ঘটনাঃ১:ঘোর কলিকাল বলেই কথা.…………..
বিকালে রিক্সা পাওয়া খুব কষ্ট। অফিস টাইম শেষে,ক্লাশ শেষে,কোচিং শেষে,কর্ম শেষ করে সবাই বাসায় ফেরে। আমিও ফিরছিলাম। অনেকক্ষণ ধরে রিক্সার জন্য ছুটাছুটি করছি।
– ভাই যাবেন? …মামা যাবেন?………ওই যাবি? …… আংকেল যাবেন?……ইত্যাদি।
অনেক কষ্টে একজনকে পেলাম।
– কই যাবেন মামা?
– মাদ্রাসা।
– না যামু না। আপা কই যাবেন? (পাশে এক আপাও রিক্সা খুজছিলো।সেই আপাকে লক্ষ্য করেই রিক্সাওয়ালার প্রশ্ন)।
– মাদ্রাসা
– ওডেন আপা।
আমি অবাক হয়ে হা করে রইলাম। রাগে গজগজ করতে করতে বললাম-
– খাড়া মাদ্রাসা আইসা লই…
অনেক কষ্টে রিক্সা পেলাম।মাদ্রাসা পৌঁছে দেখি ছোট্ট একটা জটলা। উঁকি দিলাম কৌতুহলবশত। দেখি ঐ রিক্সাওয়ালা আর ওনার আপার মাঝে ঝগড়া লাগছে।
– ভাড়া কি মাগনা আসে?
– না আপা সবাই ২০টাকা দেয়।
– কে দেয় জিগা?
– সবাই দেয়।
– ভাড়া কত?
– ১৫টাকা। কিন্তু সবাই রাস্তা খারাপ দেইক্ক্যা ২০টাকা দেয়।
– তরে তো কইলাম জিগা কেডা দেয়। (মহিলার/আপার ভাষা শুনে হা হয়ে রইলাম)।
এর মাঝে বলা নাই কওয়া নেই একজন এসে,
– থাপড়াইয়া তোর দাঁত খুলে দেব। শালা আবার তর্ক করস?
– ভাই আমিতো…
ঠাস ঠাস করে দু’চার ঘা দিয়ে দিল কথা শেষ হওয়ার আগে। আমি নীরব দর্শক ছিলাম। খুশি হওয়ারই কথা ছিলো। কিন্তু হতে পারি নি। শুধু আফসোস করলাম-
‘আমারে না ঠকাইলেই পারতে ভাইজান…আমি না চাইলেও ২০টাকাই দিতাম… ঘোর কলি কালের নেশায় পড়ছ… এমন ধাক্কা তোমাকেই সামলাতে হবে..’
ঘটনাঃ২:ডেঞ্জারাস প্রেম
এক মেয়েকে অফার করে এলাকার এক ছোট ভাই পড়েছে মহা বিপদে। বেশী ফাফর বাজ হলে যা হয়।
প্রতিদিন স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে থাকত। বৃহস্পতিবার সুযোগ বুঝে ব্যাগের চিপায় আরেক মেয়েকে দিয়ে একটা প্রেমপত্র গুজে দিলো। লেখা ছিলো-
“ওগো নীলনয়না, তুমিকি কি জানো না?
আমার হৃদয়ের পরতে পরতে তোমার নামটি লেখা?”
ইতি
তোমার —-
কিন্তু লাক খারাপ। ব্যাগ ধুতে গিয়ে চিঠিখানা উদ্ধার করে মেয়েটির মা। হাত বদলে চলে আসে মেয়েটির বাবার কাছে। নো বাক্য বিনিময় ; মেয়েটিকে উত্তম-মধ্যম।
শনিবার ছোটভাই দাঁড়িয়ে আছে আমগাছের নিচে। ছুটির ঘন্টা বাজার আর কিছুক্ষণ বাকি। আজ নিশ্চয়ই পজিটিভ অ্যানসার পাবে এই আশায় একটু নার্ভাস ছিলো।
ঘন্টা বাজল। ছোট ভাই এগিয়ে গেলো গেটের কাছাকাছি। ঘটনা সত্যি। মেয়েটি তার দিকে এগিয়ে আসছে। সাথে মোটা দুই বান্ধবীও। হার্টবিট চলতে লাগল হরদম।
কাছে এসেই মেয়েটি ব্যাগ থেকে একটা ছুরী বের করে বলল-
– ঐ শার্ট খোল। তোর হৃদয়ের কোনখানে আমার নামলেখা আজ আমি কাইট্যা-কুইট্যা দেখমু।
– ইয়ে মানে…………।।
(মানে আর কিছুই নয় কালবিলম্ব না করে ভোঁ-দৌড়।এখন নাকি মেয়েটা ছুরি নিয়েই ঘোরে !!!!!!!!!!)
ঘটনাঃ৩: বডি স্প্রে
গতকাল বডি স্প্রে কিনতে গেলাম। দোকানদার পরিচিত। একটা দেখিয়ে বলল-
– এইটা লন। সেইরকম অ্যাটার্কটিভ সেন্ট(ঘ্রাণ)।
– তাই নাকি?
– (লোভ ধরানোর জন্য বলল) টিভিতে দেখেন নাই অ্যাড? মাইয়ারা কেমনে পিছু নেয়?
– তাই নাকি?
– হ ! আমিও টেরাই করেছি।
– তাই নাকি?
– হ !এই যে পরশু উত্তরায় গেলাম মাইখ্যা । বাসে উইঠ্যা দেখি পাশে এক মাইয়া আইসা বইলো।
– তাই নাকি? …
– হ ! পুরা দিনটাই ভালা গেছিলো।
– তাই নাকি?
– হ ! রাইতে আপনার ভাবিও সেইরকম খাতির করল।
– তাই নাকি?
– হ ! বিশ্বাস না হয় ভাবিরে জিগাইয়েন। এই লন লইয়া যান। সেই রকম অ্যাটার্কটিভ। কইলাম তো ভাবিরে জিগাইয়েন।
– ইয়ে মানে…ভাবিরে জিগাইতে যাওনের সময় কি মাইখ্যা যামু?
-হ ! ????????? অ্যা?????????????? মানে??????????? ম্যা ম্যা ম্যা।
(চলবে…)
বিঃদ্রঃ খাজুরে আলাপ নীলকন্ঠ জয়ের ফেইসবুক টাইমলাইন থেকে চুরি করা। :D)
১৮টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
মেগাবাইট ফেরৎ দিতে হবে না ।
এগিয়ে যান ।
নীলকন্ঠ জয়
যাক বাবা বাঁচা গেলো।
অনেক ধন্যবাদ। নিয়মিত পড়ছেন দেখে আনন্দিত হলাম।
শুভ কামনা।
ব্লগার সজীব
হা হা হা হা হা , আপনার মেগাবাইট দরকার আছে কিনা কন 🙂 চালাইয়া যান । সেন্টের নামটা একটু বলেন ভাই 😛
নীলকন্ঠ জয়
সেন্টের নাম বলা যাবে যদি আবার কিছু ঘটাইয়া দেন !!!
ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। এক কাপ চা খান। :T
ভালো থাকুন। 🙂
নীলকন্ঠ জয়
প্রিয়তমার অনুভূতি জাগিয়ে তুলুন এবং সারা দিন সজীবতা অনুভব করুন “ফগ বডি স্প্রে”
ব্যাবহার করে।(এটাই প্যাকেট করে দিয়েছিলো।)
সাবধান স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা করেই ব্যবহার করুণ। (অ্যাডটা কিন্তু “এক্স” বডি স্প্রের ছিল। আমাকে মগা ভেবে গল্পটা রসিয়ে বলেছিলো।)
বনলতা সেন
কলিকালের গল্প এমনি হয় ।
কলিকালে ফেরৎ চাওয়া , নেওয়া বা দেওয়া ঠিক না ।
লিখুন ।
নীলকন্ঠ জয়
বনলতা দি, কলিকালে বসে কলিকালের গল্প বলাও এক মহাবিপদের কথা। কলির অবতর যদি খড়গ খানি আমার ঘাড়েই বসিয়ে দেয়?
মেগাবাইট থাকলেই গল্প চলবে…
শুভ কামনা।
আমার মন
ঘটনা সত্য, কলিকাল নাড়া দিচ্ছে 😮
নীলকন্ঠ জয়
ঠিক কলিকাল মাথা তুলে দাঁড়ানো শুরু করেছে। ভেবেছিলাম এই বাংলায় কলিকাল কিছু পরে আসবে। এখন দেখি সমানে এগুচ্ছে।
পড়তে আসার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
কলি কাল ঘোর কলি কাল 🙂
অনেক মজারু হইছে 🙂
নীলকন্ঠ জয়
মজারু হওয়ায় শান্তি পেলাম। মেগাবাইট রক্ষা পেলো। মেঝো পুত্রের জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ভাল থাকুন।
শুন্য শুন্যালয়
ভাগ্যিস মজা পেয়েছি, না পেলে ঘোর কলিকালে আপনিই পরতেন, মেগাবাইট কেমন করে ফেরত দেবেন এই চিন্তায় …চলুক লেখা (y)
নীলকন্ঠ জয়
হাহাহাহা মেগাবাইট ফেরত দেওয়ার কলি যুগের ফাঁকিবাজিটা আমার জানা আছে। যদিও বন্ধুরা মনে হয় এত বেশী নির্দয় হতেন না।
মজা পেয়েছেন শুনে ভালো লাগলো।
শুভ কামনা।
আদিব আদ্নান
কলিকালে দেখছি ভাল লেখাও পাওয়া যায় ।
আর না লিখলে অবশ্যই গিগাবাইট ফেরৎ দিতে হবে ।
তারাতারি শুরু করে দিন ।
নীলকন্ঠ জয়
গিগাবাইট? -:- দুর্মূল্যের বাজারে এতবড় জরিমানা গুনতে চাইনা।
পরের পর্বটা আসছে…কত পর্ব আসবে জানিনা। তবে লেখালেখি বন্ধ হবে না।
ভালো থাকুন। কলিকালেই বেঁচে থাকুন।
শুভ কামনা।
শিশির কনা
:D) এমন লেখা আরো চাই ।
নীলকন্ঠ জয়
মেগাবাইট থাকলে এমন লেখা চলবেই। সঙ্গে থাকুন…
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
শুভ কামনা।