
দুঃখ!
লুকিয়ে পড়ো এক্ষুণি, সুচারু/সযত্নে লুকিয়ে রাখি,
গুটিয়ে রাখা আস্তিনের হা হা হাসির ভাঁজে ভাঁজে!
দুঃখ!
লুকিয়ে থাকার ভান করো, বত্রিশ দাঁতের
খটখটে হাসির আড়ালে।
দুঃখ!
ছিচ-কাঁদুনে বা হৃদয়ের এফোঁড় ওফোঁড়ে
অট্টহাসির আড়াল নিয়ে, লুকোনোর বাহানা করো
শাড়ির নিপুণ/নিঝুম ভাঁজে, নিশ্চিত আত্মহত্যার সহজতম পথে।
দুঃখ!
কল কল ছল ছল করে ওঠো, ঝাঁপিয়ে দাপিয়ে পড়,
প্রতারণার ১৬/৩২/৬৪/১২৮ সৌকুমার্যের তাবৎ ছলা-কলা নিয়ে।
দুঃখ!
তাম্বূল রস ঠোঁটে-পরে যাও-না ও-পাড়ায়, কুটনির বেশে,
অব্যর্থের নিপুণ কলায় কানপড়া দিয়ে লেলিহান আগুন
জ্বালিতে দাও, মহানন্দে;
এই ফাঁকে হাঁসফাঁস বুকে একটু নিঃশ্বাস নেই।
দুঃখ!
বিক্ষুব্ধ-সমুদ্দুরের উত্তাল তরঙ্গকে বলি খামোশ!
শুনতে যেন বয়েই গেছে বিলাপের আস্ফালন।
দুঃখ!
চকচকে করাত, ছুরি, বাটালি, হাতুড়ি নিয়ে উন্মত্ত ডাক্তার
দাঁড়িয়ে, চৈতন্যে রেখেই পাঁজর কেটে/ভেঙ্গে উপড়ে নেবে
তাজা হৃৎপিণ্ড, নো চিৎকার চেঁচামেচি, উহু আহা-ও না।
গন্দম খেকো আদম! এখন কেঁদেকেটে কী আর লাভ!
যেতে হবে নশ্বর পৃথিবীতেই, বেহেশত ছেঁড়ে!
জ্যোৎস্না-স্নাত সরাইখানার দ্বারে দাঁড়িয়ে
ছটফট করছি-না পরমান্নের লোভে, মনঃপূত অক্লেশ আয়োজনে দুঃখের
ফিসফাসের ফাঁকা আওয়াজটুকু রাহুগ্রস্তের ছিন্ন ভিন্নতা নিয়ে
অসংশয়ে বেশ শুনতে পাচ্ছি।
গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলের অলংকার! চোখ ধাঁধায়, আলো দেয় না।
থাকুক-না দুঃখের-সুখ চির-অম্লান, মখমল শয্যায়।
২৯টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
দুঃখকে লুকিয়ে রেখে লাভটা হবে কি?
সে তো যে কোনো সময় দাঁত কেলিয়ে হাসতে হাসতে বের হয়ে আসবে, তখন?
আনন্দেকে সাথে রাখা যায় ফুলের সৌরভে,
ছাইরাছ হেলাল
উহ্ না।
আসলে বলতে চেয়েছি দুঃখ লুকনো যায় না, ভান-টান করা যায়। দুঃখ, দুঃখ-ই থাকে নিজের অবস্থানে।
মন দিয়ে পড়তে হবে।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, পড়েছি আবার। বুঝেছি এবার পুরোটাই।
সব কিছুরই প্রকাশ হোক, ভান টান করার দরকার নেই।
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা দেখা যাক কোথায় গিয়ে কতটুকু গড়ায়।
নিতাই বাবু
মনে দুঃখ থাকলে তা হাসিতেও প্রকাশ পায়। তাহলে বলুন, দুঃখকে লুকিয়ে রাখি কীভাবে? তবে হ্যাঁ, দুঃখকে হাসিমুখে বরণ করাটাই শ্রেয় বলে মনে করি।
আপনিও দুঃখ নিয়ে দারুণ লিখেছেন দাদা।
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন, আমরা মানি বা না-মানি, দুঃখ তার নিজ অবস্থানে অনড়।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
দুঃখবিলাসী কবি। দুঃখগুলো আমরা হৃদয়ে পুষি।আপনি ঠিকই বলেছেন, দুঃখ আনুপাতিক হারে বাড়ে।সুখ একা আসে কিন্তু দুঃখ ভাউজোন সাথে নিয়ে আসে।
ছাইরাছ হেলাল
অ-উপেক্ষিত দুঃখ আমাদের ঘিরে থাকে/ঘিরে রাখে-ও।
দলবদ্ধ বাস, ভাই-ব্রাদারদের সাথে।
আরজু মুক্তা
সরি ভাইবোন হবে
ছাইরাছ হেলাল
ঠিক আছে।
বন্যা লিপি
দুঃখেরা লুকিয়ে থাকে সযতনে গোটানো আস্তিনে। লুকিয়ে থাকে হাহা অট্টহাসির আড়ালে। বেঁচে থাকে ডালপালা বিস্তারে!
এভাবেই থাকে আমরন……!!
দুটো নতুন শব্দ শিখলাম আজ “তাম্বূল রাঙা “।অন্যখান থেকে শিখে এসে এখানেও খোঁজ পেলাম। সহজ নয় তবু ওই লাইনটা আপনার।
অসাধারন মহারাজ।
ছাইরাছ হেলাল
আসলে কিছুই লুকনো যায় না/থাকে-ও না।
তাম্বুলের রং-কে ঠোঁটে-পরা অলংকার হিশেবে ব্যাবহারের কথা বলতে চেয়েছি।
অনেক ধন্যবাদ।
মনির হোসেন মমি
দুঃখ!
লুকিয়ে থাকার ভান করো, বত্রিশ দাঁতের
খটখটে হাসির আড়ালে।
হা হা হা জব্বর একখান কবিতা পড়লাম।দুঃখগুলো হাসির আড়ালেই থাকে।
ছাইরাছ হেলাল
হুম, আড়ালে থাকে, কিন্তু ফাঁক পেলেই বাইরে বেড়িয়ে এসে জানান দেয়
কঠিন উপস্থিতি।
রেহানা বীথি
লুকানোই থাকে দুঃখ। তাকে আড়ালে রেখে হেসে চলি আমরা। নাহলে বাঁচা মুশকিল।
খুব সুন্দর লিখলেন।
ছাইরাছ হেলাল
দুঃখেরা খুব দুষ্টু দুষ্টু ভাবে নিরুপায় আমাদের নিয়ে মস্করা খেলে!
ভাল থাকবেন।
তৌহিদ
দুঃখরা আছে বলেই সুখ ধরা দেয়। তবু মাঝেমধ্যে নিরুপায় হতে হয় বৈকি!!
ছাইরাছ হেলাল
দুঃখেরা খুব নাছোড় বান্দার মত ঝুলে থাকে বলেই সমস্যা।
তৌহিদ
দুঃখ কাটানোর উপায় জানা থাকলে শেয়ার করবেন কিন্তু!!
ছাইরাছ হেলাল
বাপ্রে! কয় কী!
দুঃখ/সুখ বলতে কিচ্ছু নেই।
সাবিনা ইয়াসমিন
এই লেখা পড়ে দুইদিন ধরে কেবল হাসতেই আছি। কমেন্ট করবো কি? হাসিতো থামেইনা। খোঁচা খাওয়া লেখায় দুঃক্ষ যেভাবে কাড়ি কাড়ি ঝাড়ি খাচ্ছে, তাতে আমার আটাশ দাঁত মুখে ঢুকতেই চায় না 😀😀😀
মহারাজ, সালাম নিন। অনেকদিন পর স্বমহিমায় আবির্ভূত হলেন 🙂
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন দুঃখের জলবিন্দুবৃষ্টিতে ভিজে একাকার!
দুঃখের যূপকাষ্ঠে বলি হচ্ছি, আর আপনি হেসে গড়াচ্ছেন!!
দাঁতি হয়ে যাবেন কিন্তু!!
সাবিনা ইয়াসমিন
অভিশাপ দিলেন নাকি !! আমিতো আপনার দুঃক্ষ প্রহারে সহযোগিতা করলাম মহারাজ। আর আপনি কিনা……
এই জন্যে নিরব কবি বলে গেছেন ,কারো দুঃক্ষে বেদানা খেতে নেই 😜😜
ছাইরাছ হেলাল
অভিশাপ হবে কেন!
দীর্ঘকাল দাঁতে হাওয়া-বাতাস/রোদ লাগালে সমূহ ক্ষতির ক্থা স্মরণ করালাম মাত্র।
বেদানা আমরা খেতে পছন্দ করি! কবি যা-ই বলুক।
সাখিয়ারা আক্তার তন্নী
লুকিয়ে পড়ো এক্ষুণি, সুচারু/সযত্নে লুকিয়ে রাখি,
এভাবে বুঝি সব লুকিয়ে ফেলতে হয়?
ছাইরাছ হেলাল
লুকোন-কে লুকিয়ে রাখা আর গেল কৈ!
পুরনো লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সঞ্জয় মালাকার
দুঃখ লুকিয়ে রেখে লাভ হবে কি, বরং দুঃখ শেয়ার করুন, শরীর মন হালকা হবে।
লুকিয়ে পড়ো এক্ষুণি, সুচারু/সযত্নে লুকিয়ে রাখি,
দুঃখ।
খুব ভালো লাগলো।
ছাইরাছ হেলাল
আসলে কিছুই লুকিয়ে রাখা যায় না/যায় নি।
সঞ্জয় মালাকার
হু – যায়না দাদা, আজনয়ত কাল প্রকাশ মান হবেই,ধন্যবাদ দাদা।