সখা, সখি ও শাস্ত্রী সমভিব্যাহারে রাজন মৃগয়ায় বেড়িয়েছেন সোনাবিকেলে,
উহ্, নাহ, এটি কোন দূষ্মন্ত-শকুন্তলা কাহিনী নয়,
বনপ্রান্তের ক্রন্দন ধ্বনিতে থমকে গেল রথ,
আলুথালু বেশে গাছ জড়িয়ে প্রবল কান্নাকাটি করছে বিমর্ষ একটি লোক,
‘এ জেপন আর রাকপ না, আম্রে আমি আজ মাইরালামু’
শাস্ত্রীর বন চটকানোতে কান্না বন্ধ, চ্যাংদোলা করে নিয়ে এসে পেশ করা হলো রাজন সম্মুখে। এ রাজ্যে কান্না নিষিদ্ধ, তাই ঘটনা জিজ্ঞেস করে জানা গেল, সে আত্মহত্যা করতে চায় গলায় দড়ি দিয়ে, কিন্তু দড়িটি তার খুব ছোট, তাই গাছের উঁচু ডাল অব্দি না পৌঁছানোয় তার আত্মহত্যার মহান কর্মটি করতে পারছে না। দয়ালু রাজন দ্রুত আত্মহত্যার ব্যবস্থা করার হুকুম দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতেই আবার কান্নার শব্দে বিরক্ত হয়ে আবার থেমে গেলেন।
এবারে শাস্ত্রীরা ঐ উজবুকের পশ্চাদ্দেশে শপাং শপাং শব্দে জালি বেত চালাতে চালাতে কান্না বন্ধ করে রাজার কাছে নিয়ে এলো। এবারে কৌতূহলী হয়ে রাজা বিস্তারিত জানাতে চাইলেন;
প্রথম বার সে আত্মহত্যা করতে চেয়েছে মনের দুঃখে, তার পোষা বাঁদরটি তাকে ছেড়ে লাপাত্তা হয়েছে, কিন্তু দড়িতে ঝোলার আগ মুহূর্তে মনে হয়েছে আত্মহত্যা করে লাভ কী? তার থেকে বৈরাগ্য নিয়ে বাকী জীবন প্রাণের বাঁদরটি খুঁজে খুঁজে বেড়াবে,
জীবনের এরূপ অপচয় ও মূল্য হীনতা দেখে রাজা এবারে ভীষণ রেগে গিয়ে দড়িতে ঝুলিয়ে তাঁর সম্মুখে সত্বর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার হুকুম দিলেন, বিপত্তি দেখা দিল, প্রবলতর থেকে প্রবলতম কান্নাকাটি, কিছুতেই সে মরতে চাচ্ছে না, প্রচণ্ড মুগুরের মার খেয়েও কান্না বন্ধ হচ্ছে না, কান্না যেহেতু নিষিদ্ধ এখানে, দণ্ড কার্যকর করা কঠিন হয়ে গেল।
বাঁধন খুলে কাছে এনে কান্নার কারণ জানতে চাইলে সে এবার জানালো,
মানব কল্যাণে সে সে তার বাকী জীবন উৎসর্গ করতে চায়,
সে একজন ডাক্তার।
২৮টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
হা হা হা মাইরালাইছে, ডাক্তারগো সোয়া বারোটা বাজায় হালাইছে।
নামখানা উল্লেখ করিয়া দিলে গোটা জাতী এই নালায়েক রোগীর হাত থেকে রক্ষা পাইতো। পাগল রে সাঁকো দেখাইলে যা হয় আর কী, নাড়িয়েছে এক আউলা কবি তাও আবার ফোঁড়া ওয়ালা কবির মাথা। তা বলি, আপনার সেই প্রাণের বান্ধব ডাক্তারকে এই প্রেসক্রিপশন গুলো ধরিয়ে দিচ্ছেন তো? নাকি সুস্থ সবল ডাক্তারদের উপরেই এই অত্যাচার?
বাঁদরের কল্যান ছেড়ে মানবের কল্যান? দেখুন এইভাবে বললে কিন্তু গোটা ডাক্তার জাতীর বদদোয়ার কবলেই পড়বেন, ৭০ খানা ছাড়াই তখন বেহেশত নসীব হওনের চান্স থাকবে, আমি খুব রেগে গেছি এই লেখা পড়ে, 😀
ছাইরাছ হেলাল
বলেন কী!! একটা কিংবা দু’টো বাজতে এখনও অনেক বাকী!
জাতি এমন মানব হিতৈষী ডাক্তার রোজ রোজ পাবে না, তাই ফোঁড়াওয়ালা রোগীদের একমাত্র ভরসাস্থল এই ডাক্তার।
ফোঁরা-টোঁড়া হলে ফি ছাড়াই তিনি ভাল ভাবে টিপে-টুপে প্রাথমিক পরীক্ষা সেরে ফেলেন, অবশ্য আপনার নিরোগ দেহে ফোঁড়া নেই,
তবে কাছের কারো থাকলে নিত্য-নতূন অসুখের জন্য পাঠালে দারুণ চিকিৎসা পাবে,
ভাইয়া বদদোয়া দেন আর যাই করেন হুর-পরী চাই না, দোজখে যাওয়ার এরাদা আছে, (পরের লেখায় পাবেন খানিকটা)
কী না কী কন!! কবিদের দেখলেই হসি পায়!
আপনি তো দাঁতের দাক্তার!! রুগী-টুগী পান!!
শুন্য শুন্যালয়
বলেন কী, এক মন্তব্যেই এত্তো তাড়াতাড়ি এরাদা বদলায় দিলেন? দোজখে সংখ্যায় বেশি পাওনের গুপন ওহী পাইছেন নি?
দাঁতের ডাক্তারের ম্যালা রুগী এই সোনেলাতেই আছে, সামনে পাইলেই আমার খায়েশ পূরন হইতো।
ফি ছাড়া টিপা-টুপি কইরাইছেন, এমনিতে তো আর সাত আসমান দেখায় আনে নাই আপনারে!
বাজান যতো খুশি, তবে কল্লা খানা একমাত্র অইখানেই নিশ্চিন্তে সমর্পন করতে হবে, হয়, ন ভুইল্যেন।
আয়না দেখা থেকে বিরত থাকুন, হাসি কম কম পাবে।
ছাইরাছ হেলাল
দোজখে ম্যালা সুবিধে, আপনি যেতে চাইবেন জানলেই, জানুন দেখুন,
পছন্দ হলে আওয়াজ দিয়েন, ব্যাপার না।
আল্লাহ যেন সোনেলার রুগীদের সহায় হন, দাঁত-ফাঁত আর আস্ত নেই তাঁদের বুঝতে পারছি।
কল্যানব্রতী ডাক্তার ফি-টি নেন না, টিপে-টুপে দেখে-টেখে আরকি, সাত নয় ভাইয়া সতেরটি আসমান
শেষ এরই মধ্যে, আরও কিছু কোর্স বাকী আছে।
দেখুন কল্লা কিন্তু মাইরের প্রথমই খুইয়ে বসে আছি, তাই সে নিয়ে ভাবনা আর না, আর না,
আয়না গলে ফলে ও ফেটে-ফুটে গেছে, কিচ্ছু দ্যাহা যায় না, তবে সে আয়নায় অন্যদের দেখে
হাসাহাসি করা যায়,
ভাগ্যিস আপনি সে গোত্রের! না, তাই হাসি না, তবে ফিছকে ফিকফিকা হাসি আড়ালে ঠ্যাকাইতেও পার না।
নীলাঞ্জনা নীলা
বেচারা ডাক্তারের কথা ভাবিতেছি।
ভাগ্য ভালো আমি নার্সিং পেশায় আছি। তা না হইলে আমিও কহিতাম এ জীবন রাখিবো না। 😀
ছাইরাছ হেলাল
এ ডাক্তারের দিকে চোখ পাতবেন না, সে খুব ভালু,
আপনি নার্স!! বিশ্বাস হয় না, এরা তো সব হুর পরী সেবিকা।
নীলাঞ্জনা নীলা
বিশ্বাস হবার কথা তো না!
ছাইরাছ হেলাল
কী করে করি!!
মৌনতা রিতু
এ কোন কাহিনী ! মুই তো চুল ছিঁড়তাছি। কিছুই তো বুঝবার পারতেছি না।
;? ভাইবা লই।
মিষ্টি জিন
ভাইডি , এসব ল্যাহেন কি? হাসতে হাসতে মরলে কিন্তু মডা মেরে খুনের দায় নিতে হবে।
জয় বাবা ডাক্তার :D)
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন ভাই, আপনার মত সুন্দর করে তো আর লিখতে পারি না তাই
এসব লাইন ধরার চেষ্টা করছি।
হাসুন হাসুন পেট ভর্তি করে যত খুশি তবে মারা যাবেন্না প্লিজ,
আমিও বলি আপনার মত,
ডাক্তার কী জয়!!
ছাইরাছ হেলাল
যতখুশি ভাবুন, সমস্যা নেই, তবে মহা মূল্যবান চুল আস্ত রাখুন।
নাসির সারওয়ার
ডাক্তার না হবার স্বার্থকতা আজ পাওয়া গেলো (একজনমে খুবই খায়েশ ছিলো দাত্তার হমু)। তবে ডাক্তারের কিন্তু মতিগতি খুবই শুদ্ধ ছিলো। কেন যে বেটা মরতে গেছিলো!
ছাইরাছ হেলাল
দাক্তার হন অসুবিধা নেই, আপনার বান্দর আছে কীনা তা ত বললেন না!!
দাক্তার গুলো একটু ইয়ে মত হয় আরকি!!
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সোনেলার ডাক্তারদের প্রতিবাদ করার সময় এসেছে….তবে শেষ লাইনটিতে ডাক্তারদের এমন মহানুভবতা সত্যিই আশ্চর্যজনক। -{@
ছাইরাছ হেলাল
প্রতিবাদ কেন!! এতো মহান ডাক্তার, মানব সেবার জন্য জীবন উৎসর্গ।
লীলাবতী
বাদরের কল্যানের পরে এবার মানুষের কল্যান? ভালই তো 🙂
ছাইরাছ হেলাল
খুবই পয়মন্ত ডাক্তার, আপনি ট্রাই করে দেখতে পারেন।
ক্রিস্টাল শামীম
লেখা পড়লাম আর হাসলাম ,,, আর কি বলবো বুঝতাছি না। ^:^
ছাইরাছ হেলাল
পড়েছেন সেটাই অনেক, হাসিটুকু বোনাস।
ব্লগার সজীব
এমন ডাক্তারের ধাম ঝাতি জানতে চায়, জেনে রাখা ভাল, কখন কোন এস্পেসাল ব্যামক্রান্ত হয়ে পরি আবার। বাদর আর মানুষে পার্থক্য কেবল সময়ের। মজারু হইছে 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আগে ব্যামো হোক তারপর আওয়াজ দিলেই হবে,
মাঝে মাঝে পার্থক্য প্রায় থাকেই না।
ব্লগার সজীব
ব্যামো কিন্তু হয়েছে আমার, কিছু লিখতে পারছি না 🙁
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা, দাক্তারের সাথে কথা বলতে হপে।
প্রহেলিকা
ভাবতেছিলাম আপনি এখনো সোনেলাতে সহি-সালামতে আছেন কিনা! ডাক্তারদের পেছনে য্যাম্নে লাইগছেন অতি সত্বর যে আপনার বেগতিক অবস্থা দেখিতে পাইবো তাতে সন্দেহ নাই।
ডাক্তাররা চাইলে কিন্তু অনেক কিছুই করিতে পারে, এই যেমনঃ নতুন করে ফোঁড়ার অর্ডার করে সাপ্লাই দিবে। ক্যান যে পেছনে লাগেন, জিউস এবার আপনাকে রক্ষা করুক। ডাক-ডুক দিয়েন দরকার লাগলে।
ছাইরাছ হেলাল
এ ডাক্তার নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, খুবই পরহেজগার ডাক্তার,
মানব কল্যাণই যার এক মাত্র ব্রত,
আচ্ছা ডাক-ডুক দিমুনে,
তয় কতা অইল আপনারে পামু কুথায়!!
প্রহেলিকা
বেশি পরহেজগার বলেইতো ভয়টা পাচ্ছি, আপনার সাথে না হলে অবশ্য এ ভয় পেতাম না। ডাক দিয়াই দেইখেন কোথা থেকে যে হাজির হমু টেরই পাইবেন না। আপনার ডাক বলে কথা। পরহেযগারদের তালিকা থেকে আপনার নামও যে বাদ যায়নি তা ভুলিনি আমি।
ছাইরাছ হেলাল
সহি দাক্তারদের সাথে সহিদেরিই দেখা-সাক্ষাত হয়।
কোথায় থাকেন কী না কী করেন! টাইমমত পাওন যাইবে তা মনেই হয় না।