অরিত্র,
গতকাল কাজ শেষে আমরা তিনজন বন্ধু চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছি। আমাদের বিখ্যাত মামার হোটেলে জন প্রতি ২৫ টাকার লাঞ্চ শেষ করে গিয়েছিলাম এক সবুজের রাজ্যে। ওহ তুমি ভাবছ ২৫ টাকায় আমি কী খেলাম! আসলে মামার হোটেলে গিয়ে আমরা বলে দেই আমাদের ২৫ টাকার লাঞ্চ করাতে। তখন উনারা ইচ্ছে মতন আমাদের খাওয়ান। কালকের মেনুতে ছিল একটা মাছ ভর্তা,(আমি জানি যে কোন ভর্তাই তোমার খুব প্রিয়। ভর্তা ভাতে তোমাকে মিস করি খুব) মুগের ডাল, পালং শাক, সবজি আর মসুরের ডাল। লাঞ্চ শেষে সবুজের রাজ্যে যখন পৌঁছাই ঘড়িতে তখন দুপুর আড়াইটা। মেঘলা আকাশ, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, ঠান্ডা দমকা বাতাস, সব মিলিয়ে কেমন একটা মন খারাপ করা প্রকৃতি। আমরা তিনজন একটা পুকুর পাড়ে বসেছিলাম ঘন্টাখানেক। পুকুরটা কচুরিপানা, পদ্ম আর শাপলা পাতায় কানায় কানায় ভরা ছিল। জানো অরিত্র আমার মাঝে মাঝে প্রকৃতির দিকে তাকালে মনে হয় ঈশ্বরের প্রিয় রং বুঝি সবুজ। প্রকৃতির সবুজের এত বিচিত্রতা আমাকে বিস্ময়ে হতবাক করে দেয়। একটা সবুজের সাথে আরেকটা সবুজের কত পার্থক্য অথচ সবগুলোই সবুজ। এখন আমি তোমাকে যেখানটায় বসে লিখছি সেখান থেকেও অনেক রকমের সবুজ দেখতে পাচ্ছি। তালপাতার সবুজ, কদম পাতার সবুজ, কলাপাতার সবুজ, আমপাতার সবুজ, দুর্বঘাসের সবুজ!!!
সবুজ নিয়ে লিখতে লিখতে জেমসের একটা গানের লাইন মনে পরে গেল :
“সবুজের কাছ থেকে সমাঝোতা ছিড়ে এসেছিল ঝড়, শাখা প্রশাখার সাথে ঝড়ে গেছে অবুঝ পাতা!”
নাহ, পরের লাইনগুলো আর মনে পরছেনা।
যা গিয়েছি ভুলে তা আর মনে করার কষ্ট নাইবা করি। তার চেয়ে এখন আমি একটু কাজে মন দেই।
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
অরিত্র এখনো জীবিত ?
এখনো দফারফা করেন নি ?
আর কত ?
ছেড়ে দিয়ে ওকে বাঁচিয়ে রাখুন এ যাত্রায় ।
সবুজ আমার পছন্দের রঙ ।
লীলাবতী
অরিত্র বেঁচে থাকবে ঝড়াপাতায়। শুভ দুপুর, যদিও এখনো সকালই মনে হচ্ছে
জবরুল আলম সুমন
মনে পড়ে গেলো আজ থেকে পাঁচ ছয় বছর আগে কলকাতার বেলে ঘাটায় একটা রেস্টুরেন্ট ছিলো যেখানে মাত্র পচিশ টাকা দিয়ে যত খুশী খেয়ে আসা যেত, ভেজেটেরিয়ানদের জন্য সেটা ছিলো একটা আদর্শ রেস্টুরেন্ট।
জেমসের ওই গানের পরের লাইন সম্ভবত ছিলো এরকম “তবু শেকড়ের মায়াজালে রয়ে গেছে সে, সূর্য্যের আদরে ব্যাথাগুলো মুছে গেছে, আর যেন নেই নেই; আর যেন ব্যাথা নেই”। শ্রদ্ধেয় লাকী আখন্দ ভাইয়ের সুরে “বিতৃষ্ণা জীবনে আমার” মিশ্র এ্যালবাম থেকে গানটি নেয়া। খুবই প্রিয় একটা গান।
এই ধারাবাহিকটা বেশ লাগছে কিন্তু, চলতে থাকুক… সাথেই আছি। শুভ কামনা।
লীলাবতী
গানের প্রথম লাইনটা কিন্তু মনে আছে, “ভালোবেসে চলে যেওনা, ভালোবেসে চরে যেতে নেই।”
ধন্যবাদ চমত্কার মন্তব্যের জন্য।
শুভ দুপুর।
জবরুল আলম সুমন
ভালোবেসে চলে যাওয়াটাও উচিত না… 😛
এই মেঘ এই রোদ্দুর
অনেক ভাল লাগছে লেখাগুলো……….. লিখেন আমিও লগেই আছি আটার মত । শুভকামনা
লীলাবতী
ধন্যবাদ! শুভসন্ধ্যা
শিশির কনা
হিংসে হচ্ছে আপনাকে। মামার হোটেলের মেনু দেখে খাবার লোভ লাগছে খুব। ভর্তা আমারও প্রিয় খুব। কত সবুজের মাঝে ছিলেন আপনি !! ইচ্ছে থাকলেও এই নগরে সবুজের মাঝে যেতে পারিনা।
ছোট ছোট লেখার মাঝে ফুটে উঠছে আপনার সুন্দর মানসিকতা। ধরে রাখুন এটা আপু।
লীলাবতী
এখনে সবকিছুই এত সবুজ, আমার মন কখনোই খারাপ হয়না! সবুজে চোখ রাখলেই সব খারাপলাগা নিমিষেই দূর।
শুভসন্ধ্যা শিশির।
জিসান শা ইকরাম
শিশির কনার মতো আমারও হিংসে হচ্ছে ।
ভালো লাগছে ঝরাপাতা , অপেক্ষা তৈরি হচ্ছে রোজ এমন পোষ্টের ।
শুভকামনা।
লীলাবতী
প্রতিদিন ঝড়াপাতা ঝড়েনা। অপেক্ষায় না থাকাটাই ভালো।
শুভসন্ধ্যা।
প্রজন্ম ৭১
মামার হোটেলে ২৫ টাকার খাবার। আপনাদের তো অনেক বুদ্ধি 🙂 ভালো লেগেছে আপনার একান্ত অনুভুতি।
লীলাবতী
ধন্যবাদ। শুভসন্ধ্যা
যাযাবর
সবুজ দেখে আমিও হারিয়ে যাই তার মাঝে আপু। ভালো লেগেছে আপনার ছোট এই লেখা।
লীলাবতী
অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভ সন্ধ্যা।
আদিব আদ্নান
একাই খেলেন (আপনার বন্ধুদের নিয়ে) আর গল্প দিচ্ছেন অরিত্রকে ,
এটি ঠিক নয় । নিদেন পক্ষে অরিত্রকে না পেলেও আমাদের দাওয়াত দিলে মন্দ হত না ।
অরিত্র আখ্যান চলুক নিত্য দিন এমন করেই ।
লীলাবতী
অরিত্র শ্রোতা হিসেবে খুব মনযোগি, তাই ওকে শোনানো। খুব মজা পেয়েছে এই লেখাটা পড়ে। ভাল থাকবেন। শুভসন্ধ্যা
নীতেশ বড়ুয়া
ভর্তা ভাতে ভত্তাবতীর সামনে অরিত্র… কেমন কেমন জানি লাগছে ভাবতে ;?
লীলাবতী
ভিন্ন পথে যাত্রা আমি ভালোই পারি দাদা ভাই 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
সে তো প্রমাণ রেখেছেন একের পর এক পোস্টেই… কিন্তু থেমে গেলে তো চলছে না আমাদের…