আজ সকাল থেকে কেন জানি খুব রূপার কথা মনে পড়ছে..সাদা একটি পৃষ্ঠায় কালির কলম দিয়ে গোটা গোটা করে চিঠি লিখতে মন চাইছে ..
রূপা,
কেমন আছো?
আশা করি ভালো আছো। তবে শীতে তোমার শরীর খারাপ যাই এইটা আমি জানি | আমি কেমন
আছি তা তুমি খুব ভালো করেই জানো.তাই বললাম না …
পর সমাচার এই যে, আজকে তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো…আরে আজব এই সব আমি কি ভাবছে কতদিন ধরে মাথায় খালি রূপা নাম ঘুরছে……. না আজ বের হতে হবে বাইরে আজ মাথায় কিছু অন্য মেমোরি ঢুকাতে হবে…..
তার কারন আজ হরতাল আর এই দিনে অনেক কিছু দেখা যাই শেখা যাই তাই আজ সকালে বের হয়েছি হাটতে কিন্তুু চারিদিকে হরতাল বিরোধী মিছিল আর পুলিশ আবার কিছু জায়গায় দেখলাম হরতাল পালন করছে গুটি কয়েক মানুষ ..তারা কয়েকটি জর্দার ডিব্বা রাস্তায় জোরে মেরে শব্দ করে ধোঁয়া ছড়িয়ে আতংক সৃষ্টি করে হরতাল পালন করছে……. আমি তাই এইদিকে না গিয়ে জিয়া উদ্যানের দিকে গেলাম দেখি সেখানে কিসের হরতাল আর কিসের ককটেল আর পেট্রোল বোম এইখানে তো প্রেম আর প্রেম …তাদের কোন চিন্তা নেই রাস্তায় কি হচ্ছে তাদের এখন স্বপ্ন ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা হাত রেখে চোখে চোখ রেখে গভীর প্রেমে মত্ত…..
আমি এই সব দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে গেছে তাই পেটে ক্ষুধায় মোচড় দিতে লাগলো তখন মনে পড়লো তোমার কথা একটু গেলে তোমার বাড়ি অনেক দিন তোমাকে দেখা হয়না আর ক্ষুধা ও লাগছে তাই যেই চিন্তা করলাম হাটা ধরলাম । হরতাল থাকুক হরতালের
মত, আমি থাকি আমার মত। কিন্তুু কিছুক্ষণ হাঁটার
পরেই পরলাম পুলিশের খপ্পরে।
আপনার নাম কি ?
-হিমালয়
কি ?? !! কি লয় ?? -হিমালয়
এটা কোন নাম হল ?? আপনে করেন কি ?
-হাঁটি আর মহামানব হবার চেষ্টা করি…
আর আপনার জুতা কই খালি পায়ে কেন? নিশ্চয়ই হরতাল পালন করতে বের হয়েছে তাই আমাদের কারো দৌড়ানি খেয়ে জুতা রেখে পালিয়েছে ..
আসলে আপনি যেমন ভাবছেন তেমন না আমি জুতায় পরি না আমার বাবার নিষেধ আছে….
এই ব্যাটার কথা বার্তা
সন্দেহজনক….!!
কনস্টেবল … এই
ওরে চেক করো! ! কনস্টেবল কিছুক্ষণ হাতাহাতি করে বলল… স্যার ওনার তো পকেট ই নাই ! কি চেক করবো??
গাড়িতে ওঠা !
আমি বললাম… স্যার, আমার লিফট লাগবে না।
আমি হেঁটেই যেতে পারবো। আমার বান্ধুবীর বাসায় দুপুরে খাবারের দাওয়াত আছে। এই চুপ কর গাড়িতে উঠ…. তারপর
কনস্টেবল আপনার নাম কি হিমু?? আমি বললাম হ্যাঁ ডাক নাম হিমু..আপনার বান্ধবীর নাম রূপা?? আমি বললাম হুম কেন আপনি চেনেন? আরে হিমু ভাই আমি জমির ঐ যে একদিন আমাকে রাতে বলেছিলেন তোমার মেয়ে সুস্থ হয়ে যাবে আমি বাসায় গিয়ে দেখি সত্যি সুস্থ হয়ে গেছে..আপনাকে অনেক খুজেঁ ছিলাম কিভাবে আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে গেলো এইটা জানার জন্য আর আপনাকে ধন্যবাদ দেবার জন্য…..
আমি বললাম আচ্ছা তাহলে এখন মিতা সুস্থ আছে? জি ভাইজান সুস্থ আছে দাড়ান হিমু ভাই আমি আপনাকে ছেড়ে দেবার ব্যাবস্থা করছি….
স্যার ওনারে ছাইড়া দেন। উনি ভালো মানুষ আমি ওনারে চিনি ওনি এইসব লাইনের না ওনি মহামানব লাইনের …!
অফিসার মুখ কাচুমাচু করে বলল… চলুন
আপনাকে পৌঁছে দিয়ে আসি।
আপনি কোনদিকে যাবেন??
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম…আমি মিরপুর যাবো জি…চলুন। অফিসার আমাকে রূপার বাসার
সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। এতক্ষন
সে একটাও কথা বলেন নি। অফিসার কে বললাম আপনি চিন্তা করবেন না আপনার ওয়াইফ সুস্থ হবে এবং সে আবার হাটতে পারবে আপনি তাকে ভালো ডাক্তার দেখান আর সময় দেন…আসি ভালো থাকবেন আর ধন্যবাদ পৌঁছে দেবার জন্য….
আমি এখন রূপার বাসার সামনে দাড়িয়ে আছি আর বারান্দার দিকে তাকিয়ে আছি । রূপা বারান্দায় তার ইজি চেয়ারে বসে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে আর আকাশ দেখছ। আমি এইটুকু দেখেই
চলে আসলাম । ভালোবাসার খুব কাছাকাছি যেতে নেই। তাহলে মায়ায় জড়িয়ে পড়তে হয়…. আর হিমুরা কারো মায়াতে কোনদিন জড়ায় না…তারা আবেগহীন মায়াবিহীন…….
১১টি মন্তব্য
রিমি রুম্মান
সুন্দর ! শেষটা আরও সুন্দর আবেগপ্রবণ ।
ব্লগার সজীব
অনেক দিন পরে লিখলেন, ঠিক বলেছেন ” ভালোবাসার খুব কাছাকাছি যেতে নেই। তাহলে মায়ায় জড়িয়ে পড়তে হয়…. ”
ভালো লিখেছেন।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অনেক অনেক দিন পর এলেন।কেনো যে আমাদের উপর আপনার এই অভিমান বুঝলাম না।এমন লেখা মিছ করি বারবার।ধন্যবাদ হুমায়ুন স্যারকে মনে করে দিলেন।
নিশিথের নিশাচর
ধন্যবাদ রিমি ….
নিশিথের নিশাচর
ব্লগার সজীব ভাই ভালোবাসার কাছে গেলে কষ্ট পেতে হয়…তাই যেতে নেই.
নিশিথের নিশাচর
মনির ভাই এতো দিন মানুষিক শারীরিক সমস্যায় ছিলাম এখনও আছি তবে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি…আর কোন অভিমান নেই…ভাই
শুন্য শুন্যালয়
অনেকদিন পর এলেন ভাই, হিমুতেই আছেন এখনো? হিমুরা কারো মায়াতে কোনদিন জড়ায় না, এন্টিহিমু চরিত্র তৈরি করলে কেমন হয় বলুন তো?
স্বপ্ন নীলা
বাহ। সুন্দর ঝরঝরে সুন্দর লেখনী
নিশিথের নিশাচর
জি এখনও হিমুতে আছি…আপনি এন্টি হিমু হতে পারেন না হয় রূপা হতে পারেন. ..কিন্তুু আমি হিমু চরিত্র থেকে বদলাতে পারিনি @ শুন্য শুন্যালয়
নিশিথের নিশাচর
ধন্যবাদ স্বপ্ন নীলা
Rabiul
ভালোবাসার খুব কাছাকাছি যেতে নেই। তাহলে মায়ায় জড়িয়ে পড়তে হয়……
হুম