে,তৌহিদ ভাইজান সাথে শবনম ভাবী মানিক জোড়া চমৎকার লাগছে।মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী ভাইজান সাদা পাঞ্জাবী পড়ছে,আরজু মুক্ত গোলাপী শাড়ী,প্রদীপ চক্রবতী বাদামী পাঞ্জাবী, পাঞ্জাবী,উর্বসী হলুদ শাড়ী,নীরা সাদিয়া সবুজ!নাজমুল হুদা আকাশী পাঞ্জাবী।মনির হোসেন মমি নীল পাঞ্জাবী,সুপায়ন দাদ সাদা পাঞ্জাবী,সিকদার সাদ রহমান কালো পাঞ্জাবী পড়া, মাহবুব আলম ভাইজান সাদা পাঞ্জবী,নিতাম দাদা আসে নাই?আমি না আসলে হবে দিদি বলেই নিতাই দাদা সাদা পাঞ্জাবী পড়ে হাজির।এস.জেড.বাবু বললেন আপু খুব ব্যস্ততার মধ্যে আছি,বাকি ব্লগাররা কাল বিয়েতে আসবে।আব্বু,আম্মু সবাইকে নিয়ে ভিতরে আসলেন.. শরবত,মিষ্টি,পিঠা,সেমাই নাস্তা।বন্যা আপ্পি বললেন আলিফ কি গোসল করে ফেলছিস নাকি আমার হলুদ দিব আমি লজ্জা পেলাম।মমি ভাইজান বললেন আপু চিন্তা করবেন না আপনারা যখন আসছেন আবার গোসল দিবেন।

সকাল ব্লগারের বিশাল আড্ডা গায়ের হলুদের স্টেজ সাজানো হলো আমি স্টেজে গিয়ে বসলাম একে একে সবাই হলুদ লাগাল।ফটোগ্রাফার শামীম ভাইজান সবার ছবি তুললেন বাকিটা ছবিতে দিখে নিবেন। আব্বু ইচ্ছাতে আমার বিয়েটা গ্রামে হচ্ছে,সন্ধ্যার দিকে গ্রামের মুরব্বি মহিলারা আসলেন আমাকে দেখতে।সকল ব্লগাররা একত্রে বসে গল্প করছে, একজন মুরব্বি পরিচয় দিলেন আমি জজ মিয়ার মা।জিসান ভাইজান চেয়ার ছেড়ে ওঠে দাঁড়ালেন আপনি বসুন। এদিকে জজ মিয়ার মা লজ্জিত ভাবে বললেন আপনেরা বসেন।আরে উকিলের মা তুমি কহন আইলা উকিল মানে তো এডভোকেট ইঞ্জা ভাইজান তাড়াতাড়ি ওঠে দাঁড়ালেন।আপনি বসুন উকিলের মা একটু বয়স্ক মানুষ তিনি বললেন কই আলিফের মা।জ্বী মামী আসছেন আমি খুব খুশি হয়েছি আসছেন বসুন বললেন আম্মু।আমি রুমের বাইরে আসলাম বারান্দায় আসলাম,আম্মু ডাকলেন আলিফ সালাম করো ওনি পুলিশের মা ওরে বাবা পুলিশের মা।সালাম করলাম পরনে ছেঁড়া কাপড় দেখে মনটা কেঁদে ওঠল দাদু আপনারা ছেলে পুলিশ আপনার ভরনপোষন করে না? আমারে খাওয়াইবো কি বইন হের তো ৫ মাইয়া পোলা সংসার চলে না। উপস্থিত সকলে অবাক আমি প্রশ্ন করলাম আপনার ছেলে তো পুলিশ সে তো মাসে ৪০-৫০ হাজার বেতন পায়।আমার কথা শুনে আম্মু আঁচলে মুখ ঢেকে হাসছেন,দাদু হেসে বললো দাদুরে আমার পোলার নাম পুলিশ কামে হে কৃষক বলেই হা হা হা হা করে হাসলেন।তাহলে জজ মিয়ার মা ওনি ও কি! হা হা হা হা আমাদের পূর্ব পুরুষের জানতো না জজ,উকিল,পুলিশ বলে কোন পেশা আছে তারা নিজেদের সন্তানের নাম জজ মিয়া,উকিল মিয়া,রাজা মিয়া,বাদশা মিয়া,পুলিশ মিয়া রাখতো।এবার ঘরের উপস্থিত সকলে হেসে ওঠল জিসান ভাইজান তাড়াতাড়ি চেয়ারে বসলে ওনার হাসি দেখে কে 😂 আহারে বেচারা ইঞ্জা ভাইজান আর বসতে পারলো না উকিলের মা চেয়ারে বসা 😂

রাতের বসল গান বাঁজনার আসর মনজুরুল আলম চৌধুরী ভাইজান লটারির ব্যবস্থা করলেন আমি ছাড়া সবার নাম লেখা হলো। এস.জেড.বাবু হরলিক্স হাতে হাজির ভাইজান দুদিনের জন্য বেড়াতে আসছি সেখানেও বললেন সাবিনা আপু..বলতেই সবার হাসি শুরু।বাবু ভাইজান চিৎকার করে বললেন আরে লটারির টোকেন রাখার জন্য পাত্রটা আনলাম 😲।গানের আসর বসল বিথী আপু,দুলাভাই,শবনম ভাবী,তৌহিদ ভাইজান, আরজু মুক্তা,প্রদীপ চক্রবতী,নীরা,সিকদার সাদ রহমান, নাজমুল হুদা সবাই নাচল।শামীম ভাইজানের ক্লান্তি বলে কিছু নেই সারাদিন ফটোগ্রাফার ছবি তুলায় ব্যস্ত রাতেও ব্যতিক্রম হয়নি।সকালে গ্রামের প্রকৃতি বা পাক-পাখালির ডাক না,বিয়ে বাড়ির কুকুরের চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গল।ছাইলাল হেলাল ভাইজান বললেন বিয়ে বাড়ির কুকুর গুলো খুব বেয়াবদ।হবে না আপনার বিয়ে তাদের খাইয়েছিলেন না তাই প্রতিশোধ নিচ্ছে 😂 বললেন সুপায়ন বড়ুয়া।এত হৈ চৈ করার পর আমার অবস্থা খারাপ চিৎকার চেঁচামেছি করে আমার গলা বসে গেছে সেই টেনশনে বন্যা আপু,সাবিনা আপু,সুরাইয়া পারভীন,সুপর্না ফাল্গুনী দিদি ব্যস্ত চা খেয়ে গলা ঠিক করতে হবে আজ বিয়ে ডাঃ মেজর সানি তো ঔষধের নাম লিখে দিসেন তাও খাচ্ছি।

বিয়ের দিন ফয়জুল মহী,হালিম নজরুল,পর্তুলিকা,আলমগীর হোসেন লিটন, মোহাম্মদ মজিবুর রহমান,ইসহাক,নৃ-মাসুদ রানা,কামাল উদ্দিন,রিমু রুম্মন,রুমন আশরাফ,রেজওয়ান,নাসির সরওয়ার,রেজওয়ানা কবির,সাজেদুল হক,অরুনিমা মন্ডল দাশ,দালান জাহান,জাকিয়া জেসমিন যূথী,মনি কাশফিতা,শিরিন হক,সাদিয়া শারমিন,আলমগীর সরকার লিটন,শায়লা ইলিয়াস, সঞ্জয় মালাকার,কামাল হোসেন  এসে হাজির।আমি তো অভিমান কথা বলবো না কেন তাদের আসতে এত দেরি হলো। মাহবুবুল আলম ভাইজান আললেন  আলিফ মন খারাপ করবে না ওনারা এসে জয়েন করছেন আমরা তাতেই খুশি,এবার আমিও খুশি।প্রায় ৪০ জনের চা নাস্তা আপুরা সবাই নিজ দায়িত্বে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করলেন।

দিতাই দাদা বললেন দিদিরা সাঁজগুজ শেষ হইছে?আপনি পুরুষ মানুষ সেটা জেনে কি করবেন বললেন সাবিনা আপু.?আচ্চা বর চলে আসছে তাহলে গিয়ে বলি মেয়েরা গেইট আটকাবে না জিসান ভাইজান যেন ওনাদের ডেকোরেটরের ভিতরে নিয়ে যায়।সাবধান আমরা গেইটে আসছি আপনি যান বলেই বন্যা,সাবিনা,আরজু,সুরাইয়া,আরজু মুক্তা,খাদিজাতুল কুবরা,রুকসানা খন্দকার রুকু আপুরা, প্রদীপ চক্রবতী,নাজমুল হুদা সবাই চলে গেল।গেটে দাম কষাকষি চলছে বন্যা আপু বললেন নিজের বিয়ের গেইটের টাকা কে নিয়েছিলো আজো জানি না।আলিফের বিয়ের গেটের টাকা আমি নিব বলেই দু হাতে গেট আগলে ধরলেন।

হবু বর চেয়ে দেখলেন সব বয়স্ক মহিলা বুকের ভিতরে আর্তকে ওঠল গেটে দাঁড়ানো তৌহিদ ভাইজানের দিকে ইশারা করে বললেন।ভাইয়া ইনারা বউয়ের ছোট বোন? তাহলে আমার বউটা ঠিক আছে তো নাকি পরিবর্তন হয়ে গেছে 😲।শামীম ভাইজান ধমক দিলেন মানে কি?মানে আমার শালীরা সবার বয়স মনে হয় ৩০-৪০ উপরে তাই জানতে চাইলাম 🥺।ওনারা তোমার বউয়ের বড় বোন জামাই বেঁহুস.. শোন এখানে সবাই গেইটে দাঁড়াতে পারে নতুন জামাইয়ে জ্ঞান ফিরছে। কি আমরা বয়স্ক মানুষ সুরাইয়া পারভীন আপু ধমক দিলেন 😡 ওরে বয়সে কি আসে যায় যদি মনটা কচি থাকে আমরা সবাই চিরসবুজ 🤗 বলেই হাসলেন  সাবিনা আপু,সুপর্না দিদি,আরজু মুক্তা বন্যা আপু সবাই।

যাইহোক জামাই বাবু ১০ হাজার টাকা গেটপার্স দিয়ে ভিতরে ঢুকলেন, খাওয়া দাওয়া চলছে। জিসান,শামীম,মাহবুবুল আলম,মনজুরুল আলম চৌধুরী মুরব্বি মানুষ নিতাই দাদা বললেন তৌহিদ,ছাইরাছ হেলাল,নাজমুল হুদা,মজিবুর রহমান,প্রদীপ আপনারা ডেকোরেটরে দায়ীত্ব নেন খাওয়ার টেবিল আপনারা সামলাবেন।সবার কথা শুনে আব্বু আবেগ আপ্লুত হলেন সকল ব্লগাররা আলিফের বিয়েতে এভাবে দায়ীত্ব পালন করবে আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি নাই।আপনাদের সবার আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ, এস.জেড.বাবু ভাইজান বললেন আলিফ আমাদের সবার প্রিয় ছোট বোন।ওর বিয়েতে ভাই হিসাবে আমরা আমাদের দায়ীত্ব পালন করছি আপনি টেনশন করবেন না ভিতরে যান।সত্যি আলিফের পরিবারের মানুষ গুলো যে এত ভালো মানুষ এখানে না আসতে জানতে পারতাম না বললেন জিসান ভাইজান।আরজু মুক্তা খাদিজাতুল কুবরা, মুক্তা আপুরা সবাই মিলে আমাকে সাঁজাতে ব্যাস্ত আমি বার বার বললাম।আপু আমি বউ সাঁজাতে পারি সারাজীবনে ৫৬ জন বউ সাজিয়েছি আমি সাজবো,বন্যা আপু ধমক দিয়ে বললেন তুই জানিস না।কি আপু?যার বিয়ে সে বিয়ে খায় না অন্যরা আনন্দ করে খায়। তুই অন্যের বউ সাজিয়েছিস এখন তোর বিয়েতে অন্যরা সাজাবে এটাই নিয়ম।

ঘন্টা খানেকের মধ্যে আমাকে কার্টুন বানিয়ে ফেলল নিজের মুখটা ঠিক চিনতে পারছিলাম না। চারদিকে ভিডিও ক্যামেরা চলছে এর মধ্যে শামীম ভাইজান সকল ব্লগারদের ফটোগ্রাফি করে চলছেন। আমি যে কখন কার পাশে দাঁড়াচ্ছি সেটা জানি না শুধু ক্যামেরার আলো চোখে পড়ছিলো সবাই ছবি তুলায় ব্যস্ত।একটু কাঁদবো তারও সুযোগ নেই কাঁদলে নাকি মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে,তাই মুর্তির মতো বসে আসি। বন্যা আপু হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বললেন শোন কাজী সামনে আসতেই নির্লজ বেহায়ার মতো কবুল বলে দিও না।অনেকক্ষন সময় পরে কবুল বলবে এতে তারা বুঝবে মেয়েটা খুব ভদ্র লজ্জাবতী।আমি মাথা নাড়লাম ওকে বড় আপু।

আম্মুর কান্নাকাটি শুরু ছেলের পক্ষ থেকে কবুল বলে সাইন করে দিয়েছে এবার আমার পালা রুমে ৭ জন এসে হাজির।কাজী ছেলের নাম ঠিকানা বলে বললেন ১০ লক্ষ টাকা দেনমহর ধার্য করিয়ে ওমুকের পুত্রের সাথে আপনার বিয়ে আপনি রাজি? রাজি থাকলে কবুল বলুন,আমি মনে মনে বললাম ১০ লক্ষ টাকা না ১০ টাকা কাবিন হলেও আমি রাজি পাত্র আমার খুব পছন্দ হইছে।

কাজী আবার বললেন আপনি রাজী?আমি এবারও চুপ 😷 বড় আপু বলছে দেরি করে কবুল বলতে হঠাৎ শামীম ভাইজান বললেন?আলিফ তুমি কি আমাদের মান সম্মান ডুবাবে😠 ধমক শোনে আমি কেদে ওঠলাম কানের কাছে টং টং টং করছে কবুল বলছি কেউ শোনছো না। আমি চোখ খুললাম ওরে আল্লাহ্ আমি এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম 🙈🙈🙈 খাটের পাশে ঘড়িতে এলাম বেঁজে চলছে, এলাম বন্ধ করে দেখি সকাল ৮ টা বাজে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হতে ওয়াশ রুমে ঢুকলাম…

বিঃদ্রঃ   #স্বপ্ন ই যখন দেখবো একটু বড় করেই দেখলাম ☺,, সবার নাম লিখতে পারি নাই দুঃখিত৷ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা সবার প্রতি কষ্ট করে এত বড় লেখাটা পড়ার জন্য।

স্বপ্ন || ১২ ( ব্লগারদের সম্মিলিত গল্প)

১৯১৭জন ১৪৫৮জন

৮৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ