পাহাড়ি গ্রামগুলো বরাবরই খুব চমৎকার, পাহাড়ের ভাজে ভাজে অপরূপ সবুজ, আর সেই সবুজের ফাঁকে ফাঁকে পাহাড়িদের ছোট ছোট কুড়ে এবং তাহাদের পরিশ্রমী ও অকৃত্রিম জীবন আমাকে খুব টানে, তাইতো সুযুগ পেলেই আমি ছুটতে চাই পাহাড়ের পাণে। আজ আপনাদের নিয়ে যাবো তেমনি একটি পাহাড়ি গ্রামে যার নাম জাদিপাই পাড়া।
বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ চুড়া কেওকারাডাং পর্বত থেকে পূর্ব দিকের ঢাল বেয়ে ১০/১৫ মিনিটের পথ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গ্রাম পাসিং পাড়া, যার উচ্চতা ৩০৬৫ ফুট। পাসিং পাড়ার পুর্বদিকের শেষ মাথায় গিয়ে উকি দিলেই নিচের দিকে দেখা যায় চারিদিকে পাহাড় আর সবুজ বন বেষ্টিত ছবির মতো লম্বা এক টুকরো অসমতল ভুমি, এটাই হলো বম অধ্যুষিত জনপদ জাদিপাই পাড়া। এই পাড়া থেকে আরো নিচের দিকে এগিয়ে গেলে পাওয়া যায় বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণা জাদিপাই। এতো সময় স্বল্পতা ছিলো যে, এখানকার গ্রাম বাসীদের সাথে ভালোভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগও পাইনি, ভবিষ্যতে হয়তো সেটা হয়ে যাবে।
(২/৩) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গ্রাম পাসিং পাড়া থেকে জাদিপাইকে দেখায় এমন।
(৪) পাসিং পাড়া থেকে জাদিপাইয়ের পথটা অত্যন্ত খাড়া ভাবে নেমে গেছে, জাদিপাইয়ের দিকে হেটে না নেমে আসলে দৌড়ে নামতে হয়, আর সেই পথ যদি পিচ্ছিল হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই।
(৫) পাহাড়িদের প্রত্যেকটা পাড়ারই একটা সীমারেখা আছে, যেমন এই গেইট পার হলেই জাদিপাই পাড়া শুরু, যদিও লোকালয় এখান থেকে আরো বেশ কিছুটা দূরে। আর বাম পাশের পথটা চলে গেছে বাকলাই পাড়ার দিকে।
(৬) জাদিপাইয়ে আমাদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বুনো ফুলেরা ছিলো প্রস্তুত।
(৭) ঐ তো জাদিপাইয়ের মূল গ্রামে প্রবেশ করলাম বলে।
(৮/৯) জাদিপাই পাড়াটা মূলত একটা লম্বা হালকা উচু নিচু প্রায় সমতল ভুমি, তার মাঝখানে দাড়িয়ে দুই দিকে ক্যামেরা তাক করে তোলা দুইটি ছবি।
(১০) ছোট্ট শিশুরা আমাদের দলটিকে অবাক চোখে দেখছিলো।
(১১) আরো দুরে একদল শিশু কিছু নিয়ে খেলছিলো।
(১২) এটা ওদের প্রার্থনা গৃহ।
(১৩/১৪) পৃথিবীর সকল মায়ের ভালোবাসা একই রকম, জাদিপাইয়েও তার ব্যতিক্রম নয়।
(১৫/১৬) জাদিপাইের পুর্ব দিকের ঢাল বেয়ে নেমে গেলে বেশ কিছুটা সমতল ভূমি পাওয়া যাবে, সেই সমতল পেড়িয়ে আরো কিছু বিপদজনক খাড়া ঢাল বেয়ে এগিয়ে গেলেই পাওয়া যায় বাংলাদেশের সেরা রূপসী জাদিপাই ঝর্ণা।
(১৭) ঝর্ণার পাশ থেকে জাদিপাই পাড়াকে এমন দেখায়।
(১৮) জাদিপাই পাড়া হতে এক সময় আমরা ফিরতি পথ ধরি…….
(১৯/২০) ইচ্ছে আছে কোন এক চাঁদনী রাতে জাদিপাইয়ে রাত কাটাবো, হয়তো তখন মনে হবে চাঁদের আলোয় ডুবে আছে কোন একটা পুকুর, আর সেই পুকুরের তলদেশে থেকে আমি পৃথিবীর রূপসূধা পান করছি। তিন দিক পাহাড় বেষ্টিত থাকায় জাদিপাই পাড়াকে অনেকটা পুকুরের মতোই মনে হয়, তাই এমনটি আমার ইচ্ছে। জানিনা সেই ইচ্ছে কোন দিন পূরণ হবে কিনা!!
বিঃ দ্রঃ এটা মূলত একটা ছবি ব্লগ
৩৫টি মন্তব্য
আকবর হোসেন রবিন
কয়দিন আগে এক বড় ভাইয়ের মুখে এই গ্রামের অনেক গল্প শুনেছি। আজ আপনার ছবির মাধ্যমে গ্রামটা দেখতে পারলাম। জানিনা কখনও যাওয়ার সুযোগ হবে কিনা। যদি যেতে পারি তাহলে কিছুক্ষণ পাহাড়ের কোলে শুয়ে থাকবো।
কামাল উদ্দিন
ইচ্ছে থাকলে অবশ্যই যাওয়া হবে ভাই, শুভ কামনা সব সময়
গালিবা ইয়াসমিন
অজানা গ্রামের কথা জানানোর জন্য ধন্যবাদ
কামাল উদ্দিন
কতো কিছু যে আমাদের অজানার ভেতর রয়ে গেছে তার খবর কে রাখে আপু, শুভ কামনা জানবেন।
মনির হোসেন মমি
মনে হয় এখনি দৌড় দেই জাদিপাইয়ে চলে যাই। চমৎকার বর্ননা। এ পোষ্টটি ভ্রমণ হিসাবেও চলে।ধন্যবাদ।
কামাল উদ্দিন
সাবধানে দৌড়াইয়েন মমি ভাই, পিচ্ছিল পাহাড়ে একটু অসাবধান হলেই বিপদ 😀
মনির হোসেন মমি
হা হা হা তখন সেই মুহুর্তটা ধরে রাখতেতো ফটোগ্রাফার কামাল ভাই আছে ।
এস.জেড বাবু
১০
১৪
২০
তিনটা ছবি মন কেড়ে নিলো।
এর মধ্যে ১৪ নাম্বার ছবি আশাতীত সুন্দর, যেন কথা বলে।
লেখার মন্তব্য পাওনা রইলেন।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ বাবু ভাই, পাওনা পরিশোধ হয়ে যাবে 😀
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার ছবিগুলো দাদা , মনে হয় এখনি দৌড় দেই জাদিপাইয়ে চলে যাই।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আমাকে সাথে নিয়েন দাদা, আমারও যে আবার যাওয়ার ইচ্ছেটা রয়ে গেছে, ধন্যবাদ।
এস.জেড বাবু
কামাল ভাই
তিন চার বার পড়লাম- ছবি দেখতে দেখতে আর পড়তে পড়তে মনে হলো আমি আপনার পিছনে পিছনে যাচ্ছিলাম।
সত্যি খাড়া পথটা পিচ্ছিল ভেবে আছড়ে পড়ার অনুভুতি তাড়া করছিলো।
দারুন লিখেন ভাই-
আর উপস্থাপন কৌশল- অসাধারণ।
কামাল উদ্দিন
এমন মন্তব্যে আমি বরাবরই উৎসাহিত হই, ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
ভ্রমণ করে ভালোই লাগলো, আপনার সাথে।
কামাল উদ্দিন
ভ্রমণ আমার নেশা, সময় সুযোগটারই শুধু অভাব………শুভ কামনা জানবেন আপু।
সুরাইয়া পারভিন
আমি এই প্রথম এই জায়গা সম্পর্কে জানলাম। ইশ্ ছবি গুলো কি দারুণ! দেখেই ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে।
ফটোগ্রাফীর হাত জাস্ট অসাম
কামাল উদ্দিন
ফটোগ্রাফি আমার নেশা, যদিও ওর কোন গ্রামার ব্যকরণ আজো জানা হয়নি। ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকুন, সব সময়।
নাজমুল হুদা
এতো সুন্দর পাহাড়ি লোকালয়। আমি মুগ্ধ ।
এগুলোও কবিতার উপাদান , চমৎকার 💞
কামাল উদ্দিন
ঠিক বলেছেন ভাই, কবিদের জন্য এমন পাহাড়ি নির্জনতা সত্যিই অনন্য। ধন্যবাদ নাজমুল ভাই, ভালো থাকুন সব সময়।
অনন্য অর্ণব
অত উপরে মানুষ কিভাবে থাকে? ওখানে তো অক্সিজেন স্বল্পতা সহ মধ্যাকর্ষণ ত্বরণের মাত্রাও বেশি থাকার কথা। যাই হোক যাওয়ার ইচ্ছে আছে। এতো সুন্দর একটা গ্রাম- আমি সত্যিই মুগ্ধ।
কামাল উদ্দিন
সবার অক্সিজেনের প্রয়োজন সমান থাকে অর্ণব ভাই। তাছাড়া আমাদের পাহাড়গুলো আর অতটা উঁচু কই?……………. ভালো থাকবেন সব সময়।
মোহাম্মদ দিদার
পরছি, দেখছি
মনে হচ্ছে হারিয়ে যাচ্ছি
কামাল উদ্দিন
হারিয়ে যেতে নেই মানা…………
চলুন আমরা প্রকৃতি সনে হারিয়ে যাই
রেহানা বীথি
ছবিগুলো দেখে মুগ্ধ হলাম। পাহাড় দেখার সাধ চেপে রেখেছি মনে। একবার দেখেছি, খুব সামান্য সময়। ভবিষ্যতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটির জন্য।
কামাল উদ্দিন
আশা করছি এবার বেড়িয়েই পড়বেন……….শুভ কামনা জানবেন আপু।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
ছবি ও বর্ণনা খুবি ভালো হয়েছে। যাবার ইচ্ছা আছে। বান্দরবান শহর থেকে কতটা দূরে?
কামাল উদ্দিন
দুরত্বটা আমি সঠিক বলতে পারবো না ভাই, তবে অনুমান বান্দরবান শহর থেকে ৩০/৩৫ কিলোমিটার হবে।
মাছুম হাবিবী
ভাই পিক আর বর্ণনা দেখে জায়গাটা নিজ চোখে দেখার নেশাটা লেগে গেল। অপরূপ গ্রাম
কামাল উদ্দিন
হুমম, আমিও তাই বলি, শুভ কামনা জানবেন ভাই
ছাইরাছ হেলাল
ছবি আর সামান্য বর্ণনা নিয়ে খুব সুন্দর ছবি ব্লগ।
যাওয়া তো দূরের কথা জানলাম দেখালাম এই-ই প্রথম/
ধন্যবাদ, এভাবে জানানোর জন্য।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ হেলাল ভাই, কোন একদিন হয়তো আপনি ওদিকে চলেও যেতে পারেন।
মোঃ মজিবর রহমান
বুনো ফুল আর ঝরনা মন মাতাল।
কামাল উদ্দিন
হুমম, সত্যিই অতুলনীয়
মোঃ মজিবর রহমান
সময়ের অভাব আর চাকরির কল্যান না হলে হইনা। তাছাড়া পড়ন্ত বয়সে আর উঠানামা হবেনা। কামাল ভাই। আপনার লেখায় দেখি আমার দেশ ও বিশ্ব।
কামাল উদ্দিন
আমিও আপনার থেকে খুব একটা দূরে নাই মজিবর ভাই।