
শিরোনামে দ্বৈরথের কথা বলেছি, কথা সত্য, সত্য না।
এবারে খুলে বলার চেষ্টা করি।
পূর্ব-কথন।
লেখক, লেখা ও পাঠক নিয়ে নিজের মত করে কিছু একটা বলার কথা ভাবতে ছিলাম, একটি আজগুবি কাঠ-কাঠ
একটি লেখা লিখে ফেলেও রেখেছি, সাহস হয়নি প্রকাশের, সে ভাবনার উত্তরণ/অবনমন করে প্রবর্তনা এই লেখাটির।
যা বলছিলাম, লেখক, লেখা ও পাঠক বিষয়টি এভাবে ভাবতে পারি। লেখক লেখাটি লিখে প্রকাশ করে ফেলেন, এই লেখার পেছনে কী কী কেমন কেমন ভাব-ভাবনা দুঃখ-কষ্ট হাসি-কান্না ছিল তা আপাতদৃষ্টিতে প্রায়-ই দেখতে পাই-না, একেবারেই যে পাই-না এমন না। ভাবুন, একটি কারখানায় নানা ধাপ পেরিয়ে একটি প্রোডাক্ট ফাইনালি আমাদের হাতে পৌঁছায়, যেমন একজন মৃৎ শিল্পী কত্ত কিছু করে শ্রম-ভালোবাসা দিয়ে একটি মৃৎ পাত্র আমাদের হাতে তুলে দেন। এমন করে করে ইনিয়ে –বিনিয়ে অনেক কিছুই বলা যায়, বলছি না।
ধরুন, ছোটবেলার ঝঁকানো সুন্দর একটি মার্বেল (লেখা), নির্মেঘ দুপুর, সামর্থ্য-সৌকর্যে নিদারুণ রকম স্বার্থপর,
দীর্ঘতর থেকে দীর্ঘতম সময় ধরে গড়িয়ে যাচ্ছে, যাচ্ছে, খেলে যাচ্ছে, খেলে দিচ্ছে, ধীরে ধীরে চুপিসারে,
অফুরান সময়ের অন্তহীন ধারায়, এক অনুভব-অদ্ভুত নৈকট্যের ঝকঝকে দ্যুতি, বিলম্বিত রাগে,
অকপট তর্ক-যুক্তির বাইরে গাঢ়-নিগূঢ় মারপ্যাঁচ-হীন ভাবে।
সুদৃশ্য কাঁচ-গোলকটি ক্রমাগত গড়িয়ে যায় গড়িয়ে যায়, গড়িয়ে দেয় মসৃণ অ-মসৃণ তল উপতলে, সিঁড়িতে শব্দ তুলে নেমে যায়, উঠে-ও যায়,
বুক পকেটে লুকায়, ভাগাড়ে পড়ে রয়, বাবুই জোনাকি পোকা ভেবে তুলে নিতে বাসায় গেঁথে রেখে আলো জ্বালে।
শিশুর হারানো খেলনা খুঁজতে অন্ধি সন্ধিতে ঘোরাফেরা, সাহসের আত্মবিশ্বাসে, সাহসী আত্মবিশ্বাস
নিয়ে ঝুলে ঝুলে তন্ময় পাঠে। ফুলে ওঠা বুক পকেটে তুমুল ওলট-পালটে ।
হঠাৎ লেখাটি জেগে ওঠে, রাহু-কেতুর বেশে ক্রমাগত গিলতে থাকে, অসফল হয়ে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের মত ছুরি হাতে
পাঠকে তাড়া করে বুক বসিয়ে দেয় তীক্ষ্ণতম ছুরিটি, শোণিত ধারার একই রঙ, পাঠক ও লেখকের।
২৩টি মন্তব্য
ইঞ্জা
ভাই আরো কয়েকবার পড়বো আমি এই লেখা। 😣
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা, সময় করে পড়লেই হবে।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ভাই
মেহেরী তাজ
হ্যা একটা লেখা লেখকের কাছে নিজের সৃষ্টি। সেটা নিজের সন্তানের মত। সেই লেখার জন্ম নিতে কষ্ট হয়েছে কিংবা তার পিছনের সকল ইতিহাস পাঠক কখনই জানতে পারেনা। তবে পাঠকের মাঝে যদি উপলব্ধির শতভাব যোগ্যতা থাকে কিংবা পাঠকের সাথে যদি লেখার কোন সংযোগ থাকে তবেই পাঠক তা কিছুটা অনুধাবন করতে পারে। অন্যথা পাঠক কেবল মাত্র একজন পাঠকই…
ছাইরাছ হেলাল
বাহ, বুলস আই,
আমি কিন্তু আপনার একান্ত পাঠক হওয়ার চেষ্টায় নিমজ্জিত আছি।
এত দিন কোথায় ছিলেন, ভুত- জি!
মেহেরী তাজ
ভাইয়া আমার ছোট একটা প্রশ্ন আছে। বুলজ আই মানে তো ষাড়ের চোখ। কোন কিছু পার্ফেক্ট হইলে মানুষ এই বুলজ আই কেনো বলে? সবার লক্ষ কি এই ষাড়ের চোখই হয়?
কাছাকাছিই ছিলাম ভাইয়া কিন্তু ঘুমন্ত ছিলাম।
ছাইরাছ হেলাল
গরু চউখ্যা কয়, এই চোখ নাকি সবার পছন্দ!! তাই মুনে লয় এমুন কয়!!
যাক, ঘুম ভেঙ্গেছে জেনে ভাল লাগল, আবার ঘুম এলে টুপ করে ঢলে পড়বেন না যেন,
আওয়াজ দিয়েন অন্তত!!
প্রহেলিকা
আহারে কি উদাহরণ! একেবারে দেখি অপারেশ থিয়েটারে নিয়ে দাঁড় করিয়েছেন! কাটকাট মারমার লেখাটা দিয়ে দিলে কি আর হতো! লেখক পাঠকের পোস্টমর্টেম হয়ে যেত একই সাথে।
খুব সুন্দর করেই লিখেছেন, স্বল্প বাক্যব্যয়ে, সহজ উদাহরণে! শিরোনাম ধরেই বলি,এই দ্বৈরথ তো আদিমকাল থেকেই। লেখক, লেখা আর পাঠক একই সুঁতোয় গাঁথা! যা বলার সব আপনিই বলে দিয়েছেন!
মারমার কাটকাট লিখাটিও দিয়ে দিন!
ছাইরাছ হেলাল
সাবধান বেশি বলছেন কী না ভাবতে বসুন,
আপনি যখন বলছেন, তখন দেব অবশ্যই, পৃথিবী যতদিন আছে এই দ্বৈরথ
চালু থাকবে, মানুষদের ভাবনা ও।
প্রহেলিকা
দিয়ে দিন, দিয়ে দিন! সাবধান বলে ফায়দা হবে না, আমাদের হজমশক্তি ভালো আছে হু!
ছাইরাছ হেলাল
আপনি যখন বলছেন তখন ভয়ের কিচ্ছুটি নেই বুঝতে পারছি।
সাবিনা ইয়াসমিন
সোনেলায় এসেছি আট মাস হয়েছে। অনেক অনেক খুজেও আপনার এই ধরনের লেখা আর একটিও খুজে পাইনি। এক কথায় লেখাটি অসাধারন হয়েছে। লেখক পাঠক একটি সুতোর দুই প্রান্ত। একটি লেখা শেষ করার আগে-পরে লেখকের মনে কি বা কোন ধরনের ক্রিয়া-বিক্রিয়া কাজ করেছে তা পাঠক বুঝে নিতে পারে পাঠকালে। এখানে যেটা বলা জরুরী তাহলো, পড়লেই সবাই পাঠক হতে পারেনা। অ-আ লিখে লেখক হওয়া যায় না। তেমনি অ-অজগর আর আ-আম জানাদের পাঠক বলা যাবে না। পাঠ আসতে হবে মন থেকে, ঢুকে যেতে হবে লেখার অক্ষরে ছড়ানো লেখকের ভাবনার রাজ্যে। তাহলেই পাঠক লেখকের যোগসুত্র এক হবে।
আপনি এত্তওওও ভালো লিখতে পারেন তাতো জানা ছিলো না ! ঐ কাঠ-কাঠ লেখাটাও প্রকাশে দিয়ে দিন। আমরা ঐ কাঠে আগুন জ্বালিয়ে ব্লগ পার্টি দেই।
ছাইরাছ হেলাল
আট মাস!! লেখার গতি প্রকৃতিতে তো মনে আট বছর!
দেখুন, আপনি কত সহজে বলে দিলেন ঘটনাটি কী!! ভাবছি পাঠক হওয়ার চেষ্টা-চরিত্র করবো।
আঁখেরে যদি কিছু হয়!!
ধরুন গিয়ে সোনেলা সোনা হয়ে জ্বল-জ্বল করে জ্বলে উঠছে বলেই হয়ত এসব হচ্ছে!!
আগুন আপনি জ্বালিয়েই বসে আছেন, আগুনের আঁচে টিকতে পারলে হয় অ-লেখকেরা (আমার মত)।
অবশ্যই দিব, লিখে যেহেতু ফেলেছি।
তৌহিদ
আপনার এ লেখাটি পড়ে মনে হলো যেন আমার আর লেখক হওয়া হবেনা কোনদিনও।
ভাবনায় পড়ে গেলাম।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি লেখক হয়েই আছেন,
তাই এসব আউল ভাবনা আপনার জন্য না।
ধন্যবাদ।
মনির হোসেন মমি
বার বার পড়তে মনচায় এমন লেখা[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে] এমন সুন্দর অর্থবহ লেখার আমি পাঠকই হবো।
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা, আমিও পাঠক হতে চাই।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
আমাকে অনেকটা নেগেটিভ ঘরানার লেখক বলতে পারেন। লেখাটা আমার কাছে খুবই কঠিন এক জিনিস। মাঝে মাঝে পোস্ট দেবার জন্যেই দেয়া এমন করে দু একটা লিখি, তাতে নিজের ভালো লাগাই থাকে কম।
লেখার প্রতি আপনার মমত্ববোধ আমাদের জানা। এক টুকরো লেখা হারিয়ে গেলে কী কষ্ট হয় তাও আপনি একসময় লিখেছেন। কোন কোন লেখার কাছে বারবার ফিরে এসেছেন তাও লুকান নি।
এই শানিত ছুরির ফলা আপনি অনেক সুন্দর করেই বুকে বসিয়েছেন পাঠকের। আপনি তা পারেনও।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার লেখা নিয়ে আপনার মত মানছি না, এখন লিখছেন না, ব্যস্ততা জেঁকে বসেছে,
কিন্তু আপনি আনন্দ নিয়েই লিখতেন, লিখছেন একসময়, প্রচুর। ভালো লাগা নেই তা নিচ্ছি না।
ভাব-ভাবনা নিজের মত করেই প্রকাশ করি/করতে চাই, কী পেরেছি/পারি সেটি ভাবিনা, আপনি জানেন।লেখাদের আমি পছন্দ করি, মাথায় আলাদা যন্ত্রটি চালুই থাকে। যা মনে আসে তাই লিখি।
হ্যা, লেখা হারালে পাগল পাগল লাগে, যেমন আজ সকালে হয়েছি, হারায়নি, কিন্তু খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
পরে যে লেখাটি দিব, সেটি, পেয়ছি, শান্ত হয়েছি, সে জন্য এ লেখাটি দিতে ঝামেলা হচ্ছিল।
আবার কোন কোন লেখা আমি দিনের পর দিন/মাস মাথায় নিয়ে ঘুরি, একটি একটি শব্দ কুড়িয়ে বসাই,
হারালে প্রাণ যায় যায় হয়,
ভাগ্যিস ছুড়ি/ফুড়ি গুলো আপনার দিকে পথ পায়নি!!
খুনের দায় নিতে পারতাম না, অবশ্য যাদের বুলেটপ্রুফ ভেস্ট আছে তাদের কথা আলাদা।
শুন্য শুন্যালয়
ছুরি/ফুরি কোন একদিকে পথ পেলেই হলো। আপনার যে সেইদিকের অভাব নাই তাও জানি।
আমি বেসিক্যালি আড্ডা দেই। হুম, মন থেকে তো অবশ্যই করতাম, এখনো মন থেকেই করি, তবে এগুলো লেখা নয়।
এক একটা শব্দ নিয়ে এইযে দিনের পর দিন ভাবনা, এটা লেখককেই মানায়।
লেখার চাকু ছুরি খেতেই হয়, এজন্যই লেখাকে মেবি অস্ত্র বলে, আর লেখকরা হলো সন্ত্রাসী 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপনার অজানা কোন বিষয় এই দুন্নাইতে নাই, ছিল- ও না,
দেখুন আপনার কাছে যা খেলামকুচি, পাঠকের কাছে তা না। যতই ক্যাজুয়াল এপ্রোচ দেখান না কেন,
আপনার যে লেখাটি (সর্বশেষ)নিয়েছি, এবং সাধ্যের মধ্যে (হাওলাত করে-ও) প্রতি মন্তব্য করার চেষ্টা করেছি, সেটি লেখাই।
অতএব আপনিও লেখা সন্ত্রাসীদের কাছের লুক বলেই মুঞে হচ্ছে।
রিতু জাহান
আগে মন্তব্য ও লেখা শিখে আসি। পরে আসতেছি। পাঠক হইতারলাম না। আফসুস,,,,
ছাইরাছ হেলাল
আর শেখা লাগবে না, এবার আমরাই শিখব।