
জেরিনের সাথে আমার সম্পর্কটা জনম জনমের। সম্পর্কের শুরুও হয়েছিলো অদৃশ্য কোন শুভাকাঙ্ক্ষীর ছায়ায়। শত বিপদেও সে অদৃশ্য শুভাকাঙ্ক্ষী আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে রক্ষা করেছেন। ভালোবাসা এবং প্রেম দিন দিন গভীর থেকে গভীরই হচ্ছে। গভীর সম্পর্কে সামান্য ভুল ভ্রান্তিও অনেক সময় বড় হয়ে দেখা দেয়। একারনেই কয়েকবার ব্রেকআপও হয় আমাদের। ব্রেকআপের পরেও আবার আমরা কিভাবে যেন এক হয়ে যাই। একটি সময়ে আমরা উভয়েই বুঝে যাই যে এই সম্পর্ক আর আমাদের দুজনের ইচ্ছে মতো চলবে না , শুভাকাঙ্ক্ষী যেভাবে চালাবেন সেভাবেই চলতে হবে আমাদের।
গতবার চট্টগ্রাম ভ্রমণের সময় রাতে আমরা হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রাঃ) এর মাজার জিয়ারত করি। যতবারই আমরা দুজনে চট্টগ্রাম গিয়েছি প্রতিবারই রাতে এই মাজার জিয়ারত করি। শেষবার রাতটা একটু বেশীই হয়ে গিয়েছিল। রাত বারোটার পরে মাজারের মূল ফটক বন্ধ ছিলো। একজন খাদেমকে অনুরোধ করায় তিনি দরজা খুলে দিলেন। গভীর রাতে আমরা দুজনে বসে গভীর একাগ্রতার সাথে দোয়া কালাম পড়ে মাজার জিয়ারত শেষ করলাম।
মাজারের ভিতরের ওয়ালে টানানো বাঁধানো বিভিন্ন লেখা গুলো পড়ছিলাম। হঠাৎ মাজারের পুকুরের কচ্ছপ এর কাহিনী পড়তে আরম্ভ করলাম। ‘ এই কচ্ছপেরা জ্বীন জাতি ছিলো। এদেরকে কচ্ছপ হিসেবে রেখেছেন হযরত বায়েজিদ বোস্তামি ( রাঃ) । বিরল প্রজাতির এই কচ্ছপের পিঠ একদম মানুষের পিঠের মত। খুব ভালো করে লক্ষ করলেই এটি দেখা যাবে। একারনেই এই প্রজাতির কচ্ছপ পৃথিবীতে আর নেই…… ” এমন আরো অনেক কিছু লেখা ছিলো কচ্ছপ সম্পর্কে।
মাজারের প্রশস্ত সিড়ির ধাপ ভেঙ্গে আমরা দুজনেই পুকুরের পাড়ে এলাম। জেরিনকে জ্বীন, কচ্ছপ, মানুষের পিঠ এর কথা বললাম। পুকুরের সিড়ির কাছে ঐ রাতে অনেক কচ্ছপ এসেছে। এত পরিমান কচ্ছপ আর আমরা এখানে পূর্বে দেখিনি। সবই বিশাল বিশাল আঁকারের। অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করলাম প্রতিটি কচ্ছপের পিঠ অবিকল মানুষের পিঠের মত। আমার মধ্যে কেমন একটা অনুভুতি এলো। মেরুদন্ডের উপর, পিঠে একটা চাপ অনুভব করছিলাম।
মাজার থেকে বের হয়ে সিএনজির অপেক্ষায় আমি। জেরিন গেলো একটা কোল্ড ড্রিংক্স কিনতে। ড্রিংক্স কিনে ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা পান করছে। আমি সিএনজি ডাকতে প্রায় চল্লিশ ফুট দূরে সরে গিয়েছিলাম, সিএনজি পেয়ে জেরিনের কাছে গিয়ে ডাক দিয়ে ডাকলাম। আমাকে দেখে জেরিন ভুত দেখার মত চমকে উঠে বললো ‘ তুমি তো এতক্ষণ আমার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলে, এখন আসলে কোথা থেকে ?’
আমি কিছু না বলে জেরিনের হাত ধরে সিএনজিতে উঠালাম। আমার সমস্ত শরীরে যেন দ্বিগুণ ওজনে পরিনত হয়েছে। আর একটা মানুষ যেন সমস্ত ভর নিয়ে আমার ভিতরে চেপে আছে।
রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অনুভব করলাম যে আর একটা আমি আমার পাশে বসে আছি। সে জেরিনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার। তখনো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আর একটা আমি জেরিনের মুখের দিকে তাকিয়ে।
ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি জেরিন ফুল ড্রেসড হয়ে বাইরে যাবার জন্য আমাকে জাগাচ্ছে। তাকিয়ে অবাক হয়ে ভাবছি কোথায় যাবে ও আমাকে রুমে রেখে? কখনো তো চট্টগ্রাম এসে আমাকে ছাড়া বের হয়নি। এবং দরজা খুলে চলেই গেলো আমার অবাক দৃষ্টিকে পিছনে ফেলে।
কিছুক্ষণ পরে আবার রুমে ফিরে এলো, আমি তখনো বিছানায় শুয়ে আছি।
সকাল এগারোটার দিকে সিআরপি তে গেলাম। প্রাচীন গাছগুলো আমাকে মোহাবিষ্ট করে ফেলেছে।
নীচু চত্বরের মাঝের মঞ্চের মত স্থানে প গাছের ছবি তুললাম রাস্তার পাশে বসে। হঠাৎই আবার শরীরে সেই ভর অনুভব করলাম। জেরিনকে সাথে নিয়ে হেঁটে অল্প একটু গিয়ে সিএনজিতে উঠবো। আমি হাঁটতে পারছিলাম না। সামান্য পথ হেঁটে যেতে আমার খুবই কস্ট হচ্ছিল। নিজের মাঝে আর একজনের ওজন বহন করতে অনেক কষ্ট। ঘেমে প্যান্ট, টি-শার্ট ভিজে গিয়েছে। জেরিন খুবই অবাক হচ্ছিল আমাকে দেখে।
আমি কিছু বলিনি তাঁকে।
রিক্সায় সার্কিট হাউজ দেখতে গেলাম। দেখে পাশাপাশি হেঁটে জিয়া যাদুঘরে যাচ্ছি। অনেক দূর হেঁটে এসে পাশে তাকিয়ে দেখি জেরিন পাশে নেই। অথচ একমুহুর্ত আগেও ও আমার পাশেই হাঁটছিল। পিছনে অনেক দূরে তাকিয়ে দেখি জেরিন স্টেডিয়ামের সাথে একটি ফ্রুট জ্যুসের দোকানের সামনে, রাস্তার অন্য পাশে। আমি তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছি। রাস্তার অপর পারে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ওর নাম ধরে ডাকলাম। আমার দিকে তাকিয়ে সাথে সাথেই ও পিছনে তাকালো। ওপাড়ে কাছে গেলে জিজ্ঞেস করলো ‘ তুমি না আমার সাথেই ছিলে, ওপাড়ে গেলে কখন?’
আমি তাঁকে কিছু বলিনি।
এরপর সিএনজিতে ওয়ার সিমেট্রি দেখতে গেলাম। সবুজ গালিচা বিছানো যেনো। আমার মাঝে তখনো একজন বিরাজ করছিলো। সিমেট্রিতে এসে খুব শান্তি পাচ্ছিলাম। ফটো তুললাম দুজনে প্রচুর। আমার ফটো তোলার পরে তা দেখার সময় জেরিন অবাক হয়ে আবিষ্কার করলো, আমার প্রতিটি ছবিতে আর একটি মানুষের অবয়বের ছায়া আছে।
শুনে আমি কিছু বলিনি তাঁকে।
ওয়ার সিমেট্রি থেকে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খাচ্ছি। আমার খুবই ক্ষুধা পেয়েছিলো। দুজনের খাবার আমি একাই খাচ্ছিলাম। আমি তো দুজনই।
খাবারের এক পর্যায়ে জেরিন বললো ” আমি কারো সাথে দেখা করতে যাবো না, জাম্বুরী পার্কে যাবো, সন্ধ্যাবেলায় এর মূল আকর্ষন লাইটিং, দেখেই চলে আসবো। ”
আমার ভিতরে থাকা সদ্য আমিটা ভাবাচ্ছে আমাকে- জেরিন অবশ্যই কারো সাথে দেখা করতে যাবে। সকালে রুম হতে বের হয়ে তাঁর সাথে প্রগ্রাম করেছে।
জেরিন যদি কারো সাথে দেখা করতে চায়, আমি কিভাবে তা ঠেকাবো? যাক দেখা করতে, এসব ভাবতে ভাবতে খাবারের বিল দিয়ে জেরিনকে সিএনজিতে উঠিয়ে দিলাম জাম্বুরী পার্কে যাবার জন্য। একা রিক্সায় ক্লান্ত আমি ফিরে এলাম হোটেলে।
পাঁচটায় ঘুমিয়ে গেলাম ক্লান্ত শরীরে। কেউ পাশে বসায় ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তাকিয়ে দেখি আমি বসে আছি। সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। বলছে আমাকে সে ‘ তোমার জেরিন এখন ডেটিং করছে। তুমি বাইরে যাবে একটু পরে, ফিরবে নয়টার পরে, রুমে ঢুকে দেখবে জেরিন শাওয়ার নিয়ে সাদা তোয়ালে গায়ে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। অন্য একটি তোয়ালে দিয়ে ডান হাত দিয়ে চুলের পানি মুছবে।’
রাত আটটায় বের হলাম আমি। একটি নতুন রাউটার কিনতে হবে। সারে আটটায় জেরিন কল দিলো, রুমের চাবি কোথায়? বললাম, রিসিপশনে।
রাউটার কিনে রুমের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। ঠিক নয়টায় রুমে ঢুকলাম। রুমে ঢুকে দেখি, সে যেমন বলেছিল সেভাবেই জেরিন দাঁড়িয়ে আছে শাওয়ার শেষ করে, সাদা তোয়ালে গায়ে, ডান হাত দিয়ে চুলের পানি মুছছে।
এরপর মুহুর্তে কি হলো আমিই বুঝতে পারিনি, আমার ভিতর থেকে আমার সেই আমিটা বের হয়ে জেরিনের চুলের মুঠি ধরে গালে প্রচন্ড জোড়ে চড় লাগালো। সাথে অশ্রাব্য গালাগালি, শেষের টুকু বলা যায় এখানে ‘ যার সাথে ছিলে তাঁর সাথেই রাতটা কাটিয়ে আসতে।’
রুমের সোফায় বসে আছি। জেরিন বিছানার উপর উপুর হয়ে কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেলো। ঘুমন্ত মুখটা দেখে অসম্ভব মায়া এলো। এসির ঠান্ডায় কাঁপছে ওর শরীর। কম্বল গায়ে দিয়ে দিলাম ওর। ওর ঘুম ভেঙে যাবে বলে একই বিছানায় আর শুলাম না। অন্য বিছানায় শুলাম। ঘুমের মাঝে আবার আমার আমি এলো। বসে আছে আমার কোল ঘেঁষে। ঠান্ডা লাগছিলো বলে জেরিন আমার গায়ে কম্বল টেনে দিলো। আমাকে হাত দিয়ে স্পর্শ করলো।
আমার ভিতরের আমিটা চলে গেলো। শরীর ভর মুক্ত হলো আমার।
** একটি সত্যি ঘটনার কাহিনী অবলম্বনে।
২৪টি মন্তব্য
রোকসানা খন্দকার রুকু
পড়লাম। অশরীরী ভূতের ভয়। পরে আবার আসবো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
পড়লাম অশরীরী ভূতের নয় বাস্তব। আমার চট্টগ্রাম দেখা হয়নি। মিলিয়ে পড়তে পারলে মজা হতো। তবে গল্প দারুণ জমেছে। ভূত প্রেত ভয় ভয় নিয়ে পড়া।
জিসান শা ইকরাম
অনেক দিন লেখার বাইরে, আমি সন্তস্ট না লেখার মানে।
চট্টগ্রাম আমার প্রিয় শহর হয়ে গিয়েছে।
ওখানে ঘুরে আসুন। ভালো লাগবে আপনার। আরো কয়েকটি স্পট নিয়ে লিখবো।
শুভ কামনা
জিসান শা ইকরাম
কথা দিয়ে মন্তব্য করার জন্য ফিরে আসায় ধন্যবাদ।
জিয়া আল-দীন
আমার কাছে অশরীরী মনে হয়নি। বেশ রোমান্টিক জুটি মনে হয়েছে।।আর চট্টগ্রামের বিররণ শোনে আমিও বোধকরি আপনাদের সাথে অদৃশ্য ভাবে ঘুরে বেড়ালাম।ভাল লাগলো গল্পটি।জেরিন জনম জনম আপনার ভেতরেই থাকুক। ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।
আমার জেরিন! 🙂
আমি আসলে অনেক গল্পই এভাবে লিখি।
শুভ কামনা,
সাদিয়া শারমীন
ভয়ংকর !! সত্য ঘটনা হলে তো আরো ভয়ংকর!
জিসান শা ইকরাম
কিছুটা তো সত্যই।
আপনি লিখছেন না অনেক মাস।
নতুন লেখা দিন।
শুভ কামনা
রিতু জাহান
এটা সত্যি ঘটনা!
মাগো!!
কচ্ছপগুলো আমি রাতের বেলা দেখেছিলাম পিঠটা তাই স্পষ্ট দেখিনি। আজকে বাসার বাচ্চা কচ্ছপগুলো দেখব তো!
কুটুমবাড়িতে আমি খেয়েছি।
দারুন বর্ণনা ভাইয়া, খুব ভালো লাগলো।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা কিছুটা সত্যি।
মাজারের কচ্ছপ গুলো আলাদা প্রজাতির।
এরসাথে বাইরের কচ্ছপ মিলবে না।
শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
জেরিনের একটুও সন্দেহ হলোনা এটাই আমার কাছে অবাক লাগল। মেয়েটা মনে হয় আমার মত সন্দেহ বাতিক না। হইলে আগেই ডরাইত।
শোনা ভৌতিক কাহিনী লিখব ভাবতেছি। এই গল্প পড়ে আইডিয়া আসলো মাথায়।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমার কাছেও অবাক লেগেছে। মেয়েটা মনেহয় আসলেই খুব সহজাত স্বভাবের, সোজা বাংলায় একটা বুদ্ধু। নয়তো এমন ভুতের সাথে থেকে কিছুই টের পেলো না!
জিসান শা ইকরাম
সন্দেহ করেনি অগাধ বিশ্বাস আর আস্থার কারনে।
জিসান শা ইকরাম
না, একটুও সন্দেহ করেনি জেরিন। নিজে ছবি তুলেছে, প্রতিটি ছবির পিছনে আলাদা একটা ছায়া, এটি দেখেও সন্দেহ করেনি।
সোনেলায় হরর গল্প খুবই কম, লিখে ফেলো কয়েকটি।
শুভ কামনা।
বোরহানুল ইসলাম লিটন
গল্পটি ভীষণ আকর্ষণীয়!
তবে আমার কাছে ভৌতিক বলে মনে হয় নি।
দুটি সুন্দর মনের মাঝে ’সম্পর্ক’ তৃতীয় আত্মা হয়ে সর্ব সময় পাশে থাকে
আর এই ’সম্পর্ক’ কে যত্ন-অবহেলায় দোলাচলে তৈরী হয় নানা ঘটনা।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
জিসান শা ইকরাম
সম্পর্কে সন্দেহ, অযত্ন এবং কিছুটা অবহেলায় তৃতীয় কারো বৈরী নজর এসে সম্পর্ককে ফাটল ধরায়।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
ও আচ্ছা, পেত্নীর গপ্পো, ভালোই ভর করেছে,
ঘাড় মটকানো শুধু বাকী রেখেছে।
গল্পের শেষে সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লিখে দেয়ায় একটু পড়া গেল।
লেখালেখি এত্ত সহজ এখন ও না।
টাইম লাগবে।
জিসান শা ইকরাম
হ টাইম লাগবে।
লেখার বাইরে, লেখা খরা চলতাছে।
ফেরার চেস্টায় আছি।
হালিমা আক্তার
আমি শতভাগ বিশ্বাস করি। এজন্য আমি মাজারে যাইনা। চট্টগ্রাম থাকার সময় আমার কলিগরা যেতে চেয়েছিল। আমি যাবো না দেখে তাঁরাও যায় নাই। আমাদের পরিবার এর ভুক্তভোগী। সুন্দর গল্পের জন্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইলো।
জিসান শা ইকরাম
মাজারে গেলে আমি শান্তি পাই।
আপনি একবার অন্তত যান, ভালো লাগতেও পারে।
শুভ কামনা।
নার্গিস রশিদ
‘সত্যি ঘটনা অবলম্বনে’ লেখার পর গল্পটা পড়ে একটু গা কাটা দিয়ে উঠলো । আসলে কতকিছুই ঘটে যার কোন যুক্তি নাই। শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, এ জগতে অনেক কিছুই ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা নেই।
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
চট্রগ্রামে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। জেরিনের সাথে জাম্বুরী পার্কে চলে গেলে ভালো হতো, আপনার ভেতরের আপনিটা আপনাকে উল্টাপাল্টা ভাবাতে সাহস পেতো না।
জেরিনের স্পর্শেই সেই আপনার আমিটা বিদায় হয়েছিলো! তাহলে তার গালে চড় মারার সময় সেটা ভাগলো না কেন? স্পর্শ না করেই চড় দেওয়া হয়েছিল নাকি! গল্পের এইখানে কিন্তু ফাঁক আছে।
গল্পের শেষদিকে জেরিনের অগাধ ভালোবাসা মন ছুঁয়ে গেলো। তার উপর এতকিছু হওয়ার পরেও সে ছেড়ে যায়নি, শীতার্ত প্রেমিকের গায়ে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দিয়েছিলো। বুঝিয়েছে ভালোবাসা এত ভঙ্গুর নয় যে সামান্য ভুল বুঝাবুঝিতে নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর ভেতরের দুষ্টু আমিটাও টের পেয়েছে ভালোবাসার স্পর্শ/শক্তি, তাইতো ভোরের আলোয় ভেগে গেছে।
আপনি লেখায় ফিরেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে। নিয়মিত চাই লেখায়, এখানে।
শুভ কামনা নিরন্তর 🌹🌹
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, এখানে গল্পের একটু ফাঁক রয়ে গেছে। এটি আমারই প্রকাশের ব্যার্থতা।
তবে লেখক চড় দিয়েছে, জেরিনের এখানে ভুমিকা নেই। জেরিন তো নিজে লেখককে স্পর্শ করেনি। আর ভালোবাসার স্পর্শ করার মন ঐ মুহুর্তে জেরিনের থাকার কথাও নয়।
দুস্ট আত্মা ভেগে গেছে ভালোবাসার আগমনেই।
চেস্টা করছি লেখায় ফিরতে।
শুভ কামনা।