আজ আমি নিজের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান। অনেক ক্ষোভ, হতাশা আর বুক ভরা ঘৃণা নিয়ে লিখতে বসেছি আজ। হৃদয়ের সব আবেগ আজ ঘৃণায় পরিনত হতে চলেছে। আততায়ী হবার নেশায় পেয়ে বসেছে আমাকে। আমি আজ আমার স্বজাতি মানে চিকিৎসকদের না উগরানো হতাশাগুলোকে হিংস্রতায় রূপ দেয়ার ভয়ে ভীত।
একেবারে শুরু থেকে শুরু করি।
আজকে সকালে ২য় বর্ষ এর ফিজিও প্র্যাকটিকাল আইটেম ছিল –
“Hearing Test”
পাঁচ ছয়জন বসেছে।ম্যাম একজনকে করে দেখাতে বললেন।
সে তার পাশের বন্ধুর উপর টেস্ট করা শুরু করল।
এবার ম্যাম- ‘অনুমতি নিসো?’
: (বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে সেই ছেলে) আমি আপনার হিয়ারিং টেস্ট করতে চাই,করব?
ম্যাম,
-হিয়ারিং টেস্ট মানে?পেশেন্ট কি বুঝবে হিয়ারিং টেস্ট কি?বলবা কান পরীক্ষা করতে চাও।
গেল,অনুমতি নেয়া শেষ।এবার সে টেস্ট করছে।টিউনিং ফর্কটা নিয়ে হাতের তালুতে বাড়ি দিল…
আবার ম্যাম – “এই ছেলে,তুমি যে টেস্ট করতেসো পেশেন্ট কে ইন্সট্রাকশন দিসো?হাতুড়ির মত জিনিস একটা হাতে বাড়ি দিয়া যখন পেশেন্টের মাথায় ধরবা তখন তো সে বলবে -“ডাক্তার আমার মাথা ফাটায়তেসে।”
ব্যাথা না পেলে ও দৌড়ে গিয়ে ইচ্ছা করে নিজেই মাথা ফাটায় আসবে!
নাহয় বলবে -“আমার কান ঠিকই ছিল।ডাক্তার কি একটা কানের মধ্যে লাগাই কানের পর্দা ছিড়া ফেলসে!”
তাই ভালমত বুঝায় বলবা কি করতে যাচ্ছ।”
এটা একেবারে সিমপ্লিয়েস্ট একটা উদাহরণ দিলাম।জিনিসগুলো আমাদের এভাবে শেখানো হয়।ডাক্তারের কাজ রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করা,তার নির্ভরতা আদায় করা।কোন কারণ ছাড়া একজন ডাক্তার কেন রোগীকে মারতে চাইবে?!!
৬০০০০ পরীক্ষার্থীর সাথে যুদ্ধ করে ৮০০০ শিক্ষার্থী সুযোগ পায় মেডিকেলে পড়ার। তারা জানে তাদের কি করা উচিত, তারা জানে তাদের গুরুদায়িত্ব সম্পর্কে। তাই তারা শতকিছুর মাঝেও মনুষ্যত্বটাকে জিইয়ে রাখে। তাদের মনুষ্যত্ব আছে বলেই সবগুলো মেডিকেল রেগিং নামক পাপাচার মুক্ত, তাদের মনুষ্যত্ব আছে বলেই সহপাঠী কতৃক লাঞ্চিত হয়ে জীবন দিতে হয় না কোনো নারীকে, তাদের মনুষ্যত্ব তাদের ছাত্র অবস্হাতেই রাত জেগে রোগী দেখতে শেখায়, তাদের মনুষ্যত্বটার কারনেই অকালে রাজনৈতিক সহিংসতার বলি হতে হয়েছে খুব কম ছাত্রকেই।
আর এদেরকেই আপনারা ডাকেন অমানুষ,কুত্তা, জানোয়ার। আজ আমি আপনাদের প্রশ্ন করে যাবো ! প্রশ্নবানে জর্জরিত করেই যাবো –
-আপনারা বলেন ডাক্তারর্ গ্রামে থাকে না। যেখানে একজন টিএনও বিসিএস ক্যাডার হয়ে পায় সরকারী গাড়ি , বাড়ি সেখানে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্হায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট করে পড়ালেখা করা বিসিএস ক্যাডার ডাক্তাররা বাড়ি , গাড়ি না পেলে কেনো থাকবে গ্রামে ? আমি বলছি না আমাদের বাড়ি গাড়ি দিতেই হবে । কিন্তু উই আর টকিং এবাউট ইকুয়েলিটি। টিএনও দের গাড়ি বাড়ি বন্ধ করে দেন, উই উইল ডো আওয়ারস।
– ডাক্তাররা একটা ভুল করলেই তাদের গায়ে হাত তোলা হয় । ডাক্তাররা মানুষ , তাদেরও ভুল হতে পারে । যদি ডাক্তারদের উপর আস্হা না থেকে থাকে তাহলে নিজের চিকিৎসা নিজেই করেন । ভুলগুলো যদি ইচ্ছাকৃত হয় তাহলে আমার প্রশ্ন নিরাপরাধ লিমনের পায়ে ইচ্ছে করে গুলি করা RAB গুলার কয়টার গায়ে হাত তুলতে পেরেছেন , কিংবা আপনাদের শত কোটি টাকা মেরে দেয়া কোন কোন সরকারী আমলার কি করতে পারছেন , অথচ তাদের চেয়ে দ্বিগুন শিক্ষিত ডাক্তারদের দেখলে আপানাদের চেতনা এতো সহজেই খাঁড়া হয়ে যায় কেনো ?
-ডাক্তাররা ধর্মঘট করলে আপনাদের চুলকানী শুরু হয়ে যায় । নাউ আনসার মি ওয়ান কোশ্চেন , আপনার বস যদি আপনার চাহিদা পূরন করতে ব্যার্থ হয় তাহলে কি আপনি অন্যের অফিসে গিয়ে ধর্মঘট করবেন ? নিশ্চয়ই না ! আর আমাদের অফিস মেডিকেল , আমরা সেখানেই ধর্মঘট করি । এটা কারো করুণা নির্ভর নয় , এটা আমাদের অধিকার ।
– এবার আসি আসল কথায় । আপনেরা বলেন , ডাক্তাররা কথায় কথায় টেস্ট দেয় । টাকা খাওয়ার জন্য ইচ্ছে মতো এই টেস্ট সেই টেস্ট করতে দেয় । শ্রদ্ধেয় গুরুজনেরা আসুর আর একবার আমাদের বইগুলো পড়ে যান । বই গুলো তো বাংগালীরা লেখে নাই । আপনাদের প্রাণপ্রিয় ইংলিশ , ইউরোপিয়ান কিংবা ভারতীয়দের লেখা । তারা যা লিখে আমরা তাই করি মাত্র ।
-ডাক্তারদের ৫০০ টাকা ভিজিট দিতে গায়ে চুলকায় ? তার নামের পাশের ডিগ্রি গুলা দেখেছেন ? ওগুলা কি মাগনায় আসে ? নাকি লুতুপুতু কৈরা কেও দিয়ে যায় ? দাড়ান একটা বাস্তব ঘটনা বলি । এক লোক ফোন করল ডাক্তারের চেম্বারে। রিসিভ করে কম্পাউন্ডার বলেন –
-সরি। স্যার ডেইলি ১০ জনের বেশি রোগী দেখেন না। আপনি কাল সিরিয়াল নেন।
– না ভাই। আজকে দেখাতে না পারলে রোগী হয়তোবা মারা যাবে। প্লিজ একটা ব্যাবস্হা করেন। আপনার পায়ে পড়ি ভাই…..
অতঃপর কম্পাউন্ডার ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে রোগীকে সিরিয়াল দিলো।
ডাক্তারের চেম্বারে আসার পর সেই লোক –
– দেখছস? শালা বাইনচুদের ডাক্তার, শালা শুয়ারের বাচ্চা, টাকার লোভে কতগুলা রূগী দেখে? এতো টাকা তাও খালি টাকা টাকা করে। এইগুলা সব বেজন্মার দল…..
এবার বলেন ; বাংলাদেশে কোন গ্রাজুয়েট আছে দেখান দেখি যে কিনা ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ১৬ ঘন্টা ডিউটি করবে ? ডাক্তাররা অমানুষ বলেই আপনাদের মতো মানুষদের পেছনে এই শ্রম দেয় । হাসপাতালে ডাক্তারের কাজ রোগীর সেবা করা , রোগীকে ভর্তি করানো নয় । তাই টাকার অভাবে রোগী মারা গেলে সেটার দায়ভার সরকার কিংবা হাসপাতাল কতৃপক্ষের , ডাক্তারের নয় । আপনি বোধহয় জানেন না সব হাসপাতালের মালিক ডাক্তার নন ।
সরকারী টাকায় পড়ালেখা করা কোন ভার্সিটির কোন ছাত্র ছাত্রীদের থেকে আপনারা কি উপকার পাচ্ছেন ? বুয়েটের কোন ছাত্র এসে আপনার ঘরের নকশা করে দিয়ে গিয়েছে ? রোবট দিয়ে গেছে আপনাকে ? কিন্তু এই মেডিকেল স্টুডেন্টরাই তো থার্ড ইয়ার থেকে আপনার জন্য খেটে যাচ্ছে অবিরত ।
আমাদের সীমাবদ্ধতা নেই , যেসব সীমাবদ্ধতা আছে সেটা দেশের ।
পরিশেষে একটা কথা বলি , সম্মান দিতে না পারেন ভালো কথা কিন্তু অসম্মান করবেন না ।
২২টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
ক্ষোভের কথা পড়লাম । আপনি মেডিকেল স্টুডেন্ট জানলাম ।
আপনার কথায় যুক্তি আছে , আবার ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগেরও যুক্তি আছে ।
একটি বলি – টেস্ট করাতে হবে বুঝি , করাও উচিত – কিন্তু টেস্ট করাতে দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ৩০ – ৪০ % কমিশন কেনো নেন ডাক্তাররা ? যদি কমিশন না নিতেন , তাহলে এই প্রশ্ন কেউ করতো না যে , ডাক্তাররা একগাদা টেস্ট দেন ।
একজন ডাক্তার বানাতে সরকারের কত টাকা ব্যয় হয় ?
আর একজন আমলা বানাতে সরকারের কত টাকা ব্যয় হয় ?
এই টাকা কি ছাত্র একা বহন করে ? নাকি এটি জনগনের টাকা ?
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে থাকা জনগন এর কিছুটা রিয়্যাকশন থাকবেই । এটি প্রবল হয় মাঝে – কারন আমরা একটি অসহিস্নু সমাজে বাস করি । সবাই সবার দায়িত্ব এবং কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করলে অনেক কিছুই এড়ানো যায় ।
আপনার জন্য শুভকামনা – ভবিষ্যত ডাক্তার 🙂 -{@
মা মাটি দেশ
সহ মত।
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস
কিছু ডাক্তার 30/40% নেয় স্বীকার করছি । সেটাতে ডাক্তারদের পাশাপাশি সমাজ ব্যাবস্হার ও কিছুটা দোষ আছে ।
আমলা দেশকে কি দেয় ছাত্র অবস্হায় । একটা মেডিকেল স্টুডেন্টের পেছনে সরকারের মোট ভর্তুকি ১৫ লাখ টাকা , আর আমাদের হিসেব মতে আমরা ইন্টার্নী শেষ করার সময় ১৩৬৭৮৫০ টাকার সেবা দিয়ে যাই । আর কোন কোশ্চেন ?
জিসান শা ইকরাম
মুদ্রার অন্য পিঠটাও বলি – আমার ছোট বেলার বন্ধু যিনি একজন এফ আর সি এস তিনি কোন কমিশন নেন না 🙂
সমাজ ব্যাবস্থার জন্য অনেক কিছুই ওলট পালট হয় 🙂
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস
“একজন ডাক্তার বানাতে সরকারের
কত টাকা ব্যয় হয় ?
আর একজন আমলা বানাতে সরকারের কত
টাকা ব্যয় হয় ?
এই টাকা কি ছাত্র একা বহন করে ?
নাকি এটি জনগনের টাকা ? ” – আপনার এ বাক্যগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আপনি কি এখনো এ বাক্যগুলোকে যুক্তিযুক্ত মনে করেন?
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , যুক্তিযুক্ত মনে করি ।
মা মাটি দেশ
ডাক্তার কারা হতে পারে অন্ততঃ এ দেশে যাদের টাকার পাহাড় আছে আর মেধা।সুতরাং আপনার হয়তো ছিল তাই হয়েছেন কিন্তু ডাক্তার হওয়ার পিছনে মূল কথা কি?সেবা, টাকা বড় না সেবা বড় অধিকার আদায় বড় না মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাচানো বড়।অধিকার আদায়ের অনেক পণ্থাই আছে সেবা বন্ধ করে করতে হবে সেটা আমি মানতে নারাজ আপনারা ডাক্তার আপনাদের হাতেই আমাদের জীবন সেই আপনাদের মাঝে ভূল সিদ্ধান্ত বড়ই আফসোসের বিষয়।আমার আর কিছুই বলার নাই।আমি এইটুকুই জানি মানুষের জম্ম এক বারই হয়।ধন্যবাদ আপনাকে। -{@ (y)
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস
অন্যকে বাচাতে হবার আগে তো নিজেকে বাচাতে হবে । আপনি আমাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেন , প্রমিস করছি কোন দিন অন্তত আমি ধর্মঘটে যাবো না । পারবেন দিতে ?
মা মাটি দেশ
নিরাপত্তা কেউ কাউকে দিতে পারে না দিলেও এরই মাঝে আঘাত পাবেই একদিন।নিরাপত্তা চাইতে হলে মানুষের কাছে নয় স্রষ্টার কাছে চাওয়াই শ্রেয় জগতে যারা মহৎ ব্যাক্তি ছিলেন তারা নিজের নিরাপত্তা চায়নি তাদের মহৎ কাজই তাদের নিরাপত্ত্বা দিয়ে তাদের মহৎ করেছেন আপনার পেশা কিংবা কাজটা তেমনি সেবা,সেবা করা এ তো আর সবার ভাগ্যে জোটেনা ভাই।
হ্যা,জানি সবাই এক নয় তবুও বললাম আর কি…..
“আমরা রক্ত দিয়ে জমিন কিনেছি
স্বাধীন হইনি,
বিবেক বুদ্ধি মানবতাকে জ্বলাঞ্জলিত দিয়ে
শুধু অর্থই চেয়েছি” -{@ (y)
আজিম
এতো নিম্ন-বিষয় এবং এতো নিম্নমানের একটি লিখাকে কেন ফ্রন্ট-পেজে রাখা হয়েছে, সেজন্য একধরনের ক্ষোভ প্রকাশ করা ছাড়া উপায় দেখছিনা মাননীয় ব্লগ সঞ্চালক মহোদয় ।
পোস্টটা মুছে ফেলার জন্য অনুরোধ করছি ।
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস
সমালোচনার জন্য ধন্যবাদ। আক্রমনাত্বক মনোভাবের জন্য একটু বেশিই ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি কষ্ট করে পয়েন্ট আউট করবেন কি কোন কোন বিষয়গুলো মিথ্যা বলা হয়েছে? আর যে বিষয়টার জন্য সাস্হমন্ত্রীকে এক্সপ্লানেশান দিতে হয় সে বিষয়টাকে যিনি নিম্ম বিষয় বলেন তার হিতাহিত জ্ঞানবোধ নিয়ে প্রশ্নবোধহয় থেকেই যায়!
জিসান শা ইকরাম
এই আলোচনার দরকার আছে । চাহিদা এবং প্রাপ্তির অপুর্নতা , বিবিধ ক্ষোভ থেকে একটু কঠিন কথা পোষ্টে এসে যেতেই পারে ।
তবে আমরা যেন ভুলে না যাই – রানা প্লাজায় আহতদের চিকিৎসার সময়ে বিরামহীন ভাবে ডাক্তারদের সেবা দেয়ার কথা । @আজিম ভাই।
আজিম
জিসান ভাই, আপনাকে আমার মনে হয় ডাক্তার এবং ব্লগের নীতি-নির্ধারক পর্য্যায়েরও হয়তো আপনি কেউ । উপজেলা-পর্য্যায়ে ডাক্তারদের আবাসিক ব্যবস্থা ভাল না, সেস্থানে ডাক্তার কেন বাস করবে, যুক্তি আছে । এছাড়া প্রতিবেদনটিতে ভাল আর কি আছে, বলুন । বরং গন্ডমুর্খের দলসহ অনেক নিকৃষ্ট-নিম্নমানের কথাবার্তা আছে । এগুলো আপনাদের ব্লগের নীতিমালা-বিরোধী কথাবার্তা কি-না, ভেবে দেখবেন ।
শুধু রানা প্লাজা বলছেন কেন, ডাক্তারদের বিরামহীনভাবে সেবা প্রদানের অনেক অনেক উদাহরন আছে । অমানুষিক সেবা প্রদান করে করে দ্রত মৃত্যুবরন করেছেন, এরকম দু’জন ডাক্তারের কথা আমার জানা আছে । তারা মহামানব বলে আমার কাছে মনে হয় ।
আমি শুধু আমার মত প্রকাশ করেছিলাম যে, এ-মানের লিখা প্রকাশ করা ঠিক নয় । আপনাদের কাছে তা মনে না হলে থাক এটা । আর বিতর্কের দরকার আছে, সেটা ভাল মানের লিখা দিয়ে শুরু হোক প্রয়োজনে ।
জিসান শা ইকরাম
আমি ডাক্তার নয় , তবে এই ব্লগের প্রথম থেকে জড়িত আছি। ব্লগটি চলে সবার আন্তরিকতা এবং ভালোবাসায়। সবার মতামত গুরুত্বের সাথে দেখা হয় এই ব্লগে । অনেকের উপস্থাপনা একটু ভিন্ন হয় । ব্লগার হিপনোটক্সিক ইরেকটাস মনে হয় ছাত্র এখনো । যখন তিনি একজন সফল ডাক্তার হবেন , হয়ত তিনি এমনি ভাবে তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করবেন না । সময়ে অনেক সহিস্নু হয়ে যাই আমরা । আপনি ব্লগারের এই পোস্টের প্রথম তিন লাইন আর একবার পড়ুন । বিষয়বস্তুর ক্ষোভ এর একটি ব্যাখ্যা আছে প্রথম তিন লাইনে।
‘ গন্ডমুর্খের দল ‘ শব্দে আপনার মত আমারও তিব্র আপত্তি আছে । কিছু কিছু পয়েন্টে একমতও নই আমি । ডাক্তারদের ধর্মঘট আমি সমর্থন করিনা ।
উনি গাড়ির কথা বলেছেন , একজন টিএনও বা সরকারী কর্মকর্তা শুধু বেতন দিয়ে চলেন , তাঁর কোন প্রাইভেট প্রকাটিস নেই । একজন সরকারী ডাক্তার শুধু সরকারী বেতনই পাননা , তিনি প্রাইভেট প্রাকটিসও করেন ।
একজন ব্লগারের একটি পোস্ট দেখেই তাঁকে বিচার করা মনে হয় উচিত নয় । আশাকরি ব্লগার আপত্তিকর শব্দ গুলো প্রত্যাহার করবেন ।
ছাইরাছ হেলাল
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস এর লেখাটিতে যে বক্তব্য আছে তার সাথে একমত নই , সে তার মতামত তার মত করেই প্রকাশ করেছে বেশ ক্ষোভ পোষন করেই । স্যার , আপনি তার বিপক্ষে স্বাভাবিক ভাবেই আপনার মূল্যবান মত প্রকাশ করতেই পারেন । কিন্তু ‘গণ্ডমূর্খ’ শব্দটি আপনি নিজের জন্যই সংরক্ষণের অধিকার আপনি অবশ্যই রাখেন ।
এর বাইরে এই শব্দটি ব্যাবহার করে নিজেকেই গণ্ডমূর্খ প্রমাণ করলেন ।
স্যার , তাড়াহুড়োয় ‘গন্ডমুর্খ’ শব্দটি বানানে একটু ভুল করে ফেলেছে । বোধকরি ভুল করেই ভুলটি করে ফেলেছেন ।
শুন্য শুন্যালয়
পক্ষে বিপক্ষে অনেক অনেক কথা চলে আসবে. ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মনোভাব অবশ্যই পরিবর্তন প্রয়োজন তবে আমরাও আমাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারিনা. ক্ষোভ গুলো থাকা স্বাভাবিক,তবে ভাষা গুলো অমার্জিত হয়ে গেছে. আমাদের শিক্ষা এগুলোকে সাপোর্ট করেনা. মন্তব্য টা পোস্ট আকারে দেব.. ডাক্তারদের কিন্তু অনেক সহনশীল হতে হবে বিকল্প নেই..
ছাইরাছ হেলাল
আমি নিতান্ত সাধারণ ভাবে অশিক্ষিত মানুষ । তবে চোখ-কান খোলা রাখার চেষ্টা করি এবং করছি ।
ডাক্তারদের পরিমণ্ডলে বড় হয়েছি ডাক্তার দেখে দেখে হাসপাতাল ঘুরে । এখনও প্রত্যহ দিনের কিছুটা সময় কাটে ডাক্তারদের সাথে গপ-সপ করে ।
রোগীদের জন্য ডাক্তারকে কাঁদতে দেখছি ।
রোগীকে রক্ত দিতে দেখছি ডাক্তারকে ।
রোগীকে নিজের টাকায় ঔষধ কিনে দিতে দেখেছি ।
শুনেছি,
অপারেশনের আগে ওজু করে থিয়েটারে ঢোকার কথা ।
অপারেশনের আগে নফল নামাজ পড়ে নেয়ার কথা ।
দেখছি ,
ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের কমিশন পাঠানোর লিস্ট ।
রিপ্রেজেন্টেটিভদের হিসাব ।
আমার দু’জন স্বজনের দীর্ঘ জটিল চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে থাকার সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য হয়েছে ।
ফেরেশতা (প্রায়) ও শয়তান(প্রায়) দেখেছি ।
একজন প্রান্তিক মানুষ হিসেবে যতটা না প্রশাসনের কাছে যেতে হয় তার থেকে আমরা বেশি ডাক্তারদের কাছে যাই ।
কাজেই আমারা আলোকিত ডাক্তারদের সেবা পেতে চাই । এ আমাদের অধিকার । এবং নিয়মিত পড়াশোনা করে আমাদের সে সেবা প্রদান করবেন যা আমাদের প্রাপ্য ।
আমার অবস্থান আপনার বিপক্ষে ।
প্রহেলিকা
ডাক্তার সাহেব কিছু মনে করবেন না আগেই বলে দিলাম। পোষ্টটি যখন লিখেছিলেন তখন হয়তো অনেক ক্ষিপ্ত হয়ে লিখেছিলেন। আশা করবো এই ক্ষিপ্ততা আপাতত একটু কমেছে। আপনার পোষ্ট দেখে সাথে সাথে মন্তব্য জানাতে ভয় পেয়েছিলাম। শান্ত হয়েছেন কিছুটা তাই ভেবেই এখন আসলাম মন্তব্য করতে। আপনাকে আগে আপনার নিজের দুইটা লাইন দেখাই কি বলেন??
**আজ আমি আপনাদের প্রশ্ন করে যাবো! যদি উত্তর দিয়ে যেতে না পারেন আমি প্রশ্ন তোলব আপনাদের বংশ কিংবা জন্ম পরিচয় নিয়ে। **
এই লাইনটি প্রথমের দিকে এরপর আবার দেখলাম আমি লিখেছেন:
**আরে গন্ডমূর্খের দল – আয় , এসে আমাদের বইগুলো পড়ে যা । বই গুলো তো বাংগালীরা লেখে নাই।**
এরপর ঢুকলাম বাংলা অভিধানে সেখানে পেলাম “গন্ডমূর্খ” অর্থ হচ্ছে একেবারে মূর্খ, আকাট মূর্খ, অশিক্ষিত।
ডাক্তার সাহেব কিছু কথা আমি আগে জানতে চাই আপনার কাছে এরপর আমি মন্তব্য করবো ইনশাল্লাহ। আমি জানতে চাচ্ছি যে:
১- আপনি যাদের “গন্ডমূর্খ” বলে সম্বোধন করেছেন তার কাছে আপনি কোন যুক্তিতে প্রশ্ন করতে আসলেন?
২-আপনি নিজেই যাদেরকে “গন্ডমূর্খ” বলে সম্বোধন করেছেন তাদেরকে প্রশ্ন করে উত্তর আশা করলেন কিভাবে?
৩-খালি মাঠে গোল দিতে চান নিতো আবার?
৪-আপনি একজন ভবিষ্যত ডাক্তার/একজন অতি শিক্ষিত হিসেবে এক গন্ডমূর্খের কাছে উত্তর না পেয়ে তার জন্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা ভুল হচ্ছে নাতো ????
আশা করি এগুলো আমাকে জানাবেন তারপর আমি আমার মন্তব্য করবো।
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিজের কিছু শব্দ প্রত্যাহার করে নিলাম। বাকি সব প্রশ্নের উত্তর এই ” গণ্ডমূর্খ ” শালীনভাবেই নিজের পরের লেখনীর মাধ্যমে দেয়ার চেষ্টা করবে।
লীলাবতী
সব ডক্তার যেমন খারাপ না , তেমনি সব রোগীও মারদাঙ্গা নয় । যে সব প্রসঙ্গ এনেছেন , তা নিয়ে বিতরকের শেষ নেই ।
আমরা সোনেলাকে একটি পরিবার হিসেবে ভাবি । একে অন্যকে সন্মান দেবো আমরা – সোনেলার প্রথম থেকে এভাবেই চলে এসেছি ।
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস ভাইয়াকে ধন্যবাদ যে আপত্তিকর শব্দ সমুহ তুলে নিয়েছেন। এটি আপনার বড় মনের পরিচয় বহন করে । আমারা এখন আর নিজেদের ভুল স্বীকার করিনা । ধন্যবাদ ভাইয়া । -{@
হিপনোটক্সিক ইরেকটাস
আমার কার্ডিওমেগালী রোগ ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ লীলাবতী আপু। 😀
শিশির কনা
উপস্থাপনা একটু কঠিন হয়েছে। আমরা অধিকাংশুই চেষ্টা করি সেবা দিতে। তবে কিছু ডাক্তারের জন্য আমাদের সবার দুর্নাম হয়।