আগে থেকেই ঠিক করা ছিল ক্ষণ ও স্থান। এই শীতসন্ধ্যায় জিসানের ইটোদ্যানের পাশে মানস বটবৃক্ষের পাদদেশে চা সংযোগে তুমুল গপ্পের গলাবাজি হবে, উপলক্ষ অচিরেই প্রকাশিতব্য। টমটম হাঁকিয়ে যথারীতি যথাসময়ে অবতরণ নিষ্কণ্টক নির্বিঘ্নতায়, হিম সন্ধ্যায় চলমান আড্ডায় যতি এলো, পকেটে হাত দিলে শূন্য হাত ফেরত এলো, ফোন নেই। থাকার কথা ছিল। সাধের ফোন!! কত স্মৃতিমাখা, কত স্মৃতি কথা, নিমিষে উধাও। কত কত দুষ্টমিষ্ট কথা, কত হাসি কান্না, আরও কত কী!!
জিসান লক্ষ্য করল ইমো একটিভ, কেমনে কী? মেয়েকে ফোন দিয়ে দেখতে বললাম ভুলে রেখে এসেছি কিনা। উত্তর না সূচক, মেয়েটি নিজে নিজে বাসার সামনে নেমে খুঁজে দেখেছে। ফোন এখন বন্ধ পাচ্ছি। নিশ্চিত হলাম খোয়ানোর ব্যাপারে, ফোন করে অগ্রবর্তী দল পাঠালাম মনের সান্ত্বনা ভেবে বাসার আশেপাশে যেখান থেকে টমটমে উঠেছি। নেগেটিভ। ড্রাইভার সহ পাইক বরকন্দাজ একে ফেরত এলে বাটি চালানের জন্য ইতোমধ্যেই বড় কাসার বাটি যোগার করে কাছেই তুলা রাশির লোক যোগারে ব্যস্ত হয়ে গেল ঝাঁক শুদ্ধ সবাই, বাটি চালানোর লোকটিকে পাওয়া গেল না, সে বাড়ীতে নেই।
অগত্যা একটু পরেই ফিরলাম তড়িঘড়ি করে, পাব না বুঝে ফেলেছি, ড্রেনে কাউকে নামাব অহেতুক হলেও। হঠাৎ খুব চেনা একটি ছোট ছেলে কাছে এসে জানতে চাইল, ‘কাকা কী বিচরান’, বাবারে ফোন হারিয়েছি তাই খুঁজছি। হেসে বলে আর নাকি খুঁজতে হবে না, বাসার সামনের দোকানদার পেয়েছে, সে নাকি অনুমান করেছে এটি আমার ফোন হতে পারে। স্বর্গের খানিকটা প্রাপ্তির মত উচ্ছ্বসিত হয়ে দোকানদার কে বাসায় ডেকে পাঠালাম, কাঁচা ঘুম থেকে উঠে হাতে ফোন নিয়ে হাজির, চকচকে হাসি নিয়ে।
আমরাও খুশি হলাম, ওকে ও খুশি করে ফেরত পাঠালাম, যাবার সময় দোকানদার ছেলেটি শুধু বলল, ‘দাদা হাসি আনন্দ নিয়ে সবার মাঝে এমন করে বেঁচে থাকতে চাই’।
আমরাও সবার সাথে হাসি আনন্দেই আনন্দিত হতে চাই।
৩৫টি মন্তব্য
ভোরের শিশির
ওরা আছে, ওরা থাকবে…
ছাইরাছ হেলাল
এখনও আছে তা ঠিক, থাকলে ভাল, থাকবে কীনা বুঝছি না।
ভোরের শিশির
থাকবে… 😀 ওরা আছে বলেই এতো অরাজকতার মাঝে পৃথিবী এখনো সুন্দর আছে 😀
ছাইরাছ হেলাল
খুব ই সুন্দর পৃথিবী তা ভাল ভাবেই টের পাচ্ছি।
জিসান শা ইকরাম
লোভ সংবরণ করা প্রায় শুন্য মানুষদের মাঝে একে দেখলাম
হাসিমাখা মুখে ফোনটি বের করে হাতে দিয়ে দিল
আমি তো প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম এমন মানুষের সাক্ষাত পেয়ে।
মনের বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে কেউ কেউ তুলে আনে আমাদের
বলাই তেমন এক লোক
তাঁকে নিয়ে এই লেখা……… আগামিকাল তাঁকে যেন দেখানো হয় এই পোষ্ট।
শুভেচ্ছা তাঁকে -{@
ছাইরাছ হেলাল
খুবই অবাক হওয়ার মত ঘটনা, যখন ধরেই নিয়েছি আর পাওয়া যাবে না, তখন ই ভোজবাজির মত
ফোন হাজির। এ সব মানুষ আমাদের আশে পাশেই আছে থাকে, থাকে অগোচরে।
ওর কাছ থেকেও আমাদের শিক্ষার অনেক কিছুই আছে।
অবশ্য ই সে দেখব।
শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
এমন মানুষ আছে বলেই দুনিয়া এখনো টিকে আছে।
এরাই মানুষ! বিত্তহীন অথচ লোভ তাঁদের স্পর্শ করে না। আর সত্যি কথা বলতে কি, এরাই হাসি আনন্দ নিয়ে সবার মাঝে সুন্দর এবং শান্তিতে বেঁচে থাকে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
মানুষটির সততার প্রতি আমার শ্রদ্ধা রইলো।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা।
ছাইরাছ হেলাল
বিত্তহীন হয়েও লোভ তাকে স্পর্শ করেনি, এটি একটি জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ।
বাঁচুক এরা আনন্দের সুখে এ কামনা করি।
অরুনি মায়া
দুনিয়াতে সৎ মানুষের ভিষণ সংকট | এত অসততার মাঝেও মাঝে মাঝে এমন ভাল মানুষের দেখা মিলে যায় | অভাবে স্বভাব নষ্ট একথা টা সবার বেলায় হয়ত ঠিক নয় | মানুষের ইচ্ছে শক্তি থাকলে সে অনেকটাই সৎ পথে চলতে পারে | এই ভাল মানুষ টিকে আমার পক্ষ থেকে সালাম জানিয়ে দিবেন প্লিজ |
আপনার একটু খানি অসাবধানতা সুন্দর একটি বিকেল কে মাটি করে দিয়েছিল বলে আমারো আফসোস হচ্ছে | ব্যপার না এই ঘটনা না ঘটলে এমন একজন ভাল মানুষ লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে যেতেন | তার সর্বাঙ্গীণ উন্নতি কামনা করছি |
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই সততার সঙ্কট সর্বত্র। আবার সততার প্রকৃত মূল্যায়ন করতেও আমারা ব্যর্থ প্রায় সব সময়।
আবার সহসা এমন কিছু মানুষের দেখাও মেলে, যারা আমাদের অজান্তেই আমাদের আশে পাশে থাকে।
আমাদের জানা হয় না, বা জানার চেষ্টাও করি না।
সালাম জানানোর চেষ্টা করে জুৎ করতে পারিনি, সে হাওয়াই ছালাম নিতে রাজি হচ্ছে না। নামধামের সাকিনও জানতে চায়।
বড়ই মছিবতের মধ্যে আছি। স্থগিত থাকল, আপনি দেখা সাক্ষাত করে যা যা দিতে চান দিলেই হবে। অথবা আপনার অনুমতিক্রমে
আপনার সাথে দেখা সাক্ষাত করে নিয়ে নিল, যা আপনি দিতে চান। ছালাম দেওয়া ও বেশ ঝক্কি আজকাল।
তা মাটি মানে পুরাই ধুলে মাখামাখি।
আমরা একজন ভাল মানুষ পেলাম, এটাও কম না।
অরুনি মায়া
না না এত দরকার নাই, আপাতত হাওয়াই সালামেই কাজ চালাতে হবে ,সাক্ষাতের দরকার নাই |
মাঝে মাঝে ধুলোয় গড়ানো ভাল | স্বাস্থ্য ভাল থাকে 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা তাকে আপনার মহানুভবতার কথা জানিয়ে দেব।
স্বাস্থ্য তেমন আর কাজে দেয় না একটা সময়।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আনন্দ নিয়ে সবার মাঝে এমন করে বেঁচে থাকতে চাই’।
আমরাও সবার সাথে হাসি আনন্দেই আনন্দিত হতে চাই।
এটাই জীবনের প্রকৃতরূপ -{@
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই এটি জীবনের প্রকৃত রূপ।
যা আমরা জেনেও জানি না, বুঝিও না।
ব্যস্ততা কমে যাক এ আশা ও করি ।
তানজির খান
সততার জয় হোক, বিরল শব্দটি উঠে যাক সততার মানচিত্র থেকে।বাঁশখালি(চট্রগ্রাম) থেকে মহাখালি, ভূতের গলি থেকে পকেটখালি(রাজশাহী) সব জায়গা সততার উৎসব হোক।শ্রদ্ধা রইল মানুষটির প্রতি।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই শ্রদ্ধা, তাকে জানিয়ে দেব।
ফ্রাঙ্কেনেস্টাইন
শ্রদ্ধা জানাই 🙂
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই তা জানাই।
অনিকেত নন্দিনী
এই ভালো মানুষেরা আছে বলেই পৃথিবী এখনো ঘোরে, থেমে যায়নি। তার জন্য সম্মান রইলো।
অ. ট.
১. টমটমের ড্রাইভার? গাড়োয়ান হওয়া উচিত ছিলো। যে টমটমের চালক হয় ড্রাইভার, সেই টমটমের একখানা ছবি দেখতে ইচ্ছা পোষণ করছি।
২. তুলা রাশির লোকের প্রয়োজন হলে আমার খোঁজ করলে কৃতজ্ঞ হবো (এই সুযোগে টমটমে চড়তে পাবো :D) । অবশ্য আমার তুলায় “ফের” আছে। কিঞ্চিৎ কন্যার সংমিশ্রণ এই “ফের” তৈরি করেছে। তারপরেও, তুলা তো! সোনার আঙটি বাঁকা হলেও যদি ভালো হয় তো “ফের”সহ তুলাও নিঃসন্দেহে ভালো।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি ঠিক বলেছেন, এমন কিছু আছে বলেই হয়ত আমরাও আছি, চলমান চলমানতায়।
আপনি যে কই কই থাকেন!! ড্রাইভার চালকরা গাড়োয়ান হতেই চায় না।
‘ফের’ থাকলেও এখনও যা তুলা যে ভাবে অবশিষ্ট আছে তাতে বাটি চালাতে আর অন্য মানুষ ডাকার
দরকার ই পড়বে না, যাক আশ্বস্ত করলেন, হলাম ও।
আপনার তুলা খারাপ হতেই পারে না, ‘ফের’ সহ ও।
ওদিকে থেকেও এদিকে সামান্য দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে মন্দ হয় না।
আপনি তো আমাদের স্বজন।
নীলাঞ্জনা নীলা
উনার প্রতি শ্রদ্ধা। এমন মানুষ এখনও আছে বলেই মানুষের মনুষ্যত্ত্ব হারিয়ে যায়নি।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই শ্রদ্ধা তার প্রতি, এরা বিরলদের একজন।
শুন্য শুন্যালয়
বিরল অবশ্যই বিরল, কপালের সাইজ কার কত বড় তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। মানুষটিকে দেখেই শ্রদ্ধায় মাথা নত করলাম। অন্তত এরকম একটি দুস্টমিস্ট হাসি কান্নায় ভরা মোবাইলে আমার হাতে পড়লে ফেরতের চান্স শূন্য ছিল।
কাসার বাটি চালান আর ড্রেন এ ড্রোন মিশন আমরা অবশ্য মিস করে ফেললাম, কি আর করার। এ যাত্রায় আপনার পরের বার হারানোর জন্য দোয়া খায়ের করলেও করতে পারি ( মিলাদ সিস্টেম অতি শিঘ্রই চালু না হইলে )।
শীতসন্ধ্যা, ইটোদ্যান, মানস বটবৃক্ষ, গপ্প আড্ডা !!! আমাকে ছাড়া এসব? ভালো হবেনা বলে দিলাম :@
অন্যের আনন্দ দেখেই হাসি আনন্দে এমনি করে বেঁচে থাকতে চাই।
জয়তু সেই শ্রদ্ধাস্পদ মানুষটিকে।
ছাইরাছ হেলাল
এ ক্ষেত্রে কপাল বিশেষ কোন কাজে আসছে বলে মনে হয় না,
আগেও যেমন কোন কাজে লাগেনি। তবে এ বেলা শ্যেন দৃষ্টি এড়িয়ে স্বজনের কৃপা দৃষ্টি সহায়কের ভুমিকা নিয়েছে বলেই মনে করি।
ফল ও হাতেহাতে, সবার হাতে সব জিনিস পড়ে না, পড়া ঠিক ও না।
ভাই, মিলাদ বলেন আর যাই বলেন সব কিছুতেই রাজি, তবু একটু বাকিতে হলেও দোয়া খায়ের করে ভবিষ্যত
সামান্য নিরাপদ রাখুন। এই চাই। এ জীবনে ঐ গাছ-গুছের ধারে কাছেও যামু না, কথা দিলাম,
সর্বাঙ্গীন আনন্দ আমাদের সবার ই কাম্য।
শ্রদ্ধা অবশ্যই তাকে।
মরুভূমির জলদস্যু
অসাধারণ প্রাপ্তি যোগ। এমনা যখন হয় তখনই বুঝতে পারি এখনো সবটা পঁচে যায়নি।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি ঠিক ই বলেছেন, আশা হারানোর কিছু নেই।
ব্লগার সজীব
এমন মানুষ এখনো আছে!!!!!!!!!!!! শ্রদ্ধা জানাই ওনাকে।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই, এখন ও এমন মানুষ আমাদের আশেপাশেই আছে।
আমরা গর্বিত এদের জন্য।
ব্লগার সজীব
এই ধরনের মানুষ আছেন বলেই বিশ্বাস শব্দটা টিকে আছে এখনো।
ছাইরাছ হেলাল
আমার ঠিক এমন ই মনে হয়,
আমরা বিশ্বাস নিয়েই টিকে থাকি।
সাঞ্জনা চৌধুরী জুঁথী
কিছু ভালো মানুষ এখনো আছে পৃথিবীতে আর থাকবে ও। কখনো সময় পেলে আমার ব্লগবাড়ি আসবেন :T পানের দাওয়াৎ রইল 🙂
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই ভালো কিছু মানুষ এখনও আছে,
আপনার বাড়ীর সেবা নিয়মিত নিচ্ছি।
সাঞ্জনা চৌধুরী জুঁথী
-{@