মাটি কাদায় মাখামাখি উৎসব

সোনেলা রোদ্দুর ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪, রবিবার, ০৮:১৮:০৫অপরাহ্ন অন্যান্য ৪৬ মন্তব্য


বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে কত কিছুই আছে যা আমাদের অজানা। জীবনকে হাসি আনন্দে ভরপুর করে রাখার জন্য কত আয়োজন। টমেটো উৎসব, ফুল উৎসবের কথা আপনারা জেনে গিয়েছেন,আমার এবং শুন্য শুন্যালয় আপুর পোষ্ট থেকে। এবার জানুন মাটি উৎসবকে ।

১৯৯৬ সনে দক্ষিন কোরিয়ার একটি প্রসাধন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোরিয়ং অঞ্চলের মাটি সংগ্রহ করেন। ঐ মাটিতে প্রসাধন সামগ্রীর রাসায়নিক উপাদান বেনটোনাইট, গার্মানিয়ামস প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরী হয়। মাটি থেকে সংগৃহিত উপাদান থেকে প্রস্তুতকৃত প্রসাধনী সামগ্রীকে জনপ্রিয় করার জন্য কোম্পানী মাটি উৎসবের আয়োজন করে। তাদের আশা ছিলো এই উৎসবের মাধ্যমে জনগন মাটির ব্যবহার এবং মাটি থেকে প্রস্তুতকৃত কসমেটক্স সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং আগ্রহী হবেন। এর দু বছর পরে ১৯৯৮ সনে প্রথম মাটি উৎসবের আয়োজন করা হয় এবং বর্তমানে শুধু কোরিয়া নয় আমেরিকা সহ অন্যন্য দেশেও এটি উদযাপিত হয়ে আসছে।

প্রতিবছর রাজধানী শিউলের  ২০০ কিলোমিটার দক্ষিনের বোরিয়ং অঞ্চলের মাটি সংগ্রহ  করে ট্রাকে করে নেয়া হয় ডেইচন সমুদ্র বীচে । ওখানে এই মাটিকে নরম করে উৎসবের জন্য প্রস্তুত করা হয়। জুলাই মাসের ২য় উইকেন্ডে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান এবং শেষ হয় মাসের শেষ উইক এন্ডে। প্রতি বছর মাটি উৎসব দেখতে আসা এবং মাটিতে মাখা মাখি করতে কোরিয়া ভ্রমন হাজার হাজার মানুষ। শুরু থেকে পরবর্তী ২০ বছরে ভ্রমণ করেছেন প্রায় ২৫ লাখ ভ্রমণকারী।

শুধু মাটি উৎসব নয়, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজক গন আরো কিছু আকর্ষনীয় ইভেন্টের আয়োজন করেন। কাদা পুল, কাদা স্লাইড, কাদা কারাগার এবং কাদা স্কিইং প্রতিযোগিতা এর মধ্য অন্যতম। বডি পেইন্টিং এর জন্য বিভিন্ন রঙয়ের কাদা বানানো হয়, এসব দিয়ে ভিজিটরগন গায়ে আঁকা জুকি করেন।

একটি বিশাল স্টেজ বানানো হয় সমুদ্র বীচ এলাকায়। এখানে গান গাওয়া হয়, গানের প্রতিযোগিতা হয়।
যে যেমন পারে ফ্রিস্টাইলে গান গাইতে থাকেন। অবশ্যই তা গায়ে কাদা মেখে ভুত হয়ে 🙂

কত সহজ একটি উপকরন দিয়ে কত মজার একটি উৎসব। এই কাদা মাখার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটক গন কোরিয়াতে। পর্যটক মানেই ডলার। দেশের আয়। আমাদের দেশে কি এই মাটি কাদার অভাব ? গ্রামে এখনো ছেলেরা বর্ষাকালে কাদার মাঝে ফুটবল হাডুডু খেলে। কাঁদায় ভুত হয়ে একজন লাফ দিয়ে পানির মাধ্যে পরে কাদা ধুয়ে ফেলে। কাদা দিয়ে খেলার আনন্দ আলাদা। মানুষ প্রকৃতির কাছে আনন্দ পায় বেশি, মাটি তো প্রকৃতির একটা নির্ভেজাল অংশ।
আমাদের দেশে কাদা আছে সব অঞ্চলে, শুধু নেই উদ্যোগ। এই কাঁদায় মাখা মাখি করে যে বছরে কোটি কোটি ডলার আয় করা সম্ভব, তা আমাদের দেশের আহাম্মুক পর্যটন কর্পোরেশন বা আমলা, মন্ত্রীর মাথায় আসবেনা।

 

একটি ভিডিও দেখুন কাদার, এটি পুর্তগালের । আপনিও পারেন এভাবে গায়ে কাদা মাখতে 🙂

আমার এই পোষ্ট উৎসর্গ করলাম, গত দুই বছর যাবত যারা সোনেলায় আছেন , ব্লগার, পাঠক, মডু, ব্লগটিম সবাইকে। ইচ্ছে করে সবাইকে নিজ হাতে কাদা মাখিয়ে এমনি ভুত করে দেই। 

২০৪০জন ২০৩৭জন
0 Shares

৪৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ