দু’হাত গলে গলে মেহেদী ভেজা রঙের মতো গড়িয়ে পড়ছে ভোরের আলো। এক পা চেয়ারে তুলে আরেক চেয়ারে মাথা এলিয়ে আলোস্নানের এ লোভ আমাকে কাবু করে ফেললো। বেহুদা সূর্য্যের উন্মাতাল প্রেম নয়, পুড়িয়ে দেবেনা মেটে শরীর। আলো আমাকে রাতের মঞ্চের মতো এ পাশ ওপাশ করে ঘুরে ফিরছে, সার্কাসের চর্চিত শিল্পী যেন। বিড়বিড় করে বললাম, আমার বারান্দায় আমিই সেরা শিল্পী, নয়তো অভিনেত্রী।
তীব্র রঙগুলো ভাসিয়ে নিচ্ছে আধো ঘুমে মোবাইল টেপা পৃথিবী।
চিকচিকে অহংকারে এক মুঠো আলো হাতে চোখাচোখি হলো, দূরের অইইইইইইইইইই বারান্দায়। আমার এক কানা আলো লজ্জায় মুখ লুকায় আলোর সমুদ্রে ডুবে থাকা সেই বারান্দা দেখে…
চকিতে টানটান বুকে খচখচে কথা নিঃশ্বাস ছাড়ে, “আহারে”
নিঃস্ব অই বারান্দায় আলো দেখবার জন্য কোথাও কেউ নেই,
এক আলোহীন বাদলা দিনের হাঁ করা দুপুরের অপেক্ষায় যেন ঘুম ভেঙ্গেই থেমে থাকা——
৩৭টি মন্তব্য
ইঞ্জা
সুন্দর অনুভূতির দারুণ প্রকাশ।
শুন্য শুন্যালয়
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাইয়া। 🙂
ইঞ্জা
🙂 😀
জিসান শা ইকরাম
আপনার বারান্দায় বসে আমার বারান্দার ফটো তুলবেন, আগে বলবেন না? ভাব নিয়ে একটু দাঁড়িয়ে থাকতাম।
সুর্যের উম্মাতাল প্রেম চাননা, আবার হা করা দুপুর চান, সে দুপুরে কি রোদ থাকবে না?
শুন্য শুন্যালয়
হাঁ করা দুপুর তো আমি চাইনা, অই বারান্দা অপেক্ষা করছে, আমি না 🙂 আমার ভোর হলেই চলবে। 🙂
আপনার বারান্দা না শুধু, বাগান শুদ্ধ তুলে নিয়ে আসবো, অপেক্ষা করতেই হবে। তবে আপনার ছবি? এমনিতেই ভাবে চোখ খুলে রাখতে পারেন না। আমার ক্যামেরার সামনে এলে ঘুমিয়ে পড়েন কিনা কে জানে।
জিসান শা ইকরাম
আজকাল চোখে দেখায়ও সমস্যা হইছে, কত শব্দ বাদ দিয়ে পড়ি, যে কারনে বুঝতে ভুল হয়।
আচ্ছা আপনার ভোর আপনারই, এর দিকে কেউ তাকাবেনা,
ওকে আমার বাগানটা আপনাকে দিয়েই দিলাম গিফটু, এত ভাল লেখা লিখছেন, রাজা বাদশাহর আমল হলে তো খুসি হয়ে পরগানাই দিয়ে দিতেন তারা, হালকা একটু ভাবের সাথে মাত্র বাগান -{@
চোখ খোলা ছবি তাহলে আপনাকে দেখাতে হয় 🙂
শুন্য শুন্যালয়
আচ্ছা আচ্ছা আপনি তাহলে একালের বাদশাহ্ জিসান? 🙂 উপঢৌকনের জন্য এত্ত ধন্যবাদ। কিন্তু চোখ খোলা ছবি আপনার আছে? 😮
মৌনতা রিতু
এক শূন্যতা ডাকে আমায় অন্য শূণ্যতায় যেতে। পথের মাঝে বিস্তর ফারাক। শুধু দূর থেকে নিঃশ্বাষের শব্দ শোনা।
আমি কিন্তু আছি ঐ বারান্দায়। আস একটু চোখই না হয় মিলাই।
দারুন। ননদিনি, একশোতে একশো। -{@
শুন্য শুন্যালয়
ভাবী যখন একশোতে একশো দেয়, তখন বুঝতেই হবে লেখা কিন্তু যেনতেন হয় নাই 🙂
ও, অইখানে বুঝি আপনি ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিলেন? পরেরবার নির্ঘাত ধরে ফেলবো মৌন বারান্দা। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আলোস্নানের উন্মাতলতায় সোনা অঙ্গ অঙ্গার করে ফেলেননি দেখে
আমরাও যারপর নাই আনন্দিত! তবে বারান্দা টু বারান্দা চোখাচুখি তাকাতাকি কানাকান বেশ ভালই,
তবে কানা আলোর সাধ্য নেই সমুদ্রে ঝাপানোর,
এ কানা সে কানা না, হয়তো কানাকানি কিছু কথা।
দুপুরের হাঁ দেখে আমরাও হাঁ হচ্ছি লেখাসৌন্দর্যে!
শুন্য শুন্যালয়
কানাকানি ফিসফাস এইসব আপনি আমার চাইতে ভালো জানবেন, দেয়ালের কথা যে বুঝতে পারে সে কি না পারে!! স্নান তো আলোতেই সারছিলাম, তবে অইযে কোনকিছুই বেশি বেশি ভালো নয়। চামড়া সাদা না হওয়ায় ট্যানিং এর হ্যাপা থেকে রক্ষা পেয়েছি, এই আর কি!! সৌন্দর্য্য আর কোথায়? সব জানি কোথায় কান্নাকাটিতে ব্যস্ত। ভালো থেকে বেশি বেশি কাঁদুন আমাদের জন্যে।
নীলাঞ্জনা নীলা
বহুদিন পর তোমার বারান্দা থেকে ভোর দেখলাম। ভোর এতো শুদ্ধ হয় কেন?
আলো চিরকালই মাটিতেই আছড়ে পড়ে
কখনো ভোর হয়ে, কখনো মেঘলা দুপুর
মহাকালের বিচারে শাস্তি তার সূর্যের গায়ে আগুণের ফোস্কা।
পোড়ায় আবার পুড়েও যায়।
পৃথিবীতে রোজই ভোর আসবে, জানালার পর্দা গলে আলো ঝরে পড়বেই চোখে
অন্ধ যে আজ তাকেও ভোর দেয় আলোর ছোঁয়া,
কুড়িয়ে নেয় অন্ধকার।
আপু যা মনে এলো, সেটাই লিখে দিলাম। কি জানি লেখার মন্তব্য ঠিক হলো কিনা!
ভালো রেখো। -{@
শুন্য শুন্যালয়
ভোর সবসময়ই শুদ্ধ।
সূর্য্য নিজেও পুড়ে যায় বুঝি? অভিশপ্ত, জ্বলবে তবু ছাই হবেনা। অন্ধকেও ভোর দেয় আলোর ছোঁয়া, দারুন নীলাপু। তোমার মন্তব্য লেখাকে অনেক দূরে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়। ভালো থেকো তুমিও।
মোঃ মজিবর রহমান
কার এমন খেমতা যে বারান্দার দখল নেয়
শুন্যময় প্রিথিবীর হস্ত হতে।
কিন্তু লভ সামলান এখানে আমার কোন ক্ষমতা নায়
দেখেন আবার অপারেশন টেবিলে ছিন্নভিন্ন হায়।
মোঃ মজিবর রহমান
সরি আপু।
দেখেন আবার অপারেশন টেবিলে ছিন্নভিন্ন না হায়।
শুন্য শুন্যালয়
আমার বারান্দার দখল কেউ নিতে পারবেনা, ঘর যেতে যেতে এই বারান্দাটুকুই আছে বেঁচে। লোভ সামলানোর প্র্যাকটিস তাহলে চালু করে দিলাম ভাইয়া 🙂 ভালো থাকবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
শুভেচ্ছা অবিরত।
আপু।
শুন্য শুন্যালয়
আপনাকেও ভাইয়া। আপনার ঘর কিংবা বারান্দা নিয়ে লিখে ফেলুনতো এবার ভাইয়া।
শামীম আনোয়ার আল- বেপারী
(y)
শুন্য শুন্যালয়
ধন্যবাদ শামীম ভাই।
নাসির সারওয়ার
ঠেকা বা ঝুল
বারান্দা আমার চাই
আসুক বা না আসুক
অপেক্ষা থাক তারই।
বেহুদা সূর্য্যের উন্মাতাল প্রেম কি খালি বারান্দাই আছাড় খাঁয়! বারান্দা যেনো আস্তে আস্তে আবার মানুষের মত বড় না হয়ে যায়, এত্তু খেয়াল রাখিয়েন।
শুন্য শুন্যালয়
আপনার বুঝি বারান্দা নেই? ঘর দখলে থাকলে বারান্দার কাজ নাই।
বারান্দা মানুষের মতো বড় হয়ে যাবে? মানুষ যেন কেমন আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যাচ্ছে ভাইয়া।
জানালা বন্ধ কইরা রাখছি, তাই খালি বারান্দাতেই আছাড় খায়, আমি যখন বারান্দায় ঘরে ঢুইক্যা কাম নাই 🙂
লেখা কই? 🙁
নাসির সারওয়ার
ছিলো, বারান্দা ছিলো। ভেঙ্গে ঘরের সাথে মিলিয়ে দিয়েছি। কেনো যেনো বারান্দা আর ভালো লাগেনা। ভয় ভয় লাগে। তাই ওকে মেরে ফেলেছি।
আরে না না, মানুষ বড়ই হয় দিনে দিনে। মনের ব্যাপ্তিও তো বড় হবার মতই, তাইনা?
হায় হায় বলে কি! সব জানালা খোলা রাখতে হবে সব সময়। নাহলে নাকি মনের জানালাও বন্দ থাকে।
লেখা! হে আল্লাহ, কিছু লেখার তউফিক দাও। আমেন।
শুন্য শুন্যালয়
আগে বলেছি, যার একটা ঘর থাকে, তার বারান্দা লাগেই না। সৌভাগ্যবানের দলে আপনার নাম টুকে নিলাম। জানালা খোলা রেখে ভারী পর্দা টানিয়ে রাখলেই বা কি লাভ হতো!! এখন নিশ্চয়ই বলবেন, পর্দারই বা কি দরকার!! অই যে বললাম, আপনি সৌভাগ্যবান।
জ্ঞানের ব্যাপ্তি বাড়ছে, মনের বাড়ছে কিনা জানিনা। চারপাশ থেকে দেখে দেখে সবকিছু কেমন ছোট লাগে!! নাকি চোখের পাওয়ার কমছে কে জানে!! লেখা চাইনা। জমিয়ে রাখুন, বিশেষ কারো জন্যে।
ইলিয়াস মাসুদ
বেহুদা সূর্য্যের উন্মাতাল প্রেম নয়, পুড়িয়ে দেবেনা মেটে শরীর। আলো আমাকে রাতের মঞ্চের মতো এ পাশ ওপাশ করে ঘুরে ফিরছে, সার্কাসের চর্চিত শিল্পী যেন।
বাহ রে বাহ্!! দারুন তো….
আগেও বারান্দা থেকে পড়েছিলাম কিন্তু এবারের বারান্দা মাতাল করেছে
মাতালেরা সব জরো হবে সন্ধের আগেই……
শুন্য শুন্যালয়
মাতলামী রাতেই তো বেশি মানায় 🙂
অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগছে ভাইয়া। গায়েব হওয়া চলবেনা, যা কিছু হোক, হবেই।
ভালো থাকবেন।
ব্লগার সজীব
আমি আপনার বারান্দায় বসে থাকলে আপনার মত লিখতে পারতাম। এক চেয়ারে পা, অন্য চেয়ারে মাথা, ওঠার সময়ে সাবধানে উঠবেন এরপর হতে, ধপাস করে ফ্লোরে পড়ে গেলে ছুটির সম্ভাবনা নেই কিন্তু 🙂
ছবিটি মস্তিস্কে গেঁথে গেল -{@
শুন্য শুন্যালয়
আপনি আবার আমাকে ছুটিতে পাঠানোর প্লান করছেন নাকি? নাহ্ আপনি তো দেখি লোক ভালোনা। কোথায় একটু মজারসে আলো স্নান করছিলাম, এখন আর চেয়ার থেকে উঠতেই পারছিনা।
মস্তিস্কে এখন আলোয় ভরে যাবে, সেখান থেকে আলোর গাছ বের হবে। সজীবকে ধরে ঝাঁকি দিলেই ঝুরঝুর করে আলো বের হবে। ভালো না? 🙂
ব্লগার সজীব
মজারসে আলো স্নান করুন করুন, চেয়ারকে ভাবুন আরামদায়ক বিছানা 🙂 সজীবকে ধরে ঝাঁকি দিলেই ঝুরঝুর করে আলো বের হবে!! এমন করে আপনিই ভাবতে পারেন আপু। ভালো না আবার? -{@
শুন্য শুন্যালয়
আচ্ছা আচ্ছা, আরামদায়ক বিছানার কথা বললেন, হাতের কাছে এক কাপ চা না হলে হয়? এইতো লেখা লেখা ঝিমুনি আসতেছেন, লেখার ব্যামোতে পেলো নাকি আমাকে? 🙂
আপনার ভাবনা দেখে দেখে কিছু সঞ্চিত হয়েছে মনে হচ্ছে 🙂
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
কথা হইলো আপনার বারান্দার চেয়ার দুইটা আমি চাই।
:p
এইরকম লেখা যে আমিও লিখতে চাই। কিন্তু পারি না।
শুন্য শুন্যালয়
সব তাইলে চেয়ারের গুন? নেন চেয়ার দিয়া দিলাম, প্লেনে কইরা আইসা নিয়া যান। এরপর না আবার বলেন, আপনার বারান্দা দেন, এরপরে দূরের অই বারান্দাও দেন। কওনা যায়না।
আবু খায়ের আনিছ
এমন একটা দৃশ্য যদি আমার বারান্দায় থাকত, আপনার মত করে না হোক, এমন কিছু লেখার চেষ্টা করতাম। দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া উঠোন পেড়িয়ে দুই পা।
শুন্য শুন্যালয়
আপনার বারান্দা থেকে যে দৃশ্য দেখা যায়, তাই কি কম সুন্দর!! অইযে আপনিই বললেন, দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া। লেখার চেষ্টা শুরু করলে গড়গড়িয়ে এমনিতেই লেখা আসবে, আপনার লেখা তো এখন ছোটে।
আবু খায়ের আনিছ
আমার বারান্দা বেদখল হয়ে গেছে, আমি আর এখন বারান্দায় যেতে পারি না। তবে হ্যাঁ গ্রামে আমার যে বারান্দা আছে সেটা অনেক সুন্দর। বিশেষ জোছনা রাতে বারান্দার সিড়িঁতে বসলে মন অনেক ফুরফুরে হয়ে যায়।
শুন্য শুন্যালয়
জোছনা রাতে বারান্দা, উহ্ আর বলছেন কিনা আমার মতো এমন দৃশ্য থাকলে লেখার চেষ্টা করতেন!
চোখ বন্ধ করে লিখেই ফেলুন সেই জোছনার কথা, আমরা অপেক্ষাতে রইলাম আপনার বারান্দার।
আবু খায়ের আনিছ
আমার বারান্দার কথা লিখেছিলাম একটা গল্পে, কিন্তু সেটা সম্ভবত প্রকাশ করা হয়নি। আশা করি সামনের কোন গল্পে দিয়ে দিব।