ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি চোখে মুখে মেখে মেখে ব্রাশ করছে অদ্রি।গুন গুন করে যাচ্ছে অস্পষ্ট গোঙানী’র মতো…. “কেন খুলেছো তোমারই জানালা, কেন তাকিয়ে রয়েছো জানিনা তো”………..। মুখের থুথু দুরে ছুড়ে ফেলতে যেতেই…. কানের কাছে একটা প্রশ্ন শোনা গেলো। অস্পষ্ট!! থুথু ছিটকে গিয়ে নদীতে পরলো। লঞ্চ নলছিটি ঘাটে এসে ভিড়েছে। বেশি সময় আর লাগবেনা। ঝালকাঠি পৌঁছুতে। লঞ্চে সাধারনতঃ ভালো ঘুম হওয়ার কোনো কারন নেই।খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায়।অভিজ্ঞতা একেবারে নতুন।প্রথমবারের মতো ঢাকা ফেরৎ অদ্রি’র আব্বা,আম্মা,ভাই আর অসুস্থ্য বোনটার সাথে। ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলো ঢাকা।ফেরার পথে এখন। প্রশ্নটা কি ছিলো? আগ্রহ হলোনা জানতে, কে ছিলো তাও না। আশে পাসে এক লাল জংলী ছাপার শাড়ি পড়া বেটে খাটো বউ ছাড়া নজরে আর কাউকে দেখতে পায়নি অদ্রি। মনোযোগ নদীর বুকে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির দিকে আর অতি জনপ্রিয় ব্যান্ডের ওই গান। প্রশ্নটা এবার জোড়ালো এবং উদ্দেশ্যমূলক বলে ঘুরে দাঁড়াতে হলো, সরাসরি অদ্রি দেখলো জংলী ছাপা শাড়ি পড়া বউটার দিকে। পূর্ন দৃষ্টিতে অদ্রি’র উত্তরের অপেক্ষা করছে।
অদ্রিঃ আমাকে কিছু বললেন আপনি?
—-“আপনি কি অদ্রি?
অদ্রিঃ হ্যাঁ…. আমি অদ্রি!! কুন্ঠা আছে মনে হলো! আবারো প্রশ্ন করলো বাবা’র নাম পরিচয় দিয়ে…. “আপনি কি তাঁর মেয়ে?
অদ্রিঃ হ্যাঁ, আমি তাঁরই মেয়ে!! কিন্তু……!!!
স্থানটা শুন্য ছেড়ে দিলো ইচ্ছে করেই। সাধারন ভদ্রতা।এরপরে আপনি আপনার পরিচয় দেবেন ভেবে অদ্রি ঠোঁটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে রেখে অপেক্ষা করছে। বাবা প্রাতঃকালীন কার্যাদি সম্পন্ন করে কেবিনের উদ্দেশ্যে লঞ্চের ওয়াশরুম থেকে বেরহয়ে হেঁটে আসছেন দেখে বউটি পাশ কেটে স্বসম্ভ্রমে দাঁড়িয়ে গভীর শ্রদ্ধায় ছালাম পেশ করলো। অদ্রি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলো। কিছু জানতে চাইলো না। অদ্রি অপেক্ষা করছে বউটির পরিচয় জানতে। বাবা কেবিনে ঢুকতেই ফিরে পাল্টা প্রশ্ন করে বসলো…. ” অদ্রি, তুমি আমাকে এখনো চেনোনি? “……অদ্রি লজ্জায় পরে গেলো। এমন তো হবার কথা নয়!!! খুব ভালো যাদের চেনা জানা আছে…. তাঁদের দু,চার,পাঁচ বছরের ব্যাবধানে চেনা মুখ অচেনা হয়ে যাবে?? কে হতে পারে? নিজে থেকে স্মৃতী’র কপাটে বার কয়েক আঘাত করে ফিরে এলো অদ্রি…. খুললোনা বন্ধ কপাট স্মৃতির। স্ব-কৌতুকে কালো চোখের মনি আরো বেশি স্ফটিকের মতো চকচকে করে হেসে যাচ্ছে বউটি। দেখে মনেও হচ্ছেনা
খুব বেশি বয়সের দূরত্ব, অদ্রি আর বউটার।
……………চলবে-
২৭টি মন্তব্য
শিরিন হক
কে সে জানাতে হবে। পরের লেখায়।আমার এমন হয়েছে চেনা মানুষের চিনতে পারিনি যখন বাড়ি যেতাম ঈদের ছুঠিতে।
ভালোবাসা রইলো মিতা
বন্যা লিপি
পরের লেখাতে জানা যাবে কে সে? একটু অপেক্ষা। ভালোবাসা জেনো মিতা।
শিরিন হক
আর কত দেরি করবো?
শাহরিন
জানতে চাই কে? তবে বেশি সংক্ষেপে লিখলেন আপু ☺
বন্যা লিপি
এই সংক্ষেপে লেখার কাহিনীটুকু আড়ালেই থাকুক। পর্ব তিন এর পর বড় হবে লেখা। আপনাকে অসংখ্য ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা জানাই, এমন করে পাশে পাই। ❤❤
ছাইরাছ হেলাল
কে সে? সে কে?
আমাদের-ও অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে।
বন্যা লিপি
জানা যাবে পরবর্তি পর্বে। আপনি ভালো আছেন তো? জানা হয়নি এর আগে। সুস্থ্যতা কামনা করি
প্রদীপ চক্রবর্তী
অজানা রয়ে গেলো!
নিশ্চয় সে কে জানতে চাই?
.
অপেক্ষায় থাকলাম দিদি……
বন্যা লিপি
অজানা থাকবেনা বেশিসময়। চিন্তা নেই।
আপনি লেখা পড়েন, এতেই আপ্লুত আমি। সবসময় ভালো থাকবেন দাদা ভাই।
আরজু মুক্তা
অপেক্ষার প্রহর শুরু হলো
বন্যা লিপি
হা হা হা…… না বেশি অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে হয়না। আপনাকে পাই সবসময়, এ আমার সৌভাগ্য।ভালোবাসা জানবেন। ❤❤
তৌহিদ
কেবল একবার পড়লাম। মাথার উপর দিয়া গেলো। আবার পড়ে মন্তব্যে আসবো আপু।
বন্যা লিপি
এইডা কি কইলেন ভাউ?এই লেখাও মাথার উপরেদ্যা গেলো? আইচ্ছা… পরেই আসেন।
মাসুদ চয়ন
জীবন এমনই।চিরচেনারা খুব সহজেই অচেনা হয়ে যায়।নতুনের আগমন ঘটে।মহাকাল জানে ইতিহাস কতো দূরত্ব ছড়িয়ে আছে।খুব সুন্দর গল্প চিত্রায়ণ।গল্পের মাঝে চিত্র কাব্যের মূর্ছনাও ফুঁটে উঠেছে।ডুবে থাকা যায় এমন গল্পে।অপেক্ষা কতো সময়ের তবে?পর্বে পর্বে চলুক এমন অধীর অপেক্ষা,গল্পটা না থামুক।উপন্যাস হয়ে উঠুক।
বন্যা লিপি
উপন্যাস হবার সুযোগ নেই। আপনার মন্তব্যে দারুন উৎসাহিত বোধ করছি। পাঠকের পড়ার বোধটুকু অনুধাবন করা যায়। সবসময় কৃতজ্ঞতা জানবেন। পাশে থাকবেন এভাবেই আশা করি। শুভ কামনা।
রাফি আরাফাত
কে কে কে কে কে কে কে কে???জানতে চাই কিন্তু এখন না।।অপেক্ষা করি। কারন অপেক্ষা খুবই জরুরি আমাদের জীবনে।
ভালো থাকবেন
বন্যা লিপি
রোষো ছোটভাই রোষো! অবশ্যই জানা যাবে পরের পর্বেই! সাথে পাচ্ছি তাই উৎসাহ পাচ্ছি। শুভেচ্ছা শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
লঞ্চের বারান্দায় দাড়িয়ে থুতু ফেলা কিন্তু ঠিক না,
কারো মাথায় পড়লে অদ্রির খবর আছিল,
যাক তেমন কিছু হয়নি বলেই পরিচয় জানার পর্ব চলছে।
অনেক সময় অতি আপনজনকে চিনতেও সমস্যা হয়, তখন নিজকে কেমন বোকা বোকা লাগে 🙂
গপ্লের সুচনা পর্ব ভালোই হয়েছে
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
বন্যা লিপি
অদ্রি ভালো করেই লক্ষ্য রেখে থুথু ফেলেছিলো। এটাও একটা খেলার মতো কতদুরে ছুঁড়ে ফেলা যায় দেখার জন্য।
কতবার যে আমি নিজে এরকম বোকা হয়েছি!! তাই তুলে নিয়ে এসেছি সুযোগ বুঝে লেখায়। কৃতজ্ঞতা সব রকম আপনার প্রাপ্য।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, ভালো করে লক্ষ্য রেখেই ফেলা উচিৎ।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
বিষয় হচ্ছে অদ্রি কি মেমরী লস জনিত সমস্যায় ভুগছে? অবশ্য অনেক সময় আমারও এরকম হয়। কাউকে দেখলে মনে হয় কোথায় যেন দেখেছি?
বন্যা লিপি
অপেক্ষায় থাকেন। ক্রমশঃ প্রকাশ্য।
তৌহিদ
আচ্ছা, অপেক্ষায় রইলাম।
মনির হোসেন মমি
সময় শেষ দ্বিতীয় পর্ব এসে গেছে জেনেই
কে সে?
বন্যা লিপি
স্যরি ভাই, অদেখা মন্তব্য খেয়াল করিনি এতদিন। পরের পর্ব পড়েছেন কি? কৃতজ্ঞতা জানবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
হঠাৎ করে সামনে আসা অনেক পরিচিত প্রিয়মুখও অচেনা লাগে, সময়ের ব্যবধানে। গল্প চলুক, ধিরে ধিরে আমরাও চিনে নিবো মিষ্টি বউটাকে।
শুভ কামনা 🌹🌹
বন্যা লিপি
খুবই দুঃখিত সাবিনা, তোমার এই মন্তব্য এতদিন চোখে পড়েনি আমার। এজন্যই কি তোমাকে পাইনি অন্য পর্বে? রাগ করোনা প্লিজ। পরের পর্বদুটো পড়ে বলো কি বুঝলে? ভালোবাসা নিও ❤❤