কি এ্যাক্টা অবস্থা!!

রিতু জাহান ২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার, ১০:৩৭:৪৯অপরাহ্ন রম্য ২৬ মন্তব্য

ঘটনা একঃ
সেদিন বড় ভাই হঠাৎ ফোনে নালিশ।
-মনু তুই কই?
-বাসায় আছি, কি হইছে?
-আজকে তো তোর ভাবি আমার ভাত বন্ধ করে দিছে।
-হায় হায় কন কি! কি করছেন আপনি?
-আমি কিচ্ছু তো করি নাই। যা করার বাসের সিটে করছে।
-মানে কি?
-আর কইস না, ঢাকায় বাসে উঠে ফিরতেছিলাম বাসায়। কোন জানি বেক্কল মাইয়া তার লিপিস্টিক বাসের সিটে খোলা অবস্থায় ফেলছে। পরে সে সিটে আমি বসার কারণে সব আমার জিন্সের প্যান্টে মাখছে। ভর দুপুর বেলা জামা কাপড় ছাইড়া ভাত খাইতে টেবিলের দিকে এসেই দেখি তোর ভাবি তো এক হাতে লাঠি অন্য হাতে প্যান্ট নিয়া সামনে খাড়ায়া আছে। দৌড় দিমু না কি করুম বুঝতে পারতেছিলাম না।
পরে বুঝাইয়া কইলাম। শুধু কইলো, প্যান্ট ভালো করে নিজে ধুয়ে পরিষ্কার করতে।
আমি সে প্যান্ট ধুয়ে তোরে ফোন দিলাম।
-ও এই কথা!! কোনো ব্যাপার না। মাঝে মাঝে লাডির দাবড়ানি খাওয়া ভালো।
মনে হইলো ভাইটা আমার মন খারাপ করছে। বইনেও তার একটু পক্ষ নিলো না।

ঘটনা দুইঃ
কিছুক্ষণ আগে ফেসবুকে আমার একখান মন্তব্য ভাইরাল হইতে হইতে বাইচা গেছি। নামডা ভালোমতো না পড়ে প্রোফাইল ছবি দেখে মনে হলো বন্দনা আপু। পোষ্টটা হলো,’রাতে রওনা করে সকালে কুড়িগ্রাম পৌছে সারাদিন কি কি দেখা যাবে?’
আমি মন্তব্য দিলাম,’তুমি যদি এসে আমাকে খবর না দেও তোমার সাথে কিন্তু আমার জনমের আড়ি তুমি আমার বাসাতেই উঠবা, পরে আর একটা মন্তব্য দিলাম,’তুমি কখন আসবা?’
চোখে ছিলো না চশমা। ইদানিং চশমা ছাড়া উল্টাপাল্টা দেখি মনে হয়।
চোখ বড় বড় কইরা দেখলাম, আরে! এডা তো কোন পোলা। মুখে একখান বিড়ি। আমি তো নাই। কাঁপা-কাঁপি শুরু হলো আমার। সাথে সাথে ডিলেট মারলাম মন্তব্য।
এহন কথা হইতেছে, এ পোষ্ট আর মন্তব্য যদি আমি চোখ বড় বড় কইরা পরে না দেখতাম আইজ আমার ডিভোর্স কেউ ঠ্যাকাইতে পারতো না। আর ও পোলা যদি বিবাহিত হতো আর তার বউ ফ্রেন্ডলিস্টে থাকতো তবে তারও একই অবস্থা হইতো। প্রেমিকা থাকলে তো ব্রেকআপ হইতো।
কি এ্যাক্টা অবস্থা হইতো! ভাবতে ভাবতে আমি কোমায় যাবার উপক্রম।

ঘটনা তিনঃ
তিনি একসময় নাটক টাটক করতেন। হিরোর রোল যাকে বলে। তার নায়িকারা বেশ সুন্দরী ছিলেন। তো, এক নাটকে তার চরিত্র ছিলো তিনি একজন গবেষক। তার পারসোনাল সেক্রেটারি তার নায়িকা। তিনি একটা গবেষণায় সাকসেস হয়ে ইউরেকা বলে নায়িকাকে জড়িয়ে ধরবেন। এবং তিনি খুব জোরেই ইউরেকা বলে একটা চিৎকার দিলেন। দৃশ্যমতে নায়িকাকেও জড়িয়ে ধরলেন। অমনি ধপাস করে স্টেজ ভেঙ্গে পড়লো। তিনি তো তখন নায়িকাকে নিয়েই পড়েছেন। পাঠক, একবার দৃশ্যটা কল্পনা করুণ! দর্শক সারিতে বসে ছিলেন তার প্রেমিকা। তিনি কিন্তু ভীষণ সুন্দর ছিলেন দেখতে। হায়রে! সে প্রেম শুনেছি সেখানেই ইতি টেনেছিল আর আমার কপাল পুড়েছিল। সে প্রেমিকার বাড়ি আবার তাদের ঘর থেকে বের হয়েই কিছুদূরে। একটা গান আছে না? ‘ঘরসে নিকালতেহি, কুচ্ দূর চলতেহি রাস্তেমেহে উসকা ঘর।’
আমি সকালে ইউটিউবে একটু গান শুনি। এ গানটা আমার বেশ পছন্দের। গানটা আসলে আমি মৃদু একটা খোঁচা মেরে বলি, গানটা বেশ তাই না?’ তিনি কটমট করে আমার দিকে তাকান। মনে মনে বলি,এতো কাঠখোট্টা একটা লোক সে বয়সে প্রেম করেছে কি করে! আর নাটকের নায়কই বা কেমন করে হইতো!! সবই সময়ের দোষ আসলে। ইদানিং তিনি রাতে একটু তাড়াতাড়ি ফেরেন উত্তমের ছবি নিয়ে বসে পড়েন। স্মৃতি আওড়ান মনে হয়।
আমি মুচকি হাসি।

নোটঃ দুই ভাইবোনের দুঃখের কথা শুইনা আবার কেউ হাইসেন না কইলাম।

১১১৮জন ৯৪১জন
0 Shares

২৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ