
চট্টগ্রাম
৮/১০/১৯
প্রিয় রুশো,
প্রতিদিন ভাবি এই চিঠিই হবে শেষ চিঠি কিন্তু শেষ আর হয়না। কবে, তুমি চলে গেলে, শীতের কম্পন আর হৃদয়ের কম্পন তখন এক হয়েছিলো। তুমি বুঝেছো কিনা জানিনা! ঐ দূর থেকে চোখ বুঝেছিলো মনের আঙ্গিনায় কি লিখা ছিলো? আমার সেই অঝরে কান্নাগুলো বৃষ্টিকে হার মানিয়েছিলো। তাই সময় করে বসি, মনের কথাগুলো লিখবো; সেই সময় এখন হয়েছে ” বৃদ্ধ যাযাবর! ” ছুটি দেয়না।
তোমার মনে আছে কি? একবার কলেজ ক্যাম্পাসে “শেষের কবিতা” থেকে কিছু লাইন শুনিয়েছিলাম। তুমি বলেছিলে, ” আজ তোমার মুখের ফুলঝুড়ি ফুটুক। কাব্য রাখো। যখন একসঙ্গে থাকবো প্রতিরাতে একটা একটা পৃষ্ঠা করে পড়ে শোনাবে।” লাবণ্য সেদিন এই কথা শুনে লজ্জা পেয়েছিলো। আমার আর ‘শেষের কবিতা পড়া হয়নি।
ঐ যে বাড়ির পিছনের রেললাইন। প্রায়ই ওখানে ছুটে যাই। ওরা ঝনঝন শব্দ করে আমায় বিদ্রূপ করে। আমরা ও পথে যাইনা যে! রেললাইনের একদিকে আমি, আর বাম হাতটা ধরে তুমি ওপারে। কতো সময় চলে যেতো নীরবতায়।
পূজার সময় তুমি আর আমি দুজনে যেতাম দেবি দর্শনে। হাতে থাকতো মোয়া আর নাড়ু। আমি মিষ্টি পছন্দ করতাম, তুমি ঝাল। অথচ একসাথে থাকলে, তুমি মিষ্টিই কিনতে। এক গোছা রঙিন রেশমি চুড়ি কিনে দিয়েছিলে। সযতনে রেখেছি আজও—- তুমি আসলেই পরবো।
কবে আসছো? আমার দক্ষিণের জানালার পাশে ঐ যে দূরের তারা দেখা যায়। প্রতিদিন ওকে তোমার প্রতিচ্ছবি ভেবে কথা বলি। ডাক পিওনকে বলে রেখেছি, তোমার চিঠি যেনো ঠিকঠাক আমিই পাই। রাখতে না চাইলেও, খামে ভরে দিতে হচ্ছে চিঠিটা। তোমার উত্তরের অপেক্ষায়।
তোমারই
পাপড়ি
২৮টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
আহা …… কি কোমলে লিখে ফেললেন চিঠি খানি! রেশমি চুড়ি পরার দিনগোনা শেষ হোক।
চিঠি ভালো লাগলো
আরজু মুক্তা
শুভেচ্ছা অবিরাম।
তৌহিদ
আমরাও ডাকপিয়নকে বলেছি চিঠি যেন আপনি তাড়াতাড়ি পান। স্মৃতিময় চিঠি ভালো লেগেছে আপু।
শুভকামনা রইলো।
আরজু মুক্তা
শুভকামনা। আপনাদের দেখে দেখে শিখলাম।
তৌহিদ
যাক তাহলে শিক্ষা ভালোই হচ্ছে ☺☺
মোঃ মজিবর রহমান
আসব শে্সের কবিতা শুনব, অধির আগ্রহ আছে। দুখ ছেড়ে মন প্রফুল্ল করে হাস, তবেই দেখা পাবে, নীলাকশে রামধনু, তাতেই খুজে পাবে।
আজ থাক কোন পত্র আবার দিলে লেখা হবে।
ভাল লাগ রেখে দিলাম।
আরজু মুক্তা
ওয়াও। দারুণ কমেন্ট।
আবারও আসবো চিঠি নিয়ে।
মোঃ মজিবর রহমান
আমিও আসিব আপু
পত্রখানি পড়িতে
ছাইরাছ হেলাল
এই পাপড়ির আর ফুল হয়ে ফুটে গন্ধ বিলানো হয় নি,
বৃদ্ধ যাযাবর শব্দটি দারুন উপভোগ্য।
পাক্কা লেখা।
আরজু মুক্তা
ঠিক তাই। গন্ধ নীরবে বিলীন হয়েছে।
ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
মনির হোসেন মমি
উত্তর কি আসবে আপু! আহা কত সুন্দর রোমান্টিক চিঠি। দারুণ !!
আরজু মুক্তা
এটা ব্লগের এডমিনরা জানেন। চিঠি বিভাগ চালু যখন করলো। উত্তরও আসবে।
মনির হোসেন মমি
সলিট জবাব। আশায় রইলাম।
সত্যিই আপু লেখাটা খুব ভাল হয়েছে।
ইঞ্জা
বেশ ভালো লাগলো আপু। 😊
আরজু মুক্তা
লাগতেই হবে। আমি লিখেছি যে।
ইঞ্জা
😊
চাটিগাঁ থেকে বাহার
মনে হয়না চিঠি আর আসবে….
এখন যে চিঠির সে যুগ আর নেই। সে দিনগুলো স্মৃতিময় থাকুক আজীবন। চট্টগ্রাম থাকতেন?
আরজু মুক্তা
তা ঠিক। আমি চট্টগ্রামে থাকি। আসলেই দিনগুলি স্মৃতিময় অনেক।
ধন্যবাদ আপনাকে।
সাবিনা ইয়াসমিন
ভীষণ ভালো লাগলো, রুশোর উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
শুভ কামনা 🌹🌹
আরজু মুক্তা
শুভকামনা আপি।
এডমিনরা ভালো বলতে পারবেন। চিঠি বিভাগ যখন চালু হয়েছে, তখন উত্তরও আসবে আশা করি।
জিসান শা ইকরাম
চমৎকার চিঠি,
প্রচুর আবেগ দিয়ে লিখেছেন।
রুশো চিঠি পেয়েছিল তো? নাকি দুরের আকাশের তারা হয়েই আছে সে?
চিঠি লিখবেন আরো।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
আবেগময় আর স্মৃতিময় চিঠি। দিলাম চিঠি। দেখা যাক কখন পায়।
চিঠি চলবেই।
শুভকামনা।
রেহানা বীথি
তাড়াতাড়ি আসুক রুশো, রেশমী চুড়িগুলো পরা হবে তাহলে।
খুব ভালো লাগলো আপনার চিঠি।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ আপি।
আসলেই রেশমিচুড়ি গুলি পরা হয়নি।
প্লিজ রুশো, তাড়াতাড়ি আসো।
মোহাম্মদ দিদার
ভালো লাগার আরেক নাম…
আরজু মুক্তা
স্মৃতিকাতরতা।
নীরা সাদীয়া
সোনেলায় আজকাল চলছে চিঠি লিখালিখি। আমিও ভাবছি লিখবো একখান চিঠি।
রুশোকে বললেন শেষের কবিতার কথা, এটা পড়ে আমার যে কত স্মৃতি মনে পড়ে গেলো! শেষের কবিতা পড়ে আমিও ভাবতাম এমনি এক অমিতকে পাবো আমি…
ভালো লাগলো চিঠিখানি।
আরজু মুক্তা
শেষের কবিতা মানে অনেক স্মৃতি। রবি বাবু কেমনে মনের কথা জানতেন, আল্লাহ জানেন।
চিঠি ভালো লাগলো জেনে খুশি হলাম।