আমি তো হিমু হতে চাইনি তোমরা আমাকে হিমু হতে বাধ্য করেছো।
আমি তো স্বাভাবিক জীবন – যাপন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোমার আমার প্রিয় মানুষ গুলো কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে ??আমি তো তোমাদের কাছে তার জবাব চেয়ে ছিলাম কিন্তু তোমার কোন সঠিক উত্তর দেওনি। উল্টো আমাকে বলেছ আমি যোগাযোগ করলে নাকি তোমাদের সমস্যা হবে। তাই আর তোমাদের সমস্যা করতে চাইনি। কেন আমার জন্য তোমাদের সুখের জীবনে সমস্যা হবে?? তাই আমি নিজেকে নিজের মত করে বাঁচতে শিখা শুরু করেছিলাম। আর একাকীত্বের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম।কিন্তু সেই নষ্ট জীবন থেকে যখন ভালো হতে গেলাম তোমাদের সমাজ আমাকে ভালো হবার জন্য শুভকামনা না দিয়ে উল্টো নষ্ট ছেলে ট্যাগ বসিয়ে দিলো, তাই সেই নষ্ট জীবনের ট্যাগ নিয়ে পথে পথে ভবঘুরে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।আর ভবঘুরে হতে গিয়ে মাথায় চিন্তা আসলো আমার তো প্রিয় মানুষ সব ছেড়ে চলে গেছে ,আমার তো কোন পিছুটান নেই।কেউ তো কোন মায়া ভালোবাসা আমায় জড়ায়নি তাহলে হুমায়ন স্যারের হিমু চরিত্র হয়ে যাই। তাই অবশেষে হয়ে যাবার চেষ্টা করা শুরু করেছি। হ্যাঁ আমি হিমু হবো।আমাকে হিমু হতে হবে। আর হবো না কেন ?? না হবার যুক্তি যদি দাঁড় করায়। প্রথম জন্ম থেকে যখন কষ্টে বড় হয়েছি।আমি তো আমার মত ছিলাম একা একা হয়তো নিজের কাছে মনে হয়েছে এই জীবন টাই ভালো , আর সমাজের চোখে আমার জীবন নষ্টের। এই ভালো খারাপ মিলাতে গিয়ে হঠাত করে তুমি আমার জীবনে কিভাবে চলে আসলে?? একটা সময় ভেবে ছিলাম হয়তো সত্যি এই কষ্ট মানবের কষ্টের ভাগ নিয়ে তাকে একটু হালকা করবে। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনবে। আমি তোমার আমার প্রতি এই অতি মাত্রার ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম,আমি ভেবেছিলাম ঐ দূর আকাশের উজ্জল তারা তুমি। সেই তারার আলোতে আমি আলোকিত হবো। আর ভালো হয়ে যাবো।

তারপর

‘আমি ভালোবেসেছিলাম আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল সেই তারাটিকে। যেই তারাটি মিট মিট করে আলো দিয়ে সবার মাঝে নিজের উপস্থিতি জানান দিত। ভালোবেসেছিলাম সেই সময়টিকে যে সময়গুলোকে কখনই আর ফিরে আসবেনা। নিজের মাঝেই লু্কিয়ে রেখেছিলাম একান্তই নিজের কিছু মুহুর্তকে। ভেবেছিলাম সেই ক্ষনগুলোকে আজীবন আগলে রাখবো খুব যতন করে। কিন্তু…
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারিনি যখন শুনেছি তোমার আমার আগে প্রিয় মানুষ ছিলো আবার সে নাকি তোমার সাথে প্রতারনা করেছে। অবাক হয়ে তাকিয়েছিলাম যখন দেখেছি প্রিয় মানুষটাকে হারানোয় তোমার চোখের কোনে পানি জমে চিক চিক করছিলো। নাহ কষ্ট পাইনি।বিশ্বাস কর একদমই কষ্ট পাইনি। কারন তখন মনে হয়েছিলো “তুমি তো আমার। একান্তই আমার…।” আর বেশ মুগ্ধ হয়েছিলাম তোমার রঙহীণ কান্না দেখে।
তবে জানো যখন তুমি অবলীলায় বলে যাচ্ছিলে সেই ছেলেটির সাথে আবার তোমার সব আগের মত হয়ে গেছে তুমি আবার তার কাছে ফিরে যাবে, তাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে না। তখনও কেন জানি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসাটা ঠিক আগের মতই ছিলো। বিন্দু পরিমান দূরে সরাতে পারছিলাম না তোমাকে। কিন্তু আসলে কি জানো? সৃষ্টিকর্তা কিছু কিছু মানুষকে শুধুমাত্র ভালোবাসতেই পাঠিয়েছেন ভালোবাসা পেতে নয়… তোমার মনের মানুষ সব ভুল স্বীকার করায় তুমি আবারও তার কাছে ফিরে যেতে চেয়েছো। কি করে তোমায় আটকে রাখি বল???
সত্যি বলছি তোমাকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম এক বুক ভালোবাসা দিয়ে । চেয়েছিলাম এই মুহুর্তটাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে উড়িয়ে দিতে। ভেবেছিলাম তোমার ফোনের শব্দে ঘুম থেকে জেগে এলোমেলো সময়গুলো দূরে ঠেলে দেবো । তখন খুব বেশি মনে হচ্ছিলো কেন হিমু হতে পারলাম না মহাপুরুষ হলাম না। যাতে কোন কষ্টই আমাকে ছুতে না পারে ।আমি আবেগ ভালোবাসা কষ্ট বিহীন হিমু হলাম না কেন ? কেন সমস্ত কষ্ট কে উড়িয়ে দিতে পারছিলাম না দিগন্তের ওপারে ? আগে ছিলো পরিবার না থাকার কষ্ট আর তুমি নতুন করে দিয়ে গেলে আরও কিছু কষ্ট।
তাই ফিরিয়ে নিলাম তোমার কাছ থেকে আমার এই আমিকে। কষ্ট পেলেও নিজেকে সান্তনা দেবো এই ভেবে যে কেউ একজনের আগমনে আমার জীবনটা কিছু সময়ের জন্য হলেও আবেগ, ভালোবাসা, মায়া বুঝতে পেরেছিলাম মন টা অনেক বেশি পুলোকিত হয়েছিলো…রোবটের মত নষ্ট ছেলে টা ভালোবাসতে শিখেছে।পাগলের মত ভালোবেসেছিলো কোন এক হারিয়ে যাওয়া মানুষকে…
ভালো থেকো তুমি… খুব বেশি ভালো থেকো…”
আর আমি সেই সমাজ স্বীকৃত নষ্ট ছেলে থেকে গেলাম।
আর তোমরা সবাই আমাকে ছেড়ে যাওয়াতে আমি এখন হিমু হতে চাই।
আমার এখন হিমু হবার ইচ্ছা আর আমি হিমু নামে মহামানব হবার আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছি।আর হতে পারবো না কেন আমার তো প্রিয় বলে কেউ নেই। আমার তো কারো দায়িত্ব নেবার কেউ নেই।এক কথায় আমার কোন পিছুটান নেই।
তাই আমার হিমু হতে কোন বাধা নেই। যার কোন পরিবার নেই, যার ভালোবাসার মানুষ নেই, যার জন্য কেউ অপেক্ষা করে না তার হিমু না হয়ে কি উপায় আছে।
তাই আমি আজ হিমু। হিমু হয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

৬৮৬জন ৬৮৬জন
0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ