প্রিয় বৈচীবনের বিরহে কাতর নারী,
আমি ছিলাম অভিমানের দোলাচলে, আর অনুভুতিরা রয়ে গেছে সব অব্যক্ত। তাই লিখছি, তবে সম্ভাবনা প্রায় শুন্য এ চিঠি আপনি পর্যন্ত পৌছনোর।
আপনি যখন কারও কমেন্টের উত্তর হাসির ইমু দেন, বা কারো স্ট্যাটাসে হেসে কমেন্ট করেন, আমি ঈর্ষায় নীল হয়ে যাই। অদ্ভূত এক জ্বালাপোড়া হয় ভেতরে। এ অনুভূতি আমার অচেনা। মনে হয় তার সাথে সত্যিই হেসে হেসে কথা বলছেন, কেন হেসে কথা বলবেন?
এই অভিমান নিয়ে আমি আরো দুরে সরে যাই। অথচ আমি যে আপনার বন্ধু তালিকায় আছি তাও হয়তো আপনি জানেন না।
আমি হাতে আকা এই সাদাকালো প্রোফাইল ছবির পিছনের মানুষকে বুঝতে চেয়েছি, লেখা গুলো পড়ে। ভেবে ভেবে আপনার যে ছবি একেছি, তার পায়ে এক জীবনের সবটুকু পুন্য অঞ্জলি দেওয়া যায় অবলীলায়।
আপনি জানেন না আপনার লেখা পড়ে কতকিছু ইচ্ছে হয়, যখন বৈচি বনের বিরহের কথা লেখেন, ইচ্ছে হয় আপনার দুঃখকে আমার দুঃখের চাদরে ঢাকি।
যখন গভীর মমতায় লেখেন রোগীদের কথা, বিদেশী বাবার কথা, ইচ্ছে হয় আপনার রোগীদের সাথে ওয়েটিং রুমের এক কর্নারে বসে থাকি। একনা একদিন আপনি নিশ্চয়ই কাছে এসে বলবেন, কি হয়েছে দেখি? জ্বর?
বলে মমতা মাখা হাত ছোয়াবেন কপালে।
আমি অমর হবো।
আপনি যখন হোলির রং এ রাঙ্গান ভার্চুয়াল দুনিয়া, আমার তখন রং খেলতে ইচ্ছে করে। কিন্ত আমি ফটকের বাইরে থেকেই দেখি, উৎসবে সামিল হইনা। জগৎ আনন্দ যজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ নেই।
আপনি যখন আক্ষেপ করে রবিবাবুর লাইন দেন “……” এমন করে কেউ ডাকলো না। আমি দুর থেকে বলি “হৃদি ভেসে গেলো অলকানন্দা জলে।
যখন জলের আয়না দিয়ে সাজান দেয়াল, সে আয়নায় মুখ দেখতে ইচ্ছে হয়।
যখন চায়ের কাপ নিয়ে বসেন, তার থেকে অল্প একটু উষ্ণতার ভাগ পেতে ইচ্ছে হয়।
কত কিই তো ইচ্ছে হয়।
হোক, কি আসে যায়।
এক জনমে দু রকমের আলো পাওয়া হয়না।
আমি মানুষ হিসেবে অসম্ভব গর্বিত, নিজেকে নিয়েই। তাই যেচে কোনদিন বলবোনা ভালোবাসি, শুধু আপনার পায়ের কাছে আমার উষ্ণীষ আর তরবারি নামিয়ে রেখে মুখোমুখি দাড়াতে চাই, একবার।
ইতি
আপনার দীপাবলীতে ব্রাত্য একজন
নোট : এই চিঠির সকল চরিত্র কাল্পনিক, বাস্তব বা ভার্চুয়াল কারও সাথে মিলে গেলে তা নিতান্তই কাকতাল মাত্র।
৪৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
এক কথায় অসাধারন,
চিঠির প্রতিযোগিতা না হলে তো এমন নৈবদ্যপূর্ন অপ্রকাশিত চিঠির স্থান হতো হিমাগারে।
অপেক্ষার হবে অবসান একদিন, এমন চিঠি পড়ে ‘ বৈচীবনের বিরহে কাতর নারী ‘ তো মম হয়ে গলে পড়বে।
হুম জানিতো, এই চিঠির সকল চরিত্র কাল্পনিক 🙂
প্রবাসের প্রতিটি ক্ষণ ভালো কাটুক।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ দাদা, এই আইডিয়া যার তারে আমার পক্ষ থেকে থ্যাঙ্কস জানায় দিয়েন।
ভালোবাসা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
তারে আপনার পক্ষ হতে ধন্যবাদ দিছি, ভালোবাসা জানাইছি 🙂
আগুন রঙের শিমুল
(3
ইকরাম মাহমুদ
চিঠির আমল ফুরিয়েছে অনেক আগেই। পরীক্ষার খাতা ছাড়া চিঠি লেখা হয়নি কোনোদিন। চিঠির ভাষা কেমন হতে পারে তা জানা হতো না যদি না এমন আয়োজন করতো সোনেলা। আইডিয়া যার তাকে ধন্যবাদ অসংখ্য। অনেক সুন্দর একটি চিঠি পড়ার সৌভাগ্য হলো।
আগুন রঙের শিমুল
হু, আইডিয়া যার সে একটা বিগ থ্যাংকস পেতেই পারে 😀 লং টাইম লেখা হয়না, অন্তত এই আইডিয়ার জন্যই লিখলাম তো।
থ্যাঙ্কিউ
নীলাঞ্জনা নীলা
কাল্পনিক চিঠি হোক তাতে কি! চিঠি তো!!
তাতেই হলো। কল্পনার মানুষটি এ পৃথিবীতে কোথাও না কোথাও আছে, একদিন দেখা হয়ে যেতেই পারে।
চিঠি ভালো হয়েছে।
আগুন রঙের শিমুল
আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো, জীবন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত 🙂 কাজে যাওয়া আসার ফাকে পড়ি আপনাদের লেখা … হয়তো দেখা হবে হয়তো হবেনা কি আসে যায় … hakuna matata 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
জীবনে যারা আসে তারা সময়ের প্রয়োজনেই আসে-যায়।
ধরে রাখতে চাইলে ধরে রাখা যায়না, আবার ছেড়ে দিয়ে যেতে চাইলেও ছেড়ে যাওয়া যায়না।
ব্যস্ততা অনেক ভালো জিনিস কিন্তু। 🙂
আগুন রঙের শিমুল
হু, ব্যস্ততা অনেক কিছুই ভুলিয়ে রাখে ব্যাপারটা এক সেন্সে খারাপ না 🙂
ব্লগার সজীব
শিমুল ভাইয়া অনেক দিন পরে আপনার মত আমিও লগইন হলাম চিঠি লেখার ইচ্ছে নিয়ে। আপনার চিঠি পড়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়াই তো কঠিন হয়ে গেল। এত সুন্দর চিঠি আপনার, কিভাবে লেখেন?
আগুন রঙের শিমুল
😮 কঠিন হবে ক্যান! আমি আপনার চিঠি পড়ার জন্য অধীর হইয়া আছি 🙂
ব্লগার সজীব
উড়নচণ্ডী মানুষ আমি ভাইয়া, স্থিরতা কম যে। তাই প্রথম প্রথম মন বসাতে পারিনা কিছুতেই। আমার চিঠির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন আপনি! ;? লজ্জা পেলাম ভাইয়া। তবে লজ্জিত হলেও চিঠি কিন্তু দেবো 🙂
আগুন রঙের শিমুল
ওকে, ভাইয়া ওয়েটিং
মেহেরী তাজ
ভাইয়া চিঠিপত্র কোন কালেই লিখিনি! ভেবেছিলাম এবার লিখেই ফেলবো!
কিন্তু এই প্রতিযোগিতা তো দিনদিন জটিলতর হয়ে যাচ্ছে!
আপনারা এতো ভালো লিখলে কেমনে কি?
আগুন রঙের শিমুল
মেহেরী,
এইটা কি প্রশংসা নাকি হুমকি ;?
একদফা একদাবী চিঠি লিখে জমা অবশ্যই দিবি :p
মেহেরী তাজ
আপনি যা ভাববেন তাই। প্রশংসা কিংবা হুমকি…… :p :p
আগুন রঙের শিমুল
😀
অরণ্য
দারুণ প্রকাশ!
শেষের ‘নোট:’টির প্রয়োজন আছে কিনা জানিনা। এটি না থাকলে আমার কাছে আরো বেশি ভাল লাগতো।
সত্যি যদি এ চিঠি হয় (কেবল লেখার জন্য লেখা নয়), তবে আমি বলব অসাধারণ! (y)
আগুন রঙের শিমুল
ডিস্ক্লেইমার দিয়ে নিজের পিঠ বাচাঁনোর চেষ্টা আরকি 😀
ধন্যবাদ আপনাকে
শুন্য শুন্যালয়
শিমূল ভাই আপনার জন্য প্রত্যেক মাসে, চাই কি প্রত্যেক দিনে একটি করে প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো, প্লিজ বলেন নিয়মিত লিখবেন 🙁
কী অসাধারণ করে সহজ শব্দে কঠিন একটা চিঠি লিখলেন! মুগ্ধ, মুগ্ধ।
আগুন রঙের শিমুল
ভয় পাইছি, সিরিয়াসলি 🙁
ছাইরাছ হেলাল
স্থান হিশেবে বৈচীবন অসাধারণ বলতেই হবে,
আর এই নৈবেদ্য পেলে স্বয়ং কালী দেবীও সংহার মূর্তি ছুঁড়ে ফেলে পা ছড়িয়ে বসে যাবে!!
কাকতাল হলেই বা অসুবিধা কী!!
হোক না যা কিছু হওয়ার।
নৈবেদ্য যুগ যুগ বেঁচে থাকুক।
আগুন রঙের শিমুল
সংহারী ই অন্নপূর্ণা 🙂 জলের মেঘ, মেঘের জল।
ভালোবাসা জানবেন
নীহারিকা জান্নাত
এমন চিঠি পড়ে যে কেউ মুগ্ধ হবে।
পাঠিয়ে দিন প্রিয়জনের ঠিকানায়।
আগুন রঙের শিমুল
প্রিয়জন বলে কিছু নেই, সব মিডিয়ার সৃষ্টি 🙂
ইঞ্জা
খুব ভালো চিঠি লেখেন আপনি বুঝায় যায় আর কল্পনার উনি যে আপনার জ্বর দেখবেন তখন কি হবে কল্পনায় ভাবছি, খুব ভালো লাগলো।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ ভাই 🙂 কল্পনার বেলুন ঠুস করে ফেটে যাবে তখন
ইঞ্জা
:D)
আগুন রঙের শিমুল
😀 :p
মিষ্টি জিন
এই চিঠি কাউকে একবার পাঠিয়েই দেখুন না।
মুগ্ধ হলাম।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া আমার কপালে নাই।
আগুন রঙের শিমুল
এই চিঠি পাঠিয়ে দেয়াও আমার কপালে নেই 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
মুগ্ধতা রেখে গেলাম। -{@
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ ভাই (3
মৌনতা রিতু
খুব আবদারি লেখা। অভিমান, ভালবাসা, আক্ষেপ সবই দেখছি জায়গা করে আছে। এমন কিছু হিংসেও ভাল লাগে।
‘দেখা হয়না তার সাথে প্রতিনিয়ত প্রতিক্ষণে
জানি দেখি ভালোই আছো।’
অনেক ভাল লাগলো চিঠি পড়ে।
ভাল থাকুন। শুভকামনা রইলো।
আগুন রঙের শিমুল
আপনার জন্যও শুভকামনা 🙂
চাটিগাঁ থেকে বাহার
প্রেমে গদগদ, ভালবাসায় খাঁদ নেই নি:স্বন্দেহে। অন্তরের অন্তস্থল থেকে যেন বেরিয়ে আসছিলো প্রতিটি বর্ণ, যেন প্রিয়ার কণ্ঠে লকেট এক স্বর্ণ।
খুবই সুন্দর ও হৃদয় স্পর্শী হয়েছে চিঠি। -{@ -{@
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ (3
আবু খায়ের আনিছ
প্রতিযোগীতা না হলে এমন ভাচুর্য়্যাল প্রেমের চিঠি কি আমরা পেতাম? এক কথায় অসাধারণ হয়েছে।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ ভাই 🙂
গাজী বুরহান
দেরীতে হলেও যে পড়তে পেরেছি।
এতো ভাল কি চিটি হইতে পারে?
আগুন রঙের শিমুল
আপনার ভালোলাগা দেখে আমারও ভালোলেগেছে, ধন্যবাদ।
নীরা সাদীয়া
ba বেশ লাগল আপনার চিঠি। আশা করি তেমন কাঙ্খিত কেউ মিলে যাক সত্যি সত্যি।
আগুন রঙের শিমুল
🙂