” অমুকের স্বামী মাল খায়….তমুকের বউ দুশ্চরিত্রা…. ” এজাতীয় গল্প এবং কল্প কথায় কেটে যায় আমাদের অনেকটা সময়।বলা যায়, কারো কারো জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ! দূর থেকে মনে হবে, খুব গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে….বিনোদনের কমতি নেই। মূলত পরচর্চা এমনি এক আকর্ষণীয়, মুগ্ধকর, শান্তিদায়ক অভ্যাস!! সব শ্রেণী পেশার মানুষ ই কমবেশি জড়িয়ে গেছে এই অবসর বিনোদনে।তবে মহিলাদের উপস্থিতি লক্ষণীয়…. বিশেষ করে গৃহিনীদের। আপাতদৃষ্ট খুব একটা ক্ষতিকর নয় এই মহান “পরচর্চা”।কারণ, এখানে শারীরিক আঘাত করা হচ্ছে না।অন্তত কিছু মানুষ বিনোদনের খোরাক পাচ্ছেন। যার পরচর্চা হচ্ছে, তার বিষয়ে একটু পরে আসা যাক। বরং এটা দেখা যাক যে, যারা পরচর্চা করছেন, তারা এই সময়ে আর কী কী করতে পারতেন। সময়টা দেয়া যেতো সন্তানের পড়াশুনোয়….এমনকি বন্ধু হয়ে গল্প করা যেতো, খেলা যেতো। সেলাই মেশিনটা সচল করা যায়।সৃজনশীলতা যেমন তৃপ্তি দেয়, পাশাপাশি নিয়ে আসে আর্থিক স্বচ্ছলতা। গঠনমূলক একটা প্রবন্ধ বা কবিতা লেখা যেতো….যা হয়তো সমাজ বদলের একটা হাতিয়ার হতে পারে। ছাদে বাগান করার উপযোগী হলে, একটু উদ্যোগ নিয়েই দেখুন। দু’টো বেকার ছেলে মেয়ে কে একটা আবেদনপত্র লিখতে সহায়তা করুন। আরো অনেক কিছুই হতে পারতো…আমার ক্ষুদ্র মেধায় ক’টাই বা আসে! এবার দেখা যাক পরচর্চা কোনো ক্ষতির কারণ হতে পারে কিনা? একটু ভেবে দেখলে বুঝতে অসুবিধা হয় না, এটা এক জঘন্য সামাজিক ব্যধি।বিভিন্ন বিশৃঙখলার সূত্রপাত এই পরচর্চা থেকেই।বিশেষ করে এখানে বিশ্বাসঘাতকতা হয় চরমভাবে। সাধারণত বন্ধু মহলেই এটা হয়ে থাকে কোনো না কোনো বন্ধু বা বান্ধবী কে নিয়ে।মানসিকতা কতো নিচে নামলে এটা সম্ভব…. একটু ভেবে দেখা প্রয়োজন। ভেঙে যাচ্ছে বিশ্বাস….বন্ধন টুকরো টুকরো হচ্ছে প্রতিদিন। এবার ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে একটু দেখা যাক।ধর্মীয় ভাষায় পরচর্চা কে “গীবত” বলে। গীবত সম্পর্কে ইসলাম ধর্মে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়া আছে।এটা কে মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে।এমনকি গীবতকারী তার সকল গুনাহ নিয়ে নিচ্ছে বলেও বর্ণনা আছে। এরপরেও থামছে না পরচর্চা।এ যেনো এক অমৃত সুধা! আর কতো? সভ্যতার আড়ালে অসভ্যতা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? পরচর্চা নয়….আসুন, পরোপকারী হতে চেষ্টা করি।এভাবেই গড়ে উঠুক সুস্থ মন…সুন্দর পরিবেশ।
২৫টি মন্তব্য
হালিম নজরুল
পরচর্চা নিয়ে চমৎকার লেখা।ভাল লাগলো।
শফিকুল ইসলাম
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
জিসান শা ইকরাম
আপনি সম্পুর্ন লেখাটি শিরোনাম এ লিখেছিলেন। শিরোনাম এর নীচে বড় জায়গা আছে মুল লেখা সে জায়গায় লিখতে হবে।
সোনেলার মডারেটর লেখা ঠিক করে দিয়েছেন। অন্য সবার লেখা দেখুন, পড়ুন, তাহলেই সব বুঝতে পারবেন।
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে।
শুভ কামনা।
শফিকুল ইসলাম
ব্লগে আমি একদম নতুন। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা আমাকে ভীষণ আপ্লুত করেছে।
আশাকরি এভাবেই পাশে পাবো সব সম।
জিসান শা ইকরাম
অবশ্যই পাশে পাবেন সবাইকে। যে কোন কিছু জানতে চাইলে যে কারো পোষ্টে মন্তব্য করে জানতে চাইবেন। একজন না একজন জানাবে আপনাকে।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
“যে কোন কিছু জানতে চাইলে যে কারো পোষ্টে মন্তব্য করে জানতে চাইবেন। একজন না একজন জানাবে আপনাকে।”
@ভালো লাগলো #জিসান শা ইকরাম ভাই। এভাবেই একটি জাহাজ গতি পায়….
জিসান শা ইকরাম
বাংলাদেশে পর চর্চা হচ্ছে বিনোদন,
এতে মগ্ন প্রায় সবাই।
শফিকুল ইসলাম
বিষয়টি শুধু দুঃখজনক নয়; লজ্জারও। আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে সামান্য আলোকপাত করেছি মাত্র। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী যদি এতোটুকু পাল্টায়…তাতেই আমি ধন্য।
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার বাস্তবতার নিরিখে লেখা। দারুণ লিখেছেন
শফিকুল ইসলাম
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবে।
বন্যা লিপি
আপনাকে এখানে দেখে চমতকৃত হয়েছি।স্বাগতম সোনেলার সোনালী উঠোনে।আশা করি সোনেলা আপনার লেখায় গর্বিত হবে।
প্রথমেই আপনি সমাজের এক অতিপুরাতন রোগ বিষয়ে লেখা নিয়ে এসেছেন। এই রকম পরচর্চা বোধকরি সেই পুরোনো দিন থেকেই সহজ এবং উপাদেয় চর্চা হিসেবে আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবস্থান করে আসছে।
আত্মোপলব্ধি ছাড়া এর পরিত্রান নেই।
শুভ কামনা আপনার জন্য।
শফিকুল ইসলাম
আপনাদের সাহচর্য পেয়ে আমিও ভীষণ মুগ্ধ।
বিবেকের তাড়না থেকেই লিখতে হলো।
কথা প্রথমত আমাকে উদ্দেশ্য করেই। জীবনকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে বুঝতে গেলে হয়তো কিছু পরিবর্তন অপরিহা।
ভালো থাকুন। আশারাখি পাশেই পাবো।
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার বাস্তবতার নিরিখে লেখা। দারুণ লিখেছেন।
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে।
শুভ কামনা।
শফিকুল ইসলাম
কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, সুহৃদ।
কামাল উদ্দিন
অমুকের স্বামী মাল খায়….তমুকের বউ দুশ্চরিত্রা…. ” এজাতীয় গল্প এবং কল্প কথায় কেটে যায় আমাদের অনেকটা সময়। আর এ নিয়ে গবেষণা করে আমরা ব্যপক বিনোদিত হই, কিন্তু কোন প্রতিবেশী না খেয়ে আছে কিনা, রোগ শোকে কাতর কিনা সেই খবর রাখার সময় পাইনা।
………………আপনার সাথে আমিও সূর মিলিয়ে বলি “পরচর্চা নয়….আসুন, পরোপকারী হতে চেষ্টা করি।এভাবেই গড়ে উঠুক সুস্থ মন…সুন্দর পরিবেশ।”
শফিকুল ইসলাম
যথার্থ বলেছেন, সুহৃদ।
শুভকামনারইলো।
কামাল উদ্দিন
শুভ কামনা
ছাইরাছ হেলাল
আমাদের অসুস্থ বিনোদনের শক্ত হাতিয়ার এই পরচর্চা, এটি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে,
এখন জাঁকিয়ে বসছে বলতে পারেন, বের হতে পারলে ভাল, তবে হুট করে আশাবাদী হচ্ছি না।
তবে সচেতনতা দরকার, এই আপনি যেমন আমাদের বলছেন।
স্বাগত আপনি এখানে, লিখুন, পড়ুন, আমরা আপনার সাথেই থাকব।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আপনার সাথে একমত @ছাইরাছ হেলাল ভাই
এস.জেড বাবু
পরচর্চা
// এক জঘন্য সামাজিক ব্যধি।বিভিন্ন বিশৃঙখলার সূত্রপাত এই পরচর্চা থেকেই।
বিশেষ করে এখানে বিশ্বাসঘাতকতা হয় চরমভাবে।
সাধারণত বন্ধু মহলেই এটা হয়ে থাকে কোনো না কোনো বন্ধু বা বান্ধবী কে নিয়ে।মানসিকতা কতো নিচে নামলে এটা সম্ভব…. একটু ভেবে দেখা প্রয়োজন।
– সত্যিই ভেবে দেখা প্রয়োজন।
চমৎকার যুগউপযোগি লিখা।
শুভেচ্ছা
চাটিগাঁ থেকে বাহার
প্রথমেই আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি এই ব্লগে নতুন ব্লগার হিসেবে।
শুরুতে সম্ভব হলে যদি নিজের পরিচয়টা দিতেন তাহলে আপনাকে জানতে সহজ হত। অবশ্য এটা জরুরী নয়। কারণ অনেকে ব্লগে আড়ালে থাকতেই বেশী পছন্দ করেন।
আপনার প্রথম লেখাটি খুব ভালো লেগেছে। এ বিষয়টিকে আমি তিতা কথা সিরিজে সম্ভবত গত মাসের ১৯ তারিখ লিখেছিলাম।
যাই হোক, আপনার প্রতি শুভ কামনা, ভালো থাকুন সবাই সময়।
শিরিন হক
সোনেলায় স্বাগতম আপনাকে। লেখার মন্তব্য পড়ে করবো।
মনির হোসেন মমি
আসলে জ্ঞানের অভাব হলে যা হয় ।পরচর্চা কোন কালেই ভাল ফল বয়ে আনে না তবে হ্যা চর্চাকারী সাময়িক বিনোদন পেলেও তার জন্যই এক সময় এটা ভয়ংকর হতে পারে। চমৎকার একটি লেখা নিয়ে এলেন সোনেলা পরিবারে। আপনাকে অভিনন্দন।
সাবিনা ইয়াসমিন
শুনতে খারাপ শোনালেও এটাই সত্যি। কিছু মানুষ পানি ছাড়া খাবার হজম করতে পারলেও পরচর্চা না করে ঘুমুতে পারেনা। পরোপকারী হওয়ার চাইতে তাদের পরের চর্চাটাই বেশি আনন্দ দেয়। ভালো লাগলো আপনার প্রথম লেখাটি।
সোনেলা ব্লগ পরিবারে আপনাকে স্বাগতম।
লিখুন, পড়ুন, ব্লগে বিচরন করুন নিজের খেয়াল-খুশি মত। আর হ্যা,,,নীতিমালা অনুস্বরন করুন। 🙂
সোনেলায় আপনার পদচারণা শুভ হোক।
শুভ কামনা 🌹🌹
সিকদার সাদ রহমান
আমরা ভুলে যাই, যারা পর চর্চা করি, আমাদের নিয়েও কেউ না কেউ চর্চা করে। তাই নিজে ভালো হই। জগৎ ভালো হবে। ভালো লিখেছেন ভাই।