
সন্ধ্যা, সারা বিকেলের শেষে,
শ্রাবণ-বৃষ্টির পেরেক, ভাদ্রের পুড়ে যাওয়া রৌদ্রে
আলগোছে ছুঁয়ে থাকা একটি গাছ-সংযোগ,
স্বপ্ন নয়, নিগুঢ় বাস্তবতার সহজ সতেজ অনুভূতি
অনুভব হৃদয়ের পরতে পরতে;
দেবদারুটি শুধুই আকাশ ছুঁতে চায়,
বোধ-অবোধের গিজ গিজে ভিড় এড়িয়ে
শান্ত-কোমল পাতাদের আন্দোলনে,
দু’একটি মেঘ বৃষ্টির ভয় মেলে উঁকিঝুঁকি দিয়ে
হাসির খোরাক যোগায়, স্বল্পায়ু মেঘ নারী সুখের গল্প বলে,
হাওয়ার নাচন পই পই করে সাবধানের বাণী শোনায়।
গাছ ভাবে,
এসব আমার সাজে না,
আঁচল মেলে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকা
ঐ নীলাকাশটাই শুধু চাই।
আমার টু-শব্দ না-করা হৃদয় অনুভব করে……
দাসানুদাস কেউ দেবদারুটির ডানা গুলো ছেঁটে ফেলেছে
ধার-তলোয়ারের কোপে, তীর্থে পৌঁছুবার আগেই,
তুলো-মেঘের ছায়াগুলো অনড়, ডানা মেলা দেবদারু চাই-ই;
হৃদয়কে বলি
প্রতীক্ষা শেষে নীলাকাশ ! সে তুমি ছোঁবেই।
ছবি নেট থেকে।
৩৩টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
দাসানুদাস কেউ দেবদারুটির ডানা গুলো ছটে ফেলেছে
ধার-তলোয়ারের কোপে, তীর্থে পৌঁছুবার আগেই,
তুলো-মেঘের ছায়াগুলো অনড়, ডানা মেলা দেবদারু চাই-ই;
তবুও গন্তব্যে পোছাতে চাই ই চাই। ইচ্ছা জাগ্রত হোক।
ছাইরাছ হেলাল
হ্যা, ছুঁতে চাওয়া নীলাকাশ আমাদের চাই ই।
ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
***হৃদয়কে বলি
প্রতীক্ষা শেষে নীলাকাশ ! সে তুমি ছোঁবেই।***
অসাধারণ প্রকাশ।
শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
নিয়মিত পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
বন্যা লিপি
কবোষ্ণ ইচ্ছেরা কখন যেন আহুতির জ্বালানো যজ্ঞে মিশে গিয়ে লীন হয়ে গিয়েছিলো।
দেবদারুটির সবুজ পাতাগুলো কোনো অভিযোগ রাখেনি। একদিন ঠিকই আকাশ ছুঁয়ে যাবো ভেবে তুলো -মেঘেরাও কথা দিয়ে যায়
দেবদারু তোমার কাছেই নত হবে।
ছাইরাছ হেলাল
প্রতীক্ষা ই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও,
চোরা আক্রমণ উপেক্ষা করে ই আমরা আকাশে চোখ রাখি।
হৃদয়ের ডাক শুনে শুনে।
ভাল থাকবেন। নিয়মিত লিখে লিখে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
যতই কেটে ছেঁটে দেয়া হোক দেবদারু তার ডানা মেলবেই , নীলাকাশ ছুঁতে চাইবেই। ইচ্ছেদের জলাঞ্জলি দেয়া যাবেনা, জাগিয়ে রাখতেই হবে। একদিন নীলাকাশ ছুঁয়ে ফেলবো ঠিক। শুভ কামনা রইলো
ছাইরাছ হেলাল
কাটাকুটি কিছুতেই পিছু ছেড়ে যায় না, অকস্মাৎ হামলে পরে ছুরি/তলোয়ার হাতে।
তবুও হৃদয় বেঁচে থাকে অসীম সাহস বুকে নিয়ে, ভালোবেসে-বেসে।
ভাল থাকুন। ভাল ভাবেই। আনন্দ চঞ্চলতায়।
শামীম চৌধুরী
অসম্ভাব ভালা লাগা একটি কবিতা।
শুভ কামনা রইলো কবির জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
ভাল থাকবেন ভাই।
শুভ কামনা আপনার জন্য ও।
রেজওয়ানা কবির
এসব আমার সাজে না,
আঁচল মেলে পৃথিবীর দিকে তাকিয়া থাকা
ঐ নীলাকাশটাই শুধু চাই।
ভালো লিখেছেন। শুভকামনা।
ছাইরাছ হেলাল
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল থাকবেন।
কামাল উদ্দিন
অতিরিক্ত আশা দুরাশা, দেবদারুর ডানা থাকলেও সে আকাশ ছুতে পারতো না। তবে আশাই তো বেঁচে থাকার জীবনী শক্তি (কিছু বুঝে মন্তব্য করলাম কিনা বুঝতে পারলামনা জাতিয় ইমো হবে)
ছাইরাছ হেলাল
হা হা হা, এত বোঝার কিচ্ছু নেই। এটি ভাবতে কোন সমস্যা নেই।
একটি লেখাকে অনেক অনেক ভাবেই ভাবা যায়, আমরা তা ভাবিও।
ভাল থাকবেন।
আরজু মুক্তা
গাছের মতো উপকারী একটাও নাই। তবুও একটানে গাছের পাতা ছিঁড়ে দিয়ে আসি। গাছ তখন বলে জিরোয় বাছা, একটু মাথা তুলে দেখো; আকাশ কতো উদার। একটু নীল ছুঁয়ে আসো।
দারুণ লিখেছেন। ছেটে বানানটা টাইপিং মিসটেক। দেখেন।
ছাইরাছ হেলাল
আমার একটি প্রিয় গাছের কিছুটা কেটে ফেলা থেকেই এ লেখার উৎপত্তি।
প্রকৃতি আমার প্রেম।
ঠিক করে দিয়েছি, অনেক ধন্যবাদ, ধরিয়ে দেয়ার জন্য ।
ভাল থাকবেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
“হৃদয়কে বলি
প্রতীক্ষা শেষে নীলাকাশ ! সে তুমি ছোঁবেই।”
যেমন করে ইচ্ছে করে
বন্ধু ছোঁবে আকাশ।
দেবদারু, তুমি দেখ আশপাশ।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
এমন সুন্দর করে কবে যে মন্তব্য লিখতে পারব কে জানে।
অবশ্য ভাই লিখলে সেটি ও আমার লেখা!!
ভাল থাকবেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
হা হা হা। ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি আরও ভাল ছন্দ লিখবেন, ভাই।
তৌহিদ
মনের লালিত ইচ্ছেটাই বড় কথা। জীবনে ঝড়ঝাপটা আসবেই। অবিচল থাকলে আকাশ ছুঁতে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবেই একদিন।
শুভকামনা ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
আমরা আসলে সব ঝঞ্জা এড়িয়ে মাথা উঁচু করেই বাঁচতে চাই।
ভাল থাকুন।
খাদিজাতুল কুবরা
আকাশের শ্রাবণ বৃষ্টি প্রকৃতিকে সিক্ত করলেও হৃদয়ের শাবন বৃষ্টি পেরেকই ঠোকে। দেবদারুর গাছের সাথে মানুষের একটি বিষয়ে খুব মিল আছে, শতঝড়ে দেবদারু ঝুঁকে পড়েনা আর মানুষ ও টিকে থাকার লড়াইয়ে স্বপ্নের নীলাকাশ ছোঁয়ার প্রত্যয়ে হার মানেনা।
রুপকটি যথার্থ রুপে কবিতাকে অনন্য মাত্রায় দাঁড় করিয়েছে।
আমি কি সঠিক বুঝতে পেরেছি জানাবেন প্লিজ।
কবিতার শিক্ষানবিশ আমি।
তৃতীয় স্তবকে তৃতীয় লাইনে শব্দটি তাকিয়ে হবে কি?
কবিতাটির আবৃত্তি খুব শ্রুতিমধুর হবে মনে হচ্ছে।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি মন দিয়ে পড়েছেন, ধন্যবাদ, আর ওটি ভুল ছিল, ঠিক করে নিয়েছি।
সব সময় বলবেন তা চাই।
ভুল বা ঠিক বলে কিছু নেই, আপনি ঠিক বলেছেন। একটি লেখা অনেক ভাবেই ভাবা যায়, আপনার-টি-ও এমন ভাবনা।
অবশ্যই গাছ জীবনের প্রতীক।
আসলে আমরা সবাই-ই শিক্ষানবীশ,নিজে প্রতিনিয়ত শিখছি আর শিখছি,
আপনাদের সবার কাছ থেকেও।
লেখকের ভাবনা বাদ, সে কী-না-কী লেখে কে জানে!!
পাঠকের যায়গা থেকে আসুন-না একটু ভাবতে বসি;
“সন্ধ্যা, সারা বিকেলের শেষে”
এখানে সময়ের প্রবহমানতার কথা বলা হচ্ছে,সন্ধ্যা কিন্তু ঝুপ করে নেমে আসে না,
দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ই সে এখানে এসেছে,আবার সন্ধ্যা শেষে রাত, রাত শেষ হলেই
অপার বিস্ময় নিয়ে নব দিগন্তে আল ঝরা সকাল, যার প্রতীক্ষা আমাদের সবার, এটি কিন্তু
আশাবাদের জায়গা। নীলাকাশ সে ছোঁবেই।
“সন্ধ্যা, সারা বিকেলের শেষে,
শ্রাবণ-বৃষ্টির পেরেক, ভাদ্রের পুড়ে যাওয়া রৌদ্রে
আলগোছে ছুঁয়ে থাকা একটি গাছ-সংযোগ,
স্বপ্ন নয়, নিগুঢ় বাস্তবতার সহজ সতেজ অনুভূতি
অনুভব হৃদয়ের পরতে পরতে;”
এখানে একটু দূরে দাঁড়িয়ে গাছের সাথে একধরণের সংযোগ হৃদ্যতা।
“দেবদারুটি শুধুই আকাশ ছুঁতে চায়,
বোধ-অবোধের গিজ গিজে ভিড় এড়িয়ে
শান্ত-কোমল পাতাদের আন্দোলনে,
দু’একটি মেঘ বৃষ্টির ভয় মেলে উঁকিঝুঁকি দিয়ে
হাসির খোরাক যোগায়, স্বল্পায়ু মেঘ নারী সুখের গল্প বলে,
হাওয়ার নাচন পই পই করে সাবধানের বাণী শোনায়।
গাছ ভাবে,
এসব আমার সাজে না,
আঁচল মেলে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকা
ঐ নীলাকাশটাই শুধু চাই।”
এবারে গাছ নিজেকে প্রকাশ করছে,তার ইচ্ছে প্রকাশ করে,এবং তার বাঁধা গুলো ও।
আবার বাঁধা দান কারি মেঘ যে আসলে কোন বাঁধাই না তাও বুঝিয়ে দিচ্ছে।
সিদ্ধান্তে অটল, আকাশ তার চাই ই।
“আমার টু-শব্দ না-করা হৃদয় অনুভব করে……
দাসানুদাস কেউ দেবদারুটির ডানা গুলো ছেটে ফেলেছে
ধার-তলোয়ারের কোপে, তীর্থে পৌঁছুবার আগেই,
তুলো-মেঘের ছায়াগুলো অনড়, ডানা মেলা দেবদারু চাই-ই;
হৃদয়কে বলি
প্রতীক্ষা শেষে নীলাকাশ ! সে তুমি ছোঁবেই।”
এবারে লেখক নিজেকে প্রকাশ করছেন, তার গাছকে কেউ আক্রমন করেছে,
তাতে বিদ্ধ লেখক হৃদয়, কিন্তু সে আশাবাদী, আকাশে সে পৌঁছুবেই।
এখানে লেখক তার প্রথম দিকের লেখায় ফিরে গেছেন। প্রবহমানতায়।
জানিনা পাঠক হিসেবে কী বুঝতে/বোঝাতে পারলাম!!
খাদিজাতুল কুবরা
খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাইয়া। আসলে আমি সেই ছড়া পড়ার বয়স থেকেই কবিতা ভালোবাসি। কবিতা পড়ে ভাবের গভীরে ঢোকার চেষ্টা করতাম, তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছে?সেই ভাবনায় আমাদেরকে আজও শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, পড়তে আজও ভালো লাগে। কবিতা সৃষ্টি হয় গভীর প্রেম বিরহ থেকে। আপনার প্রিয় গাছটির কিছু ছেটে ফেলায় আমরা এতো চমৎকার কবিতাটি পড়তে পেরেছি এবং যার যার মতো করে ভাবতে পেরেছি। আজকাল কবিতার প্রতি অনেকের অনীহা দেখে সত্যি হতাশ হতে হয়। তবে কবিতা কি সাহিত্য নয়! দশ লাইন গদ্যের আবেগ একলাইন পদ্যে প্রকাশ করে সেই সাথে যে শ্রুতিমধুর আবহ তৈরি করে তাতো গদ্যে পাওয়া যায় না। আমি গদ্যকে ছোট করে দেখেছি না।মোদ্দা কথা সাহিত্য ভালোবাসেন যিনি তিনি কেমন করে কবিতাকে অগ্রাহ্য করেন! আপনার লেখার বিশ্লেষণ পড়ে আমি কিছুটা আবেগাপ্লূত হয়ে পড়লাম। তাই নিজের কিছু একান্ত অনুভূতি শেয়ার করে ফেলেছি।
আজকে থাক।
পরের কবিতার অপেক্ষায় রইলাম।
রেহানা বীথি
অবশ্যই ছোঁবে। দীর্ঘ প্রতীক্ষা কখনও নিরাশ করে না।
আপনার প্রতিটি কবিতাই স্বতন্ত্র আপন গৌরবে। এটিও ব্যতিক্রম নয়।
ভালো থাকুন ভাইয়া সবসময়।
শুভকামনা নিরন্তর।
ছাইরাছ হেলাল
এমন আশাবাদ ই আমাদের জীবনে বাঁচিয়ে রাখে।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আর একটু সময় আমরা পেতে চাই, পেতে পারিও, বিনা অজুহাতেও!!
জিসান শা ইকরাম
স্বপ্ন ঠিকানা স্পর্শ করবেই, যত বাধা আসুক।
কবিতা এত সহজ! আগে জানতাম না।
ছাইরাছ হেলাল
বাধা বলতে কিচ্ছু নেই, ছিল ও না।
ক্রমান্বয়ে আরও সহজ হবে, অপেক্ষা করুন।
সুরাইয়া পারভীন
দেবদারু গাছটির নীলাকাশ ছোঁবার বাসনা
তার লক্ষ্য স্থির। এই অভেদ্য লক্ষ্য ভেদ করে স্বল্পায়ু
মেঘ নারী সুখের গল্প কর্ণ গহ্বরে প্রবেশ করবে না এটাই চিরন্তন। তার যে কেবল নীলাকাশকেই চাই। চাই-ই-চাই হোক তা দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর শেষে
ছাইরাছ হেলাল
ধুর!! ওটি আসল ফোকাস না।
ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষা সেটাই আসল কথা।
ভাল থাকবেন আপনি।
সুরাইয়া পারভীন
ঐ তো একই ব্যাপার
নীলাকাশ ছোঁবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা
জয় হোক সমস্ত ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষার
ছাইরাছ হেলাল
ইচ্ছেটাই আসল কথা, ঠিক ধরেছেন।
ধন্যবাদ।