উথাল-পাথাল কথক অন্ধকার পথ। কেউ একজন পাশে আছে কিনা তা শুধুই শব্দে অনুভব। কিংবা স্পর্শে। তখনও হাতে হাতবিজয়ী মোবাইল ছিলোনা। পাশে কোন কবি ছিলোনা যে বলবে তোমার আলোয় আজ সহস্র অন্ধকারের ছুটি হলো। নিরুপায় আমরা আর আমাদের শব্দ নেকলেস। হেঁয়ালি ভরে আমাদের না পারাকে এক গাল ভেংচি কেটে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো আকাশের তারা। আলো বা অন্ধকারে যাদের কিছুই যায় আসেনা এই আমাদের মতো। নিরুদ্বেগ তাদের গল্পে মিটমিট আলোর খেলা দেখি, আর ভাববো কি ভাববো না, পৌঁছে যাই পাতাল তারার দেশে। জোনাকি রাজ্য। হাজার হাজার জোনাকি। এ যেন ষড়যন্ত্রে মশগুল ম্যাজিক সৃষ্টি। নে বাবা, তোরাই জিতেছিস। সদম্ভরে মনে মনে বলি, অন্ধকারের আরেক রূপ তোদের কাছে চির অজানাই থেকে যাবে।
ক্রমশ ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে আমি আলো ছেড়ে কান পেতে রই। দিব্যি করে বলছি ওইদিন ভালোবেসেছিলাম। সেই মরা অন্ধকারে আমি আলো আর সঙ্গী ছেড়ে তাকেই ভালোবেসেছিলাম। চোখ অন্ধই হয়ে ছিলো অন্ধকারে, দু’কান খুলে মন খুলে সেই ঝিঁঝিঁ ঝংকার আমি ভেতর পর্যন্ত টেনে নিয়ে এসেছিলাম। ভালোবাসা নাকি ফিরে ফিরে আসে। ফিরে এসেছে সেই ঝংকার। সোহাগে টেনে নিতে পারিনা শুধু। ঈর্ষান্বিত ঝিঁঝিঁ সব সুর কেড়ে নিচ্ছে আমার। টুপটাপ কুয়াশা, খসে পড়া ফুল, মাথা দুলিয়ে সুর করে পড়ে যাওয়া বালিকার বই, নৈশব্দের শব্দ সব কেড়ে নিচ্ছে একে একে। আকাশ পাতাল তারাদের স্বাক্ষী রেখে ভালোবাসার সেই ঝিঁঝিঁ স্বাক্ষী বিহীন করে যাচ্ছে একের পর এক নিষ্ঠুর সর্বনাশ। গ্রাফের রেখাটা পাতাল বিজয়ের মতো দৌঁড়ে নেমে যাচ্ছে সিঁড়ি বেয়ে।
ঈশ্বর, আমাকে বাঁচিয়ে রাখো ততদিন, যতোদিন ভোরের পা টিপে টিপে আসার শব্দ আমি শুনে যেতে পারি, নইলে মৃত্যই সই।
৫৭টি মন্তব্য
স্বপ্ন
প্রার্থনা ভালো হয়েছে। আল্লাহ যেন কবুল কবুল করেন।
কিছুটা কঠিন হয়েছে আমার জন্য। বুঝি কম আমি।
শুন্য শুন্যালয়
আরেকবার একটু পড়লেই বুঝতে পারবেন। আপনি কম বোঝেন এটা মানলাম না 🙂
স্বপ্ন
চেষ্টা করছি আপু। বুঝে ফেলবো মনে হয়।
শুন্য শুন্যালয়
সব কিছুর পরে সেদিন ঝিঁঝি পোকাকেই ভালোবেসেছিলাম। ঝিঁঝির ডাক আবার কাছে ফিরে এসেছে। তবে এই ঝিঁঝির ডাক আমার সর্বোনাশ করে ফেলছে একটু একটু করে।
সুস্থতা নিয়ে মরে যাবার প্রার্থনা করছি। ক্ষয়ে ক্ষয়ে মরে যাওয়ার চেয়ে সেটা উত্তম। ভোরের প্রতি তীব্র ভালোবাসা এক লাইনেই বোঝানোর চেস্টা করেছি। এবার কি একটু বোঝা যাচ্ছে?
মেঘাচ্ছন্ন মেঘকুমারী
আমিও এমনি করে ভালোবাসবো। ভালোবাসায় ভেসে যাবো। আপু খুব ভালো লেগেছে।
শুন্য শুন্যালয়
অনেক ধন্যবাদ মেঘকুমারী আপুটা। অনেকদিন লিখছেন না কিন্তু।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
অসাধারন লিখেছেন ————- !! :Delicious:
শুন্য শুন্যালয়
অসাধারন এর পরে জিহ্বা কেনো? বুঝলাম কেমন অসাধারন।
আগুন রঙের শিমুল
তোমার শঙ্খ ধুলায় প’ড়ে,
কেমন করে সইব।
বাতাস আলো গেল মরে
এ কী রে দুর্দৈব।
লড়বি কে আয় ধ্বজা বেয়ে,
গান আছে যার ওঠ-না গেয়ে,
চলবি যারা চল্ রে ধেয়ে,
আয় না রে নিঃশঙ্ক।
ধুলয় পড়ে রইল চেয়ে
ওই যে অভয় শঙ্খ।
– বলাকা : ৪
শুন্য শুন্যালয়
সবকিছু ঝেড়ে ফেলে চলরে চল চল… চল চল…
মোঃ মজিবর রহমান
ভাললাগ্ল দিদি। ভাল থাকুন কামনা করি।
শুন্য শুন্যালয়
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনিও অনেক ভালো থাকুন।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কেমন করে এত ছোট বিশাল ভাবার্থপূর্ণ লেখা লিখেন।বরাবরের মতন ভাল লাগল ভালবাসার একান্ত অনুভূতিগুলো তবে কয়েকবার পড়তে হয়েছে।
শুন্য শুন্যালয়
ভালোবাসার অনুভূতির গুলোর পাশে ভালোবাসার ক্ষয়টাও ছিলো। লেখা টাতে সেই সর্বনাশ ছিলো মুখ্য। পড়েছেন তাতে আমি অনেক খুশি ভাইয়া। ভালো থাকবেন।
পুষ্পবতী
ভালো লাগলো আপু।
শুন্য শুন্যালয়
ধন্যবাদ পুষ্পবতী। অনেকদিন লিখছেন না।
খসড়া
অপেক্ষা করো প্রতিটি রাতের শেষে ভোরের আলো থাকবেই।
শুন্য শুন্যালয়
কিছু সময় আলো কি আর ফিরে আসে? তবু অই অপেক্ষাতেই আছি।
ছাইরাছ হেলাল
এবারে অন্ধকারের দিকে চোখ ফেলেছেন দেখছি , আবার ভোরের টানটুকুও জিইয়ে রেখেছেন ।
যতই কঠিন করে বলুন না কেন বুঝতে পারছি সবই ।
শুন্য শুন্যালয়
কেউ কি চায় যেচে অন্ধকারে যেতে বলুন? যতো আলোতেই থাকুন অন্ধকার আপনাকে একদিন ঘিরে ধরবেই। অই ভোরের টানটুকুই যে আমার ভরসা।
যত কঠিন করেই লিখি আপনি ঠিকই বুঝে যাবেন জানি আমি।
ছাইরাছ হেলাল
এ দেখছি তুলসী ঘাটের ভোর । ভোর বেঁচে থাকুক ফুল চন্দনে ।
শুন্য শুন্যালয়
tinnitus, একটি সিমটোম, কানের কাছে অবিরত ঝিঁঝিঁ পোকার মতো ডেকে চলে। অনেকের বেলায় শব্দ অনুভূতি কমে যেতে থাকে। এমন একজন বিধাতার কাছে তার ভোরের শব্দ শুনে যাবার আকুতি জানাচ্ছে।
ছাইরাছ হেলাল
কঠিন অবস্থা দেখছি ।
শুন্য শুন্যালয়
না কঠিন নয়, তবে হয়ে যেতে পারে… 🙂
নাজমুল আহসান
পরীক্ষামূলক মন্তব্য[ছবি মুছে ফেলা হয়েছে]।
শুন্য শুন্যালয়
পরীক্ষামূলক মন্তব্য ভালো হইছে। একসাথে এতো পরিবর্তন সোনেলার দারুণ উপভোগ করছি।
ব্লগার সজীব
জাস্ট বাকরুদ্ধ। কি বলবো এমন লেখা পড়ে। লেখা লেখিই বাদ দিয়ে দেবো । শুধু পড়বো এমন লেখা।
শুন্য শুন্যালয়
লেখা পাঠক পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারলে সেই লেখাকে খুব ভালো বলা যায়না। লেখাটিকে আমি ব্যর্থই বলবো। আপনার মতো করে লিখতে পারলে আমিও নিজেকে ধন্য মনে করতাম।
ব্লগার সজীব
আপনি মনে হয় আমার মন্তব্যটি বুঝতে পারেন নি। আমি বলিনি যে লেখা পাঠক পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। লেখা বুঝেই তো বাকরুদ্ধের কথা বলেছি। আপনার লেখার কাছে, আমার লেখা বেমানান, লজ্জার হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্যই নিজে আর লেখা না দেয়ার কথা বলেছি। আপনার এবং আপনাদের সবার লেখা পড়বো ।
শুন্য শুন্যালয়
না না আমি আপনার মন্তব্য বুঝেছি ভাইয়া। আসলে এটা আমারই মনে হচ্ছিলো কেন যেন লেখাটা সবাই ধরতে পারেনি আমার লেখার দোষে। মাথার মধ্যে অই চিন্তায় আপনাকে লিখে ফেলেছি। আপনার ভালো লেগেছে শুনলে আমিও খুশি হই। আর আপনিও কিন্তু অনেক ভালো লেখেন তা আপনি স্বিকার করুন আর নাই করুন।
স্বপ্ন নীলা
অসম্ভব সুন্দর ———-মনে দাগ কেটে রইল
শুন্য শুন্যালয়
আপনি অসম্ভব সুন্দর একটা মন নিয়ে পড়েন আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
আপনার সেরা লেখাগুলোর মাঝে এটি একটি। ভালো লেগেছে খুব।
শুন্য শুন্যালয়
একটা লেখার জন্য এই মন্তব্যের উপর আর কিছু থাকেনা। ভালো থাকুন অনেক।
মিসু
এমন লেখা ভালো না লেগে পারেনা। ভোরের পায়ের শব্দ অবশ্যই শোনা যাবে।
শুন্য শুন্যালয়
ভালো লাগাই লেখার স্বার্থকতা। পড়ছেন তাতেই আমি খুব খুশি। ভোরের শব্দ শুনে যেতে চাই যতটা দিন আছি।
বনলতা সেন
ঝি ঝি ভোর ভাল করেই আছর করে আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলছে দেখছি । কঠিন করে লিখছেন যে বড় ?
কঠিনের আছর পড়ল নাকি ?
হায় ভোর , আমার সাথে আর হয়না কো দেখা সেই কত কাল !
শুন্য শুন্যালয়
আছর কারো পরলে তা বনলতা দির আছর পরবে বলেই মনে হয়। কঠিন লাগছে, তাও আপনার কাছে? কোন জায়গাটাতে বলুন তো? ভোর কেমন করে দেখবেন যেভাবে আপনাদের চোখে রাত জেঁকে বসেছে।
আমাদের ছেড়ে থাকা কিন্তু ঠিক না।
বনলতা সেন
আমার জন্য ভোর কখনও কঠিন হতেই পারে না ।
শুন্য শুন্যালয়
তবে যে ভারি বললেন কঠিন করে লিখছি। একদমই কঠিন নয় আপনার কাছে জানি আমি। একটু ক্লাইমেক্স, পুরনো প্রেমিক ঝিঁঝিঁ পোকা ফিরে এসে দেখে আমি ভোরের হয়ে বসে আছি তাই শত্রুতা করছে … 🙂
বনলতা সেন
সিনেমা-ফিনেমা বিদায় করে দিলেন নাকি ?
শুন্য শুন্যালয়
না বিদায় হয়নি, দেখা হয় একটু কম তবে দেখি। আপনার কি অবস্থা? ভয় দেখালাম বলে কি সিনেমা মুখো হলেন না? আমি যে অপেক্ষায় ছিলাম আপনার রিভিউ এর।।
বনলতা সেন
জ্বী না,ভাই। ও লাইনে যাচ্ছি না। তবে আপনাদেরটি পড়ব অবশ্যই।
জিসান শা ইকরাম
লেখাটিকে জোড়া লাগাতে পারছিনা কিছুতেই
তখনো হাতবিজয়ী মোবাইল ছিলোনা – এরপর থেকেই তাল গোল পাকিয়ে গেলো আমার মাথায়।
আবার পড়তে হবে মন্তব্য সহ।
শুন্য শুন্যালয়
ইশ অনেক কস্ট দিয়ে ফেলেছি। এবার একটু সহজ করে বলার চেস্টা করছি…
ঘুটঘূটে এক রাতে পাশের মানুষকে দেখা যায়না এমন, হাতে মোবাইল থাকলে আলো জ্বালানো যেত সেসময় তাও ছিলোনা। তখন আকাশের তারা আর জ্বোনাকি দিব্যি আলো জ্বালিয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলো আর আমরা যে অসহায় তার ব্যঙ্গ করলো। আমি অবশ্য দাম্ভিক হয়ে মনে মনে তাদের বলেছি অন্ধকারের একটা রূপ আছে যা তারা দেখতে পায়না।
সেসময় ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে আমি বিমোহিত হলাম, প্রেমে পরে গেলাম। পরিবেশ আর প্রেমের একটা সম্পর্ক আছে। বহুদিন বাদে ঝিঁঝিঁ পোকা ফিরে এসেছে। এটা একটি রোগের পূর্বলক্ষণ। আমি ভয় পাচ্ছি ভোরের শব্দ শুনতে পাব কিনা। শব্দ ভারসাম্য শরিরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। মানসিক কিছু অস্থিরতাও কাজ করছে এজন্য।
লেখাটির শিরোনাম প্রার্থনা। যতোদিন বেঁচে আছি ভোরকে পুরোপুরি ভাবে পেতে চাই।
এবার একটু বোঝা যাবে মনে হয়, নইলে আমি তো আছিই 🙂
জিসান শা ইকরাম
এখন জলবত তরলং 🙂
আসলে কবিতার মাঝে নেই বহুবছর
এরপর ইদানিং কিছু অস্থিরতায় মনসংযোগে অভাব।
মস্তিস্ক গ্রহন করতে পারেনা সহসা ।
প্রার্থনা কবুল হোক।
শুভ কামনা ।
বনলতা সেন
লেখা-পড়া হচ্ছে বুঝি ? চলুক। আমরাও শিখে ফেলি।
শুন্য শুন্যালয়
না লেখা পড়া না, গল্প গুজব চলছে :Happy-Grin:
মিথুন
এতো কঠিন লেখা বুঝতে কস্ট হয়। শেষের মন্তব্যটি আগে পড়লে কস্ট কম হতো।
আপনি যে অবস্থাতেই থাকুন ভোর আপনাকে অনেক ভালোবাসবে তাই মৃত্যুর কথা মনে আনবেন না আপু।
শুন্য শুন্যালয়
কস্ট করে পড়বার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 🙂
মৃত্যুর কথা মনে করা কিন্তু ভালো।
বনলতা সেন
কু………………………………………………ক………………………………
শুন্য শুন্যালয়
পিকাবু খেলা চলছে নাকি? :Girl-Teasing:
লীলাবতী
ভোর আসবেই আপনার কাছে, এমন প্রত্যাশা করি আপু। লেখায় মুগ্ধতা ।
শুন্য শুন্যালয়
ভোর তো আমার কাছেই আছে, যেতে দিচ্ছিনাতো 🙂
আপনি কই কই থাকেন? দেখিই তো না।
অরণ্য
(y)
অরণ্য
পূনশ্চঃ এত ভাল লেখা পড়ার পরে একটা ব্রেক দরকার ।
http://www.youtube.com/watch?v=d59zN-ZwX2k
শুন্য শুন্যালয়
কেনো খুঁজতে চাস আমায় সাজানো ম্যাগাজিনে। 🙂
আপনি গানের পাগল বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ দিচ্ছি।