ইব্রাহিম স্যার ঃ-
কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। কতো কতো শিক্ষার্থী! কাউকে চিনিনা, জানিনা। শুধু ভর্তির সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম স্যারের সাথে পরিচয় হয়েছে। উনাকে দেখলাম খুবই নরম মনের মানুষ। স্যার এমনিতে আমায় নাকি চিনতেন। তবে সেটা বাপি-মামনির কারণেই। ভর্তির পর আমাকে ক্লাশ টেনের ক্লাশে নিয়ে গেলেন। গিয়ে বসলাম, ক্লাশে কোনো শিক্ষক ছিলো না তখন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি এলেন ক্লাশে। ওহ ইব্রাহিম স্যার আমাদের স্কুলের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। তিনি ইংরেজী পড়াতেন। সেদিন ক্লাশটেষ্ট ছিলো। কিন্তু আমি নতূন তাই স্যার বললেন পরের দিন পরীক্ষা নেবেন। আমি দাঁড়িয়ে বললাম আজই নিতে। স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুমি পারবে?” বললাম চেষ্টা করবো। যাই হোক ক্লাশ টেষ্টে পাশ করলাম। মাধবী হলো প্রথম, আমি দ্বিতীয়। মাধবী ক্লাশ টেনের ফার্ষ্ট গার্ল, মানে ওর রোল এক। খুব অহঙ্কারী ছিলো কিন্তু কি কারণে জানি আমার সাথে মিশে গেলো। ইব্রাহিম স্যার সেটা দেখে আমায় উনার রুমে ডাকলেন। যাবার পর বললেন কেন মাধবীর সাথে মিশছি আমি? প্রথমে বুঝিনি ব্যাপার কি! স্যার সেভাবে বলেননি কিছু। শুধু বললেন আমি যেনো খুব বেশী আন্তরিকভাবে না মিশি। যদিও আমি প্রি-টেষ্ট পরীক্ষা দিতে পারিনি, কিন্তু টেষ্ট পরীক্ষা দিয়েছিলাম। টেষ্ট পরীক্ষার পর স্কুলে আসতাম প্র্যাক্টিক্যাল আর ইংরেজী-অঙ্ক ক্লাশ করতে।
**ঘটনাসূত্রে একটা ছোট্ট ঘটনা মনে এসে গেলো। চা’ বাগানের এক কাকুর বাসায় অতিথি এসেছিলো, তো সেই বাসার কাকীমনি আর পিসী ওই অতিথিকে নিয়ে আমাদের বাসায় বেড়াতে এলেন। সুদর্শন যুবক। কিন্তু সমস্যা হলো আমি উনাকে বয়ফ্রেন্ড হিসেবে দেখিনি। বরং বয়সে বড়ো এবং কাকুর কাজিন বলে প্রণাম করেছিলাম। তো উনি একটা চিঠি আমায় পাঠালেন উনারই এক বোনকে দিয়ে। সেটা আমি ফিরিয়ে দিলাম। কিছুদিন পর ডাকযোগে চিঠি হয় আমি প্রেমে রাজি হবো, নয়তো আমাকে এসিড মারবে। আমাদের বাসায় কেউ কারো চিঠি খুলে পড়তো না, বাপি-মামনিকে তাই জানাইনি চিন্তা করবে। আমার দাদাকে মানে বড়ো ভাইকে চিঠিটা দিলাম। এমন হলো ভয়ে স্কুল যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলাম। দাদা তারপর বাপি-মামনির সাথে আলাপ করে। তারপর কি হয়েছিলো জানিনা, তবে ওই লোক এসে ক্ষমা চেয়েছিলো। **
তো সেই সময় স্কুল না যাওয়ার কারণে ইব্রাহিম স্যার একদিন বাসায় এলেন। কি ব্যাপার আমি স্কুলে যাচ্ছি না কেন। শরীর ভালো আছে তো আমার? আমার একটা স্বভাব ছিলো স্যারদের হাত তুলে সম্মান জানানোর পাশাপাশি প্রণামও করতাম। স্যারকেও সেটাই করলাম। তখন বাপিকে বললেন, “আদাব-নমষ্কার সবই পাই করুণা দাদা। কিন্তু মন থেকে সম্মান এই মেয়েটার থেকে পাই (এসব লিখছি নিজের সুনাম বৃদ্ধির জন্য নয়। এমনকি অহঙ্কারী হিসেবেও নয়। ভালো কথাগুলো কেউ কখনো ভুলে যেতে পারেনা। আর এটা লিখতে গিয়ে এক এক করে অনেক কথা মনে চলে আসছে। তাই লিখছি।)।” আসলে স্যার খুব বেশী চিন্তিত ছিলেন ক্লাশে আমার অনুপস্থিতি নিয়ে। তারপর যখন জানলেন বাপিকে বললেন উনি একজন কাউকে পাঠিয়ে দেবেন আমায় স্কুল থেকে নিয়ে এবং দিয়ে যেতে। কিন্তু বাপি বললো একটু ঠিক হয়ে নিক সব, তারপর স্কুলে যাবো। তবে স্যার আসতেন সপ্তাহে দু’দিন করে। এস.এস.সি পরীক্ষার পর স্যার আরেকদিন এলেন, জানতে চাইলেন রেজাল্ট দেয়ার পর কোথায় ভর্তি হবো? তখনও ঠিক জানিনা আমি। তবে যেদিন রেজাল্ট পেলাম, স্যার বাসায় এসেছিলেন। কেঁদেছিলেন, আমি প্রথম বিভাগ পাইনি তাই। মার্কশিট পাবার পর বাপি ঠিক করলো চ্যালেঞ্জ করবে কারণ আমি বাংলা দ্বিতীয় পত্রে মাত্র তেত্রিশ পেয়েছি, আর সেটা অসম্ভব। স্যার বাপিকে বললেন চ্যালেঞ্জ না করে রি-এক্সামিন করাতে। পরে শুনেছি রি-এক্সামিনে কিছু হয়না, চ্যালেঞ্জ করা উচিৎ ছিলো। স্যার যখন জানলেন এসে আমায় বললেন, “নীলাঞ্জনা ভুল হয়ে গেছে। আমায় ভুল বুঝোনা। মাঝে-মধ্যে শিক্ষকরাও ভুল করে।” আমি স্যারকে কখনোই ভুল বুঝিনি। যদিও স্যারের সাথে অতোটা ক্লোজ ছিলাম না, কিন্তু স্যারের আবেগ ছিলো আমার প্রতি। স্যারের স্ত্রী ম্যাডামও খুব ভালো ছিলেন। কলেজে ভর্তির আগে একদিন স্যারের বাসায় গিয়েছি, ম্যাডাম অনেক যত্ন করলেন। সেমাই বানালেন। আসার সময় বলেছিলেন, “নীলাঞ্জনা আবার এসো।” আর যাওয়া হয়নি। কিভাবে যাবো? আমরা তো পেছন ফিরতে পারিনা, সময় কোথায়? চলার পথেই বা ক’জনকে সময় দেই?
শিবাণী ম্যাডাম ঃ-
স্কুলের সকল ছাত্রীরাই ম্যাডামকে ভয় পেতো। জানিনা কেন! উনার ক্লাশ খুব কমই করেছি। রোগা-পাতলা ছিপছিপে দেখতে ছিলেন ম্যাডাম। মাথা উঁচু করে হাঁটতেন। ম্যাডাম বাংলা পড়াতেন। উনার মুখে হাসি নাকি কোনো ছাত্রী-ই দেখেনি, সহপাঠিরা বলেছিলো। যাই হোক ম্যাডামের সাথে আমার প্রথম কথা ক্লাশে। একটা কবিতার সারাংশ নিজের ভাষায় লিখে সেটা পড়ে শোনাতে হবে, তাও নিজের লেখা না দেখে। মাথায় হাত, নিজের ভাষায় লিখবো সে নয় ঠিক আছে। সেই লেখা না দেখে আবার মুখে বলা, এ কেমন কথা! কিন্তু ম্যাডাম এমনই নাকি। যাক লিখলাম। এবার ডায়াসের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলা শুরু করলাম। একটা শব্দ “আষাঢ়”-এর “ঢ়” উচ্চারণে থামিয়ে দিলেন ম্যাডাম। বললেন, “নীলাঞ্জনা আবার বলো।” বুঝতে পারছিলাম না উচ্চারণ তো ঠিকই আছে। মামনি তো এভাবেই শিখিয়েছিলো। যাক আবার বললাম। এবার ম্যাডাম এক এক করে ক্লাশের সকলকে বললেন “আষাঢ়” শব্দের উচ্চারণ করতে। “ঢ়”-এর উচ্চারণ শেখানোর চেষ্টা বৃথা হলো সেদিন, কারণ ঘন্টা পড়ে গেলো। যাবার সময় ম্যাডাম বললেন পরেরদিন যেনো দেখা করি। পরেরদিন টিফিন পিরিয়ডে সিঁড়িতে বসে আছি, হঠাৎ ম্যাডাম আমার সামনে। সেদিনকার কথোপকথন আমি ডায়েরীতে লিখে রেখেছিলাম। সেই ডায়েরী এখন নেই। কিন্তু কথাগুলো মনের খাতায় আছে। এমনি কিছু কথা বলে তারপর প্রথম প্রশ্ন করলেন,
ম্যাডাম – অক্ষরের উচ্চারণ কে শিখিয়েছে?
আমি- আমার মামনি।
ম্যাডাম – শুনেছি উনি টিচার, তাই না?
আমি – হ্যা ম্যাডাম।
ম্যাডাম – এই যে বাবা-মা শেখাচ্ছেন কাজে কি আসছে কিছু জীবনে? (আমি মাথা নীচে করে রাখলাম। কারণ কি বলবো, বুঝতে পারছিলাম না।) মাথা নীচু করে আছো কেন? প্রশ্নের উত্তর না পেলে সরাসরি বলবে। যারা অন্যায় করে, একমাত্র তারাই মাথা নুয়ে রাখে।
আমি – ম্যাডাম গুরুজনদের সামনে মাথা নুয়ে রাখতে হয় না?
ম্যাডাম – না, হয় না। আচ্ছা বলো কয় ভাই-বোন তোমরা?
আমি – দুই বোন।
ম্যাডাম – বড়ো হয়ে বিয়ে করবে, তারপর নিজের সংসার। বাবা-মায়ের কথা কি মাথায় রাখো? (আমি কি লজ্জ্বা! বিয়ের কথা, ইস রে!!) শোনো আমাদের সমাজ-ব্যবস্থায় মেয়েরা নাকি পরের সম্পত্তি, মানুষ কখনো সম্পত্তি হয়না, হতে পারেনা। একজন ছেলেও যা, একজন মেয়েও তা। কথাটা মনে রেখো। তোমার বিশাল দায়িত্ত্ব একজন সন্তান হিসেবে। বাবা-মায়ের যত্ন নিও যখন নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ঠিক আছে?
আমি – ঠিক আছে ম্যাডাম।
মাথায় একটা হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। মাধবী দৌঁড়ে এলো জানতে। কিছু বলিনি। তবে এটা ঠিক সেদিনই প্রথম মাথায় ঢুকলো বাপি-মামনির জন্য আমার করতে হবে। পরীক্ষার পর স্কুল থেকে চলে এলাম, আর দেখা হয়নি ম্যাডামের সাথে। জানিনা কেমন আছেন? আমরা জীবনে সবচেয়ে বড়ো ভুল করি, শিক্ষকদের ঠিকানা রাখিনা। একটা জীবন গড়ে তুলতে কতো শিক্ষার যে প্রয়োজন। বাংলার শিক্ষক শিবাণী ম্যাডাম, কিন্তু আমায় উনি দায়িত্ত্ব পালনের শিক্ষা দিলেন। শুধু মাত্র একটি শব্দের সঠিক উচ্চারণ করে কতো বিশাল একটা শিক্ষা পেলাম, এ ঋণ কি শোধ করা যাবে আদৌ?
ক্রমশ
হ্যামিল্টন, কানাডা
৩ আগষ্ট, ২০১৬ ইং।
৩৮টি মন্তব্য
রিমি রুম্মান
মাধবীর সাথে মিশতে বারন করেছিল কেন, জানতে ইচ্ছে করছে। অহংকারী বলে ? নাকি অন্য কারন ? তবে সুন্দরী হইলে এই এক সমস্যা … এসিড মারার হুমকি দিয়ে প্রেমে রাজি করানো 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি আসলে সেটা জিজ্ঞাসা করিনি। স্যারও বলেননি। তবে মাধবীকে দেখেছিলাম ক্লাশ টেনেই একটা ছেলের সাথে প্রেম। আবার দুই মাস পর দেখি আরেকজন। তারপর শুনেছি বাবা-মাকে না জানিয়ে আরেকটা অন্য ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে। সেই ছেলের সাথে আবার ছাড়াছাড়িও হয়ে গেছে। আর জানিনা কোনো খবর। স্যার মনে হয় বুঝেছিলেন, তাই মিশতে না করেছিলেন আমায়।
রিমি আপু ১৯৮৯/’৯০ এর দিকে এই এসিড সন্ত্রাস খুব ছিলো। সুন্দরী-বান্দরী না, মেয়ে হলেই ছুঁড়তো। যেসব মেয়েরা প্রত্যাখ্যান করতো, তাদের কপালে জুটতোই। তবে তুমি যখন বললে, তার মানে আমি সুন্দরী। :p 😀 \|/
তোমার জন্য -{@
মৌনতা রিতু
গত দুইদিন মন এলোমেলো ছিল, তাই মন্তব্য ঠিকমতো করতে পারিনি।
নীলা আপু যে অত্যান্ত মিষ্টি মুখের তা তো আমরা জানিই। পুরাতন ছবিগুলো দেখছ না, রিমি আপু?
তাইলে বলো,এমন বালিকার প্রেমে না ভাসলে কার না রাগে দুঃখে চেল ছিঁড়তে ইচ্ছে করবে। :p
আমাকে একবার আমাদের হসপিটালের ক্যামপাসের মধ্যে এসে এসিড মারতে চাইছিল। আমি উল্টা আব্বার প্যথলজি রুমের বোতল এনে দাবড়ানি দিছিলাম। সত্যি। সেই থেকে আমাকে দেখলেই ওরা ভয়ে পালাতো।
তাই বলে, মুই কিন্তু সুন্দরী না।
নীলাঞ্জনা নীলা
মৌনতা আপু ইন্টারে যখন ভর্তি হলাম আমি মারাত্মক হয়ে উঠেছিলাম। শয়তান পোলাগুলো কি যে ভয় পেতো! 😀
ওই বালিকার প্রেমে যে ভেসেছে, সে-ই মরেছে। :p
জানো কেন? আমার বর তরুণ জানে কারণ। \|/ :D)
শুন্য শুন্যালয়
তোমার টিচার ভাগ্য আসলেই ভালো আপু। এতো এতো ভালো টিচারের সংস্পর্শ পাওয়া সৌভাগ্যের।
বাংলা দ্বিতীয় পত্রে কম মার্কস পেয়েই মেয়ে রাগ করে বাংলার কবি হয়ে গেলো 😀
তোমার শিবানী ম্যাডামের জন্য আমার অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা রইলো আপু, এই মানুষগুলো এখন কেমন আছেন? জানতে মন চায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু ঠিক বলেছো। জীবনে এতো ভালো শিক্ষক আমার মতো মেয়ে পেয়েছে।
রাগ করে কবি হওয়া যায় নাকি!!! 😮 আমি তো জানতামই না।
তাহলে তোমার রাগ আছে? আজ জানলাম কবিদের রাগ থাকে। :p
আজ মামনিকে বললাম শিবাণী ম্যাডামের কথা, মামনি বললো ম্যাডাম নাকি ভানুগাছের কালীবাড়ীর কাছেই থাকেন। সেই একই আগের মতোই নাকি আছেন। শুনে কি যে ভালো লেগেছে। 🙂
খেয়ালী মেয়ে
বড় হওয়ার পর আমরা আমাদের জীবনে শিক্ষকদের ভূমিকার কথা ভূলে যাই,,
স্মৃতিচারণে শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা ফুটে উঠেছে, সুন্দর লেখা (y)
কিন্তু মেয়েটির সাথে কেনো মিশতে নিষেধ করেছিলো খুব জানতে ইচ্ছে করছে ;?
নীলাঞ্জনা নীলা
পরী আপু শিক্ষকদের নিয়ে লেখার চিন্তা আমার অনেক বছর আগেই ছিলো। কিন্তু লেখা হয়ে ওঠেনি। সেদিন জসীম স্যারকে স্বপ্নে দেখার পরই মনে হলো আর না, এবার লিখতেই হবে।
মাধবীর চরিত্রের সাথে আমার চরিত্র আসলে খাপ খায়না। প্রেম হলো পবিত্র। আর মাধবীর মতো কিছু মেয়েদের জন্য সকল নারীদেরকে ছলনাময়ী বলা হয়। তবে স্যার ওর সম্পর্কে আমায় কিছুই বলেননি। পরে সব দেখেছি এবং জেনেছি।
হাবিব শুভ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ??? বাহ আমিও ত এখানের। কমলগঞ্জের শমশের নগর আমার বাড়ি।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি শমশেরনগরের? কোথায়? যতোটুকু মনে হয় আমাকে এখনও অনেকেই চেনে।
শমশেরনগর চা’ বাগান আমার আত্মার অংশ।
হাবিব শুভ
শমশের নগরের শিংরাউলী। সুজা কলেজের পাশেই
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি তিন বছর সুজা মেমোরিয়াল কলেজে শিক্ষকতা করেছি। আমরা তখন শমশেরনগর চা’ বাগানে থাকতাম।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আহা! শিবানী ম্যাডাম!! এমন ঋণ কি শোধ করা যায় আদৌ?
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু এমন ঋণ কোনোদিনই শোধ করা যায়না।
মৌনতা রিতু
জীবন সত্যি একটা শিক্ষা ক্ষেত্র। আমরা পিছনে ফিরতে পারি না। কিন্তু সামনে হঠাৎ দূরে যেতেও পারি না।
তোমার অনুভূতি প্রকাশ নিয়ে কিছু বলব না।
তা তো তুমি জানেই।
স্যার ম্যাডামদের অনেক শ্রদ্ধা।
নীলাঞ্জনা নীলা
মৌনতা আপু স্যার-ম্যাডামরা ভালো থাকুন। এটাই প্রার্থনা করি।
ছাইরাছ হেলাল
চিডি-ফিডি ছোড কালেই শুরু হইছে দেখা যায়।
এ দেখছি স্যারময় জীবন।
শিবানী ম্যাডামের কথাই তো ফলে গেছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
যার যেমন স্বভাব! কেউ চিডির কথাই কইলো না। আপনার নজর দেখি খালি ওইদিকেই!!! :p
চিডি যে কতো আমার বাপি পড়ছে, বেচারাগো চিডি আমার হাতে কোনোকালে আইসা পড়ে নাই। যেইভাবে আসছে ওইভাবেই পাচার কইরা দিছি বাপির হাতে।
মজা হলো বাপিকে ইন্টারে জিজ্ঞাসা করলাম, সব চিঠি তুমি পড়ো। একটাও কি পছন্দ হয়না? বাপি বললো, “এতো বানান ভুল, লজ্জ্বাও নেই এদের আবার চিঠি পাঠায়!” :D) :D)
শিবাণী ম্যাডামই প্রথম মাথায় ঢুকিয়েছিলেন বাবা-মায়ের দিকে আজীবন যেনো লক্ষ্য রাখি। সেই তখন থেকেই আমি ভাবতাম মামনি-বাপির সকল দায়িত্ত্ব আমার। আর ঈশ্বর সহায় সকল বাধা কাটিয়েও দিচ্ছে।
জিসান শা ইকরাম
স্যারদের নিয়ে কত স্মৃতি 🙂
স্যারদের এমন শ্নেহ পাইনি আমি। তবে স্যারদের সাথে দেখা হলে এখনো পায়ে হাত দিয়ে সালাম করি।
বাংলা দ্বিতীয় পত্রে কোনো পরীক্ষায় ৮০ এর কম পাইনি, এমনকি মেট্রিকেও 🙂
এরপরেও আমি সাহিত্যিক হতে পারিনি, আর তুমি হয়ে গিয়েছো, এতেই প্রমাণিত হয়, তোমার পরীক্ষক ভুল করেছিলেন।
লেখা চলুক।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আরোও কয়েকজন শিক্ষকের গল্প করবো, যাঁরা এ জীবনটার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন।
এতো ভালোবাসা পেয়েছি, সত্যি ভেবে পাইনা এ কিভাবে সম্ভব!
নানা শোনো লেটার মার্কস পেয়েও কেউ লিখতে পারেনা। আবার বোর্ডে স্ট্যান্ড করেও লেখক হওয়া যায়না।
লেখা তো আবেগ থেকে আসে। তরুণ তো গোল্ড মেডেলিষ্ট, পি.এইচ.ডি করেছে। ওকে লিখতে দাও তো! দৌঁড়াবে। :D)
তোমরা ভালোবাসছো বলেই তো লেখাটা চলছে। -{@
জিসান শা ইকরাম
আমার ধারনা তরুন ইচ্ছে করে লেখেনা,
সে ফান পারে খুবই, একটি সময়ে পোস্টের আড্ডায় দেখেছি ফানি জামাইকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা ও লিখতে পারেনা। মজা করে আড্ডা দেয়। কিন্তু কতোবার বলেছি আচ্ছা ডায়েরী-ই লেখো। তারপর বলেছে আসলেই সে লিখতে পারেনা। তবে হুম অঙ্ক নিয়ে খুব গবেষণা করতে পারে। আরে সে গল্পের বই-ই পড়তো পৃষ্ঠা দেখে। 😀 যেটা বেশী ছোট সাইজে, সেসব। হাসতে হাসতে শেষ। বুদ্ধদেব গুহের “মাধুকরী” বইটাই নাকি একমাত্র বড়ো বই যেটা সে পড়েছে অনেকগুলো মাস নয়, বছর লাগিয়ে। তাহলেই বোঝো। :D)
আবু খায়ের আনিছ
দিদি, মিললো কেমনে? ইব্রাহীম আমার প্রথম জীবনের শিক্ষক।
উনি আমার বাবার চাচাত ভাই সুত্রে আমার জেঠো হয়। সবার বেলাই উনি খুব সরল সহজ শিক্ষক,আমার বেলায় উনি সবচেয়ে কঠিন। কতবার যে কান মলা খেয়েছি, চুন থেকে পান খসলেই হলো।
অনেকদিন পর এসিড সন্ত্রাস এর কথা মনে পড়লো। সমাজে এখন এটার চলন নাই বললেই চলে এই ভেবে ভালো লাগে। খুব ভয়ংকর ছিলো এক সময় এই সন্ত্রাস।
শুভ কামনা দিদি।
নীলাঞ্জনা নীলা
আনিছ ভাইয়া আমাদের জীবনে এমন কিছু শিক্ষক আছেন, যাঁদের নাম মিলে যায়।
ইস যদি দেখতে পারতাম আপনার কান কিভাবে মলেছে ইব্রাহীম স্যার। :p 😀
হুম সেই সময় এই এসিড সন্ত্রাস খুব বেশী ছিলো। এখন এসিড না, এসেছে অর্ধমৃত্যু।
ভালো থাকুন।
আবু খায়ের আনিছ
ঠিক তাই আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
🙂 -{@
ইলিয়াস মাসুদ
আমার আবার শিক্ষক কপাল এত ভাল না,স্যার রা আমাকে খুব মারতো দিদি,স্কুল শিক্ষক মানেই বেত আর ডাস্টার।
ভাল লাগছে স্মৃতি থেকে এত দারুন লেখা গুলো
নীলাঞ্জনা নীলা
মার খেয়েছেন বলেই তো এতো ভালো একজন মানুষ হয়েছেন। আমি মার খাইনি তাই বেশী দুষ্টু হয়েছি। 😀
চেষ্টায় আছি সবার কথা বলার।
মিষ্টি জিন
জিবনে অনেক ভাল ভাল শিক্ষক পেয়েছেন আপনি।
শিক্ষকদের দেয়া প্রত্যেকটা উপদেশ যদি মনে রাখা যেত.., কত সুন্দর ই না হোত জিবন টা.,
নীলাঞ্জনা নীলা
অনেক কিছু ভুলে গেলেও শিক্ষকদের অনেকগুলো কথা মনেই থেকে গেছে। যখন লিখি, তখন এমনভাবে মনে চলে আসে যেনো আমি রেকর্ড শুনছি।
আপু ঠিক বলেছেন, অনেক ভালো শিক্ষক এ জীবনে এসেছে।
ইঞ্জা
স্কুল জীবনটাই আসল জীবন যা কখনো মন থেকে মুছে যেতে পারেনা আপু কিন্তু কলেজ, ইউনিভারসিটির লাইফ কিন্তু তেমন মনে পড়ে না, লিখে যান অপেক্ষায় থাকলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
আসলে তা জানিনা আমি। এ জীবনে যেমন ভালো বন্ধু পেয়েছি, তেমনি শিক্ষকও। কলেজ আমায় নতূন জীবন দিয়েছে। আর অনার্স-মাষ্টার্স জীবনে এমন কিছু শিক্ষকের মুখোমুখি হয়েছি কিছুতেই ভুলতে পারবো না।
লেখা লিখে যাবার চেষ্টায় থাকি আমিও।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালো থাকুন সতত।
মেহেরী তাজ
আপু আমার ও আপনার শিবানী ম্যাডাম মত এক ম্যাডাম এর কথা মনে পড়ল! উনি আমার টিচার ছিলেন না! গার্হস্থ অর্থনীতি টিচার ছিলেন আমি ছিলাম কম্পিউটার স্টুডেন্ট। তাও উনি আমায় অনেক ভালোবাসতেন। কিন্তু আশ্চর্য আমি উনার নাম মনে করতে পারছি না!
নীলাঞ্জনা নীলা
পিচ্চি আপু নাম আমারও অনেক শিক্ষকের মনে নেই। কিন্তু উনাদের শিক্ষা আমার মনে থেকেই গেছে।
এই যে আপনি ওই ম্যাডামকে মনে রেখেছেন! উনার আদর-ভালোবাসা।
একদিন ঠিক ম্যাডামের নাম মনে পড়বেই।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হাজারো স্মৃতিময় একটি অধ্যায়…. পড়লাম এবং মুগ্ধ হলাম। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
মনির ভাই স্মৃতিগুলো বড়ো জীবন্ত।
ভালো থাকুন নিরন্তর। -{@