পরিবারের সাথে সময় কাটানো অত্যন্ত আনন্দের। ছুটির দুইদিন আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই পরিবারের সাথে সময় কাটায় বা একসাথে আনন্দ নিয়ে বাইরে বের হয়।
এই করোনা দুর্যোগকালীন সময়ে সচেতন মানুষজন গৃহে অবস্থান করছেন। প্রথম প্রথম পরিবারের সাথে সময় কাটানো অত্যন্ত আনন্দের হলেও দিন যত অতিবাহিত হচ্ছে, আনন্দের স্থান দখল করছে বিষন্নতা। পরিবারের সাথে থাকা কি আর আনন্দের নয় এখন? অবশ্যই আনন্দের, তবে দিনের পর দিন বাসায় অবরুদ্ধ থেকে অনেক মানুষই বিষন্নতায় ভুগছে। পেশাজীবীগন তাদের কাজের মাঝে একটি অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিনেই এই অভ্যাস্থতা তৈরি হয়েছিল। ছাত্র, চাকুরীজীবী বা ব্যাবসায়ীগন একটি নির্দিস্ট সময় বাসার বাইরে থাকতো। এটিই অভ্যস্থতা। এর ব্যত্যয় ঘটেছে বর্তমানে।
দুই মাস যাবৎ বাসায় আছি। কি করছি বাসায়? কিভাবে কাটছে দিন? যতই চেস্টা করি করোনার কোনো খবর আর দেখবোনা, তা না দেখে পারছি না। বিশ্বব্যাপী এত মানুষের মৃত্যু সহ্য করার মত নয়। আমাদের দেশে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার অভাব মনকে বিক্ষিপ্ত করে দেয়। যা করা উচিত মানুষ যখন তা না করে স্নায়ুর উপর তখন চাপ পরতে বাধ্য। এসব ঘটনা উপেক্ষা করার মত না। জনগনের অসচেতনতার ফলাফল দেখতে পাচ্ছি আমরা। দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর শেষ কোথায় জানিনা আমরা কেহই।
আমি ব্যবসা করি। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রনোদনা দেয়া হয়েছে যা প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্য থেকে জেনেছি আমরা। যে সমস্ত ব্যবসায়ীর ব্যাংক লোন আছে, সেই লোনের সুদ এপ্রিল ও মে মাসে যা আসে তা ব্যাবসায়ীর হিসেবে যোগ করা স্থগিত করার কথা। সুদ এর পরিমান ব্যংকের একটি আলাদা হিসেবে রাখার কথা শুনেছি। কিন্তু ব্যাংক কি করলো? তারা ঠিকই সুদ এর টাকা ব্যাবসায়ীর হিসাবে রেখে দিয়েছে। চরম একটা প্রতারনার মত মনে হচ্ছে এই প্রনোদনা।
ব্যবসা বন্ধ বর্তমানে। সুদের টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাবসা কি জুন মাসে আবার আরম্ভ করতে পারবো? আবার আরম্ভ করে পুর্নোদ্যমে ব্যাবসা চালু কি পরবর্তি দুই মাসেও কি করতে পারবো? ব্যাংকের সুদ তো আর থেমে থাকবে না। যে ধাক্যা লেগেছে আমার ব্যাবসায় তা সামলে উঠতে অনেক সময় লাগবে। সে সময় তো আর ব্যাংক আমাকে দেবে না। নিশ্চিত ব্যাংক লোনের ডিফলটার হবার দিকে ধাবিত হচ্ছি।
একে তো করোনার বিভিন্ন খবরে মনের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। একটা বড় ধরনের ভীতি ঢুকে গিয়েছে মনে। এরপর ব্যবসার অনিশ্চিত ভবিষ্যত বিষন্নতার সাগরে নিমজ্জিত করেছে আমাকে। গৃহে থাকার আনন্দ আর স্বাভাবিক কারনেই পাচ্ছিনা আমি।
আর একটি ছোট উদহারন। সরকার ঘোষনা দিলো যে জুন মাস পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের উপর সুদ ব্যাংক চার্জ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সার্কুলারও জারি করেছে। কোনো ব্যাংকই এটি মান্য করছে না। আমার ক্রেডিট কার্ডের ইন্টারেস্ট বিলম্ব ফি সহ চার্জ করছে। এই যে ইন্টারেস্ট চার্জ করছে এর প্রতিক্রিয়া হয় মনে। উলটা পালটা ঘটনায় মনে রাগ আসে, কিছু করতে না পেরে বিষন্ন হই।
কবে পাবো আলোর দেখা? আদৌ কি আর আলো আসবে?
————————————————
সোনেলার পাঠক, ব্লগার, শুভানুধ্যায়ী, ব্লগ টীম কে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ঈদ মুবারক।
২৩টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
ঈদ মু্বারক।
সময়ের চুলচেড়া পরিমাপ।দুঃসহ করে দিয়েছে এক ভাইরাস সমস্ত বিশ্বের অবকাঠামো।
রাষ্ট্রনায়ক অথবা রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের বিবেচক নির্ধারনী সিদ্ধান্ত যদি জনহিতকর না হয় সার্বিক পরিস্থিতী আরো ভেঙে পরতে সময় লাগবে না।
একটা ঘটনা থেকে আরেকটা ঘটনার যোগসুত্র এতবেশি জড়িত! যে এরপর কোনটা রেখে কোনটা সামাল দেবে কে বা কারা? সময়েন অপেক্ষা মাত্র। ধৈর্য এবং বিবেচনার পরীক্ষা এখন সবচেয়ে বেশি।
সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি।
জিসান শা ইকরাম
ঈদ মুবারক।
দিন দিন মনের উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছেই, কমানো যাচ্ছে না এটা।
দোয়ায় রেখো আমাকে।
শুভ কামনা।
ফয়জুল মহী
ভালো লাগলো ।
চরম বাস্তবতা, নিখুঁত প্রকাশ।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
এ সময়ের বাস্তবতা নিঁখুত ভাবে তুলে এনেছেন।
একদিকে মানুষ জীবন ও জীবিকার সংগ্রাম করছে
অন্যদিকে কিছু অবিবেচক নিষ্টুর পরিহাস করছে।
এ আঁধার কেটে ভোরের সূর্য উঠবেই
সে আলোকজ্জল দিনের আশায় দিন কেটে যাই।
ভাল থাকবেন। নিরাপদে থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
এ আঁধার যেন কেটে যায় দ্রুত।
ধন্যবাদ দাদা।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
কোথায় যাবে দেশে, কোথায় যাবে দেশের জনগণ এসব ভাবতেই শিউরে ওঠে আত্মা। কী এক দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি আমরা তা বলে বোঝানোর নয়।
সরকারের প্রাণোদনা সঠিক বন্টন হবে নাকি বন্টনকারী পেট ভরাবে তা কে বলতে পারে। এদেশে
এসব স্বাভাবিক ব্যাপার স্যাপার।
কী হবে এই ভেবে বিষণ্ণতায় দিন কাটানো সত্যিই ভীষণ চাপের। তবুও বলবো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর চাপমুক্ত থাকুন ভাইয়া
জিসান শা ইকরাম
এক অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা।
কখন এ আঁধার কেটে যাবে কে জানে!
ধন্যবাদ আপনাকে ছোট আপু।
শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দাদা ভাই খুব চিন্তার মধ্যে আছি। কিভাবে এ পরিস্থিতি সামাল দেব জানিনা। কবে আলোর মুখ দেখতে পাব তাও জানিনা। এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরলেন। ঈশ্বর মঙ্গল করুন সবার, ধৈর্য্য ধরার শক্তি দিন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। শুভ সকাল
জিসান শা ইকরাম
দিন দিন পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। কবে আমরা স্বাভাবিকের দেখা পাবো জানিনা।
ধন্যবাদ ছোটদি।
শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে আছি দাদা।
এখনো আশার আলো আমাদের সম্মুখে নেই!
বাস্তবতা তুলে ধরলেন দাদা।
সৃষ্টিকর্তা সকলকে মঙ্গল করুক।
শুভকামনা দাদা।
ঈদ মোবারক।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন।
জিসান শা ইকরাম
ঈদ মুবারক প্রদীপ।
মানসিক ভাবে খুব অস্থিরতার মধ্যে আছি। দোয়া করো।
ধন্যবাদ তোমাকে।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
এক অস্থির সময় অতিবাহিত করছি আমরা। করোনা অনেক কিছু উলট পালট করে দিলো। প্রনোদনার বিষয়টি আমার ঠিক বোধগম্য হচ্ছেনা। বিকাশ থেকে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক সকল ট্রানজেকশন ইন্টারেস্ট ফ্রী হবার কথা অথচ আমার ক্ষেত্রেও তা হয়নি। এমাসে বিদ্যুৎ বিল তিনগুন বেশি এসেছে। অথচ তারা বলছে এটি পরে সমন্বয় করা হবে! একবার টাকা বেশী দিয়ে তা ফেরত এসেছে এ রেকর্ড এদেশে নেই।
আপনার ব্যবসার যা ক্ষতি তা পোষাতে বেশ বেগ পেতে হবে ভাই। সরকারের উচিত ব্যাংকগুলোর সাথে এসবকিছুর সমন্বয় করা। ভালো থাকুন ভাইয়া।শুভকামনা রইলো।
জিসান শা ইকরাম
প্রনোদনার বিষয়টি কাগুজেই মনে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল তারা অফিসে বসে করেছে। বিগত পাঁচ ছয় মাসের বিদ্যুৎ বিলের গড় করে মাসিক বিল দেয়া যেত। কম হলে সমন্ময় করা যেত। বেশী বিল দিয়ে তা কয় মাসে সমন্ময় করবে?
ব্যবসার ক্ষতি পোষাতে কত কষ্ট যে করতে হবে তা ভাবলেও শিউরে উঠছি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা।
পার্থ সারথি পোদ্দার
বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরলেন।করোনা মহামারীর এই দূর্যোগের কালে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা হচ্ছে আপনার,আমার আর প্রায় সবার।
জিসান শা ইকরাম
আমার ব্লগে স্বাগতম আপনাকে।
হ্যা, সবারই অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা হচ্ছে এই দূর্যোগ কালীন সময়ে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শুভ কামনা।
আতা স্বপন
আল্লাহর অসিম কৃপায় আমরা বেচে আছি। এসময় যে পরিমান দূর্নিতি হচ্ছে এর মধ্যে বেচে থাকার কথা না।
সরকার ভাবছে কত কিছু করছি। সরকারের পেটুক বাহীনি সব লোপাট করে দিচ্ছে। ভাবার মধ্যেই তাই সব আছে। আছে মনে মনে মন কলা খাবার মধ্যে। যা করছে সেটা কি ঠিক মত পালিত হচ্ছে কিনা বা না হলে পালনের ব্যবস্থা করা । এসব হচ্ছে না। তাই গোয়ালের গরু সব কাগজে কলমে। ………………….ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
সব কিছুতেই একটা সমন্বয়হীনতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে,
একটি আদেশের পরবর্তী তদারকির ব্যবস্থা নেই আসলে।
সামনে মহা দুর্দিন অপেক্ষা করছে আমাদের।
শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
মমিন আল্লাহ করে মুখে ফেনা তুলছে,
বিধাতা নির্বিকার।
জিসান শা ইকরাম
বিধাতা কতদিন নির্বিকার থাকবেন এটিই দেখার বিষয়।
ঈদ মুবারক,
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আপনার সাথে আমার ভালোই মিলে যাচ্ছে ভাই, আমিও ছোট আকারে একটা ব্যবসা করি। এখন ভবিষ্যত শংকায় মনের ভেতর ভয়ের বাসা বেধে তা ক্রমান্বয়ে বড় আকার ধারণ করছে। করোনার এই দুর্দিন খুব দ্রুত কেটে নতুন সুর্য্য উদিত হোক দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই কামনা করছি।
জিসান শা ইকরাম
আলো আসুক অন্ধকারকে পরাভুত করে। যদিও কঠিন আবার স্বাভাবিক হওয়া।
ধন্যবাদ ভাই।
শুভ কামনা।
হালিম নজরুল
জানিনা কি পরিণত অপেক্ষা করছে, তবুও আশায় বুক বেঁধে আছি।