কোনো একদিন যদি অগাধ কিন্তু সাবধানী(!) স্বাধীনতা পেয়ে যাই,
প্রথমেই তোমার কাছে যাবো।
হয়তো আমাকে অচেনা লাগবে, অমন চঞ্চলতা আর না দেখে!
জলের মতো গড়িয়ে পড়া পাহাড়ি ঝর্ণা এখন নুড়ি-পাথরের মতো কিনা!
তবুও একদিন চলে আসবো ঠিক খুড়িয়ে খুড়িয়ে
দু’ চোখের সমুদ্রকে ভাসিয়ে দেবো এক চিমটি আনন্দের ভেতর।
বহুদিন কোথাও যাওয়া হচ্ছেনা। হুম নিমন্ত্রণ, পার্টি এসব যদিও থাকে। কিন্তু আমি যে একসময় চঞ্চলা পাখী ছিলাম! খাঁচার ভেতর ভালো ভালো খাদ্য দিলেও মন উড়াল দেয় ওই দূরের আকাশেই। “গ্রামছাড়া ওই রাঙামাটির পথ” এখানে এ দেশে এসে দেখিনি। তবে পাথুরে মাটির এবরো-থেবড়ো পথের সাথে বহুবার দেখা হয়েছে। অবশ্য এক্সিডেন্টের পর আমার কোথাও যাবার জায়গাগুলো খুবই সীমিত। তবুও মন তো চায়, আর বহু বাঁধাকে অতিক্রম করি এই মনের শক্তিতে। যদিও পরে অনেক ব্যথা হয়, কিন্তু আমি যে বর্তমানে বিশ্বাসী।
যাক মূল বিষয়ে আসি। ২০ মে তারিখে আমার যাবার কথা ছিলো Terra Greenhouse and Garden Centre-এ। শুনেছি ওখানে এশিয়ান ফুলের গাছ পাওয়া যায়। আমি খুঁজছিলাম গন্ধরাজ, হাস্নাহেনা, কামিনী ফুলের চারা। সবগুলোর ইংরেজি নাম লিখে নিয়েছি। কিন্তু গিয়ে দেখি সন্ধ্যা ৬ টায় বন্ধ হয়ে গেছে। মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। কি ইচ্ছে ছিলো ফুলের ভেতর কিছুটা সময় কাটানোর! কি আর করা! “আমি যাই বঙ্গে, আমার কপাল যায় সঙ্গে” মনে মনে এই প্রবাদটা স্মরণ করছিলাম। যাবার আর কোথাও নেই, ফিরে যাচ্ছি বাসায়। দু’ পাশে পাহাড় আর চারদিকে কি সবুজ! অমন পাহাড়ি এলাকায় পার্কিং দেখে বুঝে গেলাম এখানে কিছু আছে দেখার মতো। ছেলের বাবাকে বললাম ওখানে গাড়ী রাখতে। দরোজা খুলতেই জলের শব্দ। মনে পড়ে গেলো জিসান শা ইকরাম নানার লেখা জলের গান-এর কথা। আর আমিও কান পেতে শুনছিলাম সেই জলের গান । ছেলেকে বললাম ওয়াকারটা দিতে, বললো, “মাম ওয়াকার নিয়ে যেতে পারবেনা।” মনটা ভেঙ্গে গেলো, পরক্ষণেই আবার উঠে দাঁড় করালাম মনটাকে। ছেলেকে বললাম আমার সাথে চল, তোর হাতটা ধরে ওখানে যাবো। যতোটুকু যাওয়া যায় আমাকে দেখতেই হবে জলের এতো শব্দ কোথা থেকে আসছে! তবে ধারণা করেছি এখানে একটা জলপ্রপাত আছে।
একটা কথা বলে রাখি, হ্যামিল্টন শহরকে বলা হয় “Falls City.” এখানে অনেকগুলো ছোট-বড়ো ঝর্ণা/জলপ্রপাত আছে। এককথায় বলা যেতে পারে সর্বমোট ১৮টি জলপ্রপাত এই শহরে। আর আমার ভাগ্য ভালো হ্যামিল্টনের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত নীল সমুদ্রে ধবল জ্যোৎস্না (এ পোষ্টের শেষ ছবিটা) Albions Falls দেখেছি ২০১৫ সালে। যাক সে কথা! ফিরে আসি বর্তমানে। আমার ধারণাকে সত্যি করে দিয়ে দেখি সাইনবোর্ড দেয়া Smokey Hollow Access Trail. বেশ কয়েকটি সিঁড়ি, তবে অনেক বড় পাশ, মানে সিঁড়িগুলো খুব প্রশস্ত। আর সিঁড়িটার চারপাশ কাঠ, মধ্যে মাটি। তেমন কষ্ট হয়নি নামতে। ওখানে কেউ বুঝতেই পারেনি যে আমি ওয়াকার ছাড়া বাইরে বের হইনা। অবশেষে পৌঁছলাম। কতোক্ষণ একেবারে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। ভুলেই গিয়েছিলাম ছবি তোলার কথা। একেবারে ডুবে গেলাম। দেখি ওখানে আমি একা, কেউ নেই। কী ভাল লাগছিলো! মাত্র গাছে পাতা এসেছে, বিশাল বড় বড় ওক গাছ। মে ফ্লাওয়ার ফুটে আছে। শুনেছি ওখানে ব্লু হেরোন পাখী দেখতে পাওয়া যায় গভীর বনে। তীর্থ কখন যেনো আমার একটা ছবি তুললো এসে, টের পাইনি। অনেকক্ষণ পর ফটোসেশন শুরু হলো। শুধু মানুষের নয়, ফুল, গাছ, পথ, জল, আকাশ সবকিছুর।
বেশীক্ষণ থাকা হয়নি। গিয়েছিলাম পৌনে সাতটার দিকে। এই জলপ্রপাতের একটা বিশেষত্ব হলো বারো মাস এখানে ভিজিট করা যায়। শীতের সময় নাকি পার্কিং পাওয়া যায়না, এতোটাই ভীড় হয়। আমরা যেখানে গাড়ী রেখেছিলাম, সেখানে মাত্র বিশটি গাড়ী পার্ক করতে পারে। অন্যান্যগুলো আরও বেশ দূরে। যদি অনেক দূরে পার্ক করতে হতো, আমার পক্ষে বোধহয় যাওয়া সম্ভব হতোনা। শরৎ কিংবা বসন্ত ঋতুতে এতোটাই অসাধারণ রূপ ধারণ করে। আমরা আকাশে রঙধনু দেখেছি, কিন্তু এখানে জলের মধ্যে রঙধনু দেখা যায়। অবশ্য আমার ভাঙ্গা সেলফোনে সেভাবে ছবি আসেনি।
আফসোস তবুও থেকে যাবে জলের গান শুনেছি, বাতাসে ঘ্রাণও পেয়েছি, কিন্তু জল স্পর্শ করতে পারিনি। তিরিশ মিনিটের মতো ওখানে ছিলাম। এক বয়ষ্ক দম্পত্তিকে দেখলাম দুজন দুজনকে ধরে নামছে সিঁড়ি দিয়ে, মামনি-বাপির মুখটা চোখে ভেসে এলো। নিজেরা সেলফি তুললো, তারপর চলে গেলো। এবারে এলো তরুণ দম্পত্তি, বরের পিঠে ছোট্ট বাচ্চাটা। ওরা এসেই চলে গেলো পাহাড়ের পথে। চোখ ফিরিয়ে নিয়ে আবার চাইলাম জলের দিকে, দেখি একজন তার ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছে। বুঝলাম প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার।
এবারে ফেরার পালা। আস্তে আস্তে সিঁড়ির রেলিং ধরে এক পা, এক পা করে উঠছি, তীর্থ দৌঁড়ে এসে ধরলো আমায়। বললাম ঠিক আছি, পারবো। আশেপাশের কয়েকটা ছবি তুললাম, দেখি তীর্থ গাছে ঝুলছে। মনে মনে বললাম আজীবন এভাবে যেনো তুই আনন্দ করতে পারিস।
জলের গান – ভিডিও
হ্যামিল্টন, কানাডা
২৩ মে, ২০১৭ ইং।
২৪টি মন্তব্য
মৌনতা রিতু
এতো প্রাণ, এতো উদ্যোমতা, উচ্ছলতা কোথায় পাও?
কি সুন্দর বর্ণনা।
বয়স্ক কোনো দম্পত্তিকে এমন করে কোথাও ঘুরতে দেখলে খুব ভিল লাগে।
জুলফিকার আমাকে কোথাও নেয় না।
জলের গান শুনেছো তাইলে! জলের রংধনুতে কি ছবি আঁকলে, তার রং মেখেছো কি গায়ে?
বেগুনী না নীল?
গাড়ি ছুটিয়ে দিগন্ত ছুতে যাচ্ছ? ছবিটা ঠিক তাই বলছে।
আমাদের সন্তানেরাই হয় আমাদের চলার পথে শক্ত এক আশ্রয়। হাতটা ধরে রাখে শক্ত করে।
ওদের জীবনটা এমন আনন্দময় হোক।
কি কি ফুলের গাছ কিনবে বলো, পাঠিয়ে দেই।
অনেক সুন্দর একটা অনুভূতিময় সকাল কাটালাম।
ভাল থেকো আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
মৌনতা আপু কি সুন্দর মন্তব্য! অভিভূত হয়ে গেছি। আসলেই জানিনা আমি কিভাবে পারি! মাঝে-মধ্যে অবাক হয়ে যাই। অনেকেই বলে আমি নাকি অদ্ভুত! এ নিয়ে অনেকে বিদ্রূপ করে, কেউ খোঁচা দেয় আর কেউ হিংসা করে। যাক ওসব কথা!
হুম জলের গানের ভিডিও দিয়েছি দেখোনি? https://www.youtube.com/watch?v=br0ky5yhvXM …দেখে নিও। অদ্ভুত কি জানো কিছুতেই জলের রঙধনুর ছবি তুলতে পারলাম না। আমার তো ভাঙ্গা ফোন, ছেলে আর ওর বাবার তো আইফোন, তাও আসেনি। বুঝলাম না ওখানে আমার চেয়ে বড়ো কি কোনো শাঁকচুন্নি থাকে?
হাস্নাহেনা, গন্ধরাজ, কামিনী ফুলের গাছ খুঁজছি। আমি চাই আমার ছোট্ট এই ঘরটা জুড়ে এসব ফুলের ঘ্রাণে ভরে যাক। আমি গানটা গাবো সেই আগের মতো করে, “মিষ্টি একটা গন্ধ র’য়েছে ঘরটা জুড়ে।”
এই গর্ভে একদিন এই ছেলেটা ছিলো, আমি ওকে দেখি আর ভাবি লম্বা হয়েছিস, কিন্তু এখনও কেন আমি ওইটুকু একটা ছোট্ট বাবু দেখতে পাই?
শান্তসুন্দরী লেখা দাও নতুন। কতোদিন পড়িনা তোমার লেখা।
অনেক ভালো থেকো।
মিষ্টি জিন
বয়স্ক দম্পতি মানে রীতু বেগম? তোরা বয়স্ক ,তোরা বুড়ি। :@ :@ :@
নীলাঞ্জনা নীলা
মিষ্টি আপু বুড়ি মানে কি? তুমি তো সুইট সিক্সটিন, মৌনতা আপু কিউট ফোর্টিন আর আমি লাভেবল সেভেন্টিন। :p (3 \|/ -{@
ছাইরাছ হেলাল
আপনার শহরে এত্ত ঝর্ণা!!
অসম্ভব আপনার মনের জোর, তা না হলে এ শরীরে ঘুরতে যেতে পারতেন না।
আপনার বর্ণনায় খুব সুন্দর করেই তুলে এনেছেন।
কোনো একদিন যদি অগাধ এবং অসাবধানী(!) স্বাধীনতা পেয়ে যাই,
প্রথমেই তোমার কাছেই যাবো, তুমি-ই আমার প্রথম হবে।
হয়তো আমাকে অচেনা লাগবে প্রথমে একটু একটু,
অমন চঞ্চলতায় গড়িয়ে-জড়িয়ে যাওয়া দেখে !
জলের মতো গড়িয়ে পড়া পাহাড়ি ঝর্ণা এখন উদ্দাম স্রোতের মতো কিনা!
তবুও একদিন চলে আসবো ঠিক নেচে নেচে,
দু’ চোখের সমুদ্রকে ভাসিয়ে দেবো এক বুক আনন্দের মাঝে!!
খুবই দারুণ লেখেন দেখছি আপনি!!
নীলাঞ্জনা নীলা
বাব্বাহ কি দারুণ কবিতা! 😮 একেবারে বি+ টাইপ লেখা। ইস আমি কেন যে এমন করে লিখতে পারিনা! 🙁 কি আর করা! কপাল খারাপ। মনের জোরটাই তো সবরকমের নেগেটিভ থেকে বাঁচিয়ে নেয়।
তাইতো বলি কানাডাতে আসুন। হ্যামিল্টনের ১৮টা জলপ্রপাত দেখিয়ে দেবো। কবে আসবেন বলুন? 😀
মন্তব্যখানা মনকে মুগ্ধ করেছে।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি এর থেকেও অনেক অনেক সুন্দর সব সময়ই লিখে থাকেন।
বি+??
আপনার জোর একটু বেশি-ই, তা-তো দেখতেই পাচ্ছি।
আহা, মুগ্ধতা আর মুগ্ধতা!!
নীলাঞ্জনা নীলা
বি+ মানে হলো বি পজেটিভ। আমি লিখেছিলাম নেগেটিভ আকারে, আপনি সেটাকে পজেটিভ আকারে লিখলেন। ওটাই বললাম। নাহ শর্টকাট আমার কপালে বারোটা বাজায়। বুঝাইতেই পারিনা। ^:^
জোর আসলেই বেশি, এই যে মন্তব্য করছি বসে বসে। এক মিনিট লিখি, আবার শুয়ে পড়ি। এভাবেই চলছে সপ্তাহ জুড়ে। 😀
নীহারিকা
আপনিতো আরও এক কাঠি বাড়া। শরীরের এই অবস্থা নিয়ে ফলস দেখতে গিয়েছেন। যাক, গিয়েছেন বলেইতো আমরা এত ভালো ভালো ছবি আর বর্ণনা পেলাম। তবে তীর্থর ঝুলে থাকা ছবিটা দারুন। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু আরেকদিন কি করেছি জানেন? ওয়াকার রেখে উঁচু টিলায় উঠছি গাছ ধরে ধরে। ছেলে তো চিৎকার, “মাম তোমার ওয়াকার, দাঁড়াও আমি নিয়ে আসছি।” পরের পুরো সপ্তাহ কি অসম্ভব ব্যথা! ডাক্তার স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিলো। এতোটাই ফুলে গেছি, এখন আবার কিছু কমেছে। এসব ব্যথাও ভুলে যাই বেড়াতে গেলে। তুলেছিলাম দূর থেকে।
ভালো থেকো আপু।
নীরা সাদীয়া
আপনার আনন্দময় ভ্রমন, ছবি ও সুন্দর লেখনী আমাকেও যেন টেনে নিয়ে যাচ্ছে ঐ ফলস সিটিতে। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে প্রকৃতির ঐ রূপ। জানি না কোনদিন সম্ভব হবে কিনা। শুভকামনা রইল।
নীলাঞ্জনা নীলা
অবশ্যই সম্ভব হবে। পজিটিভ ভাবনা জীবনে সফল হয়-ই হয়। আমি বিশ্বাস করি।
ভালো থেকো নীরা।
ইঞ্জা
আপু, ছবি আর লেখা এতো অসাধারণ হয়েছে যে আমি যেন নিজ কল্পনায় দেখছি, আমার বোনটা আমার হাতে ভড় দিয়ে এগুচ্ছে, চিনিয়ে দিচ্ছে মে ফ্লাওয়ার, জলপ্রপাত সহ সব কিছু, খুব ভালো লাগলো।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া জীবন যে কতো কী দেখিয়ে নিচ্ছে আমাকে। ছিলাম চঞ্চল প্রজাপতি, হয়ে গেলাম গড়িয়ে চলা শামুক।
অনেক ভালো থাকবেন। চলে আসুন একবার। হ্যামিল্টন আসলেই দেখার মতো।
ইঞ্জা
আপু, মনে কষ্ট রাখবেন না, আপনার তো এক্সিডেন্ট হয়েছে, আর আমার তো জম্ম থেকেই সমস্যা, তাই বলছি হাসুন, আনন্দ উপভোগ করুন, জীবনটা উপভোগ করুন।
ইনশা আল্লাহ্ এক সময় এসেই চমকে দেবো। 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
হ্যান্ডপাম্প ভাইয়া আরে ধুত আমি কষ্ট-ফষ্ট নিয়ে থাকতে পারিনা। ওটা লিখেছি, তারপর কতো কতো আনন্দ-মজা করে ফেলেছি! জন্ম থেকে সমস্যা বলতে? কি হয়েছে ভাইয়া?
শুন্য শুন্যালয়
ঝর্নাটা যেন ঠিক আমার দেখা ঝর্নার মতো। তুমি এতো এতো প্রপাত দেখেছো আর আমি দেখেছি একটাই। কপালের এতো আকাশপাতাল তফাৎ হয় ক্যাম্নে? হেমিল্টনে তবে যেতেই হয়। 🙂
তোমার মনের মধ্যে এখনো আগের মতোই চঞ্চলতা, নইলে পারো কী করে এমন?
ভাগ্যিস তীর্থকে দেখে তুমিও গাছে ঝুলে পরোনি, পারলে তাইই করতে মে বি।
আমি আসার আগে সুস্থ হয়ে ওঠো। জল ছোঁব মানে? জলের মাদুর পেতে শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখবোনে, কেমন?
তোমার লেখাই তো ঝর্না, হেমিল্টনের হলে দোষ কী!
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু চলে এসো। সামনের বছর নানাও আসবে। চলে এসো সবাই মিলে বেড়াবো, ঘুরবো। হুম অনেক ঝর্ণা দেখে ফেলেছি। দেশে দেখেছি মাধবকুন্ড, আর হিমছড়ি ঝর্ণা। জাপানে দেখেছি দুটো, এখানে দেখেছি তিনটি।
আমাকে তুমি খুব বোঝো, সেটা জানি। হুম আগের মতো হলে ঠিক লাফঝাঁপ দিয়ে ঝুলতাম গাছে। না গো আপু চঞ্চলা প্রজাপতি এখন গড়িয়ে গড়িয়ে চলা শামুক। তাও ভাগ্য ভালো চলতে তো পারছি, সেটাই কম কি!
আমি সত্যি অপেক্ষায় রইলাম, তুমি আসবে। -{@
মিষ্টি জিন
ইন্দোনেশিয়ায় থাকা কালীন প্রচুর ঝরনা দেখেছি। ঝরনার মাঝে ছোট ছোট নূডী পাথরের উপর হাঁটতে ভাল লাগে। একেকবার মনে হোত হেটে হেটে এর উৎপত্তি স্হানে চলে যাই।
বাব্বা তুমি তো ভালই পার , ওয়াকার নিয়ে হাটতে চাইছো। আমিও ভীষন চন্চল, উচ্ছল কিন্তু হাঁটুর জন্য কিছুটা দমে গেছি। লেবাননে এত পাহাড় কিন্তু উঠতে পারিনা।
ছবি গুলো বেশ সুন্দর । লেবাননে সব জায়গায় মে ফ্লাওয়ার ফোটে অথচ আমি এর নামই জানতাম না।
এত সুন্দর করে বর্ননা করেছে মনে হয় তোমার সাথে আমিও হেটে বেড়াচ্ছি ।
রীতুকে বকে দাও ও শুধু তোমাকে না ইনডাইরেক্টলি আমাকেও বয়স্ক দম্পতি বলেছে। ;(
নীলাঞ্জনা নীলা
মিষ্টি আপু মাধবকুন্ডের ঝর্ণার একেবারে উপরে উঠেছিলাম। তখন ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ইস উপর থেকে লাফালাফি, চিৎকার, গান গাওয়া। লেবাননের দৃশ্য দেখলাম গুগলে, এত্তো সুন্দর! ইস যদি যেতে পারতাম!
মে ফ্লাওয়ারের ঘ্রাণটা দারুণ না? শোনো চলে এসো এখানে, বেড়িয়ে যাও। আমার খুব ভালো লাগবে। এই বোনটার বাসায় থাকবে। আসোনা আপু।
তুমি বয়ষ্ক? অসম্ভব! তুমি তো সুইট সিক্সটিন আপু। -{@
মিষ্টি জিন
লেবাননে এসে বেডিয়ে যাও দিদি। এটা আমার বাসার না বাংলাদেশ সরকারের বাসা । সবার অধিকার আছে এই বাসার থাকার।
আসবো দিদি কানাডায়। তোমার বাসায় বেড়াবো আর প্রান খুলে হাসা-হাসি করবো।
ধন্যবাদ সোনা ।
নীলাঞ্জনা নীলা
শোনো তুমি যেখানেই থাকো না কেন আমার অধিকার আছে। 🙂
কিন্তু আসাটাই তো সমস্যা। আমি নিজেই এখন একটা সমস্যা, বুঝেছো?
তুমি এসো হ্যামিল্টনে, গ্যারান্টি দিচ্ছি আন্তরিকতার কমতি হবেনা একটুকুও।
অনেক ভালো থেকো মিষ্টি আপু।
ধন্যবাদের সাথে কিন্তু আদুরে ডাক মানায় না, বুঝেছো?
জিসান শা ইকরাম
এত জলপ্রপাত হেমিলটনে! আমার তো এখনই দৌড়ে যেতে ইচ্ছে করছে।
লেখার শুরুটা চমৎকার হয়েছে’ কোনো একদিন যদি অগাধ কিন্তু সাবধানী(!) স্বাধীনতা পেয়ে যাই, প্রথমেই তোমার কাছে যাবো।’
সুন্দর উপস্থাপনা আর ছবিতে খুব ভাল একটি পোষ্ট পড়লাম,
আগামী বছর কানাডা যাবার সম্ভাবনা আছে, আশাকরি দেখব তখন সব জলপ্রপাত।
প্রবাসে দুটো বিষয় আমার আকর্ষনের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকে
রেল ষ্টেশন আর জল প্রপাত,
যেখানেই যাই প্রথমেই খোঁজ নেই এ দুটো আছে কিনা, থাকলে আর কথা নেই ছুটে যাই।
আমার জলের গান আমার একটি বিশাল প্রেমও,
ভাল লাগে জলের হান শুনতে।
তোর মত এত সুন্দর করে আমি কেন লিখতে পারিনা?
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা তুমি বলেছো ২০১৮ সালে আসবে এখানে। শোনো এবার কিন্তু প্ল্যান বদল করোনা।
তুমি আসো তো, সবগুলো জলপ্রপাত দেখাবো। আর এখন আসলে সুবিধাও গাড়ী আছে, যখন ইচ্ছে তখনই যাওয়া যাবে যেখানে খুশি সেখানে। হ্যামিল্টনে রেলস্টেশন আছে, তবে টরেন্টোতে মেট্রো চলে। ট্রামও। দূরপাল্লার ট্রেনগুলো যে কি দারুণ সুন্দর নানা! আমার তৈরী “জলের গান” ভিডিওটা দেখেছো?
তুমি অনেক ভালো লেখো।