মাঝে মাঝে তুমি বলো, আমাদের দুজনার প্রথম দেখায় আমি স্থির হয়ে আছি। থাকবো ই তো,কেন থাকবো না? ভবিষ্যতে আমরা প্রথম দেখার দিনটি প্রতিবছর পালন করবো। সেই স্মৃতি ময় স্টেশনে যেখানে আমরা দুচোখে দুজনকে দেখেছি আশেপাশের দৃশ্যমান সমস্ত কিছুকে অদৃশ্য করে। চার ঘণ্টার রেলপথ পাড়ি দিয়ে এসেছিলে তখন। যখন আমরা এই দিবসটি পালন করবো, তুমি ষ্টেশনের এক স্টপেজ পিছন থেকে ট্রেনে চড়বে। আমি অপেক্ষা করবো ট্রেন কখন আসে, ট্রেন কখন আসে। ট্রেন এসে থামবে প্লাটফর্মে, হেটে যাবে বাম হাতে ছোট ব্যাগ নিয়ে। এরপর আমার দৃষ্টি উপলব্ধি করে ফিরে তাকাবে আমার দিকে। দুজনেরই চোখ মুখ হাসিতে উদ্ভাসিত হবে।
জানো তুমি, প্রথমবার দেখা হবার সময় খুব ইচ্ছে করছিল জড়িয়ে ধরি তোমাকে। আমার সে ইচ্ছেকে বাস্তব করবো ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। আমরা ঐদিন কিন্তু হোটেলে থাকবো। দুজনে হাত ধরাধরি করে হেটে হেটে সোনালী বিকেলের নেশা জাগানো আলোর মাঝে, অনেকটা পথ পেরিয়ে পৌঁছাব সেই হোটেলে যেখানে আমি থেকেছিলাম। প্রথমবার আমার জন্য বয়ে নিয়ে এসেছিলে পুডিং, চা পাতি, চিনি, বিস্কিট। রুমে গিয়ে একা একা খেয়েছি সব। সব কিছু তুমি আনবে আবার। রুমে গিয়ে পুডিং খাইয়ে দেবে নিজের হাতে। চা বানিয়ে ধূমায়িত দুকাপ দুজনে হাতে নিয়ে পান করবো আর পান করবো।
অনেক বছর পরে যখন আমরা বুড়ো বুড়ি হবো, তখনও তুমি এই দিনে একই ভাবে ট্রেন হতে নামবে। হয়ত আমার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাবে, তারপরেও ঠিকই বুঝতে পারবো ঐ যে তুমি, আমার হৃদয়ের রানী। বৃদ্ধ আমি দাঁড়াতে পারবো না তুমি ধরে দাড় করাবে। কম্পিত আমি তারপরেও তোমাকে জড়িয়ে ধরবো। কোন প্রেমিক যুগল হয়ত ছবি তুলবে আমাদের, ভালোবাসার উদাহরন হিসেবে।
৩৮টি মন্তব্য
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
আহা!
কি সুন্দর দুষ্টু মিস্ট অনুভূতি।
অনেক ভালো লাগলো।
আচ্ছা আপনি আপু নাকি ভাইয়া?
আমি আমি
মনের অভিব্যক্তিটা বেশ সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। ভাল লেগেছে।
স্বপ্ন
ধন্যবাদ আমি আমি -{@
স্বপ্ন
ধন্যবাদ আরিফ ভাইয়া। অনেক বছর পরে আমি বুড়ো হবো। বলে দিলাম আমি আপু না ভাইয়া 🙂
খসড়া
খুব চেনা গল্প অসাধারণ ভঙ্গিমায় তুলে ধরেছেন।
স্বপ্ন
আপনার মন্তব্য আমাকে প্রেরণা যোগায় আপু।
অরুনি মায়া
অনেক বছর পর তুমি আসবে, সাথে আনবে চশমার ফ্রেম,লাঠি,নকল দাঁত এই আরকি | :p
স্বপ্ন ভাইয়ার স্বপ্ন সব পূরণ হোক 🙂
স্বপ্ন
প্রতিবছরই তো আসবে যতদিন বেঁচে থাকি আমরা। ধন্যবাদ আপু।
শুন্য শুন্যালয়
স্টেশনের সেই দেখা। আপনার সেই লেখাটি আমার মনে আছে স্বপ্ন। এখনো সেই দেখাতে স্থির আছেন, সেই দেখাটি নিয়েই স্বপ্ন বুনছেন, বুঝতে পারছি কতটা আচ্ছন্নের দিন ছিলো। শুধু একটি স্মৃতিই নয়, এমন শত শত স্মৃতির দিন হোক আপনাদের।
অসম্ভব ভালো লিখেছেন স্বপ্ন। -{@
স্বপ্ন
হয়ত প্রথম দেখার স্মৃতিতেই স্থির হয়ে আছি বলে অবাক হয় অনেকে। আসলে ঐ দিনের আবেগে স্থির হয়ে থাকতে চাই। এটি যেন কমে না যায়। ধন্যবাদ আপু।
ছাইরাছ হেলাল
কল্পনায় সব কিছু সেরে ফেললে তো ঠিক ঠিক সময়ে অনেক কিছুর টান পড়ে যাবে,
স্বপ্নে বাঁচুন, স্বপ্নে হাসুন কিলকিলিয়ে।
স্বপ্ন
স্বপ্ন যে বাস্তবের অপেক্ষায় ভাইয়া। স্বপ্নহীন জীবন মরুভূমির মত শুষ্ক।
মৌনতা রিতু
সুন্দর প্রেমের উপস্থাপন।ভালো লাগলো।তবে সব প্রেম ট্রেনেই!
স্বপ্ন
ধন্যবাদ আপু। ট্রেনে নয়, ট্রেন হতে নেমে 🙂
অনিকেত নন্দিনী
কারো কারো জীবনে স্বপ্নের সাথে জড়িয়ে যায় ট্রেন, রেলস্টেশন আবার কখনোবা ট্রেন আর রেলস্টেশনের সাথে জড়িয়ে যায় স্বপ্ন।
খুব মনে আছে রেলস্টেশনে প্রথম দেখার বিবরণীতে দুজনের দুইটা লেখা এসেছিলো। সেই বিবরণী পড়েছি আর নস্টালজিক হয়েছি। নতুন করে ইচ্ছে জেগেছে আবারো রেলস্টেশনে ছুটে যেতে, অপেক্ষা করতে।
প্রথম দেখা দিবস পালনের পরিকল্পনাটা মনে ধরেছে খুব। তবে বুড়ো বয়সে গিয়ে প্রথম দেখা দিবস পালনের পরিকল্পনাটায় কিছু পরিবর্তন আর আরো কিছু যোগ করতে হবে মনে হচ্ছে।
ঝাপসা চোখে ঠিক ঠিক বুঝবেন তো কাকে দেখতে গিয়ে কাকে দেখছেন? :p একে তো ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারবেননা, সে আপনাকে ধরে দাঁড় করাবে উপরন্তু তাকে জড়িয়ে ধরলে তো দুজনেই ভারসাম্য হারিয়ে প্ল্যাটফরমে পড়ে গিয়ে হাড্ডিগুড্ডি ভেঙে বেকায়দায় পড়বেন। 🙁
যৌবনে হাত ধরে হেঁটে সেই হোটেলে যাবেন, বুড়ো বয়সে কই যাবেন তা বলেননি। যেহেতু চোখেও ঝাপসা দেখবেন সেক্ষেত্রে বলা যায় সে আপনার হাত ধরে চোখের হাসপাতালে নিয়ে যাবে। তার হাতব্যাগে থাকবে সুতা লাগানো চশমার ফ্রেম, লাঠি, নকল দাঁত (মায়াপুর মন্তব্য থেকে কপি করেছি)।
আহা! স্বপ্ন দেখতে কতই না ভালোলাগে। 😀
প্রথম দেখার পর কয় বছর পার হইলো জানতে মুঞ্চায়। ;?
স্বপ্ন
প্রথম দেখা, স্মৃতি পড়েছিলেন আপনি 🙂 ধন্যবাদ আপু। দিন ছুট রেলস্টেশনে। সে আমার চেয়ে বেশ শক্ত পোক্ত, আমাকে পড়তেই দিবেনা। বেশি বুড়ো যখন হবো, তখন হয়ত হেঁটে হোটেলে যেতে পারবো না, বিকল্প হিসেবে গাড়ি তো থাকবেই। হোটেলে যাওয়া মিস হবেনা 🙂 দুই বছর হবে কিছুদিন পরেই। আপনার মন্তব্য পাঁচ তারকা দিলাম 🙂
আবু খায়ের আনিছ
এইটা কি বাস্তব নাকি পুরুটাই কল্পনা/সিনেমা? পরিচিতি দৃশ্য।
স্বপ্ন
বাস্তব মিশ্রিত স্বপ্ন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
স্বপ্নের কাছে স্বপ্ন। প্রথম দিনটা আজীবনই নতূন থাকে। স্বপ্নটা কখনোই যেনো পুরোনো না হয়।
স্বপ্ন
স্বপ্ন পূরানো হবে না, দোয়া করবেন আপু।
শুন্য শুন্যালয়
কিন্তু স্বপ্নের সেই দৌড়ে আসার দৃশ্যটা কোথায়? 🙂
মাঝে মাঝে এমনও হবে, মিথুন স্টেশনে নেমে স্বপ্নকে খুঁজে পাবেনা, এরপর স্বপ্ন দৌড়ে দৌড়ে এসে মাথাটা নামিয়ে বলবে ঘড়ি বন্ধ ছিল, আর মিথুন দেবে তখন দু এক ঘা। 🙂
কখনো এমন হবে, মিথুনের ট্রেন নষ্ট হয়ে গেছে পথে, আসছেই না আসছেই না। ক্লান্ত স্বপ্ন ঘুমিয়ে পড়বে স্টেশনের বেঞ্চিতে।
এমনো হতে পারে, পাবলিক হলিডে সেদিন, ভেজিটেবিল স্যান্ডউইচের দোকান গুলো সব বন্ধ।
স্বপ্নগুলো এদিক ওদিক হোক, স্বপ্ন-মিথুনের স্টেশন প্লাটফর্ম যেন একই থাকে।
প্রিয়তে নেয়া ছাড়া কোন পথই খোলা থাকলো না। শুভকামনা স্বপ্ন। -{@
স্বপ্ন
যতদিন বুড়ো হবোনা, ততদিন দৌড়েই আসবো, বুড়ো হলে এতটা পথ দৌড়ে আসবো কিভাবে? তবে একস্থানে দাঁড়িয়ে দৌড়ের মহরা দেয়া যায় 🙂 অনেকবার ভেবেছি আপনার মন্তব্যের অংশ টি পোষ্টে জুড়ে দেব। কিন্তু আপনার মন্তব্যে নেগেটিভ সম্ভাবনা আছে আপু। নেগেটিভ কিছু ভাবনা ভাবিনা যে আমরা দুজন। আমাদের সবকিছু হবে,হতেই হবে।
স্বপ্ন-মিথুনের স্টেশন প্লাটফর্ম একই থাকবে আপু। দোয়া করবেন আন্তরিক ভাবে -{@
আমার লেখা আপনার প্রিয়তে? যার সব লেখা আমার প্রিয়,তিনি যদি আমার লেখা প্রিয়তে নেন,এর চেয়ে আনন্দের আর কি আছে। ধন্যবাদ আপু।
মেহেরী তাজ
স্বপ্নভাইয়ার স্বপ্ন পুরন হোক। আচ্ছা স্টেশন চত্তরে দেখা মেয়েটা কি আমাদের মিথুন আপু??? ;?
শুন্য শুন্যালয়
দামী প্রশ্ন, আমার মাথায় তো একবারও আসেনাই। তা স্বপ্ন, তুমি আবার বদলায় নাইতো? 😀
স্বপ্ন
স্বপ্নের স্বপ্ন বদলাবে কিভাবে শুন্য আপু? বদলানো যায় বুঝি? 🙂
শুন্য শুন্যালয়
না যায়না, স্বপ্নের নামের পাশে মিথুনের নাম ছাড়া আমার অন্যকিছু ভাবনায় আসেনা। 🙂
অনেক ভালো থাকবেন আপনারা দুজন। -{@
স্বপ্ন
এমনই দোয়া করবেন আজীবন, ধন্যবাদ শুন্যাপু।
স্বপ্ন
দোয়া করবেন তাজ আপু। হ্যাঁ স্টেশন চত্তরে দেখা মেয়েটা আমাদের মিথুন আপু 🙂
মেহেরী তাজ
আপনারও মিথুন আপু? :D)
দোয়া করে দেবো! 🙂
স্বপ্ন
আপনার মন্তব্য কোট করেছি আপু 🙂 :p
সালমা আক্তার মনি
প্রথম স্মৃতি টা কখনো পুরোনো হয় না। কেবলি মনে হয় এইতো সেদিন! স্বপ্ন ভাইয়া তো প্রথম টাকে চিরদিনের করে রাখতে বুড়ো বুড়ি হলেও সেই প্রথম সিনটাতেই রেখে দিলেন।
দারুন অনুভূতি, প্রেম এভাবেই বোধহয় মৃত্যুন্জ্ঞয়ী হয়। খুব ভালো লেগেছে।
স্বপ্ন
প্রথম দেখার অনুভুতিটা অন্য রকম ছিল আপু। দীর্ঘ দিনের অপেক্ষা, দেখা হবার সুযোগের অপেক্ষা, আর যেদিন পরিচয় হলো একবছর পরে ঠিক ঐ তারিখেই দেখা হলো। এটি একটি মিরাকল আমাদের কাছে। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।
জিসান শা ইকরাম
প্রথম দেখায় স্থির থাকলে চলবে কিভাবে?
সামনে আগান ভাই
নতুন আপডেট চাই।
কি জানি রক্তা রক্তি শুরু করেছিলেন আপনারা,
ভাবছিলাম সংসার জীবন শুরু করেছেন।
প্রথম দেখার স্মৃতি বেঁচে থাকুক আপনাদের মাঝে।
শুভকামনা স্বপ্ন মিথুন -{@
স্বপ্ন
আমি যে প্রথম দেখার আবেগে স্থির হয়ে আছি ভাইয়া। যতটা আবেগ ছিল তার কিছুই লিখে বুঝাতে পারিনি। আপডেট আসবে সহসাই 🙂 ধন্যবাদ ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
আপডেটের অপেক্ষায় থাকলাম 🙂
নাসির সারওয়ার
“পুডিং, চা পাতি, চিনি, বিস্কিট”। তা চায়ের ক্রিম কই নাকি পুডিং দিয়ে সাড়া হয়েছে!! নাহ, রঙ চা দিয়ে প্রেম প্রেম খেলা, কি যানি কেমন হয়! আর এজন্যই সপ্নেরাও বুড়ো হয়ে যায়!
স্বপ্ন
গ্রীন টি ছিল ভাইয়া, এটিই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী 🙂 ধন্যবাদ আপনাকে।
মিথুন
প্রতিবছর সেই-ই কেবল ট্রেন জার্নি করবে, আপনি করবেন না কখনো? 🙂
ভালোবাসার উদাহরন হতে গেলে, অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়। আপনার স্বপ্নইচ্ছে অনেক অনেক দামী।
অনেক কিছু লিখবো বলে বসেছিলাম, কিছুই আর লেখা হলোনা। চা, চিনি, বিস্কিট, সব ছাপিয়ে এক হাসি……………