আমরা অসহায় দরিদ্র আমরা থাকি সদা ক্ষুধার্ত,
ক্ষুধার জ্বালায় ছটফটে মরি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত।
খাবার নেই কোথাও নেই, খুঁজি জনে খুঁজি বনে,
ওঁরা আমাদের দেয় না, খাবার ফেলে দেয় ডাস্টবিনে।
ঘুরি ধারে ধারে আর পথে পথে, খাবার খুঁজে পাইনা,
যাই ডাস্টবিনের ধারে, খাবার দেখে মন মানেনা।
খোলা ডাস্টবিনের ময়লার গন্ধে বিড়াল কাঁদে,
নিশ্বাস হয় বন্ধ, পথিক চলে নাকে রুমাল বেধে।
আমরা নাচি আনন্দে ডাস্টবিনে থাকা খাবার দেখে,
ময়লার গন্ধে আমাদের আয়ু বাড়ে, দৃষ্টিও বাড়ে চোখে।
আমরা কুড়িয়ে খাই নিজের ইচ্ছেমতো যা খুশি তা-ই,
সেখানে আর কেউ দেয়না বাধা, আমরা পেট ভরে খাই।
যেখানে ফেলায় সমাজের বড় লোকেরা বাড়তি খাবার,
সেখানেই আমাদের রিজিক, আমাদের দরিদ্রের আহার।
আমরা খাই মনের আনন্দে, আমাদের ক্ষুধা যায় মিটে,
আমাদের খাওয়া দেখে বড়লোকরা হাসে খিটখিটে।
তাদের হাসিতে আমরাও হাসি সুস্বাদু খাবার পেয়ে,
ক্ষুধার জ্বালা মিটাই মনের আনন্দে পেট ভরে খেয়ে।
কখনও পাই সেখানে পচা খিচুড়ি আর বাসি তরকারি,
কখনও পাই পচা ভাত কোরমা পোলাও কারিকরি।
তবু খাই আমাদের দুঃখ নাই, প্রার্থনা করে যাই,
ডাস্টবিনে যেন আমরা আরও বেশি খাবার পাই।
আশীর্বাদ করি বেঁচে থাকুক সমাজের বড় লোকেরা,
আরও ফেলবে খাবার ডাস্টবিনে, খেয়ে বাঁচব আমরা।
ছবি ইন্টারনেট থেকে।
২০টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
বিষয়টা দুঃখজনক। সাম্যহীনতা এ দেশটায় এখন ভীষণ ঝুকির মধ্যে আছে যে কোন সময় উপর তলাদের নীচু তলার লোকেরা টেনে নীচে নামিয়ে আনবে।লেখা চমৎকার।
নিতাই বাবু
ধন্যবাদ মনির দাদা। আপনার সুন্দর মন্তব্যে আমার লেখার আগ্রহ বাড়ায়। খুঁজে পাই অনুপ্রেরণে।
মনির হোসেন মমি
প্রিয় দাদা আমার।লেখায় শুভ কামনা জানাই।
তৌহিদ
এসব দেখে কষ্ট পাই মনে দাদা, সমাজের উঁচু নীচু বৈষম্যের ব্যবধান না কমলে জাতি হিসেবে এই লজ্জা রাখার জায়গা থাকবেনা।
সুন্দর লেখা দাদা।
নিতাই বাবু
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় তৈহিদ দাদা। এভাবে মন্তব্য দানে লেখার আগ্রহ বেড়ে যায়। তাই লিখতেও ভালো লাগে। শুভকামনা থাকলো দাদা।
তৌহিদ
আপনার মন্তব্যও আমাকে অনুপ্রাণিত করে দাদা।
নিতাই বাবু
ধন্যবাদ দাদা।
বন্যা লিপি
সামাজিক এবং আমাদের বোধের অভাব। দুঃখ জনক হলেও সত্য। এসব দেখি,জানি,বুঝি,শুনি, তবু আমরা অন্তত একজন ক্ষুধার্ত কে একটা বেলা খাবার দেবার কথা ভাবিনা।
অনেক ভালো লিখেছেন দাদা।
নিতাই বাবু
সুন্দর মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় বন্যা দিদি।
মোস্তাফিজুর খাঁন
“তবু খাই আমাদের দুঃখ নাই, প্রার্থনা করে যাই,
ডাস্টবিনে যেন আমরা আরও বেশি খাবার পাই।
আশীর্বাদ করি বেঁচে থাকুক সমাজের বড় লোকেরা,
আরও ফেলবে খাবার ডাস্টবিনে, খেয়ে বাঁচব আমরা।”
সেই সব বড় লোকেদের এই কথাটা ভালো করে বোঝা দরকার ।
মনটা বিভূষিত হয়ে গেল ।
নিতাই বাবু
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
শিরিন হক
মানবাতা কোথায়?
খুব ভালো লাগলো কবিতা
নিতাই বাবু
আমাদের স্বাধীন দেশের যত মানবতা আছে, তা বর্তমানে কক্সবাজার, উখিয়া, টেকনাফ, কুতুপালঙে গিয়ে পৌঁছেছে বলে মনে হয় শ্রদ্ধেয় দিদি।
ছাইরাছ হেলাল
দরিদ্র/বঞ্চনা/বৈষম্য আমাদের চোখের সামনে হাত ধরাধরি করে চলে।
এ এক কঠিন দৃশ্য, যা আমাদের গা-সহা হয়ে গেছে/যাচ্ছে।
নিতাই বাবু
হ্যাঁ দাদা, ঠিক বলেছেন। এখন আর গরিবদের নিয়ে ভাবার সময় কারোর নেই। কারণ, দেশে এখন মঙ্গা নামের আলামত নেই, তাই।
আরজু মুক্তা
বৈষম্য, এটা দেখতেই আমরা অভ্যস্ত। তবে নিজ নিজ অবস্থান ছোট কিছু করলে আত্মা শান্তি পাবে।
নিতাই বাবু
কেউ কারোর পানে ফিরে তাকায় না। স্বার্থের দুনিয়া।
সাবিনা ইয়াসমিন
অর্থনৈতিক সাম্যতা আসবেনা, দারিদ্রতা কমার দুঃস্বপ্ন এরা দেখেনা। তাই দোয়া করে, বিত্তবানদের বিত্ত আরও বাড়ুক। উচ্ছিষ্ট খাবারে উপচে উঠুক ডাস্টবিন গুলো। চাইলেতো দেয়না, এভাবেই পেটের চাহিদা যদি পুর্ণ হয়, তাই ভালো।
এমন ছবি দেখলে চোখে পানি এসে যায়,,,,
নিতাই বাবু
এমন দৃশ্য মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে বিধায়, বর্তমানে লোহার বড় আকারের অস্থায়ী ডাস্টবিন তৈরি করেছে সরকার। যাতে বড় লোহার ডাস্টবিনে গরিব ক্ষুধার্তরা প্রবেশ করতে না পারে। মরুক, না খেয়ে!
সাবিনা ইয়াসমিন
একদল চাইছে তাদের ক্ষুদা নিবারণ কারীদের বিত্ত বাড়ুক, আর আরেকদল চায় মরে যাক তাদের জন্যে প্রার্থনাকারীরা। কত বিচিত্র সমাজের সামাজিক মানুষ আমরা!!