“হিজড়া” শব্দটা আমাদের কাছে এতোটাই নিগৃহীত আর অগ্রহণযোগ্য যে শিরোনামে হিজড়া শব্দটা লিখতেও আমার সংকোচ হচ্ছিল। এটা আমাদের ছোটবেলা থেকে সমাজ প্রদত্ত শেখানো। হিজড়া শব্দটাকে আমরা গালি হিসাবে ব্যবহার করতেই দেখেছি। আমরা মানুষ হিসাবে এতোটাই সেরা এবং সভ্য যে, কোন বিকলাঙ্গ, পাগল, তোতলা অথবা বোবা মানুষ দেখলেই তাকে নিয়ে প্রহসন করি, এড়িয়ে চলি, ঘৃণাও করি। অথচ তারা সবাই এক সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। মানুষের হাতেই সমস্ত সৃষ্টি রক্ষার ভার দেয়া হয়েছে, অথচ আমরা মানুষেরা মানুষদেরই হেফাজত করতে পারিনা। অন্য সৃষ্টিদের কথা বাদই দিলাম।
লেখাটি একটি ট্রান্সজেন্ডার মেয়ে ব্রিয়েলা কে নিয়ে…
একটি ছেলে হিসাবে জন্ম নিয়েও ব্রিয়েলা সবসময়ই জেনে এসেছে সে একটি মেয়ে। ঘৃণা করতো সে তার পুরুষের অঙ্গটিকে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে সে একদিন চেষ্টা করলো তার পুরুষাঙ্গটিকে টেনে ছিঁড়ে ফেলবার। সে মনেপ্রাণে চিন্তা করতো তার সমস্ত যন্ত্রণার জন্য দায়ী এই অঙ্গটি, এটি তার নয়। সে একটি মেয়ে।
দু বছর বয়স থেকে ব্রিয়েলার মধ্যে, যার জন্ম হয়েছিল বেয়লিন নাম নিয়ে, একটি মেয়ের চরিত্র দেখা দিতে শুরু করেছিল।
ব্রিয়েলা ভালোবাসতো তার মায়ের মেকাপ, নেইলপলিশ, হিল। অনেক ছেলেশিশু বাচ্চারাই হয়তো ছোটবেলায় এসব পছন্দ করতো, তবে ব্রিয়েলার ব্যাপারটা তেমন ছিলো না। ব্রিয়েলা হ্যাপি ছিলো ততদিন যতদিন না তার স্কুলজীবন শুরু হলো।
ব্রিয়েলা ছেলেদের বাথরুম ইউজ করতো না, সে মেয়েদের বাথরুমে তো এলাউড ছিলোইনা। সারাদিন তৃষ্ণার্ত থাকতো, বাথরুমে যেতে হবে ভেবে।
ব্রিয়েলার ডায়েরিতে লেখা ছিলো টুকরো টুকরো কথা…
*আমি ভাবতাম না খেলে, পানি পান না করলে আমি বড় হবোনা, আমি বড় হতে চাইতাম না। কারণ বড় হবার সাথে সাথে আমার অঙ্গটি বড় হচ্ছিলো।
*আমি সবসময় স্বপ্ন দেখতাম বড় চুল, মেকাপ, জুয়েলারি পরে আমি মানুষের সামনে যাচ্ছি
*আমার যদি একটি ম্যাজিক ওয়ান্ড থাকতো আমি চাইতাম সবাই ভুলে যাক আমি একজন ট্রান্স এবং সমস্ত বুলিজ বন্ধ হয়ে যাক।
বুলিজের মাত্রা এতো বেশি ছিলো সময়ে যে ব্রিয়েলা সুইসাইডের চিন্তা করেছে অনেকবার।
এসব তার ছোট ছোট হাতের লেখায় ডায়েরির নানা জায়গায় লেখা ছিলো।
ব্রিয়েলার বাবা-মা, ভাই-বোন বা পরিবারের সবাই কী অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে সহজেই পরিমেয়।
ব্রিয়েলার মা কিরা কারমাইকেল এর কিছু কথা…
*ট্রান্স জেন্ডার সম্পর্কে আমার কোন ধারণাই ছিলো না এর পূর্বে। আমরা ভেবেছিলাম আমাদের সন্তানকে আমরা চিনি, কিন্তু তা নয়। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এটা একটা সময়, একসময় সে ঠিক হয়ে যাবে একটু বড় হলে। কিন্তু তা নয়, দিনে দিনে অবস্থার অবনতি হচ্ছিল।
*ব্রিয়েলা বাড়িতে মেয়েদের জামাকাপড়, হিল পরে থাকতো। দরজায় কোন নক হলেই সে ছুটে রুমে চলে যেতো এবং ছেলেদের পোষাক পরে আসতো।
*সে চাইতো না, সে বড় হয়ে তার বাবার মতো দেখতে হোক।
*ব্রিয়েলা স্কুলে ছেলে ফ্রেন্ডদের সাথে মিশতো না, আবার ছেলে মনে করে মেয়েরাও তাকে তেমন গ্রহণ করতো না, সে ছিলো একদম একা।
সবকিছু সহ্য করে যাবার পরে পাঁচ বছরের বাচ্চাকে তারা সাইকোলজিস্ট এর কাছে নিয়ে যাবার প্রস্তুতি নিলো, যখন সে তার অঙ্গটিকে রিমুভ করার চেষ্টা করেছিল। কস পড়ছিল, রক্তপাত হচ্ছিল, তা সত্ত্বেও যখন তার মা তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তোমার ব্যাথা হয়নি এভাবে করতে, ব্রিয়েলা উত্তর দিয়েছিল “না”। একটি শিশুর মানসিক যন্ত্রণা কতোটুকু হলে এতো বড় ফিজিক্যাল পেইন তার কাছে কিছুই মনে হয়না!
সেপ্টেম্বর ২০১৫ ব্রিয়েলা ট্রাঞ্জিশনড হলো।
ব্রিয়েলার মা যখন পরিবারের সবাইকে ডিসিশান জানালো ব্রিয়েলার নানী তিন সপ্তাহ তাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছিল।
ব্রিয়েলার জন্য স্যোশাল ট্রাঞ্জিশনটা ছিলো স্বপ্ন পূরন হওয়া কিন্তু তার বাবা-মার কাছে এ ছিলো একটি সময়, একটি যন্ত্রনাতীত এবং বর্ণনাতীত সময়, কষ্টের সময়।
ট্রাঞ্জিশনটা শুধু পোষাক বা নাম পরিবর্তনই ছিলো না, ছিলো আরো বেশি কিছু।
একদিকে তারা চায়নি তাদের ছেলে শিশুটাকে হারিয়ে ফেলতে অন্যদিকে তারা চেয়েছে তাদের বাচ্চাটা যেন হাসিখুশি একটা বাচ্চা থাকে।
মিসেস কারমাইকেল যখন বার্থ সার্টিফিকেটে তাদের ছেলের নাম দেখতো, তারা কাঁদতো, তারা বিশ্বাস করতে পারতো না, কিন্তু এটাই সত্যি ছিলো।
ব্রিয়েলা একটি নাম পেয়েছে, পেয়েছে পরিবারের সহযোগিতা। ব্রিয়েলার স্কুলে একটি দিন পালন করা হয় ব্রিয়েলা ডে, যখন ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকরা সবাই হলুদ পোষাক পরে তাকে সাপোর্ট দেয়।
তবুও পথ অনেক বাকি।
ব্রিয়েলা কে যেতে হবে হরমোন ব্লকার এর ভেতর, জেন্ডার রি-এসাইনমেন্ট সার্জারির উপর, তার ভয়েস ট্রানজিশন, তার ফার্টিলিটি।
ব্রিয়েলা এখনো জানেনা এসব কি, সে শুধু চায় সে হ্যাপি থাকবে, সবাই ভালোবাসবে, তাকে গ্রহণ করবে।
ব্রিয়েলা পেয়েছে একটি পরিবারের সাপোর্ট, যদিও পেছনের দরজায় কতো কিছু ঘটে যাচ্ছে আমরা জানিনা। তবুওতো সে পেয়েছে একটি পরিবার, সাপোর্টিভ বাবা-মা, আদরের একটি ভাই, একটি বোন। ব্রিয়েলার মতো আরো যারা আছে তারা সবাই কেমন আছে?
ব্রিয়েলার মা কারমাইকেলের একটি কথা যা আমাকে নাড়িয়েছে, “আমার মেয়ের দু’পায়ের মাঝখানে কি আছে তা নিয়ে তোমাদের কোন মাথাব্যথার দরকার নেই। সে আমাদের মেয়ে। সে হ্যাপি, আমাদের আর কিছুর প্রয়োজন নেই”।
প্রতিটা মানুষেরই মুক্ত ভাবে বেঁচে থাকবার অধিকার আছে। সম্মান করুন সকল মানুষকে, হিজড়াদের ঘৃণাকে পরিহার করুন। We all love children, trans or whatever..
লেখাটি এই আর্টিকেল থেকে নেয়া হয়েছে...
যারা অনেকেই জানেন না। বাংলাদেশে “বাঁধন” নামে একটি অর্গানাইজেশন আছে ট্রান্সজেন্ডারদের, যাদের ট্রমাটিক স্টোরি আমি ২০০৩ সালেই কাছে বসে শুনেছি এবং এখনো বহন করে যাচ্ছি। মানবতা খুব শক্ত জিনিস, তবে অসম্ভবের নয়।
৩০টি মন্তব্য
মাহমুদ আল মেহেদী
আমরা সুস্থ বলে নিজেদের তখনই দাবি করতে পারব যখন মানুষদের মানুষ হিসেবে দেখব। অসুস্থ মন দিয়ে না, অসুস্থ চোখ দিয়ে না। অসুস্থ মানুষদের নিয়ে যারা মজা করে তামাসা করে তাঁরাই সত্যিকার অসুস্থ। চমৎকার একটা আর্টিকেল আমাদের সাথে শেয়ার করলেন আপু। পড়তে গিয়ে কয়েকবার চোখটা ভিজে এসেছে।
শুন্য শুন্যালয়
মেহেদী ভাই মানবতা, মানুষের সত্যিকারের ধর্ম এসব নিয়ে লেখালেখি করুন, একজন দুজন করে পড়েও যদি তাদের মনেহয় এটা তো ঠিক নয়, আস্তে আস্তে সময় পাল্টে যাবে।
হ্যাঁ আমারও পড়বার সময় কান্না পেয়েছে। আমাদের দেশের হিজড়া দের নিয়ে এমন করে কেউ লেখেওনা, নিজেরাও লিখতে পারেনা, তাই ওরা অনাদরেই থেকে যাচ্ছে। লেখালেখি খুব শক্ত মাধ্যম, দৃষ্টীভংগী পাল্টানোর জন্য।
ভালো থাকুন মেহেদী।
রিমি রুম্মান
হিজড়াদের নিয়ে একটি টিভি প্রগ্রাম দেখেছিলাম। তাদের সুখ, দূঃখ, সমাজের তিরস্কার, পরিবারের অবহেলা… সৰ্বোপরি পরিবার ছেড়ে দুরে চলে যাওয়া, সে এক হৃদয়বিদারক যাপিত জীবন!
তৌহিদ
আপু আপনার লেখাটি পড়ে আমার গ্রামের একজন হিজড়ার কথা মনে পড়লো। কি যে এক দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে সে !! হিজড়ারাও মানুষ এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের এখনো গড়ে উঠেনি। রাস্তাঘাট ট্রেন লঞ্চ সব জায়গায় তাদের বিচরণ লক্ষণীয়। অনেকে সাহায্য করে, অনেকে নাক সিটকায় তাদের দেখে।
জীবিকার প্রয়োজনে একজন হিজড়াকে যে পরিমান বঞ্চনা সহ্য করতে হয় সে একই কারনে তারা কিন্তু আমাদের সাথে এরুপ আচরণ করে।
অথচ উন্নত বিশ্বে হিজড়াদের জন্য কতরকম সুযোগসুবিধা দেয়া হয় যাতে তারাও সমাজে মাথা উঁচু করে থাকতে পারে। আমাদের দেশে কিছু কিছু শুরু হয়েছে। তবে যেতে হবে বহুদুর।
ব্রিয়েলার এই তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটি আমার অনেক ভালো লাগলো। কারমাইকেলের মত মায়েরা বেঁচে থাকুক যুগ যুগ ধরে। তাহলেই ব্রিয়েলারা নিজের সম্মান নিয়ে মাথা উচু করে দাঁড়াবে।
ব্রিয়েলার জন্য অনেক ভালোবাসা।
শুন্য শুন্যালয়
সন্তানের জন্মের পর অসুস্থ হলে বাবা-মা কতোটা অস্থির হয়ে যায় তাকে সুস্থ করে তুলতে। এরাও তো বাবা-মার ই সন্তান। কেন তারা মায়া-মমতা পাবেনা শুধুমাত্র স্রষ্টার ইচ্ছের কারনে!
হ্যাঁ আমাদের দেশেও অনেক কাজ হচ্ছে, একদিন পাল্টে এই চিত্র এই কামনাই করছি।
বাবা-মা সবচাইতে বড় শক্তি এই শিশুদের জন্য, তারা চাইলেই ব্রিয়েলারা প্রতিকূলতা কাটাতে পারবে।
ওদের জন্য যদি জীবিকার কোন ব্যবস্থা করা যেতো!
ভালো থাকবেন তৌহিদ।
শুন্য শুন্যালয়
হ্যাঁ আপু, খুবই প্যাথেটিক এসব শুনতে। আস্তে আস্তে পরিবর্তন হচ্ছে অবস্থার, এটাই স্বান্তনা। একদিন আমাদের দেশেও ওরা সম্মানের সাথে বাঁচবে এই আশাই করছি।
ছাইরাছ হেলাল
একটি দারুণ জরুরী বিষয় নিয়ে লিখেছেন, দেখুন ব্রিয়েলার নানীর কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল,
এ কথা বলছি এজন্য যে এটি একটি কঠিন বিষয় আমাদের সমাজে। যদিও তাদের জীবনের বাস্তবতা ভিন্ন।
আমাদের সমাজ এদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়, অবশ্য সময় পাল্টাচ্ছে ক্রমান্বয়ে, আম্মারা আশাবাদী হতেই চাই।
তা সেই আদ্দিকাল থেকে আপনি ওদের সাথে কী কী করেছেন!!
সব খুলে বলুন!
শুন্য শুন্যালয়
হ্যাঁ আমরা আশাবাদী হচ্ছিও। মানসিক এই টানাপোড়েন এর চিত্রগুলো অনেকটা একই সব জায়গায়।
হ্যাঁ ওদের গল্পগুলো শোনার সুযোগ হয়েছিল আমার, যখন কেয়ারে চাকরী করতাম। আমাদের দেশের হিজড়া রা তো আসলে হোমলেস। একটি হোমলেস মানুশের উপর কী কী আক্রমণ হতে পারে, ভাবুন একবার। একে তো সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন, আর্থিক কষ্ট, এরপর ওদেরকে ব্যবহার করে আমাদের রাত্রিকালীন পুরুষরা। কী যে কষ্ট হয়েছে এসব শুনতে। লিখিনি, তবে ওদের জন্য সহানুভূতি সবসময়ই ছিলো।
তবে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি, এরা মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী। সবকিছুর ভয় ডর কমে গেলে মানুষ যেমন ভয়ংকর হয়ে যেতে পারে, ওরাও তেমন।
একদিন ওরাও সম্মান পাবে এই আশা করছি। আচ্ছা একটা প্রশ্ন এলো মনে, আমাদের কোরআনে ওদের সম্পর্কে কী লেখা আছে? জানা থাকলে জানাবেন প্লিজ।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি বিজ্ঞ হুজুরের কাছেই জিজ্ঞেস করেছেন,
জেনে রাখুন এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই বলা নেই, তাই একটু ধাঁ ধাঁ লেগেই আছে।
আপনি এ বিষয়ে বা এমন অন্য বিষয়ে নিয়মিত লিখলে আমাদের জন্য বেশ ভাল হবে।
আমাদের দিকে তাকিয়ে সামান্য সময়াপচয় হলে দারুণ হবে।
মনির হোসেন মমি
সোনেলায় আমার মনে হয় এ প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে পোষ্ট সে জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।আমরা অনেক কিছু জানলাম।আমাদের মনে মগজে এটাই যেন হয় শেষ কথা মানবতা খুব শক্ত জিনিস,তবে অসম্ভবের নয়।
শুন্য শুন্যালয়
হ্যাঁ সবাই মানবিক গুনে মানুষ হোক। দেশের সিস্টেম গুলোতে পরিবর্তন আসুক ওদের কথা ভেবে।
আপনাকেও ধন্যবাদ মনির ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
ভালো লাগে যখন দেখি বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে লিঙ্গ বৈষম্য থাকার পরেও তারা মানুষের মর্যাদা পায় এবং নিজেকে কর্মক্ষম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
আমাদের দেশে জন্মগত ভাবে যারা শারিরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মায় তাদেরকেই সমাজ ভদ্রভভাবে মেনে নিতে পারেনা। আর কেউ নিজেকে স্বেচ্ছায় রুপান্তরিত করবে এটা কল্পনারও বাইরে। তবে ক্ষুদ্র আশার কথা হলো আমাদের দেশের মানুষ ধিরে ধিরে তাদের প্রতি সহনশীলতা প্রকাশ করছে। বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের নিয়ে নানা ধরনের উদ্যেগ নিচ্ছে। সকলের প্রচেষ্টায় হয়তো একদিন আমাদের দেশ থেকেও এই বৈষম্যতা দুর হয়ে যাবে।
💜 ভালোবাসা ও শুভ কামনা রইলো 💚
শুন্য শুন্যালয়
এটা তো আসলে স্বেচ্ছায় রূপান্তর ছিলোনা, ওরাতো আসলে জন্মগতভাবেই দুই রকম ডাইভার্সি নিয়েই জন্মেছে।
হ্যাঁ দেশে এখন ওদের নিয়ে কাজ হচ্ছে কিছু কিছু, একদিন আমরাও ওদের সহজভাবে মেনে নেব, পরিবারেরই একজন করে।
সব ধরনের বৈষম্যতাই একদিন দূর হয়ে যাক।
ভালো থাকবেন আপু।
জিসান শা ইকরাম
হিজড়া শব্দটা আমরা খুবই অবজ্ঞার শব্দ হিসেবে গন্য করি। এদের নিয়ে আমাদের দেশে তেমন কোনো কাজ হয়নি। এরা পরিবার থেকে চলে গিয়ে আলাদা এক সমাজে বাস করে। সামাজিক দৃষ্টিভংগিতে এরা স্বাভাবিক হলে নিজের আপন পরিবারেই থেকে যেতো।
ব্রিয়েলা এমন এক পরিবার পেয়েছে যেখানে তার প্রতি পুর্ন সমর্থন আছে, তারপরেও তাকে কিছু প্রতিবন্দিকতার সম্মুখিন হতে হয়েছে, হচ্ছে।
তার মানসিক দ্বন্দ কত প্রকট ছিল, তা তার ডায়েরীর লেখাতেই বুঝা যায়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, এমন একটি বিষয়ের উপর পোস্ট দিয়েছেন বলে।
আমরা যেন এমন ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের ভালোবাসতে পারি, তাদের বুঝতে পারি।
এমন কিছু আর্টিকেল নিয়ে মাঝে মাঝে লেখুন। এসব তো আমাদের পড়া হয়না।
শুভ কামনা।
শুন্য শুন্যালয়
আমিতো অনেক আর্টিকেল পড়ি, ভাবছি টুকটাক করে শেয়ার করবো একসময়। এগুলোকে যে আমার নিজের লেখা বলে মনে হয়না! তবে এসব শেয়ারের প্রয়োজন আছে অবশ্যই।
হ্যাঁ প্রতিবন্ধতা থেকে যাবেই হাজার সুযোগ পেলেও। আমাদের এক ফ্রেন্ডকেই দেখছি এক্সিডেন্টে কিছু সমস্যার জন্য জবে কতো বুলিজের স্বীকার হতে হচ্ছে।
তবে ব্রিয়েলাদের জন্য বাবা-মার সহযোগিতা পাওয়া এ এক বিরাট সৌভাগ্য তো বটেই।
লিখবো মাঝে মাঝে, ভালো থাকুন।
জিসান শা ইকরাম
মাঝে মাঝে ভালো লাগা আর্টিকেল গুলো শেয়ার করুন। এই কথা আপনি শেয়ার না করলে জানা হতো না। এসব জানার দরকার আছে।
এমনি করে নিজস্ব স্টাইলেই লিখবেন।
প্রহেলিকা
খুব টাচি!!!
আমাদের দেশের তুলনায় বহির্বিশ্বে কোথাও হয়তো এতোতা নিগ্রহের শিকার হতে হয় না তাদের। এখানে অনেককেই দেখেছি খুব ভালো ভালো পদে নিযুক্ত রয়েছেন তারা। তবে আশাবাদী একদিন এইরূপ পালটে যাবে, তারাও স্বাভাবিকভাবে এই সমাজেরই একটি অংশ হিসাবে ভূমিকা পালন করবে।
আপনি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন সেজন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য আপনার। শুরু থেকে শেষ একটানেই শেষ করেছি। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। ব্রিয়েলার মুখটা চোখের সামনে ভাসছে। কোত্তো মায়াবী।
শুন্য শুন্যালয়
হ্যাঁ এখানে এখন অনেকটাই সহজ হয়েছে। তবে বাচ্চারা তো এতো কিছু বোঝেনা। তাই স্কুল কলেজে ওরা বুলিজের স্বীকার হয়। আর পরিবার থেকেও এটা মেনে নেয়া এতোটা সহজ হয়না, যতোটা মনে হচ্ছে।
ব্রিয়েলার মতো সবাইই যেন সম্মান পায়, যে দেশেই হোক।
আমাকে টাচ করেছিল আর্টিকেলটি। আরো অনেক লেখাই পড়ি নিয়মিত। ভাবছি এখন থেকে শেয়ার করবো জানা অজানা।
ভালো থাকবেন।
তৌহিদ
এই দেখেন আমি আবার ভুল করে রিমি আপুর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে ফেলেছি। দুঃখিত।
তাদের জীবিকার ব্যবস্থা হলে নিশ্চিতভাবেই অনেক ভালো থাকে।
আপনি ভালো থাকবেন।
শুন্য শুন্যালয়
ভুল হলেও সমস্যা নেই, আমি বুঝতে পেরেছি। 🙂
একজন মানুষ হিসাবে জীবিকার ব্যবস্থা কেন হচ্ছে না তার? জীবিকার জন্য জেন্ডারের ভূমিকা কী?
নেই। যাইহোক, পাল্টাবে একদিন দৃষ্টিভঙ্গি, আই কামনাই করি। আপনিও ভালো থাকবেন।
রিতু জাহান
আমি শুধু মেয়েটাকে দেখলাম!!
কি অদ্ভুত সুন্দর দেখতে।
এই মুহূর্তে কিছু বলছি না আর। ইদানিং আর্টিকেলগুলো পড়তে পারছি না তেমন।
বয়স হয়ে গেছে বুঝতে পারছি।
তবে কি জানো, আমাদের দেশ ও পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতে হয়তো এ বিষয়টা সহজ করে নেবার সময় আরো কতো বছর পরে হবে জানা নেই।
এর একটা বড় কারণ, ওদের নিজেদের সংগঠন। খুব সেনসেটিভ একটা বিষয়।
আমাদের সিস্টেমের অনেক ভুল আছে। যার সমাধান আদৌ সম্ভব না।
চমৎকার করে তুলে ধরেছো ছবিসহ।
ভালবাসা নিও।
শুন্য শুন্যালয়
সংগঠন তো ওরা সার্ভাইভ করবার জন্যেই বানিয়েছে। আমাদের অনেক সময় লাগবে, যে দেশে নারীদেরই কোন সম্মান নেই, সেখানে ট্রান্সজেন্ডার একসেপ্ট করা কঠিনই বৈকি।
হু ওকে দেখে একবারো মনে হয়নি ও ছেলে হিসাবে জন্ম নিয়েছে। সুইট মেয়ে।
আর্টিকেলগুলো পড়া জরুরী। কিছু প্রশ্নের উত্তর ওদের কাছ থেকে শিখতে হবে আমাদের।
ভালো থেকো তুমিও।
নীরা সাদীয়া
অনেক নতুন তথ্য পেলাম। আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি তথ্য সমৃদ্ধ লেখা আমাদেরকে উপহার দেবার জন্য। ধীরে ধীরে মানুষ সভ্য হবে এবং বুলিং বন্ধ হবে, ট্রান্সদের আপন করে নেবে এই প্রত্যাশা রইলো।
শুন্য শুন্যালয়
মানুষ সভ্য হোক, শুধু মানুষ হিসাবেই সম্মান পাক যথাযথ এই প্রত্যাশা আমাদের সবারই। ভালো থেকো।
অলিভার
ভিন্ন ধরণের সাবজেক্টে লেখা দারুণ আর্টিকেল।
সমাজের তথাপি নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের জন্যে এমন আর্টিকেলের অনেক প্রয়োজন।
শুন্য শুন্যালয়
হ্যাঁ। আমি পড়ি সবসময়ই। এখন থেকে মাঝে মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। ভালো থাকবেন।
মায়াবতী
“লেখা লিখির মাধ্যম টা খুব শক্ত ” এমন কথা বিজ্ঞজনের কাছে শুনেছি অনেক কিন্ত লেখা লিখি করে তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের মানুষের কত টুকু টনক নাড়ানো যায় তা আমি বুঝতে পারিনা আসলে আপু! আপনার এই সেন্সেটিভ ইস্যু টায় লেখা লিখি খুব দৃষ্টি আকর্ষন করেছে। এমন বিষয় গুলো নিয়ে আমার ছেলে অনেক সময় ই আমার সাথে শেয়ার করে, উন্নত দেশের নাগরিকরা ও হতাশায় ভুগে আগে কখনওই বুঝতাম না, এখন কিছু কিছু হয়তো বুঝি নিজের ছেলের কল্যানে। মানবতা শক্ত হলে ও খুব শক্তিশালী তাই অসম্ভব বলে মানবতা কে এড়িয়ে যাওয়ার অবকাশ কে মেনে নেয়া যায় না। আমার কাছে খুব অবাক লাগে যে সমাজ মানুষ সৃষ্টি করলো সে সমাজে ই সে কত ভাবে ই না অবাঞ্ছিত হয়ে যায়! এই গুলো পড়লে, দেখলে, শুনলে খুব অসুস্থ লাগে, মন টা অস্থির লাগে, ভালো লাগে না কিছু আপু।
পুরো লেখা টা পড়ার সময় ম্নে হচ্ছিলো মন্তব্যে অনেক কিছু লিখবো এখন আর মাথায় কিছু ই আসছে না জানেন, ব্রিয়েলার মিষ্টি হাসি টা ভাসছে শুধু মানবতায়।
শুন্য শুন্যালয়
সব দেশেই হতাশা আছে, কষ্ট আছে। আমাদের দেশের মানুষের কথাই ধরুন, শ্রেনীভেদে তাদের হতাশার স্বরূপ আলাদা, তবে আছেই। এখানেও আছে। তবে এরা আসলেই অনেক অনেক এগিয়ে। চিন্তাভাবনায় আমরা কখনোই এদের নাগাল পাবোনা। সমকামীদের বিয়ে, এবোরশোন এপ্রুভড করে ওরা মানুষের চয়েজ নিশ্চিত করছে, সেখানে আমরা তো পুরা মানুষই হয়ে উঠতে পারছিনা।
লেখা সত্যিই অনেক বড় মাধ্যম, লেখার মাধ্যমে আজকের এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।
ভালো থাকবেন আপু।
অপার্থিব
খুব ভাল পোষ্ট, এই জাতীয় বিষয় নিয়ে আরো বেশি লেখা উচিত। সো কলড উন্নত সভ্যতায় বসবাস করেও পশ্চিমাদের অনেকের মধ্যে ছেলে শিশু হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা আছে তাহলে!! সেক্সুয়ালিটি প্রতিটা মানুষের নিজের পছন্দ। একটা ছোট বাচ্চারও অধিকার আছে এই পছন্দ বেছে নেবার।
শুন্য শুন্যালয়
ছেলে হারাবার চাইতে আমার মনেহয় সন্তানের আইডেন্টিটি হারানোর কষ্টটাই তাদের কাছে বেশি ছিলো। আর হ্যাঁঁ সভ্যতা এগুলেও কিছু মনুষ্য চর্চা, আবেগ একই। আমার ছেলের ডাক্তারকে বাচ্চা হয়েছে শুনে উইশ করলাম, থ্যাংকস দিয়ে কাষ্ঠ হাসি দিয়ে বললো, এটা আমার দ্বিতীয় বাচ্চা, মেয়ে, আগেরটাও মেয়ে। হাসিমুখেই বলেছে, তবে তা মলিন লেগেছে।
শিশু অধিকারের ব্যাপারটা নিয়েতো আমরা ভাবিই না।