ছবির সংবাদটির ক্যাপশন ভিন্ন হতে পারতো। ঘটনার ভিডিওটি প্রশংসিত হবার কথা ছিল। কিন্তু না, ব্যাপক সমালোচিত হবার পাশাপাশি ভাইরাল হয়ে গেছে। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-অভিবাবকদের সাথে পিকনিকে গিয়েছিলেন স্কুলের শিক্ষক, স্থানীয় ঈমাম, জনপ্রতিনিধি, স্কুল কমিটির বর্তমান ও সাবেক কর্তাব্যাক্তিগণ।
এই মানুষগুলো সামাজিক ও পেশাগতভাবে সারাবছর এমন একটা জীবনযাপন করেন বা করতে বাধ্য হোন যে, যে জীবনটা স্বাভাবিক নয়। আমরা আমাদের মতো তাদের জন্য একটা জীবনযাপন নির্ধারণ করে দেই। তারা হাসতে পারবে না, তারা আনন্দ করতে পারবে না, তাদের গম্ভীর থাকতে হবে। তারা চায়ের কাপে ঝড় তুলতে পারবে না। তারা অট্টহাসিতে আরেকজনের কাঁধে হাত দিয়ে ঢলে পড়তে পারবে না। কারণ তারা তো মানুষ না। তারা শিক্ষক, তারা ঈমাম, তারা কমিটির সদস্য, তারা জনপ্রতিনিধি।
অথচ এই মানুষগুলো আমাদের মতোই মানুষ। আমরা যেমন একেকজন একেক পেশা বেছে নিয়েছি, তারাও সেটা করেছে। তারা আমাদের চেয়ে আলাদা কিছু না। তারা তখনই আলাদা, যখন তারা অপরাধমূলক কিছু করবে। তখন আমরা তাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবো।
এটা সত্য যে, পেশাগত কারণে তাদের একটা আলাদা ইমেজ আছে। যেই ইমেজের জায়গটাকে আমরা আলাদা চোখে দেখি। কিন্তু পিকনিকের একদিনের আনন্দে যদি আমরা, তাদের অতি সাধারণ জীবনযাপন করতে না দেই, সেটা তাদের প্রতি অনেক বড় অপরাধ করা বলে মনে করি। ব্যাপরটা এমন না যে, পিকনিকে গিয়ে তারা গোপনে মাদক নিয়েছে, নারীদের বিরক্ত করেছে কিংবা অন্যদের খারাপ খাবার দিয়ে নিজেরা ভাল খেয়েছে।
যারা তাদের নির্ভেজাল, মন খোলা আনন্দের সময়টুকু ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে ভাইরাল করেছে তারা যেমন পারিবারিক দীক্ষাহীন নিম্ন মানসিকতার মানুষ, তেমনি যারা এই আনন্দের সমালোচনা বা বিদ্রুপ করেছেন তারাও নিম্ন মানসিকতার। সমাজের এই মানুষগুলো যখন একদিনের জন্য শিশুদের সাথে মিলেমিশে শিশু হয়ে উঠে, তার চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আর কি হতে পারে!
এমন একটি আনন্দ আয়োজনের পর সুখ স্মৃতির পরিবর্তে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরিতে যে অসভ্যরা নানাভাবে ভুমিকা রেখেছে, সবার প্রতি ঘৃণা জানাই। তারা সমাজের কীট। তারা এই দেশের সৌন্দর্য নষ্ট করার ভাইরাস।
মূল ঘটনা:
গত ২৯ আগস্ট জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের এলংজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা প্রায় আড়াইশ জন পাঁচটি নৌকায় এলংজানী থেকে শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি ও পাবনা জেলার বেড়ার পাওয়ার প্লান্টে যান। এ সময় নৌকায় সাউন্ড বক্সে ডিজে গান বাজিয়ে উদ্যম নাচে মেতে ওঠেন প্রধান শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্যরা।
হুম, কতো যে ট্রাইটেরিয়া মেইনটেইন করতে হয়। পোশাক পর্যন্ত নির্ধারিত। নিজস্বতা বলে তেমন কিছুই থাকে না। আপনি না চাইলেও মানতে বাধ্য।।।
সমাজের জন্য আমরা না আমাদের জন্য সমাজ বোঝা দায়!!
যে পেশায় থাকি না কেন। নিজস্ব ইচ্ছা সাধ থাকতেই পারে। পেশাগত জীবনে ব্যক্তিগত জীবন দুইটাই তো আলাদা। কিছু টা সময় নিজের মতো করে ব্যয় করবো। সমাজের মানুষ গুলোর দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন কবে যে হবে। শুভ কামনা রইলো।
এমন একটি আনন্দ আয়োজনের পর সুখ স্মৃতির পরিবর্তে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরিতে যে অসভ্যরা নানাভাবে ভুমিকা রেখেছে, সবার প্রতি ঘৃণা জানাই। তারা সমাজের কীট। তারা এই দেশের সৌন্দর্য নষ্ট করার ভাইরাস।
১০টি মন্তব্য
নার্গিস রশিদ
অসম্ভব সাহসী লেখা । একটা বিষয় যা হওয়া উচিৎ ছিলনা তা আপনি বলে দিয়েছেন। মানুষের চেতনার পরিবর্তন হওয়া উচিৎ । শুভ কামনা।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে আমরা কিছু মানুষকে বন্দী করে ফেলছি এক প্রকার মৌলবাদীর মতোই। সেখান থেকে আমাদের বের হতে হবে।
মোঃ মজিবর রহমান
আসলেই আমরা নিতেও পারিনা দিতেও পারিনা। আমরা সমাজের কিট। আনন্দ উল্লাস করার অধিকার সবার আছে থাকবে। অন্যায় অকাজ তারা করেনি। আপনার লিখার প্রতি স্যালুট ভাই।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ ভাই
আলমগীর সরকার লিটন
আসলে সবাই একটু স্মৃতির অতলে হারিয়ে যেতে চায় কিন্ত অনেক বাঁধা থাকে যেটা আমার দৃষ্টিতে ঠিক নয়
ভাল লেখেছেন দাদা ভাল থাকবেন
রোকসানা খন্দকার রুকু
হুম, কতো যে ট্রাইটেরিয়া মেইনটেইন করতে হয়। পোশাক পর্যন্ত নির্ধারিত। নিজস্বতা বলে তেমন কিছুই থাকে না। আপনি না চাইলেও মানতে বাধ্য।।।
সমাজের জন্য আমরা না আমাদের জন্য সমাজ বোঝা দায়!!
মো: মোয়াজ্জেম হোসেন অপু
সমাজের কারনে আমরা জীবন্ত লাস হয়ে পরে আছি। আমাদের হাসতে মানা নাচতে মানা আনন্দ করতে মানা
সঞ্জয় কুমার
সীমার বাইরে পদক্ষেপ
সবারই ব্যাক্তিগত জীবন আছে সেখানে হস্তক্ষেপ করা শোভনীয় নয়।
এটা বোঝার জ্ঞান এদের কবে হবে !
হালিমা আক্তার
যে পেশায় থাকি না কেন। নিজস্ব ইচ্ছা সাধ থাকতেই পারে। পেশাগত জীবনে ব্যক্তিগত জীবন দুইটাই তো আলাদা। কিছু টা সময় নিজের মতো করে ব্যয় করবো। সমাজের মানুষ গুলোর দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন কবে যে হবে। শুভ কামনা রইলো।
হালিম নজরুল
এমন একটি আনন্দ আয়োজনের পর সুখ স্মৃতির পরিবর্তে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরিতে যে অসভ্যরা নানাভাবে ভুমিকা রেখেছে, সবার প্রতি ঘৃণা জানাই। তারা সমাজের কীট। তারা এই দেশের সৌন্দর্য নষ্ট করার ভাইরাস।