প্রিয় রুবি আক্তার
আমার ভালোবাসা নিবেন।
আপনার কথা শুনেছি আমার বরের মুখে। খারাপ কোনো কথা নয়। যতটুকু শুনেছি আপনার সম্পর্কে আপনি ভদ্র, নরম, শিক্ষিত মেধাবী সব মিলিয়ে সুন্দর একটি মেয়ে। আপনার কস্ট ছুঁয়ে ছিলো আমার বরের মন। জানেন যখনি আপনার কথা বলতো ওর চোখ মুখ কেমন যেন হয়ে যেত। সদ্য বিয়ে করে স্বামী হরিয়েছেন বাবা নেই আপনার পাশে দাড়াতে যে কোনো পুরুষ চাইবে। মনে মনে কামনার চোখ আপনাকে একটু সুখ দেবার আকাঙ্খা যে আমার বরের চোখে দেখেছি। এইতো সেদিন আপনার জন্য কত মিথ্যাকথাই না বল্লো আমাকে। ভাগ্যবতী নারী আপনি। আমার বর, যাকে বিশ্বাস করতাম নিজের চেয়ে বেশি তাকেও আজ আপনার জন্য অবিশ্বাস করছি। কখনো ভাবিনি এমন হবে।
আমার বরের চোখে আমার জন্য কস্ট দেখিনি। করুনা করেনি কোনদিন। ওকে না পাওয়ার বেদনায় কুকুরের মত বেউ বেউ করেছি কত ফিরেও দেখেনি। ১৪ বছরের জমানো কস্ট আজ দাবানল হয়েছে আমার বুকে। না পাওয়ায় কস্ট খেপাটে করেছে আমায়। জানেন কোনদিন বাহির থেকে কিছু এনে বলেনি তোমার জন্য এনিছি। সবার আড়ালে চুপিচুপি বলেনি তোমার জন্য এটা। কখোনো বলেনি আজ শাড়ী পরো চলো ঘুরতে যাই। কখোনো বলেনি তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। ভেবেছিলাম হয়তো মানুষটা এমন। ওর সাধ্য নেই তাই হয়তো এমন। কই তাতো নয়!একটু সুখী হতে কতটা সাধ্য লাগে বলবেন? আমার অভিমানে কখোনো মান ভাঙানোর তাড়া ছিলোনা। অথচ আমার কথা উপেক্ষা করে আপনার সংজ্ঞ পেতে তার একটু বাধেনি।
ভালোবাসার দোহাই দিয়ে কখোনো ফিরে আসেনি নিজের সুখ থেকে। আমার জন্য কস্ট করে ছাড়েনি নিজের নেশা, যে নেশা বারবার আমাকেই অপমানিত করেছে নারীর নারিত্ব কে।
আজ নিজের কাছে হেরে গিয়েছি মনে হয়। নিজের সন্তানের জন্য আমার ঘরের সুখ ফিরিয়ে দিতে মরিয়া হয়নি। আমি নতজানু হয়েছি এখানে কিন্তু সে পুরুষত্বের দাম কিনেছে।
প্রতিনিয়ত ভেবেছে আমি তাকে আমার পায়ের নিচে দাবিয়ে রাখতে চাই। ভালোবাসলে এমনটা কেউ ভবতে পারে জানিনা।
ছোট ছোট ভাললাগা ভুলে গেছি কস্টের দাহে। আপনি ভাগ্যবতী রুবি। আমার জীবনে যে মানুষ টা সুখ দিতে পরেনি সে আপনাকে একটু হলেও সুখী করতে চেয়েছে। আপনার কস্ট লাঘবের জন্য মিথ্যে বলতে পেরেছে।জানেন ও কখোনো মিথ্যে বলতে পরতোনা।
আমি হিংসুটে জানেন, নইলে একটা অসহায় মেয়ের পাশে দারানো কে হিংসে করছি। ভলোবাসার মানুষকে আনন্দ থেকে সরিয়ে নিজের কাছে আনতে চাইছি। নিজের ভালোবাসা পাবার জন্য মরিয়া হয়েছি।
না না ভুল আমি, মন কী জোর করে পাওয়া যায়? ভালোবাসার অভিনয় আমি বুঝি ১৪ বছরে। আমি কিছু পাওয়া যোগ্য নই।
জীবন্ত লাশ শুধু কুকুরের মত কেঁউ কেঁউ করি।
ভলো থাকবেন। মৃত্যুর পর যেনো ভালোবাসা পাই ফিরে।
ইতি….
১৯টি মন্তব্য
মাছুম হাবিবী
কতটা বুকফাঁটা কাঁন্না নিয়ে চিঠিটা লিখেছেন জানিনা। আসলে কিছু কষ্ট বিধাতা আগ থেকেই লিখে দিয়েছেন। হয়তো আপনার সাথেও তাই হচ্ছে! ভেঙে না পড়ে কষ্ট করুন, ধৈর্য্য ধরে গাধার মত কষ্ট করে জানেন। ছেলে মেয়ে বড় হলে সব ঠিক হবে, সেও বুঝবে ভালোবাসার ভাগ কাওকে দেয়া যায় নাহ।।
শিরিন হক
জবাব লেখাটা আপনার সত্যি মনে হয়েছে এজন্য আমি ধন্য। এটা কাল্পনিক চিঠি।
ছাইরাছ হেলাল
এক ভুক্তভোগি অব্যক্ত যন্ত্রণা ঠিক ঠিক লেখায় তুলে আনতে পেরেছেন।
নিয়মিত লিখুন এখানে, কোন জড়তা ছাড়াই।
প্রদীপ চক্রবর্তী
হৃদয় বিদারক লেখনী।
এ যেন এক অব্যক্ত যন্ত্রণার সাক্ষী।
শুভকামনা আপুৃ
মনির হোসেন মমি
পরকিয়া একটি ব্যাধি।তবুও মানুষ পরকিয়ায় পড়ে,,,কখনো জেনে কখনো অজানায় মায়ায়।লেখায় সেই দৃশ্যটিই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করলেন।খুব লিখেন আপনি।লিখতে থাকুন।
শিরিন হক
ধন্যবাদ
সাবিনা ইয়াসমিন
একজন পরকিয়ায় আসক্ত স্বামিকে নিয়ে একজন যাতনাভোগী স্ত্রীর মানসিক অবস্থানকে খুব সুন্দর করে চিঠিতে ফুটিয়ে তুলেছেন শিরিন। মেয়েরা কত অসহায় হয়ে পড়ে এই সময়টাতে। সন্তান আর সমাজের কথা ভেবে কস্টগুলো নিজের মধ্যে ধারন করে যায়।
সুন্দর লেখা। আরও লিখুন। ভালো থাকবেন, শুভ কামনা ও ভালোবাসা রইলো ❤❤
শিরিন হক
এভাবে পাশে থেকো আপু
মোঃ মজিবর রহমান
এই লেখায় আমি প্রথম মন্তব্য করে প্রকাশের পর পোস্টটি ও কমেন্ট খুজে পাইনি
তৌহিদ
চিঠিটি পড়ে আপ্লুত হলাম। পরিবার আর সমাজে ঘূনে ধরা পোকার মত এই বিষয়টি নারীর জীবনকে করছে দুর্বিষহ। নিজেদের সম্ভোগ আর লালসায় নষ্ট হচ্ছে কত জীবন তার খবর আমরা কতজন রাখি?
লিখুন আপু, আপনার নিজের মত করে।
শিরিন হক
ধন্যবাদ
মোঃ মজিবর রহমান
আপু,আপনাক অনেক ধন্যবাদ, সত্যি আপনি আপনারা আজানতেই দশের মনের কথা গুলো লিখেছন । আপনারা ব্যাথা আর সব মেয়েদের ব্যাথা মিশে গেছে। এটা দেশের একটি বড় সমস্যা। যাক সবাই এয়া থেকে বেরিয়ে আসুক। কামনা করি।
শাহরিন
অনেক মেয়েদেরই মনের কথা অনেক সহজেই তুলে ধরেছেন আপু।
শিরিন হক
ধন্যবাদ
বন্যা লিপি
বর্তমান সামাজিক ব্যাধী’র চিত্র চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছো মিতা!! ভালো লেগেছে চিঠির অনুভব। তোমার প্রতি সে——ই রকম ভালোবসা ❤❤❤❤ জানোই তো, কোনরকম? হা হা হা….. ভালো থেকো সবসময়।
শিরিন হক
ভালোবাসা প্রিয়
জিসান শা ইকরাম
সমস্যাটি নিয়ে এত আবেগময় চিঠি লিখলেন কল্পনা করে, মনে হয়েছে এটি আপনারই সমস্যা। আপনি সার্থক, লেখায়।
নিয়মিত লেখুন।
শুভ কামনা।
শিরিন হক
ধন্যবাদ
শাফিন আহমেদ
স্বামী হয়ত জেনে অথবা মনের অজান্তেই অন্য এক নারীর মায়ায় পরেছে । তবুও লেখাটিতে তার এই কর্মকাণ্ডকে কতটা ইতিবাচক ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । স্বামীর প্রতি অনেক বেশি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে ।