কতোকাল পর মনে হচ্ছে নিজের ঘরে এসেছি। অনুভূতিটা কেমন জানি, ঠিক বলে বোঝাতে পারবোনা। আজই বাসায় ফিরলাম। সেই যে ৮ জানুয়ারি আমাকে পৃথিবী থেকে কতো দূরে যে নিয়ে গিয়েছিলো। একেকটি মুহূর্ত মনে হতো জেলখানা কি এমনই? কি সুন্দর একটা ভোরে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। সেদিনকার সকালটা আমার জীবনের দেখা সবথেকে সুন্দরতম সকাল। বেশ কিছু ছবি তুললাম সকালের। তারপর ক্লায়েন্টের বাসায়। সকালের ক্লায়েন্ট শেষ করার পথে, ২ নম্বর বাস ধরলাম ব্রাম্পটন স্ট্রীটে যাবো। ক্লায়েন্টকে ফোনও দিলাম, দুপুর ১ টার মধ্যে আসছি। বাস থেকে নেমে ৪ নম্বর বাসের অপেক্ষা, রাস্তার অন্যপাশে। সিগনালের অপেক্ষায়, সিগনাল পড়তেই রাস্তা ক্রস করছিলাম। হঠাৎ প্রচন্ড জোরে হর্ণের শব্দ। একেবারে স্ট্যাচু। তারপর দেখি আমি উপর থেকে নীচে পড়ছি। নাহ জ্ঞান হারাইনি। আমার ফোন খুঁজছিলাম, অফিসে জানাতে হবে আমার এক্সিডেন্টের কথা। ফোন দিলো কে এক পথচারী। ঐ অবস্থাতেই কো-অর্ডিনেটর পামেলার এক্সটেনশন নাম্বার দিলাম, আমি বললাম জ্যাকুলিনের কাছে কোনো নার্স পাঠাও, আমার এক্সিডেন্ট হয়েছে। তারপর বলছি নিজেকে হুইল চেয়ার আমার জন্যে না। আমার বাপি-মামনির জন্যে আমাকে এই পায়েই দাঁড়াতে হবে। একজন মহিলা এসে আমাকে বললো, “হান একটু অপেক্ষা করো, এম্বুলেন্স আসছে। আমি একজন নার্স। মনে হয় তোমার হাড় ভেঙ্গেছে।” ওই অবস্থাতেই জিজ্ঞাসা করলাম আমি দাঁড়াতে পারবো তো? বললো মহিলা যে পারবো। ঘটনা ঘটার ২ মিনিটের মধ্যে এম্বুলেন্স, পুলিশ, ফায়ার কন্ট্রোল সব এসে পড়লো। ব্যথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে, নিজের অজান্তেই চিৎকার বেড়ুচ্ছে গলা থেকে। যতো বোঝাই নিজেকে চুপ, কিন্তু পারছি কই?
তারপর এমার্জেন্সি। সোশ্যাল ওয়ার্কার, আমার সুপারভাইজারকে দেখলাম। বলতে লাগলাম ঊর্মীকে ফোন দিতে। টেনে নিলাম আমার ফোন। ঊর্মী আমি এক্সিডেন্ট করেছি। ঊর্মী আমার অমন কথা শুনে ভেবেছিলো তেমন কিছু না। ঊর্মী ওর মেয়ে কাঁকন মামনিকে নিয়ে হ্যামিল্টন জেনারেল হাসপাতালে এলো। ঊর্মীকে নিয়ে যখন আইসিইউ-এর দিকে যাচ্ছিলো ডাক্তার, তখন ও বুঝলো কতোটা সিরিয়াস। ওকে দেখেই জড়িয়ে ধরে বললাম, “বাপি-মামনিকে কে দেখবে রে ঊর্মী?” ও বললো, “আমি যা খাবো ওরাও তাই খাবে। জেঠু-জেঠিমনির জন্য একটুও চিন্তা করিস না।” বালিশে রক্ত, ঊর্মীকে বলছি এই এতো রক্ত মাথা কেটেছে? ৬টা সেলাই দেয়ার আগে প্রশ্ন করলো, এনেস্থেসিয়া দিয়ে করলে তারপর ডাবল ব্যথা হবে। বললাম এনেস্থেসিয়া ছাড়াই করো। তারপর তো আস্তে আস্তে এই আমি আজ এখানে। ফিজিওথ্যারাপিষ্ট স্যু-এর কাছে কৃতজ্ঞ অনেক সাহায্য করেছে। এই যে ওয়াকার নিয়ে হাঁটছি, তারই সৌজন্যে।
এবারে আসি এক্সিডেন্টে আমার কিচ্ছু হারায়নি। ব্যাগে টাকা, কার্ড কতোকিছু ছিলো। কিভাবে যে নিজের চিকিৎসা হলো, কোথা থেকে টাকা এলো আমি জানিনা। ওহ আরেকটা কথা এখনও পুরোপুরি সুস্থ হইনি। সময় লাগবে ২/৩ মাস। কড়া ডোজের ঔষধ খেয়ে ঘুম ঘুম চোখে ল্যাপু অন করেছি। বলেছিলাম যেদিন ল্যাপু পাবো, সেদিন সোনেলার নীড়ে আসবোই। সব বন্ধুদের অফুরান ভালোবাসা, তা নইলে ফিরে আসার কথা ছিলোনা। সকলেই অবাক হয়েছে ওভাবে কেউ বাঁচেনা। হয় কোমায় চলে যায়, নয়তো প্যারালাইসড। যাক এই এক্সিডেন্টে মানুষ চিনলাম। সিবিআই অফিস থেকে বিশাল বড়ো ফুলের তোড়া, একেবারে উপর মহল থেকে। আমার সুপারভাইজার লিয়া ব্যক্তিগতভাবে কতোবার যে এলো, খবর নিচ্ছে রোজ। আমায় বলেছে চাকরী নিয়ে না ভাবতে। আমায় নাকি অফিস ওয়ার্ক দেবে। আমার কো-অর্ডিনেটর পামেলা কি কান্না! নার্সিং ম্যানেজার মিশেল আমার বাসায় উপস্থিত তাও ফুল-কফি-ম্যাগাজিন নিয়ে। প্রথমে ভেবেছি এসব বুঝি অফিসিয়ালি। পরে জানলাম এসব ব্যক্তিগত। পামেলা আমায় বললো আমি এতো সুইট কেন? এক্সিডেন্টে ডান পায়ের প্যালভিস বোনস ভেঙ্গে আমি ক্লায়েন্টের কাছে নার্স পাঠানোর কথা কিভাবে বললাম? আজ বাসায় এসেছি লিয়ার ফোন সন্ধ্যার সময় নার্স যাবে। এদিকে প্রচুর বন্ধু-বান্ধবের অস্থিরতা। আমি কৃতজ্ঞ আমার সুস্থতার জন্যে সকলের প্রার্থনায় যে ছিলাম। এতো ভালোবাসা কোথায় রাখি? নাহ আর পারছিনা লিখতে। অনেক ছবি আছে, একদিন দেবো। আজ এটুকুই থাক। কয়েকদিন আগের লেখা কয়েকটি লাইন,
আমি তোর বালিয়াড়ির নীল;
ঢেউয়ের জলে
নিশ্চিহ্ন করে একেবারে মুঁছে দেয়া নামের আখর।
আমি তোর সোঁদা মাটির কাছে লেপ্টে থাকা খরস্রোতা নদী
সেই নদীর বুকে ধাক্কা খেয়ে এক কোণায় পড়ে থাকা নুড়ি-পাথর।
আমি সেই নারী যার প্রত্যাখ্যানে তুই বিষ হয়ে উঠিস,
আদরে আহ্লাদী।
আর কি বলবো বল!
আমি সেই ত্রেতা যুগের সীতা, দ্বাপরের রাধিকা ছিলাম।
আর এ সময়ের বিশাল বড়ো বিপ্লবী এক আখ্যান,
যাকে পাওয়া যায় শুধুই মানুষ হিসেবে।
শুধুই নারী, উহু, নাহ!
হ্যামিল্টন, কানাডা
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ইং।
৪৮টি মন্তব্য
হতভাগ্য কবি
লেখা পড়ে বুঝলাম আপনার মানসিক জোর অনেক, একটু ভালো বোধ করলেই ল্যাপু কে নিয়ে বসে পড়বেন। আর সত্যের গন্ধ মাখা কবিতায় মুগ্ধতা।
আগেই জানিয়েছি আপনি প্রার্থনায় ছিলেন আছেন, পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠুন, -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
সত্যিকারের প্রার্থনা বিফল হয়না। তার প্রমাণ জীবনে আরেকবার পেলাম। 🙂
অনিকেত নন্দিনী
ওয়েলকাম ব্যাক!
প্রচুর মিস করেছি নীলাদি। 🙁
জলদি জলদি পুরোপুরিভাবে সুস্থতা আসুক।
-{@
নীলাঞ্জনা নীলা
দিদি একাকী যতোটা মিস করেছি আমি। উফ কতোকাল পর এলাম!
অফুরান ভালোবাসা দিদি -{@
অনিকেত নন্দিনী
একটানা চার সপ্তাহ না আসতে পারলে তো খারাপ লাগবেই।
গত ৩৪ ঘন্টার মতো আসতে পারিনি, তাতেই আমার কী যে অস্থির লাগছিলো! 🙁
নীলাঞ্জনা নীলা
দিদি বসতে পারিনা। আর তাই ল্যাপুতে আসাও কম হয়।
জিসান শা ইকরাম
তোমাকে দেখে কেমন এক অনুভুতি।
আনন্দেও মানুষ কাঁদে, চোখ ভাসে জলে।
তোমার মানসিক শক্তি, সবার আন্তরিক ভালবাসায় দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠেছ তুমি।
সারাক্ষন ভাল থেকো।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা এই শক্তিটুকু ধরে রাখতে আজীবন যেনো পারি।
আজ জানো অনেকদিন পর বাইরে বেড়াতে যাবো?
যদিও হুইল চেয়ারে, তাও আনন্দে মাতছি। 😀 \|/
পারভীন সুলতানা
হ্যাটস অফ টু ইউ। যে মেয়ের মানসিক জোর নেই, সে পূর্ণ নারী নয়। তুমি পূর্ণতায় পরিপূর্ণ । দোয়া রইল ।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু এই মনের জোর দিয়েই ৪২ টি বসন্ত পার করছি। 😀 :p
কেমন আছেন আপনি? 🙂
পারভীন সুলতানা
আছি ভাই বেচে। আর আছি নিত্য রনাজ্ঞনে , যেমন থাকে কষ্ট পাওয়া মানুষগুলো ।
নীলাঞ্জনা নীলা
এভাবে বলবেন না আপা। সুস্থতার মতো স্বস্তি আর কিছুতে নেই।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
মনবল হলো জীবনকে বাচিয়ে রাখে বুঝতে পারলাম সেই মন বল আপনার আছে…..থাকতেই হবে এত সহজেতো আমাদের ছেড়ে যেতে দেবো না…ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক এবং দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবে সেই প্রার্থনাই করছি -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
মনির ভাই আপনাদের প্রার্থনা ফেরাবে কিভাবে ঈশ্বর?
সত্যিকারের ইচ্ছে কোনোদিন বিফল হয়না। ভালো থাকুন। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ইস! ফিরে এলেন!! থ্যাঙ্কস গড। খুব খুব মিস করেছি আপনাকে। এমন চঞ্চলা-চপলা নীলাঞ্জলা নীলা না থাকলে কি আমাদের ভালো লাগে?
প্রখর মানসিক শক্তি মানুষকে কঠিন বিপদেও পথ দেখায়, উতরে উঠতে সহায়তা করে।
শুভকামনা। পরিপূর্ণ সেরে উঠুন জলদি জলদি।
এই দেখুন না, আজকে আপনি ফিরে এলেন আর এর মধ্যে শুনি ছাইরাস হেলাল ভাই আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অবশ্য অসুস্থ হয়ে পড়লেন বলা যাবে না, বলা উচিৎ হতে হয়েছে। জটিল অপারেশনজনিত অসুস্থতা। নিশ্চয় তিনিও তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন আমাদের মাঝে।
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা আপু না-ফেরার দেশে যাবার অনেক দেরী আছে আমার। কারণ আপনাদের সকলের ভালোবাসায় জড়ানো প্রার্থনা ঈশ্বর ফেরাতে পারবেন না যে!
আর কবি ভাই খুব তাড়াতাড়ি ফিরবেন।
ইলিয়াস মাসুদ
সবাই কাজ টাকে দ্বায়িত্বের ভেতরে সব সময় রাখতে জানে না,এত বড় দুর্ঘটনার সাথে সাথে ফোন তুলে অন্যের কথা ভাবা খুব সহজ বিষয় নয়…….. এমন মানুষদের সাথে স্বয়ং ঈশ্বর থাকে পায়ে পায়ে…
আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি একটু পাগলী টাইপের। অমন করে ফোন করার কথা মাথায় এসেছিলো, আমার ক্লায়েন্টটা খুবই অসহায় ছিলো।
আপাতত একটু ব্রেক দিয়ে দিয়ে বসতে পারি।
ইলিয়াস মাসুদ
ভাল মানুষ গুলো চিরকাল আত্মভোলা হয় দিদি , সে সব মানুষ গুলোর নামের বিশেষন নেই তাই পাগলামি বলি…..
এই মুহুর্তে নিজের যত্ন কেমন নিতে হবে তা আপনার চাইতে ভাল কেইবা জানে ?
আমাদের দোয়া আপনার সাথেই রয়েছে সারাক্ষন …….
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালো কিনা জানিনা। তবে চেষ্টা করি আমায় দিয়ে কারো যেনো ক্ষতি না হয়।
ভালো থাকুন।
নাসির সারওয়ার
ভালো ভাবেই ভালো হয়ে যাবেন। আমরা আছিনা।।।।।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়ূ এভাবে বললে ভালো না হয়ে যাবো নাকি!
🙂
নাসির সারওয়ার
বুজিতো কিছু মনে হয়। এরকম অবসথায় এই রকমই চাইতে হয়। আপনার মনের জোর আপনাকে তাড়াতাড়িই ভালো করে দেবে। দেশে থাকলে না হয় ডাকতারি করতাম। এইটা করিয়েন না, সেইটা করা যাবেনা।
ভালো থাকুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
ইস কেন যে দেশে থাকলাম না। ডাক্তার ভাইয়ূর স্নেহ তো পেতাম!
অরুনি মায়া
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছ তুমি , অবশেষে আমাদের মাঝেও ফিরেছ | আপু এত কঠিন মনোবল সবার থাকেনা | আর কটাদিন কষ্ট কর | আবার তুমি সময়কে তাড়িয়ে নিয়ে দৌড়ে বেড়াবে -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু হুম অপেক্ষায় আছি আবার দৌঁড়ে বেড়ানোর।
ভালো থেকো। 🙂
অরুনি মায়া
দৌড়ে ট্রফি পেলে আমাদের দেখাতে ভুলবানা কিন্তু 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
ইস দেখালে যদি নিয়ে যাও আপু? :p
রিমি রুম্মান
দিদি, সুস্থ থাকার চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছু নেই। সৃষ্টিকর্তা মহান।
নীলাঞ্জনা নীলা
রিমি আপু খুব সত্যি কথা। আমরা পাওয়া-না-পাওয়া নিয়ে কতো হিসেব-নিকেশ করি।
সুস্থ না থাকলে আর কিছুই থাকেনা।
অপার্থিব
দ্রুত সুস্থ হয়ে আরো ভাল ভাবে ফিরে আসার শুভকামনা থাকলো -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আগামীকাল এপয়েন্টমেন্ট ডাক্তারের কাছে। দেখি পেলভিক কতোটা জোড়া লাগলো। 🙂
ব্লগার সজীব
আল্লাহর অশেষ রহমত যে আপনার মারাত্মক কিছু হয়নি। অথচ কত কিছুই হয়ে যেতে পারতো। সোনেলায় যখনই এসেছি, আপনার অভাব বোধ করেছি নীলাদি। আপনাকে দেখে কত যে ভালো লেগেছে তা লিখে প্রকাশ করতে পারবো না। সোনেলার একান্ত আপনজন আপনি, সোনেলা নীড় আপনার আমার সবার। যে কজন ব্লগার সোনেলাকে মাতিয়ে রাখেন, আপনি তাদের মাঝে অন্যতম। নীলাঞ্জনা নীলা ব্যাতিত সোনেলার একটি অংশ থাকে অনুজ্জ্বল।
দ্রুত সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন গান হয়ে -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাভু বাইয়া আমি রোজ মিস করেছি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। প্রচন্ড ব্যথা তারপরেও মনে হতো যদি আসা যেতো। কিন্তু সেলফোন থেকে কিছুতেই পারিনি ব্লগে আসতে। তাই ফেসবুকে আপডেট দিতাম। এতো ভালোবাসা আমার জন্যে আপনাদের সবার, চোখে জল এসে গেলো আনন্দে।
ভালো থাকুন সবসময়। -{@
শুন্য শুন্যালয়
আয়রন লেডি, ওয়েলকাম ব্যাক। তোমার মানসিক শক্তি দেখে যমেও ডরাবে, বুঝছো? লেখা, কবিতা, নীলাপু নীলাপু ঘ্রানে সোনেলা ভরে গেলো। অসুখের ছুতায় ক্লাস ফাঁকি দেইনা আমরা? তোমার পা দুস্টামি করছে, শিঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে, চিন্তা করোনা।
ভালো থেকো খরস্রোতা নদী।
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু গো জীবন আমায় কি দেখালো আর কি দেখাচ্ছে! জানো কাল আমার ডাঃ এপয়েন্টমেন্ট? কেউ নেই নিয়ে যাবার। আমার নার্সিং সুপারভাইজার লিয়া ফোন দিয়ে বললো আমাকে নিয়ে যাবে।
কে বলে এ দেশের মানুষ পাথর? বন্ধু ঊর্মী বলে, আমার মতো দুষ্টু-শয়তান মেয়ের পাশে সব ভালো এসে জড়ো হয় :p 😀
শুন্য শুন্যালয়
পাথর কেন হবে আপু? আমার পাশের বাসার এক লোকের দুই বছরের বাচ্চা গাড়িতে বসা অবস্থায় দরজা লক হয়ে গেছে। তার কোলে আরেকটা ছোট বাচ্চা, তার পার্টনারের কাছে আরেকটা চাবি আছে কিন্তু সে জবে। আমার হাজব্যান্ড কে এসে বললো, ও চাবি এনে দেখে সেই লোক চিৎকার করে কাঁদছে। আমাদের কালচার, কাস্টম সব আলাদা তবে সবাই মানুষ। তোমার ভাগ্যটাকেও ভাল বলতেই হয় এমনি করে সব ভালো মানুষকে ঘিরে থাকো আপু। জলদি দৌড়ে বেড়াও। শুভকামনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু অনেক কষ্ট হয় ল্যাপুতে বসতে। তবে ২/১ মাসের মধ্যে সুস্থ হবো আশায় আছি।
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
এত কঠিন সময়েও যে ভেঙ্গে পরেন নি তা শুনেই ভাল লাগছে অনেক। বিপদ কখন আসে কেউ বলতে পারে না।
আপনি হামিল্টন থাকেন? ওখানে আমার এক খালা থাকেন। গত মাসে গিয়েছিলাম। আগে জানলে দেখা করে আসতে পারতাম আপনার সাথে।
ভাল থাকবেন। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ।
আবার হ্যামিল্টন বেড়াতে এলে জানাবেন।
ভালো থাকুন।
স্বপ্ন
আল্লাহ্র কাছে হাজার শোকর যে আপনি ফিরে আসতে পেরেছেন। এক্সিডেন্টের কথা জানি সোনেলার পোষ্টের মাধ্যমে। সোনেলা পরিবারের একজন উচ্ছল উজ্জ্বল মানুষ আপনি। আপনার এক্সিডেন্ট বিচলিত করে আমাদের। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
এতো প্রার্থনা আর ভালোবাসা বিফলে যায় না, যেতে পারেনা যে স্বপ্ন। -{@
মিথুন
উহ আপু, এক্সিডেন্টকেও ভড়কে দিয়েছেন আপনি। ভুল লোকের পাল্লায় পড়েছিল। লেখাটা মনকে ভিজিয়ে দিলো, আপনার মনোবল অসীম। ভালো হয়ে উঠুন পুরোপুরি, তারপর আবার আমাদের সবাইকে দাওয়াত করুন। অহম তিরিকে মিস করি যে আপু।
কবিতাটা দারুন লাগলো…………
নীলাঞ্জনা নীলা
অহম-তিরিকে আমিও মিস করি। কিন্তু এখনও বেশীক্ষণ বসতে পারিনা। কমেন্টের রিপ্লাই দিতে অনেক কষ্ট হয়।
তবে ফিরিয়ে আনবো অহম-তিরিকে। আরেকটু অপেক্ষায় থাকুন না আপু।
ছাইরাছ হেলাল
রাধিকা থেকে বিপ্লবী যাই বলুন না কেন,
আমার পক্ষপাত মানুষের প্রতি।
নীলাঞ্জনা নীলা
জানি তো! আপনি যে মানুষের প্রতি পক্ষে।
স্বাগতম পোষ্টে।
ছাইরাছ হেলাল
তবে রাধিকারা খুপ ভাল!
নীলাঞ্জনা নীলা
সে তো আপনি জানেন! আমি রাধিকা নই, তাই জানিনা। 😀