ঘুম আসছেনা রঞ্জুর। অথচ শরীর আর মন জুড়ে রাজ্যের ক্লান্তি। ক্লান্তি আর ঘুমহীনতার দড়ি টানাটানিতে ছেঁড়া ছেঁড়া ভাবনা অাসা যাওয়া করছে মাথায়। মনে পড়ছে কৈশোরে এক অন্ধ ভিখিরিকে রাস্তা পার করিয়ে দেয়ার পর মাথায় হাত রেখে সে দোয়া করেছিল “অনেক বড় হও বাবা”! পর মুহূর্তেই মনে পড়ছে বাড়ির পেছনের পুকুরে ছোট চাচার বড়শী ফেলে একাগ্র মনে মাছের টোপ গেলবার অপেক্ষায় থাকা মুখের কথা। আবার মনে পড়ছে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে দু’পায়ে দুরকম জুতো পরে স্কুলে যাওয়ার পর সহপাঠীদের নির্মম কৌতুক। মনে পড়ছে বাড়ির উঠোনে পাড়ার বন্ধুদের সাথে বিকেলে ক্রিকেট খেলা নিয়ে হুল্লোড় আর আউট হওয়া না হওয়া নিয়ে তুমুল তর্কের কথা।
ভাবছে স্কুলের গন্ডি পেরুনোর আগেই মনে ভাললাগার আবেশ মাখিয়ে দেয়া রিনির কাছে ভীরু প্রেম নিবেদনের কথা। স্কুলের সেরা ছাত্রদের একজন রঞ্জুর চোখে চাইতে পারেনি রিনি সেদিন। লজ্জায় রাঙ্গা গাল নিয়ে পালিয়েছিল রঞ্জুর সামনে থেকে রিনি।
কলেজের মিছিলে তুমুল শ্লোগানে উদ্বেলিত নিজের মুখ মনে পড়ছে তার। রিনির হঠাৎ বিয়ে হয়ে যাওয়ায় নিজেকে নষ্ট করার আপ্রান চেষ্টার দিনগুলোর কথা ভেসে উঠছে মনে। সেইসব অসহায় দিনে প্রিয় বন্ধুদের মমতাময় আশ্রয় আর সাহস দেয়ার কথা মনে পড়ছে।
মনে পড়ছে, মনে পড়ছে, মনে পড়ছে…….. কি মনে পড়ছে?! কিছুই না, কিচ্ছু মনে পড়ছেনা। শুধু সর্বগ্রাসী এক আঁধার চেপে আসছে চারপাশ থেকে। সে আঁধার গাঢ় হতে হতে একসময় পারমানবিক বোমার মত বিস্ফোরিত হয়ে অবশেষে স্বর্গীয় এক আলোকধারায় পরিনত হতে থাকে। সেই আলোকধারায় অবগাহন করতে করতে শেষবারের মত রঞ্জু ভাবে, “আহা মুক্তি………”
৭টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
🙁
বেঁচে থাকার মতো কতো সুন্দর কিছু মনে পরেছে তার, এগুলোই কি যথেষ্ট নয়?
কস্টকর সকাল দিলেন, তবুও লেখাতে অনেক ভালো লাগা..
ভালো থাকুন ..
ছাইরাছ হেলাল
না না , এমন মুক্তি কামনা করি না ।
ভাল থাকতেই হবে আমাদের ।
জিসান শা ইকরাম
ছোট লেখাটি অনেক সুন্দর এবং পরিপাটি ।
আঁধার কেটে জেগে উঠুক সোনালী রোধ
শুভ কামনা ।
নীহারিকা
এমন মুক্তি আমাদের কাম্য নয়। সকল হতাশা দূর হোক।
লীলাবতী
এমন ভাবনা দূর হয়ে যাক । (y) (y)
আদিব আদ্নান
বেদনা বিধুর লেখা পড়লাম ।
ভালই ।
ব্লগার সজীব
ভালো লিখেছেন বোকা ভাই -{@ (y)