১৯৭১ সালের শেষ লগ্নে এসে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে , বাংলাদেশকে মেধাশুন্য করার জন্য দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে । ১৪-১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং তাদের স্থানীয় সহযোগী আল বদর বাহিনী বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এই সময়সারা দেশে হাজার হাজার শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের বাড়ি থেকে রাতের অন্ধকারে চোখ বেঁধে নিয়ে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আল বদর বাহিনীর কর্মীরা এসব বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তার করার কাজটি করে ।বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এ এন এম মুনীর চৌধুরী
ডঃ জি সি দেব
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
আনোয়ার পাশা
ডঃ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা
আবদুল মুকতাদির
এস এম রাশীদুল হাসান
ডঃ এন এম ফয়জুল মাহী
ফজলুর রহমান খান
এ এন এম মুনীরুজ্জামান
ডঃ সিরাজুল হক খান
ডঃ শাহাদাত আলী
ডঃ এম এ খায়ের
এ আর খান খাদিম
মোঃ সাদিক
শরাফত আলী
গিয়াসউদ্দীন আহমদ
আনন্দ পয়ান ভট্টাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক গণপরিষদ সদস্য
সাংবাদিক
চিকিৎসাবিদ
অন্যান্য
যারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে :
রাজাকার :
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিরা রাজাকার শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়। যুদ্ধরত পাকিস্থানি সামরিক বাহিনীকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে রাজাকার দল গঠিত হয়। ‘রাজাকার’ ফার্সি শব্দ। এর অর্থ ’স্বেচ্ছাসেবী’। মুক্তিযুদ্ধের সময় মে মাসে খুলনায় খান জাহান আলী রোডের একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন পাকিস্তানপন্থী কর্মী নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। পরবর্তীকালে দেশের অন্যান্য অংশেও রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলা হয়। প্রথম পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী ছিল এলাকার শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন। ১৯৭১ সালের ১ জুন জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স-১৯৭১ জারি করে আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করে। তবে এর নেতৃত্ব ছিল পাকিস্তানপন্থী স্থানীয় নেতাদের হাতে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৭ই সেপ্টেম্বর জারিকৃত এক অধ্যাদেশ বলে রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর সদস্যরূপে স্বীকৃতি দেয়। রাজাকার বাহিনীর প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছিল ১৫ দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই কুষ্টিয়ায় রাজাকারবাহিনীর প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং সমাপ্ত হয়। পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক অধিনায়ক জেনারেল এ.এ.কে নিয়াজী ১৯৭১ সালের ২৭শে নভেম্বর সাভারে রাজাকার বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডারদের প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং শেষে বিদায়ী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করে। পরবর্তী পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তরের মর্যাদায় উন্নীত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের সঙ্গে সঙ্গে রাজাকার বাহিনীর স্বাভাবিক বিলুপ্তি ঘটে।
আল বদর
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তা দানকারী আধা-সামরিক বাহিনী। যার সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রকে অখন্ড রাখার উদ্দেশ্যে জনমত গঠন করার জন্য। পূর্বাঞ্চলীয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল নিয়াজীর পৃষ্ঠপোষকতায় এই বাহিনী গঠিত হয়েছিল। ইসলামিক ইতিহাসের বদর যুদ্ধকে আদর্শ করে এই বাহিনী গঠিত হলেও এদের মূলকাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া আর নারী ধর্ষণ এবং ধর্ষণে সহায়তা করা। মে মাসে রাজাকার বাহিনী গঠনের আগেই এপ্রিল মাসে গঠিত হয় আল বদর বাহিনী। রাজাকার বাহিনী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, আর আল বদর বাহিনীর মূল কাজ ছিল সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক গণহত্যার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় যে পাকিস্তান বিরোধী বুদ্ধজীবীদের হত্যা করাই ছিল এই বাহিনীর মূল লক্ষ্য। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনীর পতনের পর এই বাহিনীর বিলুপ্তি ঘটে।
২২ এপ্রিল, ১৯৭১ তারিখে ময়মনসিংহ জেলা ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি মুহম্মদ আশরাফ হোসাইনের নেতৃত্বে জামালপুর শহরে আল বদর বাহিনী গঠিত হয়।
দৈনিক পাকিস্তান ও পূর্বদেশ পত্রিকায় ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১ তারিখে প্রকাশিত সংবাদে আল বদর বাহিনী নিজেদের সম্পর্কে বলে, “আলবদর একটি নাম! একটি বিস্ময়। আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী আলবদর সেখানেই! যেখানেই দুষ্কৃতকারী, আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর বা দুষ্কৃতকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল।”
আল শামস
আরবি শব্দ আল শামসের অর্থ দাঁড়ায় ‘সূর্য’। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আল শামস ও আল বদর বাহিনী গঠন করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের বাহিনী মুক্তি বাহিনীকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে।
পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম জামায়াতে ইসলামীর প্রচারযন্ত্র দৈনিক সংগ্রাম এর মাধ্যমে ‘দুষ্কৃতিকারীদের’ বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ ও যুদ্ধের ডাক দিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠন করে সে বাহিনীর আমীরের পদ গ্রহণ করলে তৎকালীন ছাত্রসংঘের কর্ণধার, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, আবদুল কাদের মোল্লার নেতৃত্বে আল শামস ও আল বদর বাহিনী গঠন করে । পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রসংঘের আমীর ও পরবর্তীতে বাংলাদেশের মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী আল বদর ও আল শামস বাহিনীর আমীরের পদ গ্রহণ করে এবং সারা বাংলাদেশে প্রচারণা, সামরিক বাহিনীসমূহের সাথে যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করে। ঢাকা নগর ছাত্রসংঘের আমীর ও পরবর্তীতে বাংলাদেশের মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদও এসব বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পালন করে। আবদুল কাদের মোল্লা সামরিক জিজ্ঞাসাবাদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আঙুল কাটার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।
কিছু রাজাকার আলবদর আলশামস এর নাম :
সমস্ত লেখা উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া হয়েছে।
৩৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
বিচার চাই এই সব হত্যাকারীদের।
প্রজন্ম ৭১
বিচার চাই এই সব হত্যাকারীদের।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই বিচার চাই ।
অনেক কষ্ট করে সংগ্রহের জন্য ধন্যবাদ ।
প্রজন্ম ৭১
অবশ্যই বিচার চাই ।
লীলাবতী
সময় টিভিতে এখন দেখছি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার কাহিনী। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবার বর্গ বলছেন , কিভাবে একেক জনকে নিয়ে গিয়েছে হত্যা করার জন্য। শুনে খারাপ লাগছে খুব।
এমন পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ।
প্রজন্ম ৭১
এসব চিন্তাই করা যায়না লীলাবতী । কত নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করা হয়েছে !!
শিশির কনা
শ্রদ্ধা জানাই জাতীর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ।
প্রজন্ম ৭১
আমরা আজীবনের জন্য ঋণী এনাদের কাছে।
নওশিন মিশু
নতুন স্বদেশ গড়ার পথে
তোমরা চিরদিন দিশারী রবে
আমরা তোমাদের ভুলব না …. (3 -{@ (3
প্রজন্ম ৭১
ধন্যবাদ মিশু আপু।আমাদের সংগ্রাম চলবে।
বনলতা সেন
সারা বছর যে কেন এই সূর্য্য সন্তানদের মনে থাকেনা তাই বুঝতে পারি না।
সোনেলাকে ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্য।
প্রজন্ম ৭১
সোনেলা সারা বছরই মনে রাখে জাতীয় বীরদের।ধন্যবাদ আপনাকেও।
লীলাবতী
এই হতাকারীদের বিচার হবেনা,এই হত্যাকারীদের পক্ষে এখন দেশে লাখ লাখ মানুষ, এসব ভাবলেও কষ্ট হয়।বিচার পাবোনা এমন ধরে নিয়ে অক্ষম মানুষদের মত বলি’ আল্লাহ্ যেনো এদের বিচার করেন’ ।
প্রজন্ম ৭১
কষ্ট আমাদের সমান আপু।
আলম দীপ্র
চমৎকার একটা পোস্ট !
সকল শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা ।
প্রজন্ম ৭১
ধন্যবাদ আপনাকে।
স্বপ্ন নীলা
অসাধারণ একটি পোস্ট দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
সকল শহীদ বুদ্ধিজীবিদের তরে স্যালুট —
নতুন প্রজন্ম জানুক, বুঝুক, দেশের তরে কাজ করুক —–
প্রজন্ম ৭১
ধন্যবাদ আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
জাতিকে মেধাশুন্য করার লক্ষ্যেই বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডটি ঘটানো হয়েছিলো। কিন্তু পাকবাহিনী কি তাঁদের চিনতো?
সেই চিনিয়ে দেয়ার কাজটিই করেছিলো এদেশীয় কুলাঙ্গাররা।
সম্প্রতি এমনই একজনকে নিয়ে দেশে তোলপাড় উঠেছে, যিনি নিজে বাচাঁর জন্য সহযাত্রীদের ধরিয়ে দিয়েছিলেন। অথচ তিনিই কিনা আবার দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনের জন্য খেতাবপ্রাপ্ত হন। কি বিচিত্র এই দেশ!
প্রজন্ম ৭১
কত অব্যাবস্থা যে আমাদের দেশে আছে,যা চিন্তা করলেও লজ্জা পেতে হয়।
মেঘাচ্ছন্ন মেঘকুমারী
এই হত্যার হোতা,খুনি আলবদরদের বিনার চাই। শহীদদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা।
প্রজন্ম ৭১
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এমন লেখা আরো চাই। -{@
প্রজন্ম ৭১
লেখি তো এমন লেখাই। ধুন্যবাদ।
সাইদ মিলটন
পাকিস্তান আর্মি ডাম্ব হেডেড আর্মি ছিলো। সাড়ে আটমাস যারা খুন খারাপি আর ধর্ষণ কইরা বেরাইছে তারা হঠাৎ বুদ্ধিজীবী হত্যা করা কেন শুরু করল , হঠাত করে তাদের জ্ঞানচক্ষু খুইলা গেছে ?
– না , বরং এইটা হচ্ছে জামায়াতি শুয়োরদের মাস্টারমাইন্ডের কূটচাল। এই শুয়োরদের অপরাধ পাকি সেনাবাহিনীর চেয়েও বেশী। এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
প্রজন্ম ৭১
আপনার সাথে একমত সাঈদ ভাই।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
প্রহেলিকা
দেশের এই শহীদ সূর্য সন্তাদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
প্রজন্ম ৭১
ধন্যবাদ আপনাকে প্রহেলিকা।
শুন্য শুন্যালয়
শব্দগুলোর অর্থ তো দারুণ!!! স্বেচ্ছাসেবী, সূর্য, বদর যুদ্ধের যোদ্ধা সব…ঘেন্না করি তোদের আর তোদের সমর্থনকারী কুকুরগুলো কে। বিচার চাইনা আর, বেঁচে থেকে সারাজীবন ছি: নে।
মাথা নত শ্রদ্ধা আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি। আমাদের ক্ষমা করে দিও।
প্রজন্ম ৭১
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা । খুনীদের প্রতি ঘৃনা থাকবে আজীবন।
নুসরাত মৌরিন
সকল শহীদ বুদ্ধিজীবিদের আমার হৃদয় নিংড়ানো বিনম্র শ্রদ্ধা।
সে দিন কি কখনো আসবে না যেদিন এইদেশে আর একটাও যুদ্ধাপরাধী থাকবে না!!বিচারের জন্য আর কত অপেক্ষা??!! 🙁
প্রজন্ম ৭১
বাঙ্গালীদের মনে এদের বিচার হয়ে গিয়েছে বহু পুর্বেই।
রণবীর
অনেক তথ্য বহুল সমৃদ্ধ লেখা ।
প্রজন্ম ৭১
উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া সব,আমি শুধু এখানে এনে দিয়েছি।