রংধনু রঙয়ের ছোঁয়া

জিসান শা ইকরাম ২ জুলাই ২০১৫, বৃহস্পতিবার, ১০:৩১:০৪অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি, সমসাময়িক ৪২ মন্তব্য

Rongdhonu 2
হঠাৎ করেই ফেইসবুকে অনেকের প্রফাইল পিকচারে দেখি রঙধনুর সাত রঙের ছোয়া। ভালো লাগছিল দেখে এমন প্রফাইল পিকচার গুলো। সাথে সাথে চিন্তা এলো মাথায়, কোন কিছু কি মিস করেছি? এরা কি কোন গ্রুপে এড হয়েছে? নাকি কোন ইভেন্টে এ যাচ্ছেন সাত রঙের ছোয়ায় নিজ প্রফাইল পিকচার রাঙিয়ে ?

এরপর  খোঁজ দ্যা সার্চঃ
যা পেলাম তাতে টাস্কিত হয়ে গেলাম। রংধনুর সাত রং ফেসবুকে যোগ করেছেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মার্ক জ্যুকারবার্গ। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেলিব্রেট প্রাইড’। কেন যোগ করলেন রংধনুর সাত রং ? কাহিনী হচ্ছে, ২৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সে দেশে সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেওয়া হয়। আর সেই উপলক্ষেই জ্যুকারবার্গ চালু করলেন নতুন এই টুল। সাত রং দিয়ে এখানে বোঝানো হচ্ছে মানবসমাজে বৈচিত্র্য আছে এবং তাদের সবারই রয়েছে সমান অধিকার। জ্যুকারবার্গ ফেসবুকে নিজের এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি আমার সব বন্ধু এবং কমিউনিটির লোকজনের জন্য আনন্দিত, যাঁরা এখন প্রকাশ্যে নিজেদের ভালোবাসার কথা সবাইকে জানাতে পারবেন এবং ভালোবাসা উদযাপন করতে আর কোনো বাঁধা থাকবে না। আইনের চোখে এখন সবাই সমান অধিকার পেল। তবে এখনো সমতাভিত্তিক সমাজ গড়তে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। তবে ভয় নেই, কারণ আমরা সঠিক পথেই আছি।’
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শুধু ফেসবুকই নয়, অ্যাপলও সমকামীদের সহায়তা দিয়ে আসছে। ১৯৯৩ সাল থেকেই নিজেদের লভ্যাংশের একটি অংশ তারা সমকামীদের কল্যাণে ব্যয় করে থাকে। অ্যাপলের সিইও টিম কুক অনেক আগেই প্রকাশ্যে নিজেকে সমকামী বলে দাবি করেছেন এবং তিনি জানিয়েছেন এ নিয়ে তিনি গর্বিত। এ ছাড়া গুগল, অ্যামাজন এবং মাইক্রোসফট এ বিষয়ে নিজেদের সমর্থন জানিয়েছে।

সমকামীদের বিয়ের সমর্থনে মার্ক জাকারবার্গের প্রোফাইল পিকচারেও রংধনুর ছোঁয়া।
সমকামীদের বিয়ের সমর্থনে মার্ক জাকারবার্গের প্রোফাইল পিকচারেও রংধনুর ছোঁয়া।

কেউ যদি সমকামী বিয়েকে সমর্থন করেন তবে  প্রোফাইলে রং লাগাতে পারেন তিনিও। শামিল হতে পারেন উৎসবে।তাহলে যেতে হবে এই পেজে।   সেখানে গেলেই আপনার প্রোফাইল পিকচার রংধনুর রংয়ে বদলে যাবে এবং আপনি চাইলে সেটাকে প্রোফাইল পিকচার করতে পারেন। অন্তত গিয়ে দেখতে পারেন কেমন লাগে আপনাকে দেখতে।
আমি গিয়েছিলাম, দেখলাম আমাকে কেমন দেখায়।

******************************************************************
কি দিনকাল আসলো এখন? আমাদের স্কুল কলেজ জীবনে সহজ স্বাভাবিক প্রেমকেও সহজে স্বীকার করতো না কেউ।ছেলেরা যাও বা কিছু স্বীকার করতো মেয়েরা তো একদম চুপ। কেমন একটি লজ্জার বিষয় ছিল প্রেম প্রকাশ হওয়া।
আর এখন?
ছেলে মেয়ে উভয়েই ফেইসবুকে লিখে রাখে ইন এ রিলেশনশিপ।কদিন পরেই দেখি আবার ওপেন রিলেশনশিপ/কমপ্লিকেটেড ইত্যাদি ইত্যাদি। সকালে আরম্ভ বিকেলে ব্রেক-আপ। কত স্মার্টলি লিখে ফেলে সব,জানিয়ে দেয় সব কিছু। হয়ত এই প্রকাশ করা ভালো, তবে রিলেশনের এই দ্রুত ভাঙ্গা গড়া রিলেশনশিপকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। এত সহজ আর সস্তা একটি সম্পর্ক?
লজ্জা কিছুটা কি থাকা উচিৎ না আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়? আমেরিকা বা কানাডার সমাজ ব্যবস্থা কি আমাদের এখানে আছে? আমরা ফেইসবুকের এবাউট মি তে লিখি ইন্টারেস্টের স্থানে , পুরুষ এবং মহিলা। এই ঘোষনা তো আমেরিকা বা কানাডায় ভিন্ন অর্থ বহন করে।
সমকামিকতাকেও প্রকাশ্যে সমর্থন দেয়া বন্ধুর পরিমান ফেইসবুকে কম নয়। লজ্জা একটি সময়ে আমাদের অভিধানেই হয়ত থাকবে।বাস্তবে নয়।

আগত দিনঃ
মর্তুজা সাহেব বন্ধু বাৎসল্য একজন মানুষ।সুন্দরী স্ত্রীর চাপে থাকেন সব সময়। কোন মহিলার দিকে তাকালেই বাসায় কুরুক্ষেত্র। পুরুষ বন্ধুদের সাথে সময় কাটান মাঝে মাঝে।
এখন তাও বন্ধ। ‘এসব পুরুষ বন্ধুও বাদ আজ থেকে, বিশ্বাস করা যায় না’ – মর্তুজা সাহেবের স্ত্রীর শক্ত কথা এটি।
সোহাগী এখন আর তার বান্ধবীদের সাথে বিয়ের পর আড্ডা দিতে পারেন না। স্বামীর সন্দেহ হলের রুমমেট এই সব বান্ধবীদের সাথে অন্য সম্পর্কও থাকতে পারে সোহাগীর।

সুস্থ্য সুন্দর স্বাভাবিক সম্পর্কের মাঝেই থাকি আমরা। কোন অসুন্দর না আসুক আমাদের মাঝে।

২৫৪৩জন ২৫৪৩জন
0 Shares

৪২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ