গত দু’সপ্তাহ যাবত তাঁরা আমার অতিথি। রাত পোহালেই ফিরে যাবেন দেশে। তাই সন্ধ্যাকালীন চা’য়ের সময়টাতে হাসি, আনন্দে গল্প হচ্ছিলো। পরিবেশ ধীরে ধীরে গুমোট হয়ে উঠছিলো। আমি নির্বিকার হয়ে শুনছিলাম। তরুণ বয়সে এই বিদেশ বিভূঁইয়ে এসে কতটা সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে এসেছেন, সেই সব গল্প। দেশে রেখে আসা স্ত্রী এবং আদরের ছোট্ট ছেলেটির গল্প। কেমন করে এতটুকুন ছেলেটি একটু একটু করে বেড়ে উঠবার সাথে সাথে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে, নতুন নতুন ফাঁদ তৈরি করে বাবার কাছ হতে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে, অর্থ না পেলে পরিবারের অন্য সদস্যদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, আক্রমণ করছে, ভাঙচুর করছে ___ সেইসব গল্প। সর্বোপরি জীবনের পড়ন্তবেলায় একজন অসহায় পিতা নিজগৃহে সার্বক্ষণিক নিজ সন্তানের আক্রমণের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে থাকার গল্প।
প্রবাসী পিতার অনুপস্থিতিতে মায়ের তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠা শিশুটি কিছু চাইলে কোমল হৃদয়ের মা সাতপাঁচ না ভেবেই চাহিদাগুলো পূরণ করেছেন। সেদিনের ছোট্ট ছেলেটি আজ পরিনত এক যুবক। বেড়ে উঠবার সাথে সাথে তাঁর চাহিদাও বেড়েছে। বাড়তে বাড়তে কখন যে তা সামর্থ্যের বাইরে, নাগালের বাইরে আকাশ ছুঁয়ে যেতে চেয়েছে, তা কেউই খেয়াল করেনি হয়তো। নানান শারীরিক জটিলতা আর পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত সেই পিতা দীর্ঘ প্রবাস জীবনের পাট চুকিয়ে বাধ্য হয়েই যখন দেশে ফিরে যান, ততদিনে কিছুই রয় না আর আগের মতন।
জানি, ঘরে ঘরে এমন ছেলে অনেক আছে যাঁদের অত্যাচারে জন্মদাতা পিতা’রা কাঁদে পাঁজর ভাঙ্গা কান্না। অসহনীয় কষ্ট বুকে নিয়ে দিনের পর দিন অনিদ্রা আর দীর্ঘশ্বাসের মাঝে হাঁসফাঁস করা জীবন নিয়ে বেঁচে থাকে। দেহ থেকে আত্নার বিচ্ছেদ মানেই কি মৃত্যু !! শারীরিক মৃত্যুর আগেও যে মানুষের মৃত্যু ঘটে, তা নিয়ে আমাদের কোন হাহাকার নেই। দেহ থেকে প্রাণটুকু গেলেই আমাদের যত আহাজারি !
লেখাটি যখন শেষ করছি, সমস্ত ঘর অদ্ভুত এক নৈঃশব্দ্যে ছেয়ে আছে। শূন্যতায় ঘিরে আছে ঘরের আনাচ-কানাচ। আমি ঘরদোর পরিস্কার করছি। এখানে ওখানে ওষুধের খালি বাক্স, ক্যাপস্যুলের খোসা, ইনসুলিন, সিরিঞ্জ… সবকিছুর মাঝে কেবলই একজন অসহায় পিতার জল টলোমলো মুখচ্ছবি দেখি। কানে বাজে পৃথিবীর সবচাইতে বিষাদের, হতাশা’র কিছু শব্দ____ ” কতোটা হতভাগা হলে নিজ সন্তানের ভয়ে ভীত এই জীবন বয়ে বেড়াই… !! “
হুম, আমি ঘরদোর পরিস্কার করি। বিষাদমাখা স্মৃতিগুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলি। বড়দিনের ছুটিতে অন্য অতিথিরা আসবে। তাঁদের জন্যে বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন করি। আমার রোজকার জীবনে এমন কিছু বিষাদময় স্মৃতি কোন পরিবর্তন আনে না। নতুন উদ্যমে নতুন অতিথিদের স্বাগত জানাবার অপেক্ষায় থাকি…
১) আমরা মায়েরা যেন সন্তানদের অন্যায় আবদারগুলো মেনে না নেই, প্রশ্রয় না দেই।
২) যে মানুষটি পরিবারের সকলের সুখের জন্যে কঠোর পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করে, তাঁকে যেন যথার্থ মূল্য দেই।
জীবনের পরতে পরতে ঘটে যাওয়া ভাল কিংবা মন্দ ঘটনাগুলো আমাদের সামনের পথ চলতে শিক্ষা দিয়ে যায়। আমরা কেউ তা বুঝি, কেউ বুঝি না।
ভাল থাকুন সব সময়। শুভকামনা নিরন্তর। -{@
এমন দুঃখজনক ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে আমাদের আশেপাশে।হতাশা আর বিষাদগ্রস্ত বাবা-মা আজ বড়ই অসহায়। নতুন প্রজন্মের হাত ধরে কোন পথে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ? সত্যিই চিন্তার বিষয়…লেখার জন্য অভিন্দন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পিতা ছাড়া পুত্র মানুষ করা কঠিন একজন নারীর জন্য। হুমায়ূন আহমেদ এর কোন এক বইতে এমন একটি লেখা পড়েছিলাম “যে ছেলে গোটা ছাত্রজীবন তার বাবার সাথে বসে রাতের খাবার খাবে, সে কোন দিনই নীতি থেকে বিচ্যুত হবে না”। আসলে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষালয়। সেখানেই জীবনের প্রথম চিন্তা দর্শনের ভিত্তি রচিত হয়। যা পিতা বা মাতা ছাড়া অসম্পূর্ন রয়ে যায়। লেখাটি দারুণ হয়েছে। সমাজে এই ধরনের লেখার সু-প্রভাব পড়বে নিশ্চিত।
তবুও কঠিন বাস্তবতার খাতিরে পিতাকে দূরে থাকতে হয় হয়তো। একজন মা’কে সেই কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে একই সঙ্গে পিতা এবং মাতা’র ভূমিকায় সন্তান প্রতিপালন করতে হয়। কিন্তু সব মা’য়েরা সেদিকে মনোযোগী হয় না। যখন বুঝতে পারে, তখন যে অনেক দেরি হয়ে যায়।
ভাল থাকুন পরিবারের সবাইকে নিয়ে। -{@
হুম, আপনার কথা ঠিক। তবে সব সময় হয়না মায়ের পক্ষে সব দেখা। আধুনিক শহুরে সমাজে হয়তো হয় কিছুটা। আমার বন্ধুদের বাবা-মায়েদের দেখেছি আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে কারন যাতে সন্তানের খোজ খবর পায়।অথচ আমরা যারা গ্রাম থেকে উঠে এসেছিলাম শহরে তাদের দেখার কেউই ছিলনা বলতে গেলে। শুধু বাড়ি থেকে ফোন আসতো বাবা ভাল করে লেখাপড়া করিস এই বলে। আপনার লেখা সব সময়ই গঠনমূলক।
আমার রক্ষণশীল বাবা মাও আমাদের বন্ধুদের সাথে মিশে যেতেন বন্ধুর মতন। আমার চাকুরীজীবী মা শত ব্যস্ততার মাঝেও কাছে ছিলেন, খুব কাছে। মায়েদের অল্প একটু মনোযোগই সন্তানদের জন্যে অনেক পাওয়া। অনেক সহযোগিতা করে ভাল থাকতে, ভাল কিছু শিখতে।
কিন্তু আমার কেন যেন ভিন্নমত। একজন মায়ের অবর্তমানে একজন পিতার পক্ষে সন্তান মানুষ করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না একাকি। কিন্তু একজন পিতার অবর্তমানে একজন মা একাকি অনেকগুলো সন্তানকে একাকি ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
আমার এক মামা মারা যান যুদ্ধের সময়। মামী একাকি আটটি সন্তানকে মানুষ করেছেন গ্রামের সকলের ভালবাসা আর সহযোগিতায়। সব সন্তানরাই দেশে বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নিজ নিজ অবস্থানে।
সৃষ্টিকর্তা নারীকে অসীম ক্ষমতা দিয়ে পাঠিয়েছেন সম্ভবত।
দেহের মৃত্যু সেতো একবার মাত্র হয় ,কিন্তু মনের মৃত্যু বারবার ঘটে যায় |
সঠিকভাবে সন্তান লালন পালন করা এ ভিষণ কঠিন কাজ আপু | অতি আদর অতি শাসণ সব কিছুই ক্ষতিকর | আবার না করলেও নয় |
প্রতিটি সন্তান নিস্পাপ হয়ে জন্মগ্রহন করে। বেড়ে উঠতে উঠতে কেউ কেউ আদর্শ মানুষ হয়ে উঠে। আর কেউ কেউ অমানুষ হয়ে উঠে। একটি শিশুকে বেড়ে উঠবার সময়টাতে প্রতিটি মুহূর্ত ভাল এবং মন্দ শেখাতে হয়। আমাদের ভাল কিংবা মন্দগুলো তাঁদের কচি মন খুব সহজেই অনুসরন কিংবা অনুকরন করে।
ভাল থেকো মায়াবতী …
রিমি রুম্মান, আমি আপনার জীবনমুখী লেখাগুলো প্রায় সবগুলোই পড়ি বা পড়ার চেষ্টা করি।
আপনার লিখায় খুব সাধারণভাবে কিছু ম্যাসেজ থাকে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্য।
আজকের লিখাটি পড়ে সুক্ষ্ণ একটা বিষয় অনুভুতিতে নাড়া দিলো। আর তা হচ্ছে, মায়েদের কোমলতা। ‘মায়েদের কোমলতা’ একটা সন্তানের মানসিক গড়নে যতোখানি ভূমিকা রাখে ঠিক ততোখানিই ক্ষতি করে ফেলে যদি তা সীমা লঙ্ঘন করে।
আমি বহুবার আমার কলিগদের তোপের মুখে পড়েছি, সন্তানদের প্রতি তাঁদের অতি আবেগের বিরোধিতা করে। আমার মা বলতেন, সন্তানের প্রতি স্নেহ থাকবে বুকে, মুখে (প্রকাশ্যে) নয়।
প্রায়ই দেখবেন এখনকার বাচ্চারা একটু বেশিই বেয়াড়া। এর কারন কি জানেন? আজ আপনার লিখাটা পড়ে আমি সেই কারনটিই আবার অনুভব করলাম। সন্তান একটা কিছু চাইলেই কিন্তু বাবারা সহজে তা দিতে চান না। আমরা তেমনভাবেই বড় হয়েছি। কিন্তু এখনকার সন্তানদের সে অভাব থাকে না। এর একমাত্র কারন, এখনকার মায়েরা স্বাবলম্বী। তাঁরা ভাবেন, কষ্ট করে টাকা কামাই করি আর সন্তানের চাহিদাই যদি না মেটাতে পারি তো এই রোজগারের মানে কি! সন্তানের প্রতি মায়েদের এই অন্ধ আবেগই তার উচ্ছনে যাওয়ার মূল কারন।
ধন্যবাদ।
আমাদের আশেপাশে এতো এতো উদাহরন দেখি, যে সবাইকে খুব গহীন থেকে দেখাতে ইচ্ছে করে যে, কেমন করে আমাদের নিস্পাপ শিশুগুলো ভাল মানুষ হয়ে উঠছে, কিংবা বেড়ে উঠার সাথে সাথে পরিবারের প্রতিটি মানুষের অশান্তির কারন হয়ে উঠছে। খুব বেশিদূর যেতে হয় না, আমাদের নিজ নিজ পরিবারেই এমন দু’একজন থাকেই।
আমার দু’সপ্তাহের অতিথি সেই বাবা’র কথাগুলো এখনো কানে বাজে। অসহায় মুখখানা চোখে ভাসে। কিন্তু সময় যে অনেক পেরিয়ে গেছে। সংশোধনের উপায় নেই। তিনি এতটাই অতিষ্ঠ যে, কখনো নিজের মৃত্যু কামনা করছে, কখনো সেই অবাধ্য সন্তানের…
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের উপর লেখা। যারা দেশে স্ত্রী সন্তান ফেলে রেখে বিদেশে যায় তাদের এটা উপলব্ধি করতে হবে যে
সন্তানের হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার পূর্বে তাদেরকে এই অর্থ উপার্জনের মুল্যটাও শেখানো জরুরী। এটা সব বাবা মার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য কিন্ত প্রবাসীদের জন্য বেশি জরুরী কারন সন্তান এখানে তার বাবার শ্রমটুকু দেখতে পাচ্ছে না। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা যে ভাবে প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছে তাতে শুধু একা মায়ের পক্ষে সন্তানকে সঠিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়ে বড় করা কঠিন। এটাও প্রবাসী পিতাদের উপলব্ধি করতে হবে। অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য জীবনটাকে আরো খানিকটা সহজ করা কিন্ত এই
অর্থ উপার্জন করতে যেয়ে যদি জীবনটাই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে তখন সেই অর্থের আর কোন মুল্য থাকে না।
ঠিক বলেছেন। চাওয়া মাত্র সন্তানের হাতে সব তুলে দেয়ার মানসিকতা কতটা ক্ষতিকর, তা অনেকেই বুঝতে পারে না। এতে দিনে দিনে শিশুদের চাহিদা বাড়ার সুযোগ আরেক ধাপ এগিয়ে যায়। তাঁরা নতুন বায়না করতে শিখে।
তবে ভাল কাজের পুরস্কার স্বরূপ কিংবা পরীক্ষায় ভাল করার কারনে উৎসাহিত করার জন্যে মাঝে মাঝে তাঁদের চাওয়াগুলোকে পূর্ণতা দেয়া যেতে পারে।
শরীর বেঁচে থাকে, তারপরেও কিছু মানুষের আত্মা বেঁচে থাকে না
আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এটি এক জটিল এবং বড় সমস্যা
সন্তানকে বিভিন্ন প্রলোভন থেকে দূরে রেখে বড় করা খুবই কঠিন
একটি সময়ে সন্তান আয়ত্বের বাইরে চলে যায়।
আপনার লেখার বিষয়বস্তুর সাথে শতভাগ সহমত।
শুভ কামনা।
মৃত্যু মানেই নিস্তেজ শরীর নয়। শারীরিক মৃত্যু সে তো একবারই আসে। মনের মৃত্যু নিয়ে নিঃশ্বাস নেয়া অনেক যন্ত্রণার। আর সেই মৃত্যুকে আমরা রোজ প্রত্যক্ষ করি। বিশেষ করে বাবা-মায়েরা সেটা পায় সবচেয়ে বেশী। সন্তান আমাদের ভালোবাসা, কিছু সন্তান সেই স্নেহকে ভাবে আমাদের দূর্বলতা। আর তারই সুযোগ নেয় এবং আমাদের আবেগকে ব্যবহার করে বাজে ভাবে।
তাছাড়া রিমি আপু আমরা বেশীরভাগ মায়েরা অনেক নরম-কোমল হয়ে থাকি। সন্তানের চাওয়াকে অবহেলা করিনা। কিন্তু এটা ঠিক না। আর অর্থের অপচয় যেনো না করতে দেয়া হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানকে খুব কঠিন কিংবা খুব কোমলতা দিয়ে নয়, মানুষ হিসেবে তৈরী করতে গেলে তার বিবেককে জাগিয়ে তুলতে হবে। সেটা করতে পারে একমাত্র বাবা-মা-ই। আর কেউ না।
যে মৃত্যুতে দেহ পচে যায়, আমরা কেবল তাকেই মৃত্যু বলি। তাঁর প্রতি আমাদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। আমরা তার দাফন করি। বছর ঘুরে সেই দিন এলে ফকির মিসকিন খাওয়াই। তাঁর জন্যে দোয়া করি। অথচ বেঁচে থাকাকালীন আমরা তাঁকে মূল্য দেই না। বেঁচে থেকে হাঁসফাঁস করা জীবনটা দেখি না।
ভাল থাকুক সকল পিতা।
ভাল থাকুক সকল মাতা।
ভাল থাকুক সকল সন্তান।
অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ তেমনি অতি আদর মনুষত্বের পতন।সুন্দর উপস্থাপনা এটা এখন আমাদের সমাজে প্রায় শুনতে পাওয়া যায় তা ধীরে ধীরে সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে সমাজ। -{@
লেখটি পড়া যখন শুরু করেছিলাম তখন-ও তেমন কিছু বুঝে উঠতে পারিনি কিন্তু যখন একটু একটু করে সামনের দিকে এগুলাম তখনই কিছু কিছু স্মৃতি আর নিজের দেখা কিছু ঘটনার আভাঁস পেলাম যা আমকে সত্যিই ঐ সব ঘটনার ন্যায় দর্পনের সামনে নিয়ে এসেছিল। এরকম ঘটনা আমাদের আসে-পাশে প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে এবং এর প্রতিকার স্বরুপ এই লেখাটি সহস্রাধিক উপযোগী বলে মনে করছি।
***” পৃথিবির সকল পিতা-মাতার জন্য প্রার্থনা করছি আর যেন কোন পিতা-মাতা এরকম কোন ঘটনার মুখোমুখি না হোন”।
৩৬টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
জীবনের বাঁকে বাঁকে কত কিছুই না দেখছি,
পতন কে তো ঠেকাতে পারছি না।
রিমি রুম্মান
খুব সতর্কতার সাথে এগিয়ে গেলে পতন ঠেকানো সম্ভব। শুধু প্রয়োজন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মনোযোগী হওয়া। ভাল থাকুন।
শুভকামনা রইলো। -{@
নূরু
সত্যিই দুঃখ জনক
জীবনের পরতে পরতে
কত যে ঘটনা জমা হয়
কে তার খবর রাখে!!
রিমি রুম্মান
জীবনের পরতে পরতে ঘটে যাওয়া ভাল কিংবা মন্দ ঘটনাগুলো আমাদের সামনের পথ চলতে শিক্ষা দিয়ে যায়। আমরা কেউ তা বুঝি, কেউ বুঝি না।
ভাল থাকুন সব সময়। শুভকামনা নিরন্তর। -{@
সাঞ্জনা চৌধুরী জুঁথী
এমন দুঃখজনক ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে আমাদের আশেপাশে।হতাশা আর বিষাদগ্রস্ত বাবা-মা আজ বড়ই অসহায়। নতুন প্রজন্মের হাত ধরে কোন পথে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ? সত্যিই চিন্তার বিষয়…লেখার জন্য অভিন্দন।
রিমি রুম্মান
প্রতিটি শিশুর ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক মনভাব, আচরন এসবের জন্য পারিবারিক শিক্ষা দায়ী ।
আমাদের শিশুরা ভাল থাকুক । শুভকামনা রইলো। -{@
তানজির খান
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পিতা ছাড়া পুত্র মানুষ করা কঠিন একজন নারীর জন্য। হুমায়ূন আহমেদ এর কোন এক বইতে এমন একটি লেখা পড়েছিলাম “যে ছেলে গোটা ছাত্রজীবন তার বাবার সাথে বসে রাতের খাবার খাবে, সে কোন দিনই নীতি থেকে বিচ্যুত হবে না”। আসলে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষালয়। সেখানেই জীবনের প্রথম চিন্তা দর্শনের ভিত্তি রচিত হয়। যা পিতা বা মাতা ছাড়া অসম্পূর্ন রয়ে যায়। লেখাটি দারুণ হয়েছে। সমাজে এই ধরনের লেখার সু-প্রভাব পড়বে নিশ্চিত।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য
অরুনি মায়া
আমিও তোমার সাথে একমত তানজির
তানজির খান
ধন্যবাদ তোমাকে
রিমি রুম্মান
তবুও কঠিন বাস্তবতার খাতিরে পিতাকে দূরে থাকতে হয় হয়তো। একজন মা’কে সেই কঠিন বাস্তবতা মেনে নিয়ে একই সঙ্গে পিতা এবং মাতা’র ভূমিকায় সন্তান প্রতিপালন করতে হয়। কিন্তু সব মা’য়েরা সেদিকে মনোযোগী হয় না। যখন বুঝতে পারে, তখন যে অনেক দেরি হয়ে যায়।
ভাল থাকুন পরিবারের সবাইকে নিয়ে। -{@
তানজির খান
হুম, আপনার কথা ঠিক। তবে সব সময় হয়না মায়ের পক্ষে সব দেখা। আধুনিক শহুরে সমাজে হয়তো হয় কিছুটা। আমার বন্ধুদের বাবা-মায়েদের দেখেছি আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে কারন যাতে সন্তানের খোজ খবর পায়।অথচ আমরা যারা গ্রাম থেকে উঠে এসেছিলাম শহরে তাদের দেখার কেউই ছিলনা বলতে গেলে। শুধু বাড়ি থেকে ফোন আসতো বাবা ভাল করে লেখাপড়া করিস এই বলে। আপনার লেখা সব সময়ই গঠনমূলক।
ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার বড় আপা।
রিমি রুম্মান
আমার রক্ষণশীল বাবা মাও আমাদের বন্ধুদের সাথে মিশে যেতেন বন্ধুর মতন। আমার চাকুরীজীবী মা শত ব্যস্ততার মাঝেও কাছে ছিলেন, খুব কাছে। মায়েদের অল্প একটু মনোযোগই সন্তানদের জন্যে অনেক পাওয়া। অনেক সহযোগিতা করে ভাল থাকতে, ভাল কিছু শিখতে।
ভাল থাকুন অনেক অনেক। -{@
রিমি রুম্মান
কিন্তু আমার কেন যেন ভিন্নমত। একজন মায়ের অবর্তমানে একজন পিতার পক্ষে সন্তান মানুষ করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না একাকি। কিন্তু একজন পিতার অবর্তমানে একজন মা একাকি অনেকগুলো সন্তানকে একাকি ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
আমার এক মামা মারা যান যুদ্ধের সময়। মামী একাকি আটটি সন্তানকে মানুষ করেছেন গ্রামের সকলের ভালবাসা আর সহযোগিতায়। সব সন্তানরাই দেশে বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নিজ নিজ অবস্থানে।
সৃষ্টিকর্তা নারীকে অসীম ক্ষমতা দিয়ে পাঠিয়েছেন সম্ভবত।
ভাল থাকুন অনেক। -{@
অরুনি মায়া
দেহের মৃত্যু সেতো একবার মাত্র হয় ,কিন্তু মনের মৃত্যু বারবার ঘটে যায় |
সঠিকভাবে সন্তান লালন পালন করা এ ভিষণ কঠিন কাজ আপু | অতি আদর অতি শাসণ সব কিছুই ক্ষতিকর | আবার না করলেও নয় |
রিমি রুম্মান
প্রতিটি সন্তান নিস্পাপ হয়ে জন্মগ্রহন করে। বেড়ে উঠতে উঠতে কেউ কেউ আদর্শ মানুষ হয়ে উঠে। আর কেউ কেউ অমানুষ হয়ে উঠে। একটি শিশুকে বেড়ে উঠবার সময়টাতে প্রতিটি মুহূর্ত ভাল এবং মন্দ শেখাতে হয়। আমাদের ভাল কিংবা মন্দগুলো তাঁদের কচি মন খুব সহজেই অনুসরন কিংবা অনুকরন করে।
ভাল থেকো মায়াবতী …
ভোরের শিশির
আপনার স্মৃতির ঝাঁপি গুলোর আরেকটি নাম দিতে ইচ্ছে করে- ‘বিবেক’।
-{@
রিমি রুম্মান
“বিবেক” হলেও মন্দ হবে না। আমাদের বিবেক জাগ্রত হোক।
সুন্দর নাম পছন্দ হয়েছে। -{@
ভোরের শিশির
😀
আপনার প্রতি পোস্টেই এমন করে যেন বিবেক জাগ্রত হয় প্রতিবারই। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
রিমি রুম্মান, আমি আপনার জীবনমুখী লেখাগুলো প্রায় সবগুলোই পড়ি বা পড়ার চেষ্টা করি।
আপনার লিখায় খুব সাধারণভাবে কিছু ম্যাসেজ থাকে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্য।
আজকের লিখাটি পড়ে সুক্ষ্ণ একটা বিষয় অনুভুতিতে নাড়া দিলো। আর তা হচ্ছে, মায়েদের কোমলতা। ‘মায়েদের কোমলতা’ একটা সন্তানের মানসিক গড়নে যতোখানি ভূমিকা রাখে ঠিক ততোখানিই ক্ষতি করে ফেলে যদি তা সীমা লঙ্ঘন করে।
আমি বহুবার আমার কলিগদের তোপের মুখে পড়েছি, সন্তানদের প্রতি তাঁদের অতি আবেগের বিরোধিতা করে। আমার মা বলতেন, সন্তানের প্রতি স্নেহ থাকবে বুকে, মুখে (প্রকাশ্যে) নয়।
প্রায়ই দেখবেন এখনকার বাচ্চারা একটু বেশিই বেয়াড়া। এর কারন কি জানেন? আজ আপনার লিখাটা পড়ে আমি সেই কারনটিই আবার অনুভব করলাম। সন্তান একটা কিছু চাইলেই কিন্তু বাবারা সহজে তা দিতে চান না। আমরা তেমনভাবেই বড় হয়েছি। কিন্তু এখনকার সন্তানদের সে অভাব থাকে না। এর একমাত্র কারন, এখনকার মায়েরা স্বাবলম্বী। তাঁরা ভাবেন, কষ্ট করে টাকা কামাই করি আর সন্তানের চাহিদাই যদি না মেটাতে পারি তো এই রোজগারের মানে কি! সন্তানের প্রতি মায়েদের এই অন্ধ আবেগই তার উচ্ছনে যাওয়ার মূল কারন।
ধন্যবাদ।
রিমি রুম্মান
আমাদের আশেপাশে এতো এতো উদাহরন দেখি, যে সবাইকে খুব গহীন থেকে দেখাতে ইচ্ছে করে যে, কেমন করে আমাদের নিস্পাপ শিশুগুলো ভাল মানুষ হয়ে উঠছে, কিংবা বেড়ে উঠার সাথে সাথে পরিবারের প্রতিটি মানুষের অশান্তির কারন হয়ে উঠছে। খুব বেশিদূর যেতে হয় না, আমাদের নিজ নিজ পরিবারেই এমন দু’একজন থাকেই।
আমার দু’সপ্তাহের অতিথি সেই বাবা’র কথাগুলো এখনো কানে বাজে। অসহায় মুখখানা চোখে ভাসে। কিন্তু সময় যে অনেক পেরিয়ে গেছে। সংশোধনের উপায় নেই। তিনি এতটাই অতিষ্ঠ যে, কখনো নিজের মৃত্যু কামনা করছে, কখনো সেই অবাধ্য সন্তানের…
ভাল থাকবেন আপু।
অপার্থিব
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের উপর লেখা। যারা দেশে স্ত্রী সন্তান ফেলে রেখে বিদেশে যায় তাদের এটা উপলব্ধি করতে হবে যে
সন্তানের হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার পূর্বে তাদেরকে এই অর্থ উপার্জনের মুল্যটাও শেখানো জরুরী। এটা সব বাবা মার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য কিন্ত প্রবাসীদের জন্য বেশি জরুরী কারন সন্তান এখানে তার বাবার শ্রমটুকু দেখতে পাচ্ছে না। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা যে ভাবে প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছে তাতে শুধু একা মায়ের পক্ষে সন্তানকে সঠিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়ে বড় করা কঠিন। এটাও প্রবাসী পিতাদের উপলব্ধি করতে হবে। অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য জীবনটাকে আরো খানিকটা সহজ করা কিন্ত এই
অর্থ উপার্জন করতে যেয়ে যদি জীবনটাই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে তখন সেই অর্থের আর কোন মুল্য থাকে না।
রিমি রুম্মান
ঠিক বলেছেন। চাওয়া মাত্র সন্তানের হাতে সব তুলে দেয়ার মানসিকতা কতটা ক্ষতিকর, তা অনেকেই বুঝতে পারে না। এতে দিনে দিনে শিশুদের চাহিদা বাড়ার সুযোগ আরেক ধাপ এগিয়ে যায়। তাঁরা নতুন বায়না করতে শিখে।
তবে ভাল কাজের পুরস্কার স্বরূপ কিংবা পরীক্ষায় ভাল করার কারনে উৎসাহিত করার জন্যে মাঝে মাঝে তাঁদের চাওয়াগুলোকে পূর্ণতা দেয়া যেতে পারে।
ভাল থাকবেন। অনেক শুভকামনা। -{@
জিসান শা ইকরাম
শরীর বেঁচে থাকে, তারপরেও কিছু মানুষের আত্মা বেঁচে থাকে না
আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এটি এক জটিল এবং বড় সমস্যা
সন্তানকে বিভিন্ন প্রলোভন থেকে দূরে রেখে বড় করা খুবই কঠিন
একটি সময়ে সন্তান আয়ত্বের বাইরে চলে যায়।
আপনার লেখার বিষয়বস্তুর সাথে শতভাগ সহমত।
শুভ কামনা।
রিমি রুম্মান
শুভকামনা আপনাকেও।
ভাল থাকুন সন্তানদের নিয়ে, পরিবার নিয়ে। -{@
ফ্রাঙ্কেনেস্টাইন
বরাবরের মতই অসাধারণ লাগলো -{@
রিমি রুম্মান
শুভকামনা নিরন্তর। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
মৃত্যু মানেই নিস্তেজ শরীর নয়। শারীরিক মৃত্যু সে তো একবারই আসে। মনের মৃত্যু নিয়ে নিঃশ্বাস নেয়া অনেক যন্ত্রণার। আর সেই মৃত্যুকে আমরা রোজ প্রত্যক্ষ করি। বিশেষ করে বাবা-মায়েরা সেটা পায় সবচেয়ে বেশী। সন্তান আমাদের ভালোবাসা, কিছু সন্তান সেই স্নেহকে ভাবে আমাদের দূর্বলতা। আর তারই সুযোগ নেয় এবং আমাদের আবেগকে ব্যবহার করে বাজে ভাবে।
তাছাড়া রিমি আপু আমরা বেশীরভাগ মায়েরা অনেক নরম-কোমল হয়ে থাকি। সন্তানের চাওয়াকে অবহেলা করিনা। কিন্তু এটা ঠিক না। আর অর্থের অপচয় যেনো না করতে দেয়া হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানকে খুব কঠিন কিংবা খুব কোমলতা দিয়ে নয়, মানুষ হিসেবে তৈরী করতে গেলে তার বিবেককে জাগিয়ে তুলতে হবে। সেটা করতে পারে একমাত্র বাবা-মা-ই। আর কেউ না।
আপু তোমার পোষ্ট কখনোই খারাপ লাগে না। -{@
রিমি রুম্মান
যে মৃত্যুতে দেহ পচে যায়, আমরা কেবল তাকেই মৃত্যু বলি। তাঁর প্রতি আমাদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। আমরা তার দাফন করি। বছর ঘুরে সেই দিন এলে ফকির মিসকিন খাওয়াই। তাঁর জন্যে দোয়া করি। অথচ বেঁচে থাকাকালীন আমরা তাঁকে মূল্য দেই না। বেঁচে থেকে হাঁসফাঁস করা জীবনটা দেখি না।
ভাল থাকুক সকল পিতা।
ভাল থাকুক সকল মাতা।
ভাল থাকুক সকল সন্তান।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ তেমনি অতি আদর মনুষত্বের পতন।সুন্দর উপস্থাপনা এটা এখন আমাদের সমাজে প্রায় শুনতে পাওয়া যায় তা ধীরে ধীরে সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে সমাজ। -{@
রিমি রুম্মান
ঠিক বলেছেন।
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
ভাল থাকুন সবসময়। -{@
মরুভূমির জলদস্যু
২য় বিষয়টা আমাদের মেয়েরা কখনো বুঝতে যায় না।
রিমি রুম্মান
মায়েরা বুঝতে পারে অনেক দেরিতে। তখন যে আসলেই অনেক দেরি হয়ে যায়।
ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা। -{@
ব্লগার সজীব
মন খারাপ করা আত্মোপলব্ধির লেখা (y) (y)
রিমি রুম্মান
এমনটি কিন্রু আমাদের আশেপাশেই ঘটছে খুব নিরবে। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে বখে যাওয়া ছেলেটি কিংবা মেয়েটি কেন এমন হয়ে উঠেছে।
ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা। -{@
শুভ মালাকার
লেখটি পড়া যখন শুরু করেছিলাম তখন-ও তেমন কিছু বুঝে উঠতে পারিনি কিন্তু যখন একটু একটু করে সামনের দিকে এগুলাম তখনই কিছু কিছু স্মৃতি আর নিজের দেখা কিছু ঘটনার আভাঁস পেলাম যা আমকে সত্যিই ঐ সব ঘটনার ন্যায় দর্পনের সামনে নিয়ে এসেছিল। এরকম ঘটনা আমাদের আসে-পাশে প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে এবং এর প্রতিকার স্বরুপ এই লেখাটি সহস্রাধিক উপযোগী বলে মনে করছি।
***” পৃথিবির সকল পিতা-মাতার জন্য প্রার্থনা করছি আর যেন কোন পিতা-মাতা এরকম কোন ঘটনার মুখোমুখি না হোন”।
ভাল থাকুন অনন্তকাল
-{@
রিমি রুম্মান
ভাল থাকুন আপনিও প্রিয়জনদের নিয়ে। -{@