ঃ এবার চোখ খোলো। কি দেখছো?
ঃ কই! কিছুই তো দেখিনা!
ঃ কিছুই না! ভালোকরে দেখ। সোজা তাকাও। এবার বলো।
ঃ তুমি বেশি মজা করছো! আমি তো কিছুই দেখছিনা।
ঃ হুম! কিছু চাওয়া ছিল বুঝি!
ঃ কই না তো। আরে নাহ!
ঃ তবে কি আকাশটাও দেখোনা তুমি!
ঃ আরে বাবা! আকাশতো ছিলই। তুমি কি আকাশ দেখাতে চেয়েছিলে?
ঃ হ্যাঁ! এ আকাশ তোমাকে দেব বলেই এনেছি এখানে।
ঃ বাহ! আকাশ দেবে! দেবার কি হলো এখানে?
ঃ আছে। এতো বড় ন্যাংটো আকাশ!
ঃ হাসালে তুমি। আকাশ বুঝি ন্যাংটা হয়! হা হা হা
ঃ হয়। এই তো দেখছো! কোন মেঘ দেখেছো? নেই।
ঃ হুম! আর কিছু?
ঃ হুম! তা তো আছেই। ফের বন্ধ কর চোখ। খুলবে একটু পরেই কিছু দেখবে বলে।
ঃ বেশ! করছি তাই।
ঃ কি দেখছো? অনেককিছু?
ঃ হ্যাঁ! অনেক কিছুই যেন দেখছি এবার। লাল মাটি, রোদে পোড়া ঘাস, কিছু জংগল আর দূরে একটি পেঁপে গাছ।
ঃ হুম! চোখ খুলেছে এবার। না না ভুল বলেছি। মন খুলেছো এবার।
ঃ হুম! এবার দেখব কি তাই বলো।
ঃ আমি বলব গাছেই থাক; সেই ভালো।
ঃ ঠিক আছে। গাছ – পেঁপে গাছ – একটি বুড়ো পেঁপে গাছ।
ঃ হুম। একদম ঠিক। এসেছিও তাই। এটাই ছিল কাজ।
ঃ মানে!
ঃ মানে কিছু নয়।
ইদানিং লাগে ভয়।
বয়সী গাছে পেঁপেরা ছোট হয়।
ব্যবসায়ী খোঁজে সংখ্যা-ওজন মিষ্টতা-ঘ্রাণ নয়।
ঃ এই! কি বলছ এসব!
ঃ নাহ! কিছু না।
মানুষ নয় – আমার ফল এখন কাকে খায়;
ফিংগে, বুলবুলি, কাঠঠোকরায়!
জানো, ভয় হয় ঝড়ে এখন।
ভেংগে যাব হয়তো যখন তখন।
কাঠ হবোনা আমি।
সহজে পচে ধুলো হবো।
আর, তাই করেছেন জগতস্বামী।
…
৪২টি মন্তব্য
নীহারিকা জান্নাত
কবিতা
অরণ্য
ভুল তাতে কী হয়েছে! আমি ঠিক করে নিয়েছি। ‘কবিতা’ ট্যাগ নিজ থেকেই সরিয়ে নিয়েছি। (y)
নীহারিকা জান্নাত
কবিতা আমি কম বুঝি ভাইয়া।
তাই না বুঝে মন্তব্য করা ঠিক নয়।
উপরের মন্তব্যটি ভুলে চাপ লেগে পোস্ট হয়ে গেছে।
অরণ্য
‘কবিতা কম বুঝি’ ব্যাপারটা ঠিক না। আমার এটাকে কবিতা বোধহয় বলাও যায় না। গল্প ভেবে পড়ুন আপনার ভাল লাগবে।
আমি অনেক কবিতা গল্পের মত পড়ি, আঁকি।
ভাল থাকবেন।
নীহারিকা জান্নাত
এবার থেকে সেভাবেই নাহয় চেষ্টা করবো।
অরণ্য
🙂 (y)
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
নিজের ভিতর এতো কনফিডেন্ট ভাঙ্গবো তবূ মচকাবো না।আকাশ থেকে গাছে এতো কিছু দেখানোর পর প্রিয়ার উত্তর কি ছিলো ভাইয়া।ধারুন লাগল -{@
অরণ্য
মনির ভাই, প্রিয়ারা আকাশ দেখে না। তাদের চোখে ঠাঁই পায় চাঁদ, ঘুড়ি কখনওবা উড়ে যাওয়া পাখি।
পেঁপে গাছ দেখে প্রিয়া হোঁচট খেয়েছে। এতদূরে এসে এই পেঁপে গাছ! ব্যথিত হয়েছেন তিনি।
ভাল থাকবেন মনির ভাই। (y)
ইঞ্জা
ভালো লাগলো।
অরণ্য
ধন্যবাদ ইঞ্জা। কারও ভাল লাগবে তা ভেবেই এ শেয়ার করা। আমারও ভাল লাগছে। ভাল থাকবেন। (y)
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা
জিসান শা ইকরাম
শুধু কথোপকথন দিয়ে এমন পোষ্ট!
চমৎকার হয়েছে অরণ্য ভাই।
বুড়ো বয়সী গাছের পেপে ছোট হয়, গভীর পর্যবেক্ষন।
নিজেকে বিলিয়ে দেয়া কি সবার জন্য?
শুভ কামনা।
অরণ্য
জিসান ভাই, ভাল লাগছে যে আপনাদের ভাল লাগছে। 🙂
নিজেকে বিলিয়ে দেয়া সবার জন্য হবে আবার সবার জন্যও বটে। আমরা নিজেকে বিলিয়ে না দিলে প্রকৃতির ভারসাম্যেরও সমস্যা হয় যে!
ভাল থাকবেন জিসান ভাই। (y)
অরণ্য
নিজেকে বিলিয়ে দেয়া সবার জন্য হবে আবার সবার জন্যও বটে। >> নিজেকে বিলিয়ে দেয়া সবার জন্য হবে না আবার সবার জন্যও বটে। 🙂
গাজী বুরহান
দারুন আলাপন, এক্ক্বেরে কবিতার মত।
অরণ্য
থ্যাক্স গাজী ভাই। হুম অনেকটা কবিতার মত। আমিও তাই বলি।
ভাল থাকবেন।
নিতাই বাবু
ভালো লেগেছে পড়ে আপনার কবিতাগুচ্ছ ।
অরণ্য
আপনাকে দাদা বলতেই হচ্ছে। আমি সাধারণত নামের শেষে ‘দা’ জুড়ে দিয়ে ডাকি। সেক্ষেত্রে আপনাকে ‘নিতাইদা’ই ডাকব ভাবছি। আপনার প্রথম পোস্টে আরো কিছু লিখতে চাচ্ছিলাম কিন্তু মোবাইল কিবোর্ড আমার বিরুদ্ধে দাঁড়ালো যেন। সে ব্যাপার না। আপনার লেখা পাব ও পড়ব এ অপেক্ষায় রইলাম।
শুভ কামনা। (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
আমাদের সবুজ অরণ্য অবশেষে এলো। আর তাও কি গভীরতর কথোপকথন নিয়ে। কথোপকথন যেনো আস্ত জীবনের পর্যবেক্ষণ!
অবাক হলাম একটি পেঁপে গাছ আর মানব শরীর তাহলে তো একইরকম! দারুণ!
অরণ্য
হ্যাঁ, নীলা আপা! এলাম। আস্ত জীবনের পর্যবেক্ষণ না বলে একটা সময় বলা ভাল। আমি আমাদের জীবনের মিল খোঁজার চেষ্টা করি অনেক সময় প্রকৃতি সাথে। মিল তো একটু আছেই। আমাদের কারও জীবন মিলে কলা গাছের সাথে কারও মিলে বটগাছের সাথে। আবার কখনও আমরা মিল পাব আম-কাঁঠাল গাছের সাথেও। ক’দিন ধরে পেঁপে গাছ আমার সামনে থেকে যেতেই চাচ্ছিল না। তাই তাকে দেখা ও দেখানো।
ভাল থাকবেন। (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
এভাবেই যেনো পাই লেখা। অরণ্যের লেখার ভক্ত আমি সবসময়ই।
ভালো থেকো ভাইয়া।
অরণ্য
থ্যাঙ্কস নীলা আপা। (y)
ছাইরাছ হেলাল
অনেক কাল পরে এসেও ফাটাফাটি অবস্থা,
কুড়ি তো দেখছি মহীরূহ!!
আমাদের কিন্তু মিষ্টঘ্রাণ লাগবেই,
আপনি মিয়া এইগুলা নিয়া কৈ কৈ ছিলেন এত্তদিন!!
যান, এবারের ঝালফ্রাই আমার। কথা পাক্কা!!
অরণ্য
হেলাল ভাই, একাই হাসছি; যেন শুনতে পেলাম আপনাকে! ঝালফ্রাই বেশ ‘হিট’ বুঝতে পারছি।
আছি হেলাল ভাই। আছি।
মাঝে মাঝে কিছু পেঁপের এক পাশ পেকে লালচে কমলা হয়ে থাকবে। অনেকের খেতেও ইচ্ছে করবে। সময়মতো না পাড়লে ও পেঁপে আবার সেই পাখিই খাবে!
ভাল থাকবেন হেলাল ভাই। আবার দেখা হবে, কথা হবে সাথে ঝালফ্রাইও। (y)
ছাইরাছ হেলাল
পাখি হতে বলছেন!!
অরণ্য
না হেলাল ভাই। দুরন্ত কিশোর হতে বলব; যে বুক ছিলে যাবার ভয় গুড়িয়ে তরতর করে পেঁপে বা সুপারি গাছে উঠে যেতে পারে অনায়াসে।
আমি মোবাইল থেকে কোন কারণে উত্তর দিতে পারছিলাম না। তাই দেরিতে জবাব দিচ্ছি।
নিশ্চয়ই ভাল থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
বুক ছেলার পরওয়া নেই, পেপে চাই-ই!!
অরণ্য
ছোটবেলায় বুক ছিলেছে বুঝতে পারছি। আমার ছিলেছে কয়েকবার।
আবু খায়ের আনিছ
বয়স বেড়েছে তো কি হয়েছে, মনতো বুড়ো হয় নি এখনো, সেটা তরুণ থাকলেই হবে।
অরণ্য
আনিছ ভাই, বয়স আর বাড়ছে না! নিজেকে বনসাঁই করে নিয়েছি। বনসাঁইয়ের বয়স শুধু কাগজে কলমে। যতদিন পরিচর্যা পাবে বনসাঁই প্রায় একই রকম থাকবে। 🙂
ভাল থাকবেন। (y)
প্রহেলিকা
লেখাটি পোষ্ট করার কিছুক্ষন পরেই পড়েছিলাম। শেষ করে নিজের অজান্তেই উচ্চারণ করেছি বাহ্! খুব চমৎকার বোধের একটি লেখা। ভালো লাগলো অরণ্য ভাই। শেষটা অসাধারণ; গভীর দর্শনের প্রতিফলন।
অরণ্য
প্রিয় প্রহেলিকা! শুধু সম্ভাষণের জন্যে এ ‘প্রিয়’ লিখিনি। আমি খুব বেশি পড়িনি বা পড়াও হয়না। সোনেলায় এসে আপনাকে পড়া এবং মুগ্ধ হওয়া। সোনেলার আড্ডায়ও আমি হেলাল ভাইকে জিজ্ঞেস করছিলাম প্রহেলিকাকে নিয়ে। ব্যস্ততায় আপনার সময় কম হয় শুনেছি। আমার ভাল লাগছে আপনার মুখ থেকে ‘বাহ!’ পেয়েছি লেখাটি। নাহ্, এ লেখা না; এ বোধ – আপনিই ভাল বলেছেন।
ভাল থাকবেন প্রহেলিকা ভাই। আমি আছি। 🙂
আপনার ‘থাম্বস আপ’ (y) 🙂
চাটিগাঁ থেকে বাহার
পেপে গাছ কেন?
অন্য গাছ নয় কেন ?
অরণ্য
বাহার ভাই, কখন কার চোখে কি ধরা পড়ে বলা মুশকিল। কিছুদিন ধরে আমার সামনে ধরা পড়ল একটা গাছই। মনে হলো কোন কোন দিক থেকে ওর সাথে আমাদের বেশ মিলও আছে।
আমরা অনেকে ভাল ফল ফলাই। যখন তা পরিবেশিত হয় আমরা খেয়ে বলি “ওয়াও! দারুন তো।” আমরা অনেকে বাজারে কেনাকাটা করতে যাই এবং করিও আমরা যা কিনছি তার সম্পর্কে ওতো বেশি কিছু না জেনে। আসলে ওতো বেশি জানারও দরকার নেই। পেঁপে কিনতে গিয়ে অনেক সময় সাইজে বড় পানসে পেঁপে কিনে নিয়ে আসছি আমরা হরহামেশাই। খাচ্ছি আর বলছি “ধুস! মিষ্টিই নেই।” বিজ্ঞাপনের যুগে এখন দর্শনধারী হওয়াটাই জরুরী। বেঁচতে গেলে বুড়ো গাছের মিষ্টি পেঁপের দাম আমরা কম দেই।
আমরা যখন কোন কারণে পিছিয়ে পড়ি বা থাকি (আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়) আমাদের মাজা দুব্বল হয়ে পড়ে পেঁপে গাছের কান্ডের মত। আমরা একাও হয়ে পড়ি। এক মাথা (কিছু পেঁপে গাছে একাধিক মাথাও হয়) এক দেহ। এরা যখন ভেঙ্গে পড়ে আমরা তাদিয়ে আর কিছুই করি না। ধীরে ধীরে তা মিশে যায় মাটিতে। এরা পচেও তাড়াতাড়ি।
অন্য গাছ বা অন্য উপমাও আনা যেতে পারে। একেক জনের ব্যাপার একেক গাছের মত দাঁড়াতেই পারে – অবস্থায় ও সময়ে।
ভাল থাকবেন। (y)
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আপনার বিশ্লেষণ ভাল লাগলো। -{@
অরণ্য
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মৌনতা রিতু
এই নিয়ে দু থেকে তিনবার ড়লাম। মনে হচ্ছিল পাশে এমন কেউ থাকুক কিছু শব্দ উচ্চারনে।
আমি কিন্তু ঘ্রানই খুঁজি।
ভাল লাগা রেখে গেলাম।
অরণ্য
বেশ ভালো লাগলো এই ভেবে যে লেখাটি আপনাকে কোথাও দাঁড় করিয়েছিল হয়তো।
অনেক ধন্যবাদ মৌনতা রিতু।
ভাল থাকবেন। (y)
অনিকেত নন্দিনী
প্রথমটায় হাসির দমক থাকলেও শেষটায় গিয়ে বিষাদের ছাঁট।
কোনো কারণে কি মন উদাস হয়েছে?
অরণ্য
মনটা তো একটু উদাসই ছিল অনিকেত নন্দিনী। তা না হলে এই সাধারণ পেঁপে গাছ চোখে পড়ে!
বিষাদ আছে, নিশ্চিত আছে। তবে তা উৎরাতে হবে।
ভাল থাকবেন। (y)
শুন্য শুন্যালয়
যাকে ন্যাংটো আকাশ দেখতে ডেকে নিয়ে এলেন, তাকে কিনা পরে দেখালেন পেঁপে গাছ? উহু আপনি দেখান নি, সে নিজে থেকে দেখেছে। তবে আপনার মতো করে পেঁপে গাছ সে নিশ্চয়ই দেখেনি, দেখতে চায়ও নি।
চোখ খুললে আমরা পেঁপে গাছ এমনই দেখবো। মনটা যদি খোলে, তো আরেকটু খুলুক। ইউক্যালিপটাস ছাড়িয়ে যাক।
কোন লেখাই খারাপ হয়না আপনার। এটা কিছুটা ওয়াও টাইপের হয়েছে। ভক্ত ছিলাম, আছিও।
অরণ্য
ন্যাংটো আকাশ আসলে এপেটাইজারের মত এক্ষেত্রে। মেইন ডিস পেঁপে গাছ। সবাই আমরা আমাদের মত করেই দেখি। আমি যখন আকাশ দেখি, কেউ সেখানে দাঁড়িয়ে খোঁজে নতুন কোন অচেনা ফুল ফুটলো কিনা দূরে! তবে মন খোলা জরুরী। বালিঝড় চোখ কম দেখে বালিঝড়ে পড়ে। সেখানে বালি গায়ে মাখে, মাথে চোখের পাতায়। চোখ বন্ধ; তবুও যেন দেখতে পায়! দারুন না?
শুন্য আমার লেখার ভক্ত, তা কিন্তু বেশ ভাবতে। 🙂
ভাল থাকবেন। (y)
আপনি অনেক ভাল লিখেন। প্রকাশ বেশি সুন্দর। (y)