মাহবুবুল আলম
আজকাল অনেকেই আমরা যারা টুকটাক কবিতা লিখি তারা নিজকে নিজে কবি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করি। এবং প্রতিনিয়ত কবিতা লিখে যাচ্ছি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমরা কয়জনই বা কবি একই সাথে আমরা যে প্রতিনিয়ত কবিতা লিখে যাচ্ছি, তার মধ্যে কতটি কবিতা সত্যিকার অর্থে কবিতা হচ্ছে তা নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহের অবকাশ আছে। যারা প্রতিষ্ঠিত বা সেলিব্রেটি কবি তারা অনেকেই সবার রচিত কবিতাকে কবিতা এবং সবাইকে কবি বলতে নারাজ। এর মধ্যে প্রগতিশীল বা মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী লেখক বা কবিদের মত হলো যে, কে কবি নয় বা কার কবিতা কবিতা হিসেবে স্বীকৃত নয় তা নাকচ করে দিতে রাজি নন। তাদের মত হলো একজন কবি লিখতে লিখতে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের মাধ্যমে কবি হয়ে ওঠেন এর সাথে যুক্ত আছে শ্রষ্টাপ্রদত্ত সৃজনশীলতা ও লেখক সত্ত্বার বিষয়টিও, এই কথাটিও কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই। আর কার কবিতা হলো কিংবা হলো না তা নির্ভরশীল মহাকালের বিচারের ওপর।
তা হলে কবি ও কবিতার সংজ্ঞা কী বলে সে বিষয়ের ওপর একটু আলোকপাত করা যাক। কবি হলো মানবসত্ত্বা আর কবিতা হলো কবিতা কবি বা লেখকের শ্রষ্টা প্রদত্ত আলাদা সত্ত্বা। তা না হলে সব মানুষই কবি বা লেখক হতে পারতেন। তাই মানুষের মধ্যে কেউ কেউ কবি বা লেখকসস্ত¡ার অধিকারী পৃথিবীর সব মানুষ নয়। বাংলা উইকিপিডিয়া কবি সন্মন্ধে যে তথ্য বা সংজ্ঞা দিয়েছে তা এখানে উদ্বৃত করা যেতে পারে। সেই তথ্য বা সংজ্ঞা অনুযায়ি “সেই ব্যক্তি বা সাহিত্যিক যিনি কবিত্ব শক্তির অধিকারী এবং কবিতা রচনা করেন। একজন কবি তাঁর রচিত ও সৃষ্ট মৌলিক কবিতাকে লিখিত বা অলিখিত উভয় ভাবেই প্রকাশ করতে পারেন। একটি নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট, ঘটনাকে রূপকধর্মী ও নান্দনিকতা সহযোগে কবিতা রচিত হয়। কবিতায় সাধারণত বহুবিদ অর্থ বা ভাবপ্রকাশ ঘটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ধারায় বিভাজন ঘটানো হয়। কার্যত যিনি কবিতা লিখেন, তিনিই কবি।”
কবি শব্দটি ‘কু’ ক্রিয়ামূলের বংশে প্রসূত একটি শব্দ। ‘কু’ অর্থ’ অ-সাধারণ, নতুনরূপে উত্তীর্ণকারী। এতেই বোঝা যায় কবি সেই মানুষ যিনি সাধারণ অভিজ্ঞতা বা অনুভূতি অথবা প্রচলিত শব্দকে নতুন রূপে উত্তীর্ণ করতে সক্ষম। ইংরেজী শব্দ ‘পয়েট’ , ল্যাটিন ভাষার প্রথম শব্দরূপ বিশেষ্যবাচক পুংলিঙ্গ ‘পয়েটা, থেকে সংকলিত হয়েছে। ফরাসি কবি আর্থার রিমবোঁদ “কবি” শব্দের লিখিতভাবে সারাংশ প্রদান করেছেন, তিনি বলেছেন, “একজন কবি দর্শনীয় মাধ্যম হিসেবে নিজেকে অন্যের চোখে ফুঁটিয়ে তোলেন। তিনি একটি দীর্ঘ, সীমাহীন এবং পদ্ধতিবিহীন, অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় সকলের দৃষ্টিগ্রাহ্যতার বাইরে অবতীর্ণ হয়ে কবিতা রচনা করেন। সকল স্তরের ভালবাসা, দুঃখ-বেদনা, উন্মত্ততা-উন্মাদনার মাঝে নিজেকে খুঁজে বেড়ান। তিনি সকল ধরণের বিষবাষ্পকে নিঃশেষ করতে পারেন। সেই সাথে পারেন এগুলোর সারাংশকে কবিতা আকারে সংরক্ষণ করতে। অকথ্য দৈহিক ও মানসিক যন্ত্রণাকে সাথে নিয়ে তিনি অকুণ্ঠ বিশ্বাসবোধ রচনা করে যখন, যেমন, যেখানে খুশী অগ্রসর হন। একজন অতি মানবীয় শক্তিমত্তার সাহায্যে তিনি সকল মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত হন।
কবিতা হলো ভাবুক মানুষের ভাবনাজাত আবেগের এক অন্য রকম তাড়না। এই তাড়নায় যে তাড়িত হয় সে ই হয়ে ওঠেন কবি। এই আবেগের তাড়না যার মধ্যে নেই তিনি যত বড় পন্ডিত এবং জ্ঞানের অধিকারী হোন না কেন তিনি কবি হতে পারেন না। কাব্যের বিষয়বস্তু কাব্যসত্যে ও কাব্য সৌন্দর্যে মানুষের জীবন জীবিকা এমনভাবে উপস্থাপিত হতে হবে যাতে পাঠক কবির সুগভীর আন্তরিকতা ও বিষয় তন্ময়তা সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ না করে বরং সত্য ও সুন্দররের উপজীব্য বিষয় খুঁজে পান তবেই একজন স্বার্থক ও পাঠকনন্দিত কবি হয়ে ওঠা সম্ভব। তাই অল্পকথায় বলা যায় কবিতা হলো জীবন ও শিল্পের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এক অনন্য মূর্তি। তবে বাংলা ভাষার প্রধানতম আধুনিক কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন, “সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি”। অর্থাৎ কবিতা লিখলেই বা কবি অভিধা প্রাপ্ত হলেই কেউ “কবি” হয়ে যান না।
এখানে কীটসের কবিতা বিষয়ক ভাবনার উদ্বৃতি করা যায়। তিনি বলেছেন,‘ সুন্দরই সত্য সত্যই সুন্দর। তাই কবির কাজ হলো এই সত্য ও সুন্দরের সময়কে নিজের ভেতর ধারণ করা বস্তু, বিষয় ও ভাবনার বিষয়কে তার তৃতীয় চোখের মাধ্যমে দেখা ও দৃষ্টিনন্দন ও নান্দনিক ভাবে ফুটিয়ে তোলা। কবিতা বিষয়ে শ্রী অরবিন্দ্র বলেছেন,‘আধুনিক কাব্যের স্বধর্ম হলো এই যে, তার আবেদন বৃদ্ধি নিজের কাছে নয় কল্পনার কাছে। তাই যার কল্পনা সত্য ও সুন্দরের যত কাছে এবং সময়ের দাবিকে ধারন করতে পারে তিনিই হলেন স্বার্থক কবি।
কবিতার গঠনশৈলী ও শরীর নির্মাণে একজন কবিকে অধিক মনযোগী হতে হবে। তাই কবিতা একবারে মূর্ত যেমন হবে না, তেমনি আবার অধিক বিমূর্তও হবে না এবং তা করতে হবে পাঠকের কথা চিন্তা করেই। একজন রমনীকে ঘোমটা পরিয়ে বসিয়ে রাখলে যেমন তার রূপ-সৌন্দর্য থেকে সুন্দরী রমনীকে দেখতে আসা মানুষ বঞ্চিত হয় তেমনি আবার সাজসজ্জা প্রসাধনে সাজিয়ে উন্মুক্ত করে রাখাও ঠিক নয় এতে সেই নারীর আকর্ষণ দেখতে আসা মানুষের কাছে একঘেয়ামী ও গতানুগতিক বলেই মনে হবে। এ কথাটি কবিতার বেলায়ও খুবই প্রযোজ্য। শব্দচয়ন, উপমা, নান্দনিকতা ও প্রতিকী ব্যঞ্জনা, অনুপ্রাস, শব্দে, সংগীতে আবেগ ও ভাবে কল্পনার বিষয়বৈচিত্র, অনুভূতির নিবিড়তায় কবিতাকে সাজিয়ে তুলতে পারার মুন্সিয়ানাই একজন কবি থেকে আর একজন কবিকে আলাদা করে তোলে। একজন কবির কবিতায় জৈবিক, অজৈবিক, দেশ কিংবা প্রকৃতির প্রেম, দ্রোহ ও মানবিকতা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীক বিবিধবৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনার চিত্র প্রকৃতভাবে চিত্রিত না হলে সে কখনো ভাল কবি হতে পারে না। আর জনপ্রিয়তা লাভ সেতো সুদূরপরাহত। সেই অনাদিকাল থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত যুগ-যুগ ধরে তাঁরা তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনাগুলোকে মনের মাধুরী মিশিয়ে সৃষ্টি করে চলেছেন নতুন নতুন কবিতা। প্রত্যেক সমাজ-সভ্যতা ও নির্দিষ্ট ভাষায় রচিত হওয়ায় কবিরা বহুমাত্রিক, বিচিত্র ভঙ্গিমা, সৃষ্টিশৈলী প্রয়োগ করেছেন তাদের কবিতায় যা কালের বিবর্তনে যথেষ্ট পরিবর্তিত, পরিমার্জিত হয়ে বর্তমান রূপ ধারণ করেছে। পরবর্তীকালে এই প্রায়োগিক বিষয়াদিই ঠাঁই করে নিয়েছে বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসের পাতায়।
উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ একবার কবিদের কাজ সম্বন্ধে বলেছেন,“যে গানের বিষয়বস্তুকে আনন্দের সাথে তুলে ধরা, বাইরে নির্গত হয়ে আমার আত্মাকে ঐদিন পরিশোধিত করবে যা কখনো ভুলে যাবার মতো বিষয় নয় এবং এখানে লিপিবদ্ধ থাকবে। ম্যারিয়েন মুরে কবিদের কাজ সম্পর্কে বলেছেন যে, তারা প্রকৃতই সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেন।” অন্যান্য অনেক কবি যেমনঃ ‘এইনিডে’ ভার্জিল এবং ‘প্যারাডাইজ লস্টে’ জন মিল্টন বর্ণনা করেছেন যে, ‘গ্রীক পুরাণে বর্ণিত কাব্য ও সঙ্গীতাদির দেবীরা তাদের আবেগিক কর্মকা- প্রয়োগের মাধ্যমে কবিদের কাজে সহায়তা করেন’।
তা হলে কবিতা হলো কবির বেদনা-বিদ্ধ হৃদয়ই হয়ে ওঠে কবিতার ক্যানভাস। অর্থাৎ, সময়-বিশেষে কোন একটি বিশেষ সূত্রকে অবলম্বন করে কবির আনন্দ-বেদনা যখন প্রকাশের পথ পায়, তখনই কবিতার জন্ম। কবি বেদনাকে আস্বাদ্যমান রস-মূর্তি দান করেন। ব্যক্তিগত আতান্তরের বিষবৃক্ষ থেকে কবি কল্পনার সাহায্যে মধুবৃক্ষে রূপান্তর করতে পারেন, তখন বেদনা পর্যন্ত রূপান্তরিত ও সুন্দর হয়ে উঠে। বেদনার যিনি ভোক্তা, সে যদি বেদনার আবেগ-অনুভূতিকে নিজের ভেতর ধারণ করতে না পারলে তাঁর দ্বারা কাব্য-সৃষ্টি সম্ভব নয়। কবির বেদনা-অনুভূতির এ রূপান্তর-ক্রিয়া সম্বন্ধে ক্রোচে তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন এভাবে – Poetic idealisation is not a frivolous embellishment, but a profound penetration in virtue of which we pass from troublous emotion to the serenity of contemplation.
কাজেই তিনিই কবি যিনি বাইরের জগতের রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ-শব্দ বা আপন মনের ভাবনা-বেদনা কল্পনাকে অনুভূতি-স্নিগ্ধ ছন্দোবদ্ধ অবয়ব দান করতে পারেন। অনেকে বলেন যে, যিনি জগতের একখানি যথাযথ স্বাভাবিক চিত্রপট এঁকে দিতে পারেন, তিনিই যথার্থ কবি। অর্থাৎ, কবি জগতের ভালো-মন্দের যথাযথ চিত্র অঙ্কন করবেন। ফুল-পাখি-চাঁদের কথাই শুধু বলেন না, জীবন চলার পথে মানুষের সমস্যার কথাও বলেন। রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় অসামান্যতার কথা, বৈরী আচরণের কথাও বলেন। ভ্রু-কুটি করেন শাসক ও শোসকদের।
কবিতা হলো চিরযৌবনা, বহুরূপী। তার আবেদন, রূপ, ভূমিকা অফুরন্ত, অনির্বাণ। বিভিন্ন পাঠক বিভিন্ন আঙ্গিকে একে দেখবেন, গ্রহণ করবেন, আলোচনা করবেন, আর তখনই কবিতা সার্থক হয়ে উঠবে, সার্থক কবিতার স্রষ্টাও হয়ে উঠবেন সার্থক কবি। কবিতা ও কাব্যকলার আলোচনা পূর্ণাঙ্গ হয়ে উঠতে হলে জানতে হবে আগে কবিকে, কবিতার সময়কে, বাস্তবতাকে, কবিতা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে, সমকালীন বিশ্ব প্রেক্ষাপট ও মানবিক দিকগুলোকে। কবিতায় সার্বজনীনতা থাকতে গেলে কবিতাকে কাব্যিক রস ও কাব্যিক ব্যাকরণ সমৃদ্ধ হয়ে ওঠার পাশাপাশি কবিতায় থাকতে হবে প্রেম, দেশপ্রেম, আন্তর্জাতিকতা, মানবিকতা, দর্শন, ঐতিহ্য, ধর্ম প্রভৃতি। সারকথা সর্বশ্রেণীর পাঠক উপযোগী সৃষ্টিশীলতা। ধর্ম থাকবে, ধর্মে ঔদার্য থাকবে, প্রতিবাদও থাকবে। কবিতায় নান্দনিকতা, পেলবতা শর্তহীনভাবে কাব্যের অঙ্গনে থেকে যাবে, থাকবে কাব্য রসিকের চিন্তা-চেতনাও। ব্যক্তি প্রেম, দেশপ্রেম কবিতায় আধুনিকতার মূলসূত্র। সময়কে নির্ভীকভাবে উচ্চারণ করে আগামীর কাছে পৌঁছে দেয়াই হলো অনন্য স্বীকৃতি। ফুল, পাখি, চাঁদ, নারী, গাছপালা, আকাশ-বাতাস, গ্রহ-নক্ষত্র, মহাকাল, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস-ঐতিহ্য সব কিছুরই বসবাস কবিতাতে। সকল শ্রেণীর পাঠক এমনকি শিশুদের কাছেও পৌঁছে দিতে হবে সাহিত্যরস। সকল সময়ের সকল দেশের সকল শ্রেণীর গ্রহণ উপযোগী কবিতা সৃষ্টি হলেই সার্বজনীন কবি হিসেবে স্বীকার করতে কুণ্ঠা থাকা উচিত নয়।
শেষ করতে চাই এই বলেই, একজন কবি হবেন তৃতীয় নয়নের অধিকারী, সেই নয়নের মাধ্যমেই কবি তার নিজের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর সুক্ষ্মদৃষ্টিতে দেখে কল্পনা ও বাস্তবতার মিশেলে কবিতার অনুসঙ্গ এবং তার নান্দনিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে কাব্যিক নানাবিদ ব্যঞ্জনায় নির্মাণ করেন কবিতা শরীর। জীবন ও জগতের চরম ও পরম সত্য ও রহস্যকে, সাবলীল ও কাব্যরসময় করে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করার ওপরই নির্ভর করে কবিতার পাঠকপ্রিয়তা এবং জনপ্রিয়তা অর্জনের বিষয়টি। পরম সত্যের অন্বেশণ এবং কাব্যিক সৌন্দর্য সৃষ্টিই কবি ও কবিতার উদেশ্য।
৩০টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
* সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি * কবিদের নিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই উক্তি যিনি করেছেন তিনি কবিদের মাঝে অন্যতম ছিলেন। তবে আজও জীবনানন্দ দাশ কে নিয়ে গবেষণা হয়, তর্ক হয়, মূলত তিনি কোন ধারার কবি ছিলেন সেটা নিয়ে। কবি সবাই হতে পারেনা, কিন্তু কাব্যসূধা পান করেন না এমন মানুষ বিরল। কিছু ব্যাপার নিয়ে কখনোই সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়না। কবি কবিতা কাব্য এর সঠিক ব্যাখ্যা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেসন বা পূথিগত ধারায় কিভাবে দেয়া সম্ভব! যেখানে মানুষ মন সৃষ্টির সব চেয়ে বড় রহস্য!!!
আপনার লেখায় আলোচনা করার প্রচুর অপশন রেখেছেন। ভালো লাগে এই ধরনের লেখা পড়তে। এখানে লেখকের সাথে তার লেখায় পাঠক নিজের পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় অংশ নিতে উৎসাহিত হন।
ভালো থাকবেন, শুভ কামনা। 🌹🌹
মাহবুবুল আলম
আসলে কবিতা সাহিত্যে উচ্চমার্গিয় একটি বিষয়। তাই কবিরাও থাকেন সন্মানের আসনে। পৃথিবীতে কোনো কিছুই আলোচনা সমালোচনার উর্ধে নয়। সবার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে আলোচনা সমালোচনা আছে। যে বা যিনি সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন তিনি এগিয়ে যেতে পারেন এই মহার্ঘ্য বিষয়টির পথ ধরে। যারা পারে না তা পথ হারিয়ে ফিরে আসে নিজের গন্ডিতে।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা।
তৌহিদ
সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা উপহার দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদাভাই। আসলে আমি নিজেই কবিতা খুব কম বুঝি। আর আমার শব্দ ভান্ডার খুবই সীমিত। তবুও আপনাদের মত বড় বড় লেখক যখন কবিতা লিখেন তখন কাব্যরস আহরণ করতে ইচ্ছে করে খুব।
কবি আর কবিতাকে কিছু মানুষ গুলিয়ে ফেলেছে। এমন সব শব্দ নিয়ে কবিতা! লিখে সেটা আসলেই পড়ার অযোগ্য হয়ে যায়। ভাবি, এটা কি কবিতা নাকি জগাখিচুড়ী? কবিতা লেখা এখন ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে অনেকের কাছে। কিছু লেখক আবার নিজের টাকা খরচ করে বই বের করে সেই অখাদ্য আমাদের খাওয়ানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে। যে কারনেই মানহীন কবিতার ছড়াছড়ি চারিদিকে।
শুভকামনা জানবেন ভাই।
মাহবুবুল আলম
ভাই তৌগিদ ! সাহিত্যের জগতে বড় ছোট ব্যপারটি বিবেচনায় আনা এক্কোরে অনুচিত। কখনো কখনো ছোটদের কাছ থেকেও বড়রা অনেক কিছুই শিখতে পারে।
র্ভাচূয়াল জগতের এই অস্থির সময়ে কবিতার অনেকটাই খারাপ সময় যাচ্ছে। তবে এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মহাকালের বিচারে একদিন সব ফয়সালা হয়ে যায়।
ভাল থাকেবন। শুভেচ্ছা।
তৌহিদ
আপনিও ভালো থাকবেন ভাই।
শিরিন হক
আপনার প্রতিটি কথা মুল্যবান। একজন কবির কবিতা সত্তা বিধাতার দান। কবি নজরুল তার প্রমান। অনেক কবি আসেন আবার কালের গর্ভে হারিয়ে যান।
লেখার লেখির অভ্যাস মানুষের আদিকাল হতে একথা স্বীকার করতে হবে। গোপনে ডায়েরির পাতায় কবিতা লিখে অনেকে কবি হতে পারেনি ।তাই বলে কবিতা লেখার ইচ্ছে টুকু মরেনি আজো। যার কবি সত্তা রয়েছে তিনি বলবেন না তিনি কবি সাধারণ মানুষ এমনি তাকে চিনে নিবে।
খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।
মাহবুবুল আলম
অবশ্যই কবিসত্ত্বাটি গড গিফটেড। যিনি এই মহত্তম উপহারটি পেয়েছেন সে চাক বা না চাক তার ওপর কবিতা নাজেল হবেই। ক্লাসে পাঠ নিয়ে বা ব্যাকরণ শিখে কবি হওয়া যায়না। তা হলে সবাই কবি হয়ে যেতো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
সঞ্জয় মালাকার
আপরান প্রতিটি কথা খুব মূল্যবান – ও
সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা।
পড়ে খুব ভালো লাগলো।
শুভ কামনা দাদা।
মাহবুবুল আলম
সঞ্জয় মালাকার! কে কবি আর কে কবি নয়, এ নিয়ে আজকাল খুব আলোচনা হচ্ছে।
কেউ কেউ এমন আছেন, অন্যের লেখাকে এক ফুৎকারে উড়িয়ে দেন। একজন জুনিয়র ভাল লেখককেও তারা কবি মানতে নারাজ। নিজেকে নিজে ভাবেন মহাপন্ডিত। মহাকবি। গণিতের মতো যথাযথ অনুশীল
পরিশীল ও পরিমার্জনের মাধ্যেমে একজন ভাল লেখক হয়ে ওঠতে পারে। তবে খোদাপ্রদত্ত বিষয়টি এখানে জড়িত রয়েছে।
ভাল থাকবেন। নিরন্তর শুভ কামনা!
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ দাদা,
আপনার লিখা মন্তব্যে মন মুগ্ধ।
আপনিও ভালো থাকবেন সব সময় শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার প্রতিটি কথা মূল্যবান।
মোটামুটি সবাই কবিতা লিখতে পারে কিন্তু কবিতার গভীরে প্রবেশ করেও তা মন্থন করতে পারে না।
.
আপনার প্রতিটি অপশনে রেখে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ কথা।
বেশ ভালো লাগলো।
মাহবুবুল আলম
কবিতা অনেকটাই শিল্পীর আঁকা বির্মূত চিত্রের মতো। যাকে খুব মনেযোগ দিতে দেখতে । দেখার চেয়েও পড়তে হয় বেশি। তবে অপ্যি হলেও সত্য আমরা কেউই পড়তে চাই না। সর্টকাট পথে কবি হয়ে যেতে চাই।
ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকবেন।
আরজু মুক্তা
কবিতা লিখা ও বোঝা দুটাই কঠিন কাজ।আমি যা বোঝাতে চািলাম,পাঠক তা বুঝলই না!!তবে,কবিতার ঐ সংজ্ঞাটা ভালো লাগে।।”All good poetry is spontaneous overflow of powerful feelings and it take it’s emotion recollected in tranquillity….”
poetry is born not in the mind but in heart by overflow of feelings!
আপনাকে ধন্যবাদ!!
মাহবুবুল আলম
আমিতো আগেই বলেছি, কবিতার সংজ্ঞা নিয়ে অনেক কথা বইয়ে লেখা আছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সংজ্ঞাটিই সর্বগ্রহ্যতা পায়নি। সে এক বড় রহস্য।
কবিতার অনেক প্রকারভেদ আছে। সব কবিতাই একই ফরমেটে লেখা যায় না। প্রতিটি ফরমেটের জন্য আলাদা আলাদা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। যিনি সব ফরমেটে কবিতা লিখতে পারেন তিনিই পরিচিতি পান। কবিতার বিষয় নির্বাচন একটি উল্লেখযোগ অনুসঙ্গ।
শুভেচ্ছা অবিরাম।
মনির হোসেন মমি
কবিতা ও কবি সম্পর্কে বেশ ভাল ভাবেই উপস্থাপন করলেন।আসলে তাই কবিতা হওয়া উচিত পাঠকের বোধগম্য নতুবা পাঠক কবিতা পড়তে অনেকটা নিরাশ হন।খুব ভাল লাগল।
মাহবুবুল আলম
দুর্বোদ্ধতা পাঠককে দূরেই সরিয়ে রাখে, এ কথাটি আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। পাঠক যদি কবিতায় ভাব,রস দেশপ্রেম, আন্তর্জাতিকতা, মানবিকতা, দর্শন, ঐতিহ্য, ধর্ম প্রভৃতি আস্বাদন করতে না পারেন তা হলে সেটি কখনো সার্থক কবিতা হতে পারে না।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
মাসুদ চয়ন
গভীর জীবন বোধ হতে কবিতার স্মৃষ্টি।কবিতা নিমগ্ন সাধনার প্রাপ্তি ফসল।কবিদের মুক্ত অসাম্প্রদায়িক চেতনাকেন্দ্রিক হওয়া উচিৎ।
কবি হচ্ছেন মানুষ মানবতার।
মাহবুবুল আলম
একদম ঠিক বলেছেন। ফেসবুকের কল্যাণে আজকাল দেখতে পাচ্ছি কবিতা বোঝি প্রেম-প্রণয়ের একটা বিষয়। কবিতায় বিষয় বৈচিত্র ও গভীর জীবনবোধ না থাকলে কালের স্রোতে তা একদিন ভেসে যাবেই।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
মাহবুবুল আলম
প্রি মাসুদ চয়ন!
ঠিক বলেছেন। কবিদের মানবিকতা বোধ জাগ্রত না হলে সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
ভালো একটি লেখা পড়লাম,
কবি ও কবিতা সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এমন ধরনের বিশ্লেষনমুলক লেখা আরো চাই।
শুভ কামনা।
মাহবুবুল আলম
জিসান ভাই সালাম। ম্যাসেঞ্জারে আপনাকে ব্যস্ততার কথা বলেছি। অনেক দিন বিভিন্ন ব্লগে লেখা থেকে বিরত ছিলাম। আপনার কারণেই আবার ফিরে এলাম। ভবিষ্যতে লেখার চেষ্টা থাকবে।
শুধু লিখলেইতো হবে না। যারা মন্তব্য করে তারাতো আর কিছু নয় একটা জবাব আসা করে। তা যদি সময়ের অভাবে দেয়া না যায়, নিজের কাছেই খারাপ লাগে।
তবে আপনাদের সাথে সবসময় থাকার চেষ্টা থাকবে। ভাল থাকবেন। শুভেচ্ছা। প্রীতি ও ভালোবাসা।
জিসান শা ইকরাম
সময় পেলেই চলে আসবেন ব্লগে,
আপনার লেখায় শেখার, ভাবার এবং আলোচনা করার বিষয় থাকে।
শুভ কামনা ভাই।
নিতাই বাবু
আপনার লেখা পড়ে ভাবের গভীরে চলে যেতে হয়েছে শ্রদ্ধেয়। লোকে বললেই কবি নয়! কবির ভেতরে কবিত্বে গুণ তো অবশ্যই থাকতে হবে। এখনো সেই গুণের অধিকারী হতে পারিনি বলে স্বীকার করিছি। আপনার লেখা আমাদের মতো অনেক ছোটখাটো লেখকের উপকারে আসবে বলে মনে করি।
আপনাকে ধন্যবাদের সাথে শুভেচ্ছা।
মাহবুবুল আলম
নিতাই বাবু! লেখার জগতে ছোট বড়র প্রশ্ন নয়। চর্চা ও একাগ্রতা যদি থাকে এ পথে একদিন সাফল্য আসবেই। লিখতে থাকেন, পড়তে থাকেন দেখবেন লেখার এ গুণটি আপনা আপনি হাতের মুঠোয় ধরা দেবে।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
রেহানা বীথি
কবি ও কবিতা নিয়ে বিস্তারিত চমৎকার এ লেখাটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আজকের এই সময়ে কবির সংখ্যা ক্রমবর্ধমান, অন্ততঃ ফেসবুকের কল্যানে। সঠিক কথাই বলেছেন, একদিন মহাকালের বিচারে সব ফয়সালা হয়ে যাবে।
ভালো থাকবেন।
মাহবুবুল আলম
প্রিয়দর্শিনী রেহানা বীথি আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন সবসময়।
শাহরিন
কবিতা আর কবির অনেক খানি জানলাম আপনার লেখা পড়ে আশাকরি আরো অনেককিছু শিখতে পারবো ভবিষ্যতে। ধন্যবাদ।
মাহবুবুল আলম
প্রিয় শাহরিন! সব সময় পাশে থাকবেন। ভাল থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
এমন সুন্দর আর সাবলীল আলোচনা এখানে অনেকদিন পড়তে
পেরে খুব ভাল লাগল, অবশ্যই আপনাকে ধন্যবাদ।
কবি আর কবিতা চির কঠিন একটি বিষয়, কত ভাবেই যে বিখ্যাত জনেরা এর ব্যাখ্যা করেছেন
তার কূল-কিনারা করা সত্যিই কঠিন।
মাহবুবুল আলম
প্রিয় ছাইরাছ হেলাল! সময়ে সময়ে কবিরাই কবিতার সংজ্ঞা নির্ধারণ করে থাকে। সময়ের সাথে সাথে সে সংজ্ঞাও পরিবর্তিত হয়। তাই কবিতার সংজ্ঞার যুতসই ব্যাখা আজও পাওয়া যায়নি।
ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিরন্তর।