আজকাল একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটে আমার সাথে। আমি মাঝে মাঝে “ফিরে আয়, ফিরে আয়” বলে ঘুমের মধ্যে কথা বলে উঠি। কাকে ফিরতে বলি সে এক বিশাল রহস্য নিজের কাছেই। নিজের এই কান্ড দেখে আমি নিজেই কিছুটা চিন্তিত। এই চিন্তা মাথায় নিয়ে একদিন সন্ধ্যায় ক্যান্টনম্যান্ট এর ভিতরের প্রায় নির্জন একটা পার্কের পাশ দিয়ে হাঁটছি।একটা নড়াচড়া চোখে পড়াতে আমি জমে গেছি। নিজেকে বুঝাচ্ছি সমস্যা নেই তোমার দিকে দৌড়ে আসবে না মোটেই। কিন্তু মন চাইছে খিচ্চে দৌড় দেই। দুই কদম মনে হয় দিতামও কিন্তু যেহেতু আমি জমে গেছি সেহেতু পা উঠছে না আমার। আমি ভেবেছিলাম এপাশের কিছু অটিস্টিক পিচ্চি আছে তার কেউ একটা হবে। ওদের দেখে এতো ভয় লাগার কিছু নেই। তাও কেনো এমন লাগলো জানি না। এবার কিছুটা অস্বস্তি আর কিছুটা বিরক্তি নিয়ে তাকালাম। একটা মেয়ে রাস্তার শেষ মাথায় বসার জায়গা গুলোর একটাতে বসে হাত, পা, গলা, মাথা সব নাচিয়ে কথা বলছে। ভাবলাম কেউ আছে হয়তো। ভালো করে তাকালাম; আরে নাহ, কেউ নাই। কানে ইয়ারফোনও নাই, হাতে ফোনও দেখছি না। আর একটু পরপর সে ইয়া মোটা একটা গাছের দিকে তাকিয়ে উত্তেজিত হয়ে গাছটাকে কি কি যেনো বলছে। এবার আরো ভয় পেলাম। এই মেয়ে কি গাছের কথা বোঝে? এটা তো তাহলে ভয়ংকর ব্যপার। আজকাল মানুষ মানুষের কথা বোঝে না। একটা চাইলে করে তার উল্টা। তাহলে ঘটনা কি? এই মেয়ে কি পাগল? আচ্ছা? পাগলেরা এতো সুন্দর সাজতে পারে? হোক সে সুন্দর, তাতে আমার কি? আমি দৌঁড় দেই না কেন? পায়ে কি শিকড় গজালো নাকি? আমার পা ওঠে না কেন? এসব ভাবতে ভাবতেই মেয়েটা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে দেখে আমি সব ভুলে একদম খিঁচে দৌড় দিলাম।
কিন্তু ঘাড়টা নিজের রাস্তার দিকে স্থুলকোণ আর মেয়েটার দিকে সূক্ষ্মকোণ করে রেখে আমি দৌঁড়াচ্ছি। মেয়েটার অবস্থান আমার দেখতেই হবে। আরে মেয়েটা তো আসছে না, ওখানেই আছে। উঠে দাড়িয়েছে শুধু। এবার একটু সাহস (আসলে হাঁপিয়ে গেছি) নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। এক পা, দু’পা করে মেয়েটার থেকে নিরাপদ দূরত্বে কিন্তু তাকে দেখা যায় এমন জায়গায় দাঁড়ালাম। তারপর ভালো ভাবে লক্ষ্য করে যেটা দেখলাম তা বললে মানসম্মান থাকবে কিনা ঠিক বুঝতে পারছি না।
বিঃদ্রঃ
১। আমি লেখাকে ফিরতে বলি শয়নে, স্বপনে, জাগরণে। আমি লেখা খুজে পাই না আজকাল।
২। মেয়েটার কানে ব্লুটুথ লাগানো ছিলো ।
৩২টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
পালালাম
মেহেরী তাজ
হুম ভালো…
কিন্তু এটা বুঝলাম না রম্য লেখা পড়ে কেউ পালাবে কেনো?
মোঃ মজিবর রহমান
আপু শুনেছি পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার জাহিদ মালিক, বল নিয়ে দোড় দিলে দোড়ের ভংগি দেখেই ব্যাটম্যান ব্যাট ফেলে দোড় দিয়েছিল তাই। সত্য মিথ্যা জানিনা।
মোঃ মজিবর রহমান
লেখা পড়ে ভাল লেগেছে। আপু।
তৌহিদ
লেখা ফিরে আসুক আবার আপন স্বকীয়তা নিয়ে। আর শোনেন! এইসব স্বপ্ন দেখা বাদ দিন আপু। তাড়াতাড়ি ফিরে আসুন সুন্দর সব লেখা নিয়ে।
শুভকামনা জানবেন।
মেহেরী তাজ
ভাইয়া আসলে লেখা ফিরবে না মনে হয়।। না হলে এতো জ্বালায় কেনো?
ধন্যবাদ ভাইয়া।
তৌহিদ
লেখকদের লেখারা জ্বালাবেই। যাকে জ্বালায়না সে লেখক নয় আপু।
শুন্য শুন্যালয়
বুবু জানো, সত্যি করে বলছি আমি এইটা নিয়ে স্ট্যাটাস দিতে চাইছিলাম।
“ব্লুটুথ এয়ারফোনে কথা বলে হররোজ সবাই, তবুও যতোবার তাদেরকে দেখি, প্রথমবার মনে হয় এইটা কি পাগল!!”
আমার ব্রেইনের সিকিউরিটি বাড়ানো লাগবে, আজকাল সবকিছু হ্যাক হয়ে যাচ্ছে আমার 🙁
তোমার খিঁচে দৌড় আমি কিন্তু চোখের সামনে দেখতে পাইছি। হাহাহা। হায়রে সাহসী ভূত!! তুমি কারো ঘাড়ে চড়ো ক্যম্বায় কইরা?
আমিও ফিরে আসতে বলি, লেখারা আজকাল এন্টার্কটিকা চলে গেছে মনেহয়, যদিও তোমার লেখা দেখে মোটেও মনে হচ্ছেনা, তুমি লেখা সংকটে ভুগছো! হুহ।
মেহেরী তাজ
ভাগ্যিস তোমার আগেই পোষ্ট দিয়ে ফেলেছি। বুবু দৌড়টার কিন্তু একটু বর্ণনা বাদ ছিলো। চিন্তা করো এক হাতে বোরখা ধরে দৌড় দিছি। নিজেই তো মাঝে মাঝে এই ঘটনা মনে করে হেসেই অস্থির হই।
বুবু আমার লেখারা আন্দামান এ ঘর বাধছে।দেখি ভালোভাবে ফিরাতে পারি কিনা।
তুমি যে কে বলো না বুবু! যে একটা সাক্ষাতকার নিছো তাতে আর কি লাগে?
প্রহেলিকা
কি লিখেছেন সারমর্ম বলেন, আমি অনেক অলস হই গেছি। লেখাপড়া করতেই পারছি না। হেল্প প্লিজ!
মেহেরী তাজ
সারমর্ম হলো প্রহেলিকা ভাইয়া অলস। আর তাও নিজে নিজের আয়নায় প্রথম মন্তব্য করে।। দুই আর দুই এ ৬ হয়ে যাচ্ছে…
ছাইরাছ হেলাল
যে লেখক সূক্ষ্ম আর স্থুল কোণ চিনে তাকে আর নুতন কিছু খোঁজার ভান করতে হবে না।
দিনে দিনে কী লিখছে!! পুরাই পাক্কা টাইপ।
মেহেরী তাজ
ভাইয়া আপনি মহান।মহান।এমন অখাদ্য লেখাকে কেই পাক্কা বলে? তাও আবার আপনার মত কবি? তাহলে লেখাতে কি আসলেই সুক্ষ্ম কোন বিষয় আছে যা লেখক নিজেও বুঝে নাক??
ছাইরাছ হেলাল
ওসব কথা বাদ, নুতন লেখা দিন।
মেহেরী তাজ
চেষ্টা করছি ভাইয়া। দোয়া রাইখেইন …
রাফি আরাফাত
অনন্য
মেহেরী তাজ
অতুলনিয়,অদ্বিতীয়,অসাধারন… শব্দ চর্চা করছি ভাইয়া।
ধন্যবাদ।
তৌহিদ
প্লিজ আরও কিছু বলুন- বেসম্ভব সুন্দর, অদ্ভুত কুৎসিত, সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস ইত্যাদি ☺☺
মেহেরী তাজ
জ্বী ভাইয়া শব্দ চর্চা করা ভালো জিনিস।
চর্চা অব্যহত আছে…
রিতু জাহান
আমি তো ভো দৌড় দিতাম না। বিরাট সাহসি আমি জানিস তো। শুধু ঠোঁট সাদা হয়ে যেতো, মেরুদন্ড দিয়ে ঠান্ডা কিছু নেমে যেতো।
বর্ণনা বেশ দিছিস। পাক্কা একদম
মেহেরী তাজ
ভাবিজান আমার ও বিরাট সাহস।সেই জন্যই তো মর্ম উদ্ধারে মরিয়া ছিলাম যদিও ভো দৌড় দিয়েছিলাম।
বর্ণনা ? কি জানি!!
আরজু মুক্তা
বুঝলামনা!আমারও মাথাটা আউলা লাগছে!
মেহেরী তাজ
তাহলে মাথায় তিব্বত কদুর তেল দেন আপু। মাথা থাকবে ঠান্ডা ,ঘুম হবে নিশ্চিন্ত।
দেশি পন্য কিনে হই ধন্য।
ধন্যবাদ আপু।
ইঞ্জা
আপু আমিও খিঁইচ্চা লাগাইতে আছিলাম, লাগাইছিলামও, শেষের লাইনে আইসসা এমন ধরাম কইরা পড়লাম যে কি কমু, ব্লুটুথ এতো দূর থেইক্কা কেমনে দেখলেন আপনি? 😄
মেহেরী তাজ
ভাইজান আমার মানসম্মান ও শেষে এসে ইয়ে… সে যাক।
ব্লুটুথ? কিভাবে দেখলাম? সেটা দেখার জন্যই না এতো চেষ্টা ছিলো?
বুঝলেন ভাইজান? ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। 😂😂
ইঞ্জা
হো হো হো, হি হি হি। 😃😀😄
শামীম চৌধুরী
লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। এখন ইচ্ছে হচ্ছে দেই দৌড়।
মেহেরী তাজ
লেখা ভালো লেগেছে জেনে আমার ভালো লাগলো। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় দৌড় কেনো? সে তো বুঝলাম না!
মোঃ বোরহান উল ইসলাম
আপনার ধারাবাহিক বর্ণনা চমৎকার। সাবলীলতা বিদ্যমান।
মেহেরী তাজ
মন দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।।
সকাল স্বপ্ন
ভয় পাই নাই তবে ইচ্ছা করছে
আরও এমন কিছু পড়তে পারব আশা রাখি।
লিখা— ভাল লাগা ছুয়ে ছুয়ে
মেহেরী তাজ
জ্বী ভাইয়া ধন্য
বাদ দিয়ে দেবো আরো
লেখা খুব তাড়াতাড়িই…