অনেক দিন থেকেই ভাবছি তেঁতুল নিয়ে কিছু লিখবো। ভাবনাটি এত বিশাল যে, এই লেখা কয়েক পর্বে হতে পারে। আবার এক পর্বেই ভাবনার মৃত্যু ঘটতে পারে। পাবলিক ডিমান্ড বলে কথা। তেঁতুলের এই ছবি দেখে কতটা লোল পাবলিকের জিহ্বার নীচে জমা হলো এবং সেই লোল কে কতটা বাইরে ফেলে দিলো তার উপর নির্ভর করবে পর্ব কতটি হবে। ‘ লোল কম লেখা কম ‘ এই হচ্ছে সুত্র।
কোথা হতে এলো এই তেঁতুল ? তেঁতুলের আদি নিবাস আফ্রিকার সাভানা অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়া। ধারণা করা হয় সুদান থেকেই তেঁতুল বাংলাদেশের মাটিতে এসেছে।
ব্যবহারঃ তেঁতুলগাছের পাতা, ছাল, ফলের শাঁস (কাঁচা ও পাকা), পাকা ফলের খোসা, বীজের খোসা—সবকিছুই ব্যবহার হয়ে থাকে।
যেসব কথা না জানলেও চলে যেমন, বৈজ্ঞানিক নামঃ Tamarindus indica. বাংলা নামঃ তেঁতুল,
ইংরেজি নামঃ Tamarind tree. আদিবাসি নামঃ তাতু (রাখাইন), মেক্কেসি (খুমি), তিন্তিলি ফাং (গারো), হাও মং (মারমা), তন্থরি (বম), খেন- থিরি (গারো) ।
বাংলাদেশেই আছে পাঁচশত বছরের প্রাচীন তেঁতুল গাছঃ
চাপাই নবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের সুরলা গ্রামে এই প্রাচীন তেঁতুল গাছটি আছে। প্রায় দশ কাঠা জমিতে ছড়িয়ে আছে এই গাছটি। এর উচ্চতা প্রায় দেড় হতে পৌনে দু’শ ফুট। কেউ সঠিকভাবে এই গাছের বয়স বলতে পারেন না, তবে অভিজ্ঞ মহলের মতে কমপক্ষে ৫০০ বছর বয়স হবে এ গাছের। গাছটির মূল কাণ্ড বহু আগেই ভেঙে পড়েছে। গাছটির গোড়া ইট সিমেন্টের গাঁথুনি দিয়ে বেধে দেয়া হয়েছে।
সরকারী ভাবেই এই গাছটি সংরক্ষা করা হচ্ছে। গাছটির কাছা কাছি একটি সাইন বোর্ড লাগানো আছে, যাতে বলা হয়েছে এর কোন ক্ষতি সাধন করা যাবেনা। গাছে আশ্রিত কোন পাখির প্রতি ঢিল নিক্ষেপ করা যাবেন, কোন পাখি ধরা নিষেধ এখানে। স্থানটি পক্ষিকুলের অভয়াশ্রম হিসেবেও পরিচিত। এখনো গাছটিতে তেঁতুল হয়ে থাকে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গাছের নিচে পূজা অর্চনা করে থাকেন। প্রতিদিন শত শত মানুষ বর্তমানে এ গাছটি দেখতে আসেন।
গাছটিতে প্রচুর বক বসবাস করে। পাখির অভয়াশ্রম হওয়ায় বক স্বামী স্ত্রীরা নির্ভয়ে তাদের সংসার জীবন যাপন করে। এই প্রাচীন তেঁতুল গাছ এবং বক নিয়ে ভিডিও দেখুন এখানে ক্লীক করে।
যেভাবে এখন তেঁতুলের ভাবনা আমার মাঝে আছে, তা বজায় থাকলে জাতির সামনে একজন তেঁতুল বিশেষজ্ঞ হিসেবে লীলাবতী আবির্ভূত হবে এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই ।
প্রিয় পাঠক, পরবর্তী পর্বে যাবার পূর্বে কয়েকদিনের জন্য ব্রেক। সাথেই থাকুন।
৫২টি মন্তব্য
মেহেরী তাজ
আপু পোষ্টের শুরুতে তেঁতুলের ছবি না দিলেও পারতেন। মুখ ভরে গিয়েছে। এখন কোথায় পাবো তেঁতুল ? ৫০০ বছরের প্রাচীন তেঁতুল গাছ !! এই প্রথম শুনলাম। আপনি প্রচুর পড়াশুনা করেন বুঝতে পারলাম। আপনি যে একজন তেঁতুল বিশেষজ্ঞ হিসেবে আবিভুর্ত হবেন এ বিষয়ে ামার কোন সন্দেহ নেই । ব্রেক বেশি দিন চাইনা কিন্তু।
লীলাবতী
আপনার এমন মন্তব্য আমাকে পরবর্তি পোষ্ট লিখতে উৎসাহিত করবে। ধন্যবাদ আপু।
ছাইরাছ হেলাল
আমরা একজন তেঁতুল বিশেষজ্ঞ পেয়ে গেছি ভাবতেই কোথায় যেন জল জল ভাব এসে যাচ্ছে।
ভালই হলো বকদের অভয়ারণ্য হয়ে। ভাগ্য ভাল বক ধার্মিকদের অরণ্য হয়নি।
অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
লীলাবতী
বক ধার্মিকদের কথা আসবে পরবর্তি পোষ্ট সমুহে।
শুন্য শুন্যালয়
লোল কম লেখা কম? হা হা হা হাসতে হাসতে শেষ আমি… কই পান এতো মজার কথা। আমার লোল বেশি পরছে। ছবিতে হামলা করার চেস্টাও চালাইছি। কত বছর যে খাইনা।
তেঁতুল বিশেষজ্ঞ শুনে যেন কেউ আবার অন্য কিছু না ভাবে? 😛
ভিডিও টি দেখলাম, কত্তো বক !!! এমন সুন্দর সংরক্ষনের জন্য সরকার এগিয়ে এসেছে এটা নিশ্চিত ভালো একটা খবর।
অপেক্ষা কিন্তু বেশি করতে পারবনা, জলদি পরের পর্ব দিন তেতুল বিশেষজ্ঞ, ওরফে ভত্তা বউ, ওরফে ঢঙ্গি। 🙂
লীলাবতী
আপনার লোল বেশি পরেছে জেনে আনন্দিত আমি। লেখায় তো আপনার ধারেকাছেও যেতে পারবোনা। হাহুতাশ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন আপনি। মনে আছে। বলা যায় আপনার কাছে শিখছি। তেঁতুল বিশেষজ্ঞ পার্ট ও আসবে 🙂 বেশি অপেক্ষা করতে হবেনা।
মোঃ মজিবর রহমান
তেঁতুল বড়ই টক,
তবুও মানুষ তাঁর ভক্ত,
দেখাতে আসে জল জিবাতে।
দিদি তেঁতুল বিশেষজ্ঞ হলেন তেঁতুল
বাবা থেকে নাকি?
লীলাবতী
তেঁতুল বাবার পর্বও আসবে 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
স্বাগত স্বাগত
জিসান শা ইকরাম
তেঁতুল বিষয়ে একটা থিসিস করলেও পারতেন
কত ডক্টরেট ডিগ্রীধারী এখন পথে ঘাটে
ড: লীলাবতী শুনতে কিন্তু ভালোই লাগবে।
প্রাচীন গাছটি সম্পর্কে এই প্রথম জানলাম,
কখনো নাচোল গেলে অবশ্যই দেখে আসবো।
এমন পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।
লীলাবতী
সোনেলার ব্লগারগন আমাকে এই ডিগ্রী দিলেই তো হয় 🙂 ড: লীলাবতী কত ভালো দেখাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হুম জিবে জল আনতে বড় ওস্তাদ আপনি ভাল লাগছে পর্ব চালিয়ে যান।
লীলাবতী
জিভে এসেছে যখন, পর্ব চলবে ভাইয়া।
খসড়া
হঠাৎ তেঁতুল হুজররে মনে পরলো
লীলাবতী
ভাইয়া তেঁতুল হুজুরের পোষ্ট আসবে।
স্বপ্ন
প্রথমে তেতুলের ছবি দিলে লোল কম হবার প্রশ্নই আসেনা আপু। এত প্রাচীন একটি গাছ আমাদের দেশে আছে? জানতামই না। আরো লিখুন আপু।
লীলাবতী
লিখবো ভাইয়া। ধন্যবাদ।
খেয়ালী মেয়ে
সত্যি বলতে তেঁতুল আমি একেবারেই খেতে পারি না, তবে দেখলেই খেতে মন চায়, যেমন এখন ছবি দেখে মন চাচ্ছে তেঁতুল খেতে….
আপনেকে অনেক ধন্যবাদ শতবর্ষী এই তেঁতুল গাছ দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য…
লীলাবতী
তেঁতুল নিয়ে এরো পোষ্ট হবে পরী আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।
বনলতা সেন
তেতুল দেখলে ফতোয়ার কথা মনে পড়ে যায়।
লীলাবতী
আসবে সে পোষ্টও 🙂
মরুভূমির জলদস্যু
তেঁতুলিয়া বাজারে একটা বিশাল তেঁতুল গাছ আছে দেখে ছিলাম আমি।
বিশাল তেঁতুল গাছ দেখতে পাওয়া যায় না বললেই চলে।
আমাদের বাড্ডাতেও প্রাচীন এক তেঁতুল গাছ আছে। আমাদের বাজার এরিয়া সেটা- নাম তেঁতুল তলা। গাছটা এখনো আছে, তবে প্রতি বছর ডালপালা কাটার কারণে গাছটাকে ছোট দেখায়। কয়েক বছর আগেও তার আকার বিশাল ছিলো।
লীলাবতী
জানলাম ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
কৃষ্ণমানব
মেরে ফেলছে :p
তেতুল নিয়ে নো মন্তব্য ।
রহস্য সিক্রেট থাক :v
লীলাবতী
আচ্ছা থাক সিক্রেট ।
অলিভার
তেঁতুল বলেও শুরু করলে গল্পটা তেঁতুল গাছ আর তাকে নিয়ে ঘিরে উঠা সমাজ এবং ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি সাথে পাখিদের অভয়ারণ্যকে নিয়ে লিখে ফেললেন। তেঁতুল গাছের বিভিন্ন নামও সংগ্রহ করেছেন। ভালোই হল, নিত্য সব নতুন জিনিষের সাথে পরিচয় ঘটছে।
তবে এখনো তেঁতুল কে উপস্থাপন করেন নি, তার গুণাগুণ আর আকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে কিছুই বলেন নি। দ্রুত সেগুলি নিয়ে আবার লিখুন।
শুভ কামনা জানবেন।
লীলাবতী
আগে তো গাছ, এরপরে তার ফল। পরবর্তিতে অনেক কিছুই আসবে। ধন্যবাদ।
প্রজন্ম ৭১
এত কিছু থাকতে শেষ পর্যন্ত তেঁতুল নিয়ে পরলেন ?
লীলাবতী
তেঁতুলের অনেক গুন যে ভাইয়া 🙂
হৃদয়ের স্পন্দন
তেতুল পাগলা বলব আমি
লীলাবতী
আচ্ছা বলুন ভাইয়া।
ব্লগার সজীব
হাফ সেঞ্চুরী পোষ্টের জন্য অভিন্দন। হাফ সেঞ্চুরী পোষ্টে লোলময় হলে ফুল সেঞ্চুরীতে কি হবে ভাবতেই আছি। প্রাচীন গাছটি সম্পর্কে জানলাম।
লীলাবতী
ধন্যবাদ আপনাকে সজীব ভাইয়া। ফুল সেঞ্চুরীতে কি করা যায় তা আমিও ভাবছি। 🙂
শিপু ভাই
অর্ধ শতকের জন্য অভিনন্দন ব্লগার লীলাবতী। তেতুল পোস্ট ভালো হয়েছে। যদিও তেতুল আমার খুব একটা পছন্দের জিনিস না। 😛
সোনেলা ব্লগের প্রতি আপনার ভালোবাসা আর ডেডিকেশন দেখে আমি মুগ্ধ। আপনি আপনার মত লিখতে থাকুন। পাশেই আছি। শুভকামনা।
সোনেলায় এটা আমার প্রথম কমেন্ট!!!
লীলাবতী
আমি ধন্য হয়ে গেলাম ভাইয়া। সোনেলায় আপনি প্রথম মন্তব্য করলেন আমার পোষ্টে। প্রথম থেকে আছি এখানে, একটা মায়া জন্ম নিয়েছে। মনে হয় সোনেলা আমার সন্তান। ধন্যবাদ ভাইয়া -{@
ছাইরাছ হেলাল
মেঘে মেঘে দেখছি অনেক বেলা হয়ে গেল।
কখন কীভাবে অর্ধশত করে ফেললেন টের ই পেলাম না।
শুভেচ্ছা জানালাম আপনাকে।
লীলাবতী
ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার দরজায়ও কিন্তু নক করছে 🙂
কৃষ্ণমানব
সিক্রেট জিনিস ওপেন করলে আমার লোভ জাগে আপুটি ।
প্লিইইইজ লুকাও :p
লীলাবতী
পর্ব তো কেবল শুরু হলো ভাইয়া 🙂
সাইদ মিলটন
হ্যাল্লো ভত্তাবতী 😀
ব্যাট উচু করেন 😀
হাফসেঞ্চুরীর জন্য অভিনন্দন , দ্রুত সেঞ্চুরী করুণ
লীলাবতী
আপনিও ভত্তাবতী বলেন ভাইয়া ? 🙁 অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। বেশী লিখতে পারিনা যে :p
স্বপন দাস
ভালো লাগলো —
অভিনন্দন —
তেঁতুল দিয়ে শুরু করেছেন যখন
আগামীতে আরো কিছু ভেষজ ফল নিয়ে লিখবেন আশা করি।
লীলাবতী
ধন্যবাদ দাদা। আরো বেশ কিছু পর্ব আসবে ।
অলিভার
অর্ধশত পোষ্টের জন্যে অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো আপু -{@
আশা করি খুব দ্রুতই সেঞ্চুরি করবেন এবং তার থেকেও দ্রুত হাজারের ঘরে পা দিবেন :p
লীলাবতী
ধন্যবাদ ভাইয়া। সেঞ্চুরী করতেই কতদিন লাগে কে জানে, এরপর হাজার তো দূর কি বাত 🙂
সঞ্জয় কুমার
ভাল ব্যাটসম্যান রা ফিফটি করলে দলের বাকিরা তাঁকে অভিনন্দন জানায় । আমি ও আপনাকে অভিনন্দন জানালাম । তবে ক্রিজের অপর প্রান্তে আমিও আছি কিন্তু , একদম অখ্যাত বা কুখ্যাত যাই বলেন না কেন । হয়ত কিছু দিনের মধ্যেই সেঞ্চুরি করব । আরেকটা কথা হাফ সেঞ্চুরি করেছেন । আপনার কাছে কিন্তু একটা খাওয়া দাওয়া পাওনা থাকল । ভাল থাকবেন ।
লীলাবতী
ধন্যবাদ ভাইয়া এমন মন্তব্যের জন্য। আগাম অভিনন্দন আপনাকে:) খাওয়া দাওয়া অবশ্যই হবে।
শুন্য শুন্যালয়
হাফ সেঞ্চুরী করে ফেললেন নাকি!!!! মিস্টির পরিবর্তে তেতুল অবশ্য মন্দনা। সহকারী ব্যাটসম্যান দের কাধে কাঁধ মিলিয়ে ( রান আউট না করিয়ে দিয়ে) সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে চলুন। অভিনন্দন আপনাকে।
লীলাবতী
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, এমন উৎসাহ দিলে সেঞ্চুরী অবশ্যই করে ফেলবো 🙂
অনিকেত নন্দিনী
তেঁতুল বিশেষজ্ঞ লীলাবতীকে তেঁতুলমাখা অভিনন্দন। :p
লীলাবতী
আপনাকেও আসল তেঁতুলিয় শুভেচ্ছা -{@ তেঁতুল বাবা কোথায় আছেন,কেমন আছেন তা অবশ্য জানি না :p
কামাল উদ্দিন
আগে জানলে গাছটি দেখে আসতে পারতাম, নাচোলে গিয়েছিলাম তিন বছর আগে।