আজ ২২ আষাঢ়!! বৃষ্টি নূপুর পরে সেজেগুজে আসতে দেরি হয়ে গেলো। বাইরে বৃষ্টি ঝরলে মনেও এর ছাট এসে লাগে। বৃষ্টি রিমঝিমিয়ে ঝরলে মনটাতেও “রিমঝিম ঝিম ঝিম ঝিম ঘন দেয়া বরষে” গানের সাথে নাচতে ইচ্ছে করে। আর মুষলধারে ঝরলে”বৃষ্টি নূপুর পরে বর্ষা এলোরে; সারা গায়ে গোলাপ পানি ছিটিয়ে দিলো রে” গানটি অবলীলায় মনের চারিপাশে গুনগুন করে। ধীর লয়ের বৃষ্টিতে অতীত মনে পরে যায়। পাশের বাড়ির টিনের চালের উপর সহসা বৃষ্টির শব্দ, ছোটবেলার “আয় বৃষ্টি ঝেঁপে ধান দিবো মেপে” ছড়াটি স্মৃতিতে ভাসে । তরুণ তরুণীর মনে “শাওনও রাতে যদি/স্মরণে আসে মোরে/বাহিরে ঝড় বহে /নয়নে বারি ঝরে!” দোলা দিলেও মন্দ না।
বৃষ্টির সাথে যেনো মধুর এক সম্প্রীতি আমাদের। ঠিক এই সময় এফ এম রেডিওতে হেমন্তের কণ্ঠে শুরু হয় বর্ষার গান” এমনও দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরষায়।” আর অকারণে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে পৃথিবীও ঝাপসা হয়ে যায়। ঐ জানালার গ্রিল দিয়ে যে ছেলেটাকে দেখা যেতো; সেও একদিন নিয়ে চলে গিয়েছিলো আমার ফুল বাগান, সমস্ত সৌরভ, ব্যঞ্জনা,নিশ্চুপ বিকেল, হারানো শৈশব।
শৈশবে মাছ ধরাটাও ছিলো মজার। নতুন পানি, নতুন মাছ! কি চকচকে মাছের রং! জমিতে একহাঁটু কাদা আর উচ্ছল সবুজ ঘাস ঠেলে মাছ ধরা! সে কি ভোলা যায়!
বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যেবেলা যেনো এক রূপকথার মতো। শেয়াল আর পেঁচার ঘনঘন হাঁকডাক। দূরের পথচারীর হাতে টর্চলাইট এক মোহনীয় আলোর সৃষ্টি করে। নানি দাদুর ভূতের গল্প যেনো দৃশ্যমান ভূত। রাস্তার লাইটের আলো গুলো পানির সাথে এক ভৌতিক যোগাযোগ রেখে চলেছে। বাবার উঠানে এসে কাক ভেজা শরীরে হাঁকডাক আর মায়ের ডিম খিচুরি! পরম তৃপ্তিতে ঘুম দেয়ার সময় ব্যাঙদের রহস্যময় ডাকাডাকির প্রতিযোগিতা আমাদের ঠেলে দেয় অপার বিস্ময়ের মেলায়।
আকাশ আর মাটির প্রেমের উপাখ্যানে আমরাও হারিয়ে যাই বৃষ্টিমুখর এই দিনে। চির সবুজের উৎসবে।
আজকে থাকুক এটা বারণ সেটা মানা
পদে পদে হরেকরকম নিষেধ শোনা
বৃষ্টি স্নানের একটু খেলায়
যাইনা চলোরে———-!
★★ছবিটি বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে তোলা।
৩৬টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
পরে আসবে। কথা হবে।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ।
শাহরিন
অনেক সুন্দর উপস্থাপন, আসলেই বৃষ্টি আসলে সবারই মন সতেজ হয়ে উঠে স্মৃতিতে।
মোঃ মজিবর রহমান
আপু প্রক্রিতি যখন সতেজ মানুষ প্রফুল্ল না হয়ে থাকতে পারে!!!
শাহরিন
শুধু চাকরিজীবিরা মাঝে মাঝে ক্ষেপে যায় অফিস যাওয়ার সময় বৃষ্টি হলে ভাইয়া।
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যাঁ তা হইই অফিস তো আর বৃষ্টির হাওয়ায় দোলেনা। অফিস কর্তারা কোন অভিযোগ শুনবেও না। তাই কি করা । এই দিনে যদি আরামসে বাসায় বসে আড্ডা দেওয়া যেত জমে ক্ষির হত তাই না।
আরজু মুক্তা
একদম! ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম
মোঃ মজিবর রহমান
গ্রাম বাংলার চিরাইয়ত বৃষ্টিবাদলের, ব্যাঙ আধ আলো আধ ছায়া স্বরনীয় সন্ধ্যার কথা চিকচিকে করে দিলেন। এই ব্রিস্ট ভেজা রাতে চলে যেয়ো না।
https://youtu.be/oPEU76asAeE
আরজু মুক্তা
এই গানটা এড করলে আরও ভালো হতো।বৃষ্টিতে মন মাতিয়ে দিলাম।
মোঃ মজিবর রহমান
পরে এক পোস্টে ব্রিস্টকে নিয়ে আবার লেখেন জমবে আপু।
ছাইরাছ হেলাল
ময়ূর নাচ আর বাদ দিলেন কেন!
তাও জুড়ে দিন এই বর্ষায়, কথার ফুলঝুড়িতে।
আরজু মুক্তা
বাইরে বৃষ্টি আর আমার কলম একসাথে চলছে।তখন ময়ূরের কথা মনে আসেনি। এখন মনে হচ্ছে যোগ হলে মন্দ হতোনা!
ছাইরাছ হেলাল
যোগ বিয়োগ ত আপনার হাতেই।
জিসান শা ইকরাম
বাংলার আর কোনো মাস আমাদের জীবনে এত প্রভাব ফেলে না। বৃষ্টিতে আমাদের মনকে অন্যরকম আনন্দে উচ্ছল করে ফেলে। যেখানে বয়স কোন বাধা নয়।
লেখার মাঝে বর্ষা কালের বেশ কিছু স্মৃতি প্রকাশ করেছেন। স্মৃতি সব সময়ই সুন্দর।
লেখাটি ভালো হয়েছে খুব।
মাঝে মাঝে একটা দাড়ির স্থলে দুটো কেন? দাড়ি বা কমার পরে একটা স্পেস দিলে পড়তে ভাল লাগবে সবার।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
ঠিক তাই।বর্ষা সবার মন মাতিয়ে দেয়।লিখাটি যত্ন করে পড়েছেন আর ভালো লেগেছে, এটাই একজন লেখকের লিখার সার্থকতা!
এরপর যতিচিহ্ণের ব্যবহারে যথেষ্ট মনো্যোগ থাকবে।
ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
বাইরে বৃষ্টি ঝরলে মনেও এর ছাট এসে লাগে ” বাস্তব অনুভব।
আরজু মুক্তা
লিখটা যখন লিখছিলাম তখন বাইরে বৃষ্টি। কলম এর বাইরে যায়নি।শুধু স্মৃতির আকাশে বিচরণ ছিলো।
শামীম চৌধুরী
বৃষ্টি বিলাস নামকরন হলে ভালো হতো। যাক আপু আমি মেয়ে হয়ে জন্ম নিলে আপনার বৃষ্টি নুপুর পায়ে পড়ে হেমন্তের গানে সাথে নাচতাম। হা হা হা..।
ভালো লেগেছে আপনার বৃষ্টি নুপর পড়ে।
আরজু মুক্তা
লিখাটি ভালো লেগেছে জেনে আমিও সার্থক। আজকাল তো ছেলেরাও নাচে। আপনি বাদ যাবেন কেনো?
বন্যা লিপি
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি আহা কি যে সব কথা ওঠালেন!! বৃষ্টি মানেই শৈশব কৈশরিক স্মৃতী রোমন্থন।
আরজু মুক্তা
বৃষ্টি দিয়ে মাতিয়ে দিলাম স্মৃতির শহর।
তৌহিদ
বৃষ্টি আমারও খুব প্রিয়। সমস্য একটাই, বৃষ্টি এলে আমার ঘুম পায় বড্ড। অফিসে থাকলেতো থেমে থেমে হাই ওঠে। আর খিচুরি আমার লাগবেই।
লেখাটি ভালো লেগেছে। ধীরে ধীরে একজন পরিপুর্ণ লেখক হয়ে উঠেছেন।
আরজু মুক্তা
লিখাটির সার্থকতা আপনার কমেন্টের মাঝে নিহিত।বৃষ্টি আর খিচুরি দুটো সহদর।
মাসুদ চয়ন
আকাশ আর মাটির প্রেমের উপাখ্যানে আমরাও হারিয়ে যাই বৃষ্টিমুখর এই দিনে। চির সবুজের উৎসবে।খুব সুন্দর লেখা।
আরজু মুক্তা
আমার লিখা সার্থক কারণ আপনাদের ভালো লেগেছে।
শুভকামনা।
হাফেজ আহমেদ রাশেদ
বেশ সুনিপুণ উপস্থাপন ,বৃষ্টি ভেজা শুভেচ্ছা আপুটি
আরজু মুক্তা
শুভকামনা।
আপনাকেও বৃষ্টিময় শুভেচ্ছা।বৃষ্টি ধুয়ে দিক সকল কালিমা।
রেহানা বীথি
লেখাটা পড়ে ছোটবেলায় মাছ ধরার স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।
খুব সুন্দর লিখেছেন।
আরজু মুক্তা
বৃষ্টির ছোঁয়ায় মন রাঙালাম।
শুভকামনা, আপু।
অপু রায়হান
তোমার বারান্দায় বৃষ্টি নেমে এলে আমার ঠোঁটের কার্নিশে
রঙিন খিদে’র ঢল নামে।
আরজু মুক্তা
আর আমি চোখে চোখ রেখে সুরা পান করি।
মনির হোসেন মমি
বৃষ্টি আমারও পছন্দ তবে ঠান্ডার ভয় আছে বলে স্বাধগুলো পুড়ে মরে।চমৎকার লেখা।
আরজু মুক্তা
আসলেি বৃষ্টি সবার পছন্দ।
শুভ কামনা
সিকদার সাদ রহমান
বৃষ্টির উপাখ্যান সুন্দর বর্ননায় এসেছে।
এ কদিন বৃষ্টিছিলো না। আজ একটু হচ্ছে। ভালই লাগছে!
আরজু মুক্তা
বৃষ্টিময় শুভেচ্ছা।
নাজমুল হুদা
বৃষ্টি বিলাস , স্মৃতি বিলাস আঁকড়ে ধরে জীবনের সবটায়